• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo
মুখরোচক খাবারই নিরব ঘাতক, হতে পারে মরণব্যাধিও (ভিডিও)
রমজানের মুখরোচক খাবার ছাড়া ইফতারি যেন জমেই না। সারাদিন রোজা রাখার পর নানা পদের খাবার না পেলে যেনো পূর্ণতা পায় না ইফতার। তবে মুখরোচক এসব খাবারই নিরব ঘাতক। পুষ্টিবিদরা বলছেন, তেলে ভাজা রাস্তার পাশের মুখরোচক খাবারের কারণে নানা রোগের পাশাপাশি হতে পারে ক্যানসার ও হার্টের সমস্যার মতো মারণব্যাধিও। রমজান এলেই যেন রাজধানী হয়ে ওঠে ইফতারের নগরী। পুরান ঢাকার চকবাজার থেকে শুরু করে অলিগলিতে বসে ইফতারের পশরা। প্রতিটি দোকানেই সাজানো হয় বাহারি রকমের ইফতার। রাস্তার পাশের এসব দোকানগুলোতে যেসব ইফতার পাওয়া যায় তার বেশির ভাগই তেলে ভাজা। একই তেল বা কালো পোড়া তেলে ভাজা হচ্ছে পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুচপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকমের খাবার। এসব খাবার বিক্রির জন্য উন্মুক্তভাবে রাখা হচ্ছে খোলা জায়গায়। বিশ্বের প্রথম সারির বায়ুদূষণের শহরে এভাবে ফুটপাতের খাবার কতটা ঝুঁকিপূর্ণ তা না ভেবেই অবলীলায় খেয়ে যাচ্ছে রাজধানীবাসী। তবে এসব খাবারের স্বাস্থ্যগুণ নিয়ে উদ্বিগ্ন পুষ্টিবিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, যেসব খাবার খাওয়া হচ্ছে তার গুণগত মান নিশ্চিত না হওয়ায় স্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। পুষ্টিবিত মাহমুদা নাজনীন জানিয়েছেন, লম্বা সময় আমরা যখন না খেয়ে থাকছি তখন আমাদের স্ট্রোমাটার অবস্থা কিন্তু নাজুক হয়ে যায়। ওই নাজুক স্ট্রোমাকে আমাদের উচিত একটা সহজপাত্র খাবার দেওয়া, যে খাবারটা সহজে হজম করতে পারে। এক্ষেত্রে আমরা পুরোটা উল্টো কাজ করছি। আমরা তেলে ভাজা খাবার খাচ্ছি। এর ফলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের পেটের অসুখ হচ্ছে। এই পুষ্টিবিদ আরও বলেন, এসব ভাজা পোড়া খাবার খেতে আমরা কেনো নিষেধ করছি, এর একটা মূল কারণ হচ্ছে— ভাজা পোড়া খাবারে যে তেলটা ব্যবহার করা হচ্ছে সেই একই তেল যখন বারবার ভাজা হয় তখন এটার মধ্যে পলি অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন তৈরি হয়ে যায়। এতে করে পেটের বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ায়। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ নিজের ঘরে তৈরি খাবারের গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ঘরে তৈরি করা খাবার খেলে সমস্যা হওয়ার কথা না। সেটা ইফতারি বা সেহরি হোক, প্রত্যেকের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ। সরবত জাতীয় খাবার ইফতার ও ইফতার পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বেশি খাওয়া উচিত বলে মনে করেন পুষ্টিবিজ্ঞানীরা।
১৯ মার্চ ২০২৪, ০১:৪৭

হাজারো মানুষকে পথে বসাচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ!
উচ্চ রক্তচাপ। স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, কিডনি ফেইলিউরসহ প্রাণঘাতী বেশ কয়েকটি সমস্যার মূল কারণ। সাম্প্রতিক সময়ে নীরব ঘাতকে রূপ নিয়েছে রোগটি। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ পথে বসছে এর প্রভাবে আকস্মিক অসুস্থতার শিকার হয়ে।  শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমির কবি জসীম উদ্দীন ভবনে অধ্যাপক ডা. মো. জাকির হোসেন রচিত ‘রক্তচাপ ও উচ্চ রক্তচাপ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা। একইসঙ্গে উচ্চ রক্তচাপের ভয়াবহতা ও করণীয় সম্পর্কে সচেতন হওয়ার মাধ্যমে যেকোনও ব্যক্তি সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে পারেন বলেও জানিয়েছেন তারা। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহাম্মদ নূরুল হুদা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান, কার্ডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরীসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, অসংক্রামক ব্যাধিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো উচ্চ রক্তচাপ, যা প্রায় একটি স্থায়ী রোগ হিসেবে বিবেচিত। এর জন্য চিকিৎসা ও প্রতিরোধ খুবই জরুরি। না হলে বিভিন্ন জটিলতা, এমনকি আকস্মিক মৃত্যুরও ঝুঁকি থাকে। অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, রক্তচাপ এবং উচ্চ রক্তচাপ দুটি আলাদা বিষয়। রক্তচাপ সবারই আছে কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ হলো রোগ, যা মানুষকে বিভিন্ন জটিল সমস্যার মুখোমুখি করে দিতে পারে। উচ্চ রক্তচাপকে বলা হয়ে থাকে নীরব ঘাতক। দেশে কেউ কেউ মনে করেন তার উচ্চ রক্তচাপ আছে কিন্তু লক্ষ্মণ নেই। যে কারণে তিনি কখনো চিকিৎসকের পরামর্শও নেন না। আবার কিছু মানুষ আছে যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে কিন্তু কিছুদিন ওষুধ সেবনের পর বন্ধ করে দেন, এগুলো খুবই ভয়াবহ সমস্যার কারণ। তিনি আরও বলেন, আমাদের সমাজে রক্তচাপ বাড়লে তেঁতুল খাওয়া নিয়ে একটা ভুল ধারণা রয়ে গেছে। কিন্তু এটি আসলে কোনও কাজই করে না। দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা নেওয়াই উত্তম। ডা. আবদুল্লাহ বলেন, কারও একবার যদি উচ্চ রক্তচাপ হয়েই যায়, তাহলে একেবারে কখনও সেটি সেরে যায় না। তবে এটি প্রতিরোধযোগ্য। যদি প্রতিরোধ করা না যায়, তাহলে দেহের চারটি অর্গান (ব্রেন, হার্ট, কিডনি, চোখ) মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে। তাই কোনোভাবেই উচ্চ রক্তচাপকে অবজ্ঞা করা যাবে না। এটাকে নিয়ন্ত্রণ করে রাখতে হবে, যা চাইলেই সম্ভব। অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক বলেন, উচ্চ রক্তচাপ একটি নীরব ঘাতক। এর প্রাদুর্ভাব ইদানিং খুব বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে এই হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে গেলে ধ্বংসাত্মক হার্ট অ্যাটাক, কিডনি ফেইলিউরসহ বিভিন্ন জটিল সমস্যা হয়ে যেতে পারে। আমাদের অভিজ্ঞতা বলে, কিছু রোগ হাজারো পরিবারকে পথে বসিয়ে দিচ্ছে। আর সেসব রোগের মূল কারণই হলো হাইপারটেনশন। তিনি বলেন, একজন চিকিৎসকদের মূল কাজ হলো মানুষকে শেখানো, শুধু প্রেসক্রিপশন লিখে দেওয়া নয়। একজন চিকিৎসক তখনই মানুষকে রোগের ব্যাখ্যাটা পরিপূর্ণভাবে দিতে পারেন, যিনি ওই রোগটি নিয়ে ভালো করে জানেন। এজন্য নিজেকে আগে ওই রোগের বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জানতে হবে এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের নতুন নতুন গবেষণাগুলোতে যুক্ত থাকতে হবে। ‘রক্তচাপ ও উচ্চ রক্তচাপ’ বই প্রসঙ্গে লেখক অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেন বলেন, হাইপারটেনশন প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। অনেকটা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই এই নীরব ঘাতক নিয়ে বইটি লিখেছি। হাইপারটেনশনের কনসেপ্ট নিয়মিত পাল্টাচ্ছে। নতুন নতুন টেকনিক আসছে, চিকিৎসা পদ্ধতির পরিবর্তন হচ্ছে। এক্ষেত্রে আমাদের সবসময় নতুনের সঙ্গে থাকতে হবে।  
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২৩:৪৭
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়