• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করতে সাবেক আইজিপির ফেসবুকে পোস্ট
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করার কথা জানিয়েছেন। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিজের ভেরিফাইড পেজ থেকে এ তথ্য জানান সাবেক এই পুলিশ প্রধান। সেখানে তিনি লিখেছেন- প্রিয় সুহৃদ বৃন্দ, আগামীকাল ২০ এপ্রিল, শনিবার সকাল ১১:৩০ টায় এই পেজ এ কিছু তথ্য শেয়ার করবো ইনশাল্লাহ। ব্যস্ত না থাকলে আপনাকে/আপনাদেরকে পাবো প্রত্যাশা থাকছে। সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও প্রত্যেকের জন্য শুভ কামনা। বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশ পুলিশের একজন সাবেক কর্মকর্তা যিনি পুলিশের ৩০তম মহাপরিদর্শক ছিলেন। তিনি ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপূর্বে তিনি র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এর মহাপরিচালক এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।  
২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২১

জাকাত কেন গুরুত্বপূর্ণ
জাকাত মানে পবিত্রতা ও প্রবৃদ্ধি; রমজান মানে আগুনে পুড়ে সোনা খাদমুক্ত খাঁটি করা। রমজানের সঙ্গে জাকাতের সুনিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আল-কোরআনে নামাজের নির্দেশ যেমন ৮২ বার রয়েছে, অনুরূপ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জাকাতের নির্দেশনাও রয়েছে ৮২ বার। জাকাত স্বাধীন, পূর্ণবয়স্ক এমন মুসলিম নর-নারী আদায় করবে, যার কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ আছে। তবে এর জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। জাকাত ফরজ হওয়ার শর্ত সম্পদের ওপর পূর্ণাঙ্গ মালিকানা থাকতে হবে। সম্পদ উৎপাদনক্ষম ও বর্ধনশীল হতে হবে। নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকতে হবে। সারা বছরের মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর পর অতিরিক্ত সম্পদ থাকলেই শুধু জাকাত ফরজ হবে। জাকাত ফরজ হওয়ার জন্য ঋণমুক্ত হওয়ার পর নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকা শর্ত। কারো কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ পূর্ণ এক বছর থাকলেই শুধু ওই সম্পদের ওপর জাকাত দিতে হবে। জাকাতের নিসাব নিসাব হলো সাড়ে সাত ভরি সোনা, সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা এর কোনো একটির সমমূল্যের নগদ টাকা বা ব্যবসার পণ্য। বিনিময়যোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা, ট্রাভেলস চেক, ব্যাংক চেক, ব্যাংক ড্রাফট, পে-অর্ডার, পোস্টাল অর্ডার, মানি অর্ডার, শেয়ার সার্টিফিকেট, কোম্পানি শেয়ার, ডিও লেটার, সঞ্চয়পত্র, সিকিউরিটি মানি, জামানত, প্রাইজ বন্ড, ট্রেজারি বন্ড ইত্যাদি; ব্যাংক বা অন্য কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রাখা আমানত; যেমন বিমা, কারেন্ট অ্যাকাউন্ট, সঞ্চয়ী অ্যাকাউন্ট, মেয়াদি সঞ্চয়, কিস্তিতে জমা, এফডিআর, ফিক্সড ডিপোজিট, পোস্টাল সঞ্চয়ী, বিশেষ সঞ্চয়, পেনশন স্কিম ও অফিশিয়াল প্রভিডেন্ট ফান্ড, স্বেচ্ছা প্রভিডেন্ট ফান্ড, ডিভিডেন্ড, সমবায় সমিতি (এসব জাকাত হিসাব তারিখে নগদায়ন করলে যা পাওয়া যাবে); ফেরত পাওয়ার যোগ্য প্রদত্ত ঋণ, ব্যবসার পণ্য ও মূল্যবান শোপিস বা মূলবান পাথর—হীরা, জহরত, মণিমাণিক্য, মুক্তা ইত্যাদি (এসবের বর্তমান বাজারমূল্য অর্থাৎ বর্তমানে নতুন কিনতে যে মূল্য); শেয়ার সার্টিফিকেটের নামিক মূল্য ও বাজারদর হিসাবে ধরতে হবে। সোনা, রুপা, নগদ টাকা ও ব্যবসায় পণ্য— এই তিন খাতে জাকাত বর্ষপূর্তি বা জাকাত হিসাব সমাপনী দিনে যত সম্পদ থাকবে, পুরোটারই জাকাত দিতে হবে। বছরের মধ্যে যেকোনো সময় অর্থাগম ঘটলে বছর শেষে জাকাত প্রদান করতে হবে। যেদিন অর্থসম্পদ নিসাব পর্যায়ে পৌঁছাবে, সেদিন থেকেই জাকাত বর্ষ গণনা শুরু হবে। নিসাব পরিমাণ ও তদূর্ধ্ব সম্পদের মালিক তাঁর জাকাতযোগ্য সব সম্পদের জাকাত প্রতিবছর আড়াই শতাংশ (৪০ ভাগের ১ ভাগ) হারে প্রদান করতে হয়। চান্দ্রবর্ষ ৩৫৪ বা ৩৫৫ দিনে হয়। যেহেতু সৌরবর্ষ ৩৬৫ দিনে বা ৩৬৬ দিনে হয়, তাই সৌরবর্ষ অপেক্ষা চান্দ্রবর্ষ ১০ বা ১১ দিন কম। সৌরবর্ষ হিসেবে জাকাত প্রদান করতে চাইলে শতকরা ২.৫ শতাংশের পরিবর্তে ২.৫৮ শতাংশ দিতে হবে। অথবা মূল জাকাতের সঙ্গে অতিরিক্ত ১১ দিনের হিসাব যোগ করতে হবে। অনুরূপ কারও জাকাত সমাপনী হিসাব তারিখ রমজানে না হলে, তিনি অতিরিক্ত সময়ের জাকাত সমন্বয় করে জাকাত হিসাব তারিখ রমজানে নিয়ে আসতে পারেন। জাকাত বর্ষপূর্তি বা জাকাত হিসাব সমাপনী দিনে সোনা, রুপা, নগদ টাকা ও ব্যবসাপণ্য— এ তিন খাতে যত সম্পদ থাকবে, পুরোটারই জাকাত দিতে হবে। বছরের মধ্যে যেকোনো সময় অর্থাগম ঘটলে, বছর শেষে জাকাত প্রদান করতে হবে। প্রতিবছর একই তারিখে ও একই সময়ে জাকাতের হিসাব করতে হয়। যেমন: ১ রমজান সন্ধ্যা ছয়টা। এই সময়ের এক সেকেন্ড আগে যে সম্পদ আসবে, তা জাকাত হিসেবের অন্তর্ভুক্ত হবে। এই সময়ের এক সেকেন্ড পরে যে সম্পদ আসবে, তা পরবর্তী বছরের হিসাবে যাবে। যেগুলো নিসাব বলে বিবেচিত হবেনা জায়গাজমি, বাড়ি ও গাড়ি, যা বিক্রির জন্য রাখা হয়নি, তা জাকাত হিসাবের অন্তর্ভুক্ত হবে না। তবে গাড়ি, বাড়ি, ফ্ল্যাট, প্লট ও জমি, যেগুলো বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে, সেগুলোর বর্তমান বিক্রয়মূল্য (বাজারদর) জাকাতের হিসাবে আসবে এবং এর মূল্য হিসাব করে প্রতিবছর জাকাত দিতে হবে।  
২৪ মার্চ ২০২৪, ১৪:২৭

মাগফিরাতের ১০ দিন যে আমল গুরুত্বপূর্ণ
ক্ষমার মহান বার্তা নিয়ে সমহিমায় হাজির হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। এ মাসে প্রতিটি ইবাদতের প্রতিদান যেমন বহুগুণে বেড়ে যায়। এই মাস কল্যাণময় মাস। এ মাসে পবিত্র আল-কোরআন নাজিল হয়েছিল। এ মাস তাকওয়া ও সংযম প্রশিক্ষণের মাস। এ মাস সবরের মাস। এ মাস জীবনকে সব পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মুক্তি দেয়। এরই মধ্যে বিদায় নিয়েছে রহমতের দশক। হাজির হয়েছে মাগফিরাতের দশ দিন। রমজান মাসের দ্বিতীয় দশদিন আল্লাহ তার বান্দাদের জন্য মাগফিরাতের বার্তা দেন। আল্লাহ বান্দাদের‌কে এ দশদিন রহম‌তে সিক্ত ক‌রেন। ফলে এ সময়ে বান্দা নফল আমল বেশি বেশি করে এবং তার সৃষ্টিকর্তার কাঙ্ক্ষিত মঞ্জিলে পৌঁছে যায়। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা ভালো কাজে প্রতিযোগিতা করো।’ (সুরা বাকারা: আয়াত : ১৪৮)। একটি হাদিসে মুহাম্মদ (স.) বলেন, হে কল্যাণ অনুসন্ধানকারী আল্লাহর কাজে এগিয়ে যাও। হে অকল্যাণ অনুসন্ধানকারী থেমে যাও। (তিরমিযি : ৬৮২, ইবনু মাজাহ : ১৬৪২)। রমজানে দ্বিতীয় দশদিন ক্ষমা পাবার জন্য রয়েছে কতিপয় আমল। যেগুলো বান্দাকে পাপ মার্জনার পথে নিয়ে যায়, সেগুলো হলো- বেশি বেশি পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কোরআন তিলাওয়াত শ্রেষ্ঠ ইবাদত। তোমরা কোরআন তিলাওয়াত কর, কারণ কিয়ামতের দিন কোরআন পাঠকের জন্য সুপারিশ করবে’ (সহিহ মুসলিম)। ক্ষমা প্রার্থনা করা ক্ষমা প্রার্থনার জন্য আল্লাহর নির্দেশনা হলো, ‘যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে কিংবা নিজের প্রতি জুলুম করবে, তারপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে; সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু পাবে।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১১০)। বেশি বেশি দোয়া করা দোয়া একটি উত্তম ইবাদত। এ ইবাদত বান্দাকে কল্যাণ লাভে সাহায্য করে। পাপমুক্তির জন্য দোয়া করলে আল্লাহ সে দোয়ায় সাড়া দেন। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।’ (সূরা আল মু’মিন : আয়াত ৬০)। দান-সদকা বেশি বেশি করা দান ও সদকা করা পাপমোচনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। পাপমুক্ত জীবনের জন্য সদকার গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান করো, তবে তা ভালো; আর যদি তা গোপনে করো এবং অভাবীদেরকে দাও তবে তা আরও উত্তম। এর মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের মন্দগুলো মোচন করে দেবেন। তোমরা যা করো, আল্লাহ তা অবগত আছেন। (সুরা বাকারাহ : আয়াত: ২৭১)। রমজানের দ্বিতীয় দশকে মাগফেরাতের জন্য আল্লাহ আমাদেরকে বেশি বেশি নেক আমল করার সক্ষমতা দান করুন। আমিন।
২১ মার্চ ২০২৪, ২৩:৪৯

পবিত্র রমজানের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমল 
রমজান মাস আল্লাহপ্রদত্ত এক বিশেষ ফজিলতের মাস। এই মাস সাওয়াব অর্জনের মাস। এ মাসেই কোরআন অবতীর্ণ হয়। এ মাসে প্রতিটা আমলে আল্লাহ ৭০ গুণ বেশি সাওয়াব দেন। এজন্য বিশেষ এই মাসে বেশি বেশি আমল করতে হয়। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমল আছে, যেগুলো পালনের মাধ্যমে জান্নাতের পথ সুগম হয়, আর জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। রোজার নিয়ত রোজার নিয়ত করা আবশ্যক। ভোর রাতে সাহরি খেয়ে মুসলমানরা রোজার নিয়ত করেন। বহুল প্রচলিত রোজার একটি নিয়ত রয়েছে। তাহলো- উচ্চারণ : ‘নাওয়াইতু আন আছুমা গাদান মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আংতাস সামিউল আলিম।’ অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল তোমার পক্ষ থেকে পবিত্র রমজানের নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়ত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোজা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী। বেশি বেশি ইসতেগফার পড়া- দিনরাত ২৪ ঘণ্টা ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় ছোট-বড় বিভিন্ন ভুলে জড়িয়ে যাই আমরা। এ জন্য এসব ভুল থেকে ক্ষমা মার্জনার জন্য আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার করা জরুরী। কোরআনে কারিমে আল্লাহ তাআলা ইস্তিগফারসংক্রান্ত অনেক আয়াত নাজিল করেছেন। কোনও আয়াতে আল্লাহ তা'আলা ইস্তিগফারের আদেশ করেছেন, কোথাও ইস্তিগফারকারীদের প্রশংসা করেছেন, কোথাও দ্রুত গতিতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার কথা বলেছেন।  যেমন সুরা বাকারার ১৯৯ নং আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেন, ‘আর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।  সুরা আল ইমরানের ১৩৩ নং আয়াতে তিনি বলেন, ‘এবং নিজ প্রতিপালকের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও সেই জান্নাত লাভের জন্য একে অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হও, যার প্রশস্ততা আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীতুল্য। তা সেই মুত্তাকিদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।’  সব নবী আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার করতেন। সেসব নবীর ইস্তিগফারের কথা আল্লাহ তা'আলা কোরআনের অনেক আয়াতে বর্ণনা করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘আল্লাহর শপথ! আমি প্রতিদিন আল্লাহর কাছে ৭০ বারেরও বেশি তাওবা-ইস্তিগফার করে থাকি।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৩০৭) এমন দুটি ইস্তেগফার নিচে তুলে ধরা হলো : ১। আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম, আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু আল-হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম, ওয়া আতুবু ইলাইহি লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম ২। আলহামদুলিল্লাহি আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিরাহমাতিকাল্লাতি ওয়াসিআত কুল্লা শাইয়িন আন তাগফিরলি ইফতারের দোয়া ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দোয়া পড়ে ইফতার শুরু করতেন বিশ্বনবি। হজরত মুয়াজ ইবনে যুহরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইফতার করতেন, তখন এ দোয়া পড়তেন- আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু, ওয়া আলা রিযক্বিকা আফত্বারতু অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমারই জন্যে রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেওয়া রিজিক দ্বারা ইফতার করছি। (আবু দাউদ মুরসাল, মিশকাত) ইফতার করার পরও বিশেষ দোয়া পাঠ করতেন বিশ্বনবী। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইফতার শেষ করতেন তখন বলতেন- জাহাবাজ জামাউ; ওয়াবতালাতিল উ’রুকু; ওয়া ছাবাতাল আঝরূ ইনশাআল্লাহ অর্থ : ‘ (ইফতারের মাধ্যমে) পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপসিরা সিক্ত হলো এবং যদি আল্লাহ চান সাওয়াব ও স্থির হলো ‘ (আবু দাউদ, মিশকাত) কারও ঘরে মেহমান হয়ে ইফতার করলেও আছে বিশেষ দোয়া- আকালা ত্বাআমাকুমুল আবরারু, ওয়া সাল্লাত আলাইকুমুল মালায়িকাতু, ওয়া আফত্বারা ইংদাকুমুস সায়িমুন (আবু দাউদ) তারাবিহ নামাজের নিয়ত রমজান এলেই অনেকে তারাবিহ নামাজের নিয়ত খুঁজতে থাকেন। নিয়ত আরবিতে করতে হবে এমন কোনও নিয়ম নেই। নিয়ত হলো নামাজ পড়ার জন্য মনের ইচ্ছা বা সংকল্প। এ ইচ্ছা বা সংকল্প আরবি কিংবা বাংলায় করা যায়। দুই দুই রাকাআতে তারাবিহ নামাজ আদায় করতে হয়। এভাবে নিয়ত করা যায়- তারাবিহ-এর দুই রাকাআত নামাজ কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য (জামাআত হলে- এ ইমামের পেছনে) পড়ছি- আল্লাহু আকবার। তারাবিহ নামাজের দোয়া তারাবিহ নামাজের ৪ রাকাআত পর পর অনেকে একটি বহুল প্রচলিত দোয়া পড়ে থাকেন। যার অর্থও অনেক সুন্দর। তাহলো- সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা জিল ইয্যাতি ওয়াল আঝমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিব্রিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়া লা ইয়ামুত আবাদান আবাদ; সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রূহ বহুল প্রচলিত এ দোয়াটি না পড়লে তারাবিহ নামাজ হবে না এমন নয়। যে কোনো দোয়াই পড়া যাবে। তবে এ সময়টিতে কুরআন-সুন্নাহর দোয়াগুলো পড়াই উত্তম। তারাবিহ নামাজের মুনাজাত তারাবিহ নামাজের বহুল প্রচলিত দোয়ার মতো অনেকে ৪ রাকাআত পরপর, অনেকে আবার নামাজ শেষ করে একটি নির্দিষ্ট দোয়া দ্বারা মোনাজাত করেন। মোনাজাতের এ দোয়াটি বহুল প্রচলিত। তাহলো- আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনাননার। ইয়া খালিক্বাল জান্নাতি ওয়ান নার। বিরাহমাতিকা ইয়া আঝিঝু ইয়া গাফফার, ইয়া কারিমু ইয়া সাত্তার, ইয়া রাহিমু ইয়া ঝাব্বার, ইয়া খালিকু ইয়া বার্রু। আল্লাহুম্মা আঝিরনা মিনান নার। ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝির। বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন রমজান মাসে চারটি আমল বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহর রাসুল (সা.)। হজরত সালমান (রা.) থেকে বর্ণিত-রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘এ মাসে তোমরা চারটি কাজ বেশি পরিমাণে করো। দুটি কাজ এমন, যা দিয়ে তোমরা তোমাদের প্রভুকে সন্তুষ্ট করবে। আর দুটি কাজ এমন, যা তোমাদের নিজেদেরই খুব প্রয়োজন। যে দুটি কাজ দিয়ে তোমরা তোমাদের প্রভুর সন্তুষ্টি অর্জন করবে তা হলো-১. কালেমায়ে তাইয়্যিবার সাক্ষ্যপ্রদান অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালার একত্ববাদের সাক্ষ্যদান ২. আল্লাহর নিকট ইস্তেগফার করা অর্থাৎ নিজের গুনাহের জন্য তার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করা। আর যে দুটি বিষয় তোমাদের নিজেদেরই অধিক প্রয়োজন তা হলো-১. তোমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে জান্নাত প্রার্থনা করবে ২. আর জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাইবে’ (ইবনে খুজাইমা : হাদিস ১৮৮৭; বায়হাকি : হাদিস ৩৬০৮)।  
১০ মার্চ ২০২৪, ০৮:৫৭

শবেবরাতে যে চার আমল খুবই গুরুত্বপূর্ণ
শবেবরাত কথাটি ফারসি থেকে এসেছে। শব মানে রাত, বরাত মানে মুক্তি; শবে বরাত অর্থ মুক্তির যামিনী। ‘শবেবরাত’-এর আরবি হলো ‘লাইলাতুল বারকাত’। হাদিস শরিফে যাকে ‘নিসফ শাবান’ বা শাবান মাসের মধ্য দিবসের রজনী বলা হয়েছে। ইসলামি তমদ্দুন তথা মুসলিম কৃষ্টিতে যেসব দিবস ও রজনী বিখ্যাত, এর মধ্যে পাঁচটি রাত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই বিশেষ পাঁচটি রাত হলো: দুই ঈদের রাত্রিদ্বয়, শবে মেরাজ, শবে বরাত ও শবে কদর। যারা রাতের ইবাদতের গুরুত্ব অনুধাবন করেন, তারা প্রতিটি রাতকে শবে বরাত বানিয়ে নেন। ইসলামে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু রাত আছে। লাইলাতুল বরাত তার মধ্যে অন্যতম। আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে তাঁর সৃষ্টির প্রতি মনোযোগী হন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যক্তি ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩৯০; সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৫৬৬৫) অনেক হাদিসে এ রাতের আমল ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। কয়েকটি উল্লেখ করা হলো। ১. নামাজ আদায় করা লাইলাতুল বরাত উপলক্ষে বিশেষ কোনো নামাজ নেই। অন্য সব রাতের মতো সাধ্যমতো নফল নামাজ আদায় করা উত্তম। আলা ইবনে হারিস (রহ.) থেকে বর্ণিত, উম্মুল মুমিমিন আয়েশা (রা.) বলেন, একবার রাসুল (সা.) রাতে নামাজে দাঁড়ালেন এবং এত দীর্ঘ সিজদা করেন যে আমার ধারণা হলো তিনি হয়তো মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তখন উঠে তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সিজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করলেন, তখন আমাকে লক্ষ করে বলেন, হে আয়েশা অথবা বলেছেন হুমায়রা! তোমার কি আশঙ্কা হয়েছে যে আল্লাহর রাসুল তোমার হক নষ্ট করবেন! আমি জবাবে বললাম, না! হে আল্লাহ। আপনার দীর্ঘ সিজদা থেকে আমার আশঙ্কা হয়েছিল আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন! রাসুল (সা.) জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ তাঁর রাসুল ভালো জানেন। তখন রাসুল (সা.) বলেন, এটা অর্ধ শাবানের রাত। আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দার প্রতি মনোযোগ দেন এবং ক্ষমাপ্রার্থীদের ক্ষমা করেন ও অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থায়ই। (শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৩৬৩৫) ২. কবর জিয়ারত করা লাইলাতুল বরাতে কবর জিয়ারত করা যায়। কবর জিয়ারতে মৃত্যুর কথা স্মরণ হয়। আমলের প্রতি আগ্রহ বাড়ে। রাতে কবর জিয়ারতে যাওয়া সম্ভব না হলে নিজ অবস্থান থেকেও ঈসালে সওয়াব করা যায়।  আয়েশা (রা.) বলেন, এক রাতে রাসুল (সা.)-কে ঘরে না পেয়ে খুঁজতে বের হলাম। খুঁজতে খুঁজতে জান্নাতুল বাকিতে গিয়ে আমি তাঁকে দেখতে পেলাম। তিনি বললেন, কি ব্যাপার আয়েশা! (তুমি যে তালাশে বের হলে) তোমার কি মনে হয় আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল তোমার ওপর কোনো অবিচার করবেন? আয়েশা‌ (রা.) বলেন, আমার ধারণা হয়েছিল আপনি অন্য কোনো বিবির ঘরে গিয়েছেন। রাসুল (সা.) বলেন, যখন শাবান মাসের ১৫ রাত আসে অর্থাৎ যখন শবেবরাত হয়, তখন আল্লাহপাক এ রাতে প্রথম আসমানে নেমে আসেন। তারপর বনু কালব গোত্রের বকরির পশমের চেয়ে বেশিসংখ্যক বান্দাদের ক্ষমা করে দেন। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৩৯; মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২৬০২৮) ৩. বেশি বেশি দোয়া করা লাইলাতুল বরাত হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তির রাত। এ রাতে বেশি পরিমাণে তাওবা-ইস্তিগফার করতে হয়। রাব্বুল আলামিনের দরবারে হাত তুলে প্রার্থনা করতে হয়। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, পাঁচটি রাত এমন আছে যে রাতে বান্দার কোনো দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না। আর তা হলো জুমার রাতের দোয়া, রজব মাসের প্রথম রাতের দোয়া, নিসফা শাবান অর্থাৎ অর্ধ শাবানের দোয়া, ঈদুল ফিতর রাতের দোয়া, ঈদুল আজহা রাতের দোয়া। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭৯২৭) ৪. রাতে ইবাদত দিনে রোজা লাইলাতুল বরাতে নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, জিকির-আজকার ইত্যাদি আমলে মশগুল থাকতে হয়। আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হয়। বিশেষ রহমত লুফে নিতে হয় এবং দিনের বেলা রোজা রাখতে হয়। আলী বিন আবু তালিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যখন শাবান মাসের অর্ধেকের রজনী আসে তখন তোমরা রাতে নামাজ পড়ো আর দিনের বেলা রোজা রাখো। নিশ্চয়ই আল্লাহ এ রাতে সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর আসমানে এসে বলেন, কোনো গুনাহ ক্ষমাপ্রার্থী আছে কি আমার কাছে? আমি তাকে ক্ষমা করে দেব।‌ কোনো রিজিকপ্রার্থী আছে কি? আমি তাকে রিজিক দেব।‌ কোনো বিপদগ্রস্ত মুক্তি পেতে চায় কি? আমি তাকে বিপদ মুক্ত করে দেব। আছে কি এমন? আছে কি তেমন? এমন বলতে থাকেন ফজর পর্যন্ত। (তিরমিজি, হাদিস : ১৩৮৮; শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৩৮২২) এ রাত ঘিরে সমাজে প্রচলিত অনেক কুসংস্কার ও বিদআত আছে। বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি বিষয়ে সবাইকে সতর্ক হওয়া উচিত।
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:৫৯

যেসব কারণে ইসলামের দৃষ্টিতে ভোট দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র কয়েক ঘন্টা। রোববার (৭ জানুয়ারি) দিনব্যাপী জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে নির্বাচিত করবেন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দল ও প্রার্থীদের জন্য ভোট হচ্ছে ক্ষমতায় যাওয়ার শক্তিশালী মাধ্যম। যদিও অনেক ভোটারের কাছে ভোটের গুরুত্ব তেমন একটা নেই। তবে সাধারণভাবে এলাকার উন্নয়ন ও কাজ-কর্ম যার দ্বারা বেশি হবে বলে মনে করেন, ভোটাররা তাকেই ভোট দিয়ে থাকেন। ইসলামের দৃষ্টিতে ভোটের গুরুত্ব অপরিসীম। আধুনিক বিশ্বে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন ব্যবস্থার যাত্রা শুরু হয় ত্রয়োদশ শতকে। ইংল্যান্ডে সংসদীয় ব্যবস্থা গড়ে ওঠার মধ্য দিয়ে এই ব্যবস্থার সূচনা হয়। এরপর ১৬৯৪ সালে ট্রিনিয়্যাল অ্যাক্ট এবং ১৭১৬ সালের সেপ্টেনিয়্যাল অ্যাক্টের মাধ্যমে এই ব্যবস্থাকে স্থায়ী রূপ দেওয়া হয়। ১৮৭২ সালে গোপনে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট প্রদানের পদ্ধতি প্রণীত হয়। ১৯২৮ সালে সার্বজনীন ভোটাধিকার নীতি গ্রহণ করা হয়। ভোট শুধু শুধু রাজনৈতিক বিষয় ও পার্থিব ক্ষমতার বিষয় নয়। বরং এর মাধ্যমে সুশৃঙ্খলভাবে মানুষের বসবাসের জন্য দলপ্রধান বা নেতা নির্বাচন করা হয়ে থাকে। যিনি বৃহত্তর একটি গোষ্ঠী বা জাতিকে সুচারুভাবে পরিচালনায় ভূমিকা রাখেন। সুখ-সমৃদ্ধিতে বসবাসের জন্য যোগ্য নেতা নির্বাচনের জন্য ভোট দেওয়া জরুরি। যেসব উদ্দেশ্যে এসব নির্বাচন হচ্ছে তার বাস্তবতা সামনে রাখলে নিম্নোক্ত সিদ্ধান্তগুলো চলে আসে- ১. আপনার ভোট ও সাক্ষ্যের কারণে যে ব্যক্তি জনপ্রতিনিধি হয়ে সংসদে যাবেন, তার মাধ্যমে যত ভালো বা মন্দ কাজ হবে তার দায়দায়িত্ব আপনার ওপর বর্তাবে। আপনি পাপ ও পুণ্যের সমান অংশীদার। ২. মনে রাখতে হবে, যখন কোনো ব্যক্তিগত বিষয়ে মানুষ কোনো ভুল করে, তখন তার প্রভাব ওই ব্যক্তির ওপর সীমাবদ্ধ থাকে, সওয়াব ও গুনাহও সীমাবদ্ধ থাকে। আর যখন দেশ ও জাতির কোনো বিষয়ে ভুল করে তখন এর প্রভাব পুরো জাতির ওপর পড়ে। এ ক্ষেত্রে কখনো কখনো ছোট একটি ভুল পুরো জাতির ধ্বংসের কারণ হয়ে যায়। এ জন্য এর প্রতিদান ও শাস্তিও বহুগুণে বেড়ে যায়। ৩. কোরআনের দৃষ্টিতে সত্য সাক্ষ্য গোপন করা হারাম। সুতরাং আপনার নির্বাচনী এলাকায় যদি কোনো বিশুদ্ধ বিশ্বাস ও চিন্তার অধিকারী কোনো প্রার্থী নির্বাচন করা হয়, তবে তাঁকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে ত্রুটি করা গুনাহের কাজ। ৪. যে প্রার্থী ইসলামবিরোধী মনোভাব পোষণ করেন তাকে ভোট দেওয়া মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার নামান্তর ও গুনাহের কাজ। ৫. টাকার বিনিময়ে ভোট দেওয়া নিকৃষ্টতম ঘুষ। সামান্য অর্থের বিনিময়ে দেশা ও জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা। কেন না নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সেই ব্যক্তি যে অন্যের পার্থিব জীবন সাজাতে গিয়ে নিজের দ্বিনদারি ধ্বংস করে। এজন্য ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, অযোগ্য কাউকে নির্বাচিত করলে তার মাধ্যমে সমাজে যত অরাজকতা সৃষ্টি হবে এর কারণে আল্লাহর দরবারে জবাবদিহিতা করতে হবে ভোটার বা দলপ্রধান নির্বাচনকারীকে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যে লোক সৎকাজের জন্য কোনো সাক্ষ্য দেবে, তা থেকে সেও একটি অংশ পাবে। আর যে লোক মন্দ কাজের জন্য সুপারিশ করবে, সে তার পাপের একটি অংশ পাবে।’ (সূরা নিসা, আয়াত, ৮৫)
০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:০১

বাংলাদেশের নির্বাচনে ভারত কেন গুরুত্বপূর্ণ
বাংলাদেশ যখন ৭ জানুয়ারি সাধারণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, তখন প্রতিবেশী ভারতের ভূমিকা নিয়ে বাংলাদেশে বেশ আলোচনা তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। বিএনপি এবং তার সমমনা দলগুলো বলে চলেছে যে, শেখ হাসিনা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করবেন বলে তারা বিশ্বাস করে না। এসব দল তার পদত্যাগ এবং একটি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। এই দাবি সংবিধানসম্মত নয় বলে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ভারতের কাছে বাংলাদেশ শুধুমাত্র একটি প্রতিবেশী দেশ নয়। এই দেশ ভারতের একটি কৌশলগত অংশীদার এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ৷ তাই, ভারতীয় নীতি নির্ধারকরা যুক্তি দেন যে ঢাকায় দিল্লির একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সরকার প্রয়োজন। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন শেখ হাসিনা। এই সম্পর্ক ন্যায্য। ২০২২ সালে ভারত সফরের সময়, তিনি বলেছিলেন যে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল ভারত। তাই দেশটি, দেশটির সরকার, ভারতের জনগণ এবং সশস্ত্র বাহিনীকে ভুলে যাওয়া উচিত নয়। কিন্তু তাঁর সঙ্গে ভারতের এই সুসম্পর্কের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে বিএনপি। বিএনপির সিনিয়র নেতা রুহুল কবির রিজভী সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ভারতের উচিত বাংলাদেশের জনগণকে সমর্থন করা, কোনো বিশেষ দলকে নয়। ভারতীয় নীতিনির্ধারকরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র চায় না, এমন অভিযোগও করেছেন তিনি। তার মতে, একটি ‘ডামি নির্বাচন’কে সমর্থন দিয়ে, শেখ হাসিনাকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে বাংলাদেশের জনগণকে ‘বিচ্ছিন্ন’ করছে দিল্লি। এমন সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভারতের স্পষ্ট অবস্থান হলো, দেশটি মনে করে যে, নির্বাচন বাংলাদেশের একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে। বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও অংশীদার হিসেবে সেখানে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চায় ভারত। তবে বাংলাদেশের ক্ষমতায় বিএনপি এবং জামায়াত-ই-ইসলামীর প্রত্যাবর্তন হলে বাংলাদেশে মৌলবাদের ফিরে আসার পথ প্রশস্ত করতে পারে বলে উদ্বেগ আছে ভারতের। এর কারণ হলো, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে জামায়াত-বিএনপি জোট ক্ষমতায় থাকার সময় এমনটিই হয়েছিল। তখন দলদুটি অনেক জিহাদি গ্রুপের জন্ম দিয়েছে, যেগুলো বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃতও হয়েছিল। এসবের মধ্যে ২০০৪ সালে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা এবং ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের মতো ঘটনা ছিল। অন্যদিকে, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পরপরই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ফলে তা দিল্লির পক্ষে যায়। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক, জাতিগত এবং ভাষাগত সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিবাহিনীর সমর্থনে মিত্রবাহিনীকে প্রেরণের মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অবকাঠামো ও উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশকে ৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ঋণের প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। ঢাকায় বন্ধুত্বপূর্ণ সরকারের পক্ষ নিতে ভারতের কাছে অন্যান্য কৌশলগত কারণও রয়েছে। দেশটি বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে তার উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যে সড়ক ও নদীপথে পরিবহনের সুবিধা চায়। তবে বাংলাদেশে ভারতের একটি ভাবমূর্তিগত সমস্যা রয়েছে। বাংলাদেশ তার এই ভালো প্রতিবেশী দেশটির কাছ থেকে সবসময় যেটা পাওয়ার সেটা সর্বোচ্চটা পায় না, দুই দেশের মধ্যে হওয়া চুক্তিতে ন্যায়সঙ্গত বাটোয়ারা হয় না ইত্যাদি অভিযোগ প্রচলিত আছে। ভারত তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের জন্য বাংলাদেশের সড়ক, নদী এবং রেলওয়ের সুবিধা পেয়েছে। কিন্তু ভারতবিরোধী সমালোচকরা যে বিষয়টি সামনে এনে থাকেন, তা হলো, ভারতের ভূমি ব্যবহার করে ল্যান্ডলকড কান্ট্রি নেপাল এবং ভুটানের সাথে সম্পূর্ণ ওভারল্যান্ড বাণিজ্য করতে বাংলাদেশ এখনো পারছে না। এখন ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্বে সড়ক ও ট্রেনের সংযোগ একটি ২০ কিলোমিটার ল্যান্ড করিডোর, যার উত্তরে নেপাল ও ভুটান, এবং দক্ষিণে বাংলাদেশ৷ দিল্লির কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন যে, ভারতের এই অংশটি ভারতের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীনের সাথে সম্ভাব্য সংঘর্ষের ক্ষেত্রে কৌশলগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশের সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ধুয়া তুলে বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের উপর অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চেয়েছিল। এমন পদক্ষেপকে ’প্রতিকূল’ বলে অভিহিত করে ভারত তার বিরোধিতা করছে।  ভারত যখন বাংলাদেশে মৌলবাদের উত্থানের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন, সেখানে বাংলাদেশের অনেকেই ভারতের ভূখণ্ডে কী ঘটছে তা নিয়ে চিন্তিত৷ ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলো বলে থাকে যে, ভারতে ২০১৪ সালে হিন্দু-জাতীয়তাবাদী বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে সেখানে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিশেষ করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে বৈষম্য বেড়েছে। বিজেপি এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷ ভারতীয় রাজনীতিবিদরাও তাদের দেশে ‘বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসীদের কথিত অনুপ্রবেশের অভিযোগ তোলেন। এমন অভিযোগকে শক্ত ভিত্তি দিতে আসাম এবং পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে বসবাসকারী বাঙালি মুসলমানদের দিকে আঙুল তোলা হয়। ভারতীয় মুসলমানদের নিপীড়ন করা হলে বাংলাদেশে জনসংখ্যার ৮% হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের প্রচণ্ড আশঙ্কা দেখা দেয়। শেখ হাসিনা ভারতের শত্রু নন, এটা ভারত বোঝে। কিন্তু ভারত যে বাংলাদেশের বন্ধু, এটি বাংলাদেশিদেরকে বোঝানোই চ্যালেঞ্জ।   লেখক : আনবারাসন এথিরাজন, সাংবাদিক, বিবিসি
০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ২০:০১

দেশের উন্নয়নে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ : মাশরাফী
নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী ক্রিকেটার মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা বলেছেন, নড়াইলকে নতুন প্রজন্মের শ্রেষ্ঠ বাসস্থান হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন সেক্টরের উন্নয়নকাজ শেষ হয়েছে। অনেকগুলো উন্নয়নকাজ চলমান। সামনে আরও হবে। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় নড়াইল সদর উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়নের রগুরাথপুর প্রাইমারি স্কুল মাঠ, ঘোষবাড়ি, দত্তপাড়া বাসস্ট্যান্ড পথসভায় মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা নির্বাচনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মাশরাফী বলেন, এটা শুধু একটা নির্বাচন নয়, আগামী প্রজন্মের ভবিষৎ নির্ভর করছে ৭ জানুয়ারির এই নির্বাচনে। আপনারা কেউ ঘরে বসে থাকবেন না। আপনারা সবাই ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নৌকায় ভোট দিয়ে আসবেন।  তিনি বলেন, আপনাদের দায়িত্ব ৭ জানুয়ারি। ৮ জানুয়ারি থেকে আপনাদের ভবিষৎ প্রজন্মের সব দায়িত্ব আমি নেব। আপনারা যদি ভুল করেন, আর একটি মাশরাফী আসবে না—যে অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলবে। এরপর তিনি চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের ফেদী বাজার, চালিতাতলা বাজার ও রতডাঙ্গা বাজারে পথসভা করেন। এ সময় মাশরাফীর সঙ্গে ছিলেন আউডিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম পলাশ, চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমানসহ দলীয় নেতাকর্মীরা। 
০২ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:০৪
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়