• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo
তাপপ্রবাহের ব্যাপ্তিকাল বিগত বছরগুলোকে ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা 
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ শেষ হতে পারেনি। ইতোমধ্যে ঢাকাসহ দেশের মোট চারটি বিভাগের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়েই মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বইছে। তাই এসব এলাকায় তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বা 'হিট অ্যালার্ট' জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বাংলাদেশে কোনও স্থানের তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে সেখানে সতর্কবার্তা জারি করা হয়। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জনপদগুলোতে নিদাঘের সূর্য তাতিয়ে উঠছে প্রতিদিন। বৈরি হয়ে উঠছে প্রকৃতি। হাঁসফাঁস করছে জনজীবন-প্রাণীকুল। দিবাভাগে অস্বস্তিকর প্রহর কাটাচ্ছে মানুষ। সর্বত্রই দিনের ব্যবধানে একটু একটু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাপমাত্রা।  আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বাংলাদেশে প্রায় প্রতি বছরই এপ্রিল মাসে গড়ে সাধারণত দুই-তিনটি মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ ও এক-দু’টি তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। তবে তারা আশঙ্কা করছেন, এ বছরের তাপপ্রবাহের ব্যাপ্তিকাল বিগত বছরগুলোকে ছাড়িয়ে যাবে। আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় গত কয়েকদিন ধরে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে। এর মাঝে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে চুয়াডাঙ্গা ও ঈশ্বরদীতে। বিদ্যমান তাপপ্রবাহের কারণে বাতাসে এখন জলীয় বাষ্পের আধিক্য থাকবে। এতে করে মানুষের শরীরে অস্বস্তিবোধ বৃদ্ধি হতে পারে। বাংলাদেশে সাধারণত মার্চ থেকে মে মাসকে বছরের উষ্ণতম সময় ধরা হয়। এর মধ্যে এপ্রিল মাসেই সাধারণত তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোর ক্ষেত্রে ২০১৪, ২০১৬, ২০১৯, ২০২২ ও ২০২৩ সাল ছিল উত্তপ্ত বছর। কিন্তু এগুলোর মাঝে ২০২৩ সালের কথা আলাদাভাবে উল্লেখযোগ্য। আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, গত বছর চরম তাপপ্রবাহ ছিল। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সারা দেশে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় জুড়ে তাপপ্রবাহ ছিল। গতবার দেশে রেকর্ডধারী তাপমাত্রা ছিল। সেই তুলনায় এবার তো এখনও কম আছে। শুধু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে না, সারা বিশ্বেই ২০২৩ সাল উষ্ণতম বছর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল। ওই বছর বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহকে আবহাওয়াবিদ মল্লিক সংজ্ঞায়িত করেছেন এভাবে, ২০২৩ বছরের তাপপ্রবাহকে ‘এক্সট্রাঅর্ডিনারি’ তাপপ্রবাহ বলে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে একটানা ২০ থেকে ২৩ দিন তাপপ্রবাহ ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশে যে তাপমাত্রা বিরাজ করছে, তা ৮ ও ৯ এপ্রিল নাগাদ কিছুটা কমতে পারে। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, এপ্রিল উষ্ণতম মাস, এসময় তাপমাত্রা এমনিতেও বেশি থাকে। কিন্তু এটিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়া দরকার। যখন ঝড় হয়, তখন ভারি বৃষ্টি হয়। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা আর বাড়ে না। কিন্তু আট-নয় তারিখের আগে ভারি বৃষ্টি হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেইযোগ করেন তিনি। এদিকে তাপপ্রবাহ কতদিন থাকবে, তার সুনির্দিষ্ট কোনও প্যাটার্ন নেই। তবে তীব্র তাপপ্রবাহ সাধারণত গড়ে তিন থেকে সাতদিন ধরে চলে। মৃদু তাপপ্রবাহের দৈর্ঘ্য আবার অনেক বেশি থাকে। বাংলাদেশে মৃদু তাপপ্রবাহ সর্বোচ্চ ২৩ দিন পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হওয়ারও রেকর্ড রয়েছে বলে জানান মল্লিক। তিনি মনে করেন, তাপপ্রবাহ দীর্ঘায়িত হলে তা নিয়ন্ত্রণে আসার জন্য বজ্রবৃষ্টি দরকার। আবহাওয়াবিদ মল্লিক বলেন, অনেকদিন ধরে তাপপ্রবাহ হলে কোনও কোনও এলাকার বায়ুরচাপ কমে যায়। বায়ুরচাপ কমলে সাগর থেকে আসা জলীয় বাষ্প বাতাসের কোথাও জড়ো হতে শুরু করে এবং তখন সেখানে বজ্রমেঘ তৈরি হয়। পরবর্তীতে সেই মেঘ বৃষ্টিপাত ঘটায় বাংলাদেশ বা ভারতের বিহার, আসাম, উড়িষ্যা, মেঘালয়, ত্রিপুরা, দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশে তাপপ্রবাহ বিদ্যমান। তাই, তাপমাত্রা কমিয়ে দেওয়ার একমাত্র মাধ্যম হলো বজ্রবৃষ্টি।  এটা ঠিক যে বাংলাদেশে এপ্রিল মাস উষ্ণতম। কিন্তু প্রতি বছর এপ্রিল মাসে তাপপ্রবাহ শুরু হয় না। কোনও কোনও বছর এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহেই তাপপ্রবাহ শুরু হয়। আবার কোনও কোনও বছর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের পর তাপপ্রবাহ শুরু হতে দেখা দেয়। আবহাওয়াবিদ মল্লিক বলেন, তাপপ্রবাহ শুরু হওয়ার কোনও পর্যায়ভিত্তিক আবর্তনরীতি নাই। এই মাসের এক তারিখ তাপপ্রবাহ হল, আগামী বছরও যে একই তারিখে হবে, বিষয়টা এমন না।” ২০১৪ সাল ছিল বাংলাদেশের উষ্ণতম বছরগুলোর মাঝে অন্যতম। সে বছর ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৪ এপ্রিল, ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ২৪ এপ্রিলেই, ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১৮ সালের এপ্রিলের মাঝামাঝি ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ দশমিক পাঁচ ডিগ্রি। ২০১৯ সালের এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৩৭ দশমিক এক ডিগ্রি। আবার, ২০২০ সালে আবার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৭ এপ্রিল, ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর পরের তিন বছরেও কখনও এপ্রিলের শেষে, কখনও বা মার্চের শেষে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের গত কয়েকদিনের পূর্বাভাসের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে এখন বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এর কারণ হিসেবে আবহাওয়াবিদরা জানান, বাংলাদেশের ঐ অঞ্চলের দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ ইত্যাদি রাজ্যের অবস্থান। কিন্তু এইসব প্রদেশের তাপমাত্রা অনেক বেশি। এসব জায়গায় বছরের এই সময়ে তাপমাত্রা ৪২ থেকে ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মাঝে ওঠানামা করে। আবহাওয়াবিদ ড. মল্লিক বলেন, গত বছর ভারতের ওইসব অঞ্চলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেহেতু ওগুলো উত্তপ্ত অঞ্চল, তাই ওখানকার গরম বাতাস চুয়াডাঙ্গা, যশোর, কুষ্টিয়া, রাজশাহী হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এবং তা আমাদের তাপমাত্রাকে গরম করে দেয়। এই আন্তঃমহাদেশীয় বাতাসের চলাচল ও স্থানীয় পর্যায়েও তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে দেশব্যাপী এবছর তাপপ্রবাহ তুলনামূলক বেশি থাকতে পারে। বিগত বছরের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে এটা প্রতীয়মান হচ্ছে যে ২০২৪ সাল উত্তপ্ত বছর হিসেবে যাবে। আমরা এ বছর তাপপ্রবাহের দিন এবং হার বেশি পেতে যাচ্ছি। এর কারণ জলবায়ু পরিবর্তন। বাংলাদেশের তাপমাত্রার উর্ধ্বগতিতে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ছোঁয়া লেগেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর তাদের হিসেব অনুযায়ী তাপপ্রবাহকে তিন ভাগে ভাগ করে। কোনও স্থানের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে সেটিকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলে। তাপমাত্রা যখন ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে, তাকে বলে মাঝারি তাপপ্রবাহ। আর, তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে সেটিকে আবার বলে তীব্র তাপপ্রবাহ। সূত্র : বিবিসি
০৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪১

জুয়ার বিজ্ঞাপনে দেশের সব তারকাকে ছাড়িয়ে সাকিব
বাংলাদেশিদের টার্গেট করে প্রচারিত জুয়ার বিজ্ঞাপনগুলোতে যে তারকাদের ছবি ব্যবহৃত হচ্ছে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।  গতকাল বুধবার (৩ এপ্রিল) ডিসমিসল্যাবের একটি গবেষণায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে জুয়া আইনত নিষিদ্ধ হলেও অনলাইন বেটিং ও জুয়ার অ্যাপের বিজ্ঞাপন দিয়ে লোকজনকে প্রলুব্ধ করতে সহায়তা করছে মেটা। ডিসমিসল্যাব জানিয়েছে, একদিনে মেটার বিজ্ঞাপন লাইব্রেরি ঘেঁটে ৪ হাজার সক্রিয় জুয়ার বিজ্ঞাপন পেয়েছে তারা, যেগুলো বাংলাদেশিদের টার্গেট করে তৈরি করা হয়েছে। আর এগুলো ছড়ানোর জন্য খরচ করা হচ্ছে হাজার হাজার ডলার। বোর্ড গেমস, ক্যাসিনোর মতো জুয়ার এই বিজ্ঞাপনগুলো ব্যবহারকারীদের অধিক লাভের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে এবং তাদের অর্থ ব্যয় করতে প্ররোচিত করছে। মেটার বিজ্ঞাপন লাইব্রেরি ঘেঁটে জুয়ার ৫০টি বিজ্ঞাপনে তারকাদের ছবি পেয়েছে ডিসমিসল্যাব। আর এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে সাকিব আল হাসানের ছবি। জুয়ার এই পেজগুলো পরিচালিত হচ্ছে ইউক্রেন, জার্মানি, কম্বোডিয়া, ফিলিপাইন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে। তবে সবকটি পেজের এডমিন বাংলাদেশি। ডিসমিসল্যাব জানায়, মেটার নীতি ভঙ্গ করে বিজ্ঞাপনগুলো ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেকটি বিজ্ঞাপনের জন্য সর্বনিম্ন এক ডলার করে করে নেয় মেটা। ইম্প্রেশন, বিজ্ঞাপন কৌশল এবং প্লেসমেন্টের মতো কারণগুলোর কারণে এই খরচ কম-বেশি হয়।  
০৪ এপ্রিল ২০২৪, ২২:০৬

‘আমার স্বামীকে জলদস্যুদের হাত থেকে ছাড়িয়ে আনার ব্যবস্থা করুন’
‘আমাদের জাহাজে অ্যাটাক হইছে। জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ার উপকূলের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমাদের সবাইকে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়েছে। আমাদেরকে মারধর করেনি। আল্লাহর রহমতে এখন পর্যন্ত ভালো আছি, দোয়া কইরো।’ ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের প্রধান প্রকৌশলী এ এস এম সাইদুজ্জামান মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে সর্বশেষ স্ত্রী মেহরিমা সাফরিন জামানের সঙ্গে মুঠোফোনে এসব কথা বলেন।  বুধবার (১৩ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে একটি ভয়েস রেকর্ড বার্তা আসে মেহরিমার মুঠোফোনে। সেই বার্তায় একজনের কণ্ঠ শোনা যায়। তিনি জানান, ‘স্যার ভালো আছেন। সেহরি করে স্যার এখন ঘুমাচ্ছেন। কোনো মেসেজ থাকলে এই নাম্বারে এসএমএস পাঠাবেন।’   স্বামীকে নিয়ে উৎকণ্ঠায় থাকায় মেহরিমা সাফরিন বলেন, জাহাজের কাজ অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক সময় গভীর সমুদ্রে গেলে ১৫-২০ দিন ধরে তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ থাকে না। তখন চিন্তা হতো। নেটওয়ার্কের মধ্যে আসলেই তার সঙ্গে আবার যোগাযোগ হতো। কিন্তু এবারের বিষয়টি অনেক উদ্বেগের। তারা জলদস্যুদের কবলে পড়েছে। খবরে দেখতেছি, মুক্তিপণ না পেলে তাদেরকে নাকি একে একে মেরে ফেলবে। এ অবস্থায় আমি চরম উৎকণ্ঠায় সময় অতিবাহিত করছি। এক বছরের কন্যা সন্তান আর অসুস্থ শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে সাহায্যের জন্য কোথাও যেতে পারছি না। সরকার ও জাহাজ কোম্পানি কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের আকুতি, যেভাবেই হোক আমার স্বামীকে জলদস্যুদের হাত থেকে ছাড়িয়ে আনার ব্যবস্থা করুন। বুধবার দুপুরে নওগাঁ শহরের আরজি নওগাঁ এলাকায় প্রকৌশলী সাইদুজ্জামানের বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী ছাড়াও তার বাবা সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল কাইয়ুম ও মা কহিনুর বেগমের সঙ্গে কথা হয়। নওগাঁর সাপাহার সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম বলেন, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আমার ছেলের নাম্বার থেকে ফোন আসে। ফোন করে জানায়, তাদের জাহাজে জলদস্যুরা অ্যাটাক করেছে। জাহাজটি সোমালিয়ার উপকূলের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরপর গতকাল রাতে ও আজ সকালে অন্য নাম্বার থেকে ভয়েস এসএমএস পাঠিয়েছে। ভয়েস এসএমএসে জানিয়েছে, সে ভালো আছে। দস্যুরা কোনো মারধর করেনি। একটি ঘরে তাদের সবাইকে আটকে রাখা হয়েছে। জাহাজে খাবার পানির সংকট থাকায় তাদেরকে খুব পরিমাণে পানি খেতে দেওয়া হচ্ছে। আব্দুল কাইয়ুম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জাহাজ কোম্পানির গাফিলতির কারণেই জাহাজটিতে জলদস্যুতের আক্রমণ হইছে। কোটি কোটি টাকার মালামাল বহন করে অথচ সেই জাহাজে কোনো কোস্ট গার্ড নিয়োগ দেওয়া নেই। কোস্ট গার্ড থাকলে জলদুস্যরা এত সহজে আক্রমণ করতে পারতো না। এর আগেও ওই কোম্পানির জাহাজে জলদস্যুতের আক্রমণ হইছে। সাইদুজ্জামান ২০ বছর ধরে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দেশি-বিদেশী বিভিন্ন কোম্পানির জাহাজে কাজ করছেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামের গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন জাহাজে কাজ করছে। এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজ এস আর শিপিং লিমিটেড কোম্পানির একটি জাহাজ। মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টায় জাহাজটিতে উঠে নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটিতে ৫৫ হাজার টন কয়লা রয়েছে। জাহাজে থাকা ২৩ নাবিকের সবাই বাংলাদেশি। জাহাজটি চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন।
১৩ মার্চ ২০২৪, ২১:১৫

সেলুন পাঠাগার, বইপ্রেমী জামালের প্রশংসা দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে
লালমনিরহাটের প্রত্যন্ত এলাকার তরুণ জামাল হোসেন। যার 'সেলুন লাইব্রেরি' করার অনন্য উদ্যোগের প্রশংসা ছড়িয়ে গেছে দেশের সীমা পেরিয়ে বিশ্ব পরিমণ্ডলে। যার হাত ধরে সারাদেশে ৫০ টি স্থায়ী পাঠাগার এবং দেশের ৬৪ টি জেলায় গড়ে উঠেছে ১ হাজার ২৩৪ টি সেলুন লাইব্রেরি। স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন দেশি-বিদেশি সম্মাননা, পুরস্কার। জামাল হোসেনের বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের এক অজপাড়াগাঁয়ে। পড়ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কবি নজরুল সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষে। শৈশব থেকে বইয়ের প্রতি অগাধ ভালোবাসা তার। স্কুলের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে মাটির ব্যাংকে জমিয়ে সেই টাকা দিয়ে বই কিনে নিজ বাড়িতে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শুরু করেন গ্রামে গ্রামে পাঠাগার প্রতিষ্ঠার কাজ। জামাল হোসেনের মতে, জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে বই পড়ার বিকল্প কিছু নেই। তাছাড়া সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে যুবসমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখতে এবং সমাজের কল্যাণে আত্মনিয়োগের জন্য বই পড়াই হতে পারে মোক্ষম হাতিয়ার। সেই চিন্তা থেকে ২০১৬ সালে নিজ গ্রামের বাইরে প্রথম তিনি পাঠাগার প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেন। ২০১৬ সালে খারুভাজ গ্রামে আরেকটি লাইব্রেরি গড়ে তোলেন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাননি জামাল। একে একে সারাদেশের ১৮ টি জেলায় গড়ে তোলেন ৫০ টি লাইব্রেরি। যার ২৭ টি নিজ জেলা লালমনিরহাটের বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামে। এসব লাইব্রেরির প্রতিটিতে রয়েছে সাত শত থেকে সাড়ে তিন হাজার বই। জামাল আরও জানান, প্রথমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুরাতন বই সংগ্রহ করে, এরপর যেসব প্রতিযোগিতায় পুরস্কার হিসেবে বই পাওয়া যায় সেসব প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে এসব বই তিনি সংগ্রহ করেছেন। পাঠকের চাহিদা দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় জামাল ছুটে যান বিভিন্ন শিক্ষক, লেখক, গবেষকদের কাছে। জামালের হাতে প্রতিষ্ঠিত দেশের সবচেয়ে বড় যুব নেটওয়ার্ক 'যুব ফোরাম', যেখানে প্রায় দশ লক্ষ স্বেচ্ছাসেবী সদস্য বই সংগ্রহের কাজ করছেন; সেইসব স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে একের পর এক এসব লাইব্রেরি। ২০১৬ সালে জামালের আসে প্রথম সেলুন লাইব্রেরির ধারণা। কথা বলেন সেলুন মালিকদের সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে। তারাও রাজি হন সেলুনে পাঠাগার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে। এরপর গোটা জেলার ৫০ টি সেলুনে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন অস্থায়ী পাঠাগার। সেলুনে বই পড়ার সুযোগ ব্যাপক সাড়া ফেলে পাঠকদের মাঝে। সেলুন পাঠাগার গড়ার মহতী উদ্যোগের বিষয়টি সেসময়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে নজরে আসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তিনি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন, মুজিবশতবর্ষে সারা দেশে সেলুন লাইব্রেরী স্থাপনের। পরে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে সারা দেশে ৫০০টি সেলুন লাইব্রেরি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে লালমনিরহাটসহ ১৮ জেলায় ১০০ সেলুন লাইব্রেরি চালু করা হয়েছে। বাকিগুলো চালুর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রতিটি সেলুন লাইব্রেরীতে ১৭টি করে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর ওপর বই পেয়ে পাঠক সমাজ খুবই খুশি। বর্তমানে জামালের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ও সরকারি ব্যবস্থাপনায় সারা দেশের ৬৪টি জেলায় ১ হাজার ২৩৪টি সেলুন লাইব্রেরি গড়ে উঠেছে। জামাল নিজে দেশের ৫৬ টি জেলায় ভ্রমণ করে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্বুদ্ধ করেছেন সেলুন লাইব্রেরী গড়ে তোলার ব্যাপারে। তার পরিচালনায় সারা দেশে বর্তমানে ৭৫৬টি স্বেচ্ছাসেবামূলক সামাজিক সংগঠনে প্রায় দশ লাখ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। জেলা শহরের সেলুন ব্যবসায়ী নরসুন্দর বিপুল শীল বলেন, চুল-দাড়ি কাটাতে লম্বা সিরিয়াল দেখে অনেক কাস্টমার চলে যেতেন। এখন দোকানে লাইব্রেরি স্থাপন করায় কাস্টমার বই পড়ে সময় কাটায়। এদিকে তার প্রতিষ্ঠিত প্রথম লাইব্রেরীটির আধুনিকায়ন করতে নিজস্ব জমির প্রয়োজন হয়। বাবাকে বুঝিয়ে লাইব্রেরীর নামে পাঁচ শতাংশ জমি লিখে নেন জামাল। উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় গড়েছেন সেই আধুনিক লাইব্রেরীর ভিত্তি ও দেয়াল। কিন্তু অর্থ সংকটে মাঝ পথেই থেমে আছে তার কাজ। আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য হরিপদ রায় পাঠাগার সম্পর্কে বলেন, লাইব্রেরি গড়ে উঠে শহর এলাকায়। কিন্তু এলাকার যুবক জামাল গ্রামে লাইব্রেরি করে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে। তারা নিয়মিত পাঠাগারে আসছেন বই পড়ছেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলে লাইব্রেরী স্থাপন করায় এলাকার লোকজন বই পড়ার ওপর আগ্রহী হয়ে উঠছে। জামালের এই অনন্য উদ্যোগ দেখতে এসেছিলেন জাতিসংঘের নিরাপত্তা উপদেষ্টা রমেশ সিং সহ দেশি-বিদেশী অনেক পর্যটক। জামাল জানান, রমেশ সিং সারাবিশ্বে বইপড়ার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়াতে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে একটা কনসেপ্টের মাধ্যমে উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। শুধু বই পড়া নয় নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডে অবদান রেখে চলেছে তার সংগঠনের সদস্যরা।   কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ভিএসও গ্লোবাল ভলান্টিয়ারিং ইমপ্যাক্ট অ্যাওয়ার্ড-২০২৩, আন্তর্জাতিক ভলান্টিয়ার অ্যাওয়াড-২০২২, কবি জীবনানন্দ সম্মাননা ও অসীম সাহা সম্মাননা পেয়েছেন জামাল। দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে পাঠাগার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেন জামাল। তার মতে, জনসংখ্যা অনুযায়ী দেশে ষাট হাজার লাইব্রেরী প্রয়োজন। এই বিপুল কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নে সরকারের পাশাপাশি জ্ঞানপিপাসু, সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। 
০৩ মার্চ ২০২৪, ১২:১৬

১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে রপ্তানি : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
আগামীতে দেশের রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।  মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ‘২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা ২০২৪’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য একটাই, বিশ্ববাজারে বহুমুখী পণ্য প্রমোট করা। সহজ ভাষায় বলতে, বিদেশে যদি একটি শপিংমল থাকে, সেখানে যেমন বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্য থাকতে পারে, তেমনিভাবে আমাদের প্রস্তুতকৃত চামড়াজাত ও ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যও থাকতে পারে। তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে ভালো একটা সাপ্লাই চেইন তৈরি হয়েছে। এখানে আমরা যদি বাকি পন্যগুলো আনি, তাহলে রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, বাণিজ্যমেলার উদ্বোধনী দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে মেলাপ্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেছেন এবং বিভিন্ন পণ্য কিনেছেন, যা আমাদের অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করে। প্রধানমন্ত্রী বর্ষপণ্য হিসেবে হস্তশিল্পকে প্রাধান্য দিয়েছেন। প্রথম মন্ত্রিসভায় বাণিজ্য কূটনীতি বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন তিনি। সামনের দিনে হস্তশিল্পকে নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী বাণিজ্যমেলায় হস্তশিল্পের জন্য বিশাল আকৃতির প্যাভিলিয়ন করা হবে। আগামী বছর দ্বিতল মেলার আয়োজন করা হবে জানিয়ে আহসানুল ইসলাম টিটু আরও বলেন, মেলা প্রাঙ্গণের নিচতলায় স্টলগুলো থাকবে। আর দোতলায় কনফারেন্স হলে ব্যবসায়ীদের আরও বেশি দক্ষ করে গড়ে তুলতে বিভিন্ন রকমের কনফারেন্স বা সেমিনারের ব্যবস্থা করা হবে। এর মাধ্যমে বাণিজ্যে আমরা এক প্রকার বহুমুখীকরণের ব্যবস্থা করব। সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। তিনি বলেন, আমরা বৈদেশিক মুদ্রার চাপে আছি। আমাদের ব্যবসায়ীরা যদি রপ্তানির পরিমাণ বাড়াতে পারেন তাহলে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব।
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১:১১
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়