• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
কুড়িগ্রামে আগুন আতঙ্কে গ্রামবাসী 
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী পৌরসভার একটি গ্রামে হঠাৎ করে বেড়েছে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। গেল দেড় মাসে গ্রামটিতে ১০-১২টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে আগুন আতঙ্কে রাত পার করছে গ্রামটির মানুষ। ভুক্তভোগী পরিবার গুলোর দাবি গভীর রাতে একটি মোটরসাইকেলের শব্দ শোনার পরেই ঘটছে আগুন লাগার ঘটনা।  আগুন লাগার আগে মোটরসাইকেল যাওয়ার শব্দ ছাড়া আর কিছুই মিলছে না আলামত হিসেবে। এমন আগুন লাগার ঘটনায় রাতে গ্রামের লোকজন পথহারা দিলেও মিলছে না সুরাহা। ফায়ার সার্ভিস কয়েক-দফা আগুন নিভালেও আগুন লাগার উৎস খুঁজে পাচ্ছে না। গ্রামের কেউ কেউ জিন-ভূতের কারবার বলে গালগল্প ছড়ালেও প্রকৃত ঘটনা উৎঘাটনের দাবি গ্রামবাসীর।  এসব আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটছে পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাঘডাঙ্গা গ্রামে। সর্বশেষ ১২ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে আগুন লাগে আব্দুর রহিমের বাড়ির রান্নাঘরের চালে। এর আগে ৫ ও ৭ ফেব্রুয়ারি একই ঘরের চালে আগুন লাগে। রহিম মিয়ার দাবি হঠাৎ গভীর রাতে মোটরসাইকেল যাওয়ার শব্দ পাওয়া যায় তার পরেই এরকম আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। তার রান্না ঘরে এক সপ্তাহের মধ্যে ৩ বার আগুন লাগে। একই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল খালেক। গেল ১০ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে তার বাড়িতে খড়ের গাদায় আগুন লেগে পুড়ে যায়। গ্রামবাসী ও ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।   এছাড়া গতমাস জুড়ে একই গ্রামের ইউসুফ আলী, ফজলুল হক, নজরুল ইসলাম, সৈয়দ আলী, মজিদ মিয়াসহ দেড় মাসে প্রায় ১০-১২টি খড়ের গাদায় আগুন লাগে। ফলে আগুন আতঙ্কে রাত-দিন পাড় করতে হচ্ছে গ্রামের প্রতিটি বাড়ির মানুষকে। কে বা কারা আগুন দিচ্ছে রাত জেগে পাহারা দিয়েও তাদের ধরতে পারছেন গ্রামবাসী। রহস্য উৎঘাটন হচ্ছে না মোটরসাইকেল যাওয়া শব্দের। গ্রামবাসীর অনেকে ধরেই নিয়েছে এগুলো জ্বীন-ভূতের কাজ। গ্রামের সচেতন মানুষের দাবি গ্রামের শান্তি ও সৌহার্দ্য সম্পর্ক নষ্ট করতে এমন আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত করে এদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আগেই প্রতিবেশী এবং ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নেভাতে সক্ষম হলেও আগুন লাগার উৎস থেকে যাচ্ছে অন্তরালে। রহস্য ঘেরা এসব আগুনের ঘটনা ঠেকাতে রাত জেগে গ্রামের মানুষ পাহারা দিলেও প্রতিকার মিলছে না। ফলে আগুন আতঙ্কে দিন কাটছে গ্রামের মানুষের।  আব্দুর রহিম বলেন, প্রায় দেড় মাসে আমাদের এখানে ১০-১২টি বাড়ি আঙ্গিনায় খড়ের গাদায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এই বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হলেও কোনো লাভ হয়নি। আমরা এখন গ্রামের প্রতিটি বাড়ির লোকজন রাত জেগে পাহারা দিয়েও কাউকে ধরতে পারছি না। গহুরন বেগম বলেন, বাড়ির আঙ্গিনায় খড়ের গাদায় রাত ৩-৪টার দিকে আগুন লাগে। বাড়ির লোকজন, গ্রামবাসী এবং ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিভেয়েছে। এখন আমরা পরিবার নিয়ে প্রতি রাত দুশ্চিন্তা আর ভয়ে কাটাচ্ছি।  নজরুল ইসলাম বলেন, গ্রামের কোন পরিবারের সাথে কারও কোনো বিবাদ নেই। গভীর রাতে একটি মোটরসাইকেলের শব্দ পাওয়া যায়। এরপর কিছুক্ষণ পরেই আগুন লাগার ঘটনা ঘটতেছে। গ্রামের প্রতিটি মানুষ এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।  মজিদ মিয়া বলেন, গ্রামের শান্তি ও সৌহার্দ্য সম্পর্ক নষ্ট করতে কে বা কারা আতঙ্ক ছড়ানো উদ্দেশ্যে এমন ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে নিয়মিত। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীকে ধরে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক।  নাগেশ্বরী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিলি ডিফেন্স স্টেশনের অফিসার ইমন মিয়া বলেন, বেশির ভাগ আগুন লাগার ঘটনায় আগুনের উৎস পাওয়া গেলেও গভীর রাতে খড়ের গাদায় আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। জানুয়ারি হতে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত উপজেলায় ৩৫টি অগ্নিসংযোগের ঘটনার মধ্যে ২৪টি বাড়ির আঙ্গিনায় থাকা খড়ের গাদায় লেগেছে।  
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২৩:৫৯
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়