• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo
জুমাতুল বিদার গুরুত্ব ও ফজিলত
রমজান মাসের শেষ দশকের বিদায়কালীন শুক্রবার তথা শেষ জুমার দিন মুসলিম বিশ্বে ‘জুমাতুল বিদা’ নামে পরিচিত। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুমিন বান্দার জন্য বিশেষ দিন হিসেবে জুমার দিনকে নির্ধারণ করেছেন এবং বিশেষ মাস হিসেবে রমজান মাসকে নির্ধারণ করেছেন। আর ‘জুমা’ এবং ‘রমজান’ যদি একত্র হয়ে যায়, তাহলে এর দ্বিগুণ মর্যাদা যোগ হয়। তন্মধ্যে শেষ জুমা বা বিদায়ী জুমা বিশেষ গুরুত্ববহ। পবিত্র রমজানের শেষ জুমার দিনটি আমাদের সমাজে ‘জুমাতুল বিদা’ নামে পরিচিত। যদিও পরিভাষাটি কোরআন বা হাদিসের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায় না। তারপরও মোবারক মাস রমজানের শেষ জুমার দিন হিসেবে এর গুরুত্ব কম নয়। রমজান আর জুমা একত্রে মিলিত হয়ে দিনটিকে করে তুলেছে সীমাহীন মহিমাময়। তাই জুমাতুল বিদায় প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের বিশেষ তৎপরতা লক্ষ করা যায়। মসজিদে জামাতের সঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করা এবং বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে মহান আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা ও নিজের আত্মার আকুতি দয়াময় প্রভুর দরবারে পেশ করাই যেন এদিনে সব মুসলমানের পরম আগ্রহের বিষয়। রমজান মাস সীমাহীন ফজিলতের মাস এবং এটি উম্মতে মোহাম্মাদীর জন্য মহান আল্লাহর বিশেষ উপহারস্বরূপ। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই তোমাদের রব বলেছেন, বনি আদমের প্রতিটি আমল দশ থেকে সাতশো গুন বৃদ্ধি করা হয়, কিন্তু রোজা ভিন্ন (অর্থাৎ রোজার সওয়াবের কোন সীমা নেই)। কেননা রোজা শুধুই আমার জন্য, আর আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব। আর নিশ্চয়ই রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মেশক আম্বারের চেয়েও বেশি প্রিয়। তোমাদের কারও রোজা থাকা অবস্থায় যদি কেউ তার সঙ্গে জাহেলের মতো আচরণ করে তাহলে সে বলে দেবে, আমি একজন রোজাদার। (বোখারি, হাদিস: ৫৯২৭)।  আর জুমার দিনের মাহাত্ম্য সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সূর্যোদয়ের মাধ্যমে যে দিনগুলো হয় তার মধ্যে সর্বোত্তম দিন হলো জুমার দিন। এই দিনে হজরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং এই দিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিল এবং এই দিনেই তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল। আর এদিনের মধ্যে এমন একটি সময় আছে, যখন কোনো মুসলমান নামাজরত অবস্থায় দোয়া করলে অবশ্যই তার দোয়া কবুল করা হয়। (তিরমিজি, হাদিস: ৪৯১)। রমজান মাসে রোজা অবস্থায় জুমার দিনের নিশ্চিত দোয়া কবুলের শেষ সুযোগ হিসেবে জুমাতুল বিদা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জুমার দিনের কিছু সুন্নত আমল রয়েছে। যেমন (১) সাবান দিয়ে ভালো করে গোসল করতে হবে (২) নতুন বা উত্তম জামাকাপড় পরতে হবে (৩) আতর তথা সুগন্ধি ব্যবহার করতে হবে (৪) হেঁটে মসজিদে যেতে হবে (৫) আগে আগে মসজিদে প্রবেশ করতে হবে (৬) ইমামের কাছাকাছি জায়গায় বসতে হবে। (৭) ইমামের খুতবা মনোযোগসহকারে শুনতে হবে (৮) বেশি বেশি দরুদ শরিফ পাঠ করতে হবে (৯) কাউকে কষ্ট দেওয়া যাবে না, কোনো অনর্থক কাজ করা যাবে না। হজরত আওস ইবনে আওস আস-সাকাফি (রা.) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি জুমার দিনে ভালো করে গোসল করবে এবং আগে আগে হেঁটে মসজিদে যাবে এবং ইমামের কাছাকাছি বসে খুতবা মনোযোগসহকারে শুনবে আর কোনো রকম অনর্থক কাজ করবে না তাকে তার প্রতিটি কদমের বিনিময়ে লাগাতার এক বছর নামাজ ও রোজার সওয়াব দান করা হবে। (সুনানে ইবনে মাযা, হাদিস : ১০৮৭)। ইতিহাস থেকে জানা যায়, রমজান মাসের শেষ শুক্রবার হজরত সুলায়মান (আ.) জেরুজালেম নগরী প্রতিষ্ঠা করেন এবং মুসলমানদের প্রথম কিবলা ‘মসজিদ আল-আকসা’ প্রতিষ্ঠা করেন। এ জন্য প্রতি বছর সারা বিশ্বের মুসলমান রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে ‘আল কুদস’ দিবস হিসাবে পালন করেন।
০৫ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৯

ফিতরা প্রদানের গুরুত্ব ও ফজিলত
জাকাতের মতো একটি আর্থিক ইবাদত হলো ফিতরা বা সদকাতুল ফিতর। ‘সদকাতুল ফিতর’ দুটি আরবি শব্দ। সদকা মানে দান, আর ফিতর মানে রোজার সমাপন বা ঈদুল ফিতর। অর্থাৎ ঈদুল ফিতরের দিন আদায় করা সদকাকেই সদকাতুল ফিতর বলা হয়। ফিতরা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে না থাকলেও এটির গুরুত্বও অনেক। জাকাত অর্জিত সম্পদের পবিত্রতা রক্ষার জন্য দেওয়া হয় আর ফিতরা রমজান মাসে রোজাদরদের ভুল-ত্রুটির কাফ্ফারা ও সাদাকাহ সাদাকাহ হিসেবে দেওয়া হয়। সদকাতুল ফিতর মুমিনজীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। রমজানের সিয়াম সাধনা শেষে আসে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদুল ফিতরের আগেই সাদকায়ে ফিতর দেওয়া জরুরি। ঈদের আনন্দ ধনী-গরিব সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে এবং এ আনন্দে যেন মুসলিম জাতির প্রতিটি সদস্য শরিক হতে পারে এ জন্য ওয়াজিব করা হয়েছে সদকাতুল ফিতর। রোজা একটি দৈহিক ইবাদত হলেও তার পূর্ণতা সাধিত হয় সদাকাতুল ফিতর আদায়ের মাধ্যমে। সাদকায়ে ফিতর আদায় করা মুমিনের জন্য আল্লাহ কর্তৃক অত্যাবশ্যকীয় বিধান। হজরত আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকাতুল ফিতর অপরিহার্য করেছেন অনর্থক ও অশ্লীল কথা-বার্তা দ্বারা সিয়ামের যে ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়েছে তা থেকে পবিত্র করা এবং মিসকীনদের খাদ্য প্রদানের জন্য। ঈদের নামাজের পূর্বে আদায় করলে তা যাকাতুল ফিতর হিসেবে গণ্য হবে। আর ঈদের নামাজের পর আদায় করলে তা অন্যান্য সাধারণ দানের মতো একটি দান হবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৬০৯; ইবন মাজাহ, হাদিস : ১৮২৭; মুস্তাদরাকে হাকেম; ১/৪০) সাদকায়ে ফিতর সাদকায়ে ফিতর হলো- রোজা খোলার সাদকা বা দান। সাদকায়ে ফিতর এমন দানকে বলা হয়, যা পুরো রমজান মাস রোজা রাখার পর ঈদের দিন সব সামর্থ্যবানদের জন্য আদায় করা আবশ্যক। এ বিশেষ দান দিয়েই গরিব-অসহায় মানুষ ঈদের আনন্দে মেতে ওঠবে। ফিতরার নিসাব যার মালিকানায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ও ঋণ ছাড়া সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা কিংবা এর সমমূল্য কোন সম্পদ বা টাকা থাকে, তাহলে তার ওপর সদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব। সদকাতুল ফিতর উত্তম হলো ঈদের নামাজের আগে আদায় করে দেয়া। কেননা রাসুল (সা.) ঈদগাহে যাওয়ার আগেই সদকাতুল ফিতর আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত এমন অভাবী লোকদের সদকাতুল ফিতর দিতে হবে। একজন দরিদ্র মানুষকে একাধিক ফিতর দেওয়া যেমন জায়েজ, তেমনি একটি ফিতরা বণ্টন করে একাধিক মানুষকে দেয়াও জায়েজ। ফিতরা আদায়ের ফজিলত হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলিমদের স্বাধীন ও ক্রীতদাস পুরুষ ও নারী এবং ছোট ও বড় সবার জন্য এক সা’ (প্রায় সাড়ে ৩ কেজি) খেজুর বা যব খাদ্য (আদায়) ফরজ করেছেন। (বুখারি, মুসলিম) সাকদায়ে ফিতর দ্বারা কুরআনুল কারিমে পরিশুদ্ধ হওয়ার কথা বুঝানো হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন- নিশ্চয় সাফল্য লাভ করবে সে, যে পরিশুদ্ধ হয়। (সুরা আলা : আয়াত ১৪) মুফাসসিরিনের কেরামের মতে, এ পরিশুদ্ধ দ্বারা সাদকায়ে ফিতরকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে। অর্থাৎ যারা সাদকায়ে ফিতর আদায় করবেন তারাই লাভ করবেন সফলতা। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাদাক্বাতুল ফিতরকে অপরিহার্য করেছেন, অনর্থক অশালীন কথা ও কাজে রোজার যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণের জন্য এবং নিঃস্ব লোকের আহার যোগানোর জন্য। (আবু দাউদ) হজরত জারির রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, রামজানের রোজা সাদকাতুল ফিতর আদায় করার পূর্ব পর্যন্ত আসমান-জমিনের মাঝে ঝুলন্ত থাকে। (তারগিব ওয়াত তারহিব)
২৪ মার্চ ২০২৪, ১৫:১৪

রমজানে মেসওয়াকের গুরুত্ব ও ফজিলত
মেসওয়াক হলো মুসলমানদের দাঁত মাজার উপকরণ যা একটি গাছের ডাল, কাঠ বা শিকড়ও হতে পারে। এটি মুখের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের সুন্নাহ পদ্ধতি। একে অনেক ঐতিহাসিকেরা ব্রাশের প্রাথমিক রূপ মনে করেন। কারণ, রাসুল (সা.)-এর যুগে এটিই ছিল দাঁত মাজার একমাত্র মাধ্যম। ইসলামে মেসওয়াক একটি বিশেষ স্থান দখল করে রয়েছে। অযু ও গোসলের পূর্বে মেসওয়াক করা সুন্নত। অন্যান্য সময় মোস্তাহাব। এছাড়া যেকোন ভালো কাজের পূর্বে নবীজি মেসওয়াক করতেন।   রাসুলু (সা.) বলেন, ‘এমনটি কখনও হয়নি, জিবরাইল (আ.) আমার কাছে এসেছেন আর আমাকে মেসওয়াকের আদেশ করেননি। এতে আমার আশঙ্কা হচ্ছিল যে, (বেশি ব্যবহারের ফলে) আমার মুখের অগ্রভাগ ক্ষয় না করে ফেলি।’ (মুসনাদে আহমদ: ২২২৬৯)  হজরত আয়েশা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মেসওয়াক মুখের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মাধ্যম ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উপায়।’ (নাসায়ি: ৫) অন্য হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলু (সা.) বলেছেন, ‘যদি আমি আমার উম্মতের ওপর কষ্ট হওয়ার আশঙ্কা না করতাম, তাহলে তাদের প্রত্যেক নামাজের সময় মেসওয়াক করার আদেশ দিতাম।’ (বুখারি: ৮৮৭) রোজার দিনের যেকোনো সময় মেসওয়াক করা যাবে। হাসান (রহ) বলেন, ‘রোজা অবস্থায় দিনের শেষে মেসওয়াক করতে কোনো অসুবিধা নেই। মেসওয়াক পবিত্রতার মাধ্যম। অতএব দিনের শুরুতে এবং শেষেও মেসওয়াক করো’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজজাক: ৪/২০২) আল্লামা ইবনে আবেদীন শামি (রহ.) উল্লেখ করেছেন, ‘মেসওয়াকের উপকারিতা সত্তরেরও অধিক। তন্মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র উপকার হচ্ছে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয় আর সর্বোচ্চ উপকার হচ্ছে মেসওয়াক করলে মৃত্যুর সময় কালিমা নসিব হয়।’ (ফতোয়ায়ে শামি: ১/২৩৯) মেসওয়াকের রয়েছে অনন্য উপকারী উপাদান। যেমন- ট্রাইমিথাইল অ্যামিন, সালভাডোরাইন, অ্যালকালয়েড, ফ্লোরাইড, সিলিকা, সালফার, ভিটামিন সি, ফ্লেভোনয়েডস এবং স্টেরলস পদার্থ। তাছাড়া প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে মিসওয়াকে। যা শরীরের জন্য অবশ্য প্রয়োজনীয়। মিসওয়াকের আশগুলো খুব নরম এবং মসৃণ হওয়ায় দাঁতের জন্য তা বেশ আরামদায়কও। নিয়মিত মিসওয়াক করলে মুখের ভেতর সৃষ্ট হওয়া ক্ষত বা ঘা দূর দূর হয়। এর আরেকটি উপকার হলো মুখের দুর্গন্ধ দূর করা। মেসওয়াক কেমন হবে রাসুল (সা.) জাইতুন ও খেজুর গাছের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করেছেন। তাই এ দুটো হলে উত্তম। এছাড়া তিক্তস্বাদ যুক্ত গাছের ডাল দিয়েও মিসওয়াক করা যাবে। মেসওয়াক নিজ হাতের আঙুলের মতো মোটা ও এক বিঘত পরিমাণ লম্বা হওয়া উচিত। অজুতে হাত ধোয়ার পর কুলি করার পূর্বে মেসওয়াক করা উত্তম। মেসওয়াকের পদ্ধতি মিসওয়াক ধরার সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি হলো, ডান হাতের কনিষ্ঠাঙ্গুলি মেসওয়াকের নিচে থাকবে। মধ্যমা ও তর্জনী ওপরে ও বৃদ্ধাঙ্গুলি নিচে রেখে মেসওয়াক ধরা। মুখের ডান দিক থেকে শুরু করা এবং ওপর থেকে নিচে মেসওয়াক করা। আড়াআড়িভাবে না করা।  মেসওয়াকের ক্ষেত্রে যেসব জিনিস থেকে বিরত থাকা জরুরি আলেমদের পরামর্শ মেনে রোজার বিশেষ ফজিলত অর্জনে টুথপেস্ট, টুথ পাউডার ব্যবহার থেকে বিরত থাকা জরুরি। তবে রমজানে দিনের বেলা টুথপেস্ট বা মাজন ব্যবহার করতে না পারলেও দাঁত ও মুখের যত্ন নেওয়া আবশ্যক। কারণ, দুই দাঁতের মাঝখানে খাবার জমে থাকলে ডেন্টাল ক্যারিজ ও মাড়ির প্রদাহ হওয়ার সম্ভব থাকে। এজন্য রমজান মাসে ইফতার ও সেহরির পর মানসম্মত টুথপেস্ট ও ব্রাশ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করার পরামর্শ দেন ডেন্টিসরা। 
১০ মার্চ ২০২৪, ১১:৩০

আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ইতিহাস, গুরুত্ব
প্রতি বছর মার্চ মাসের ৮ তারিখ বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস। লিঙ্গবৈষম্য দূর করে নারীর প্রতি সম্মান ও সমানাধিকার জানাতেই দিবসটি উদযাপিত হয়। চলতি বছরেও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না। এটি এমন একটা দিন, যা সূচনাপর্ব থেকে জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে নারীদের সম্মানের কথা মনে করিয়ে দেয়। এমনকি প্রতি বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের একটি থিম থাকে। কিন্তু আমরা এখনো অনেকেই এই নারী দিবসের এ বছরের থিম, ইতিহাস ও গুরুত্ব সম্পর্কে জানি না। নারী দিবস উপলক্ষে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের বিস্তর ইতিহাস। চলুন, জেনে নেওয়া যাক দিবসটির পিছনের এসব খুঁটিনাটি তথ্য।  যেভাবে শুরু হলো : এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে ৮ মার্চকে নারী দিবস হিসেবে পালন করে আসছে সারাবিশ্বের মানুষ।আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সংক্ষেপে আইডব্লিউডি বলা হয়ে থাকে। শ্রমিক আন্দোলন থেকেই উদ্ভূত হয় নারী দিবসের ধারণা। পরবর্তীতে দিনটি জাতিসংঘের স্বীকৃত পায় এবং প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হতে থাকে।   ১৯০৮ সালে কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনা, বেতন বৃদ্ধি এবং ভোটাধিকারের দাবিতে প্রায় ১৫ হাজার নারী নিউইয়র্ক শহরের রাস্তায় আন্দোলনে নেমেছিল। মূলত, এই আন্দোলনের মাঝেই লুকিয়ে ছিল আনুষ্ঠানিকভাবে নারী দিবস পালনের বীজ। এই আন্দোলনের এক বছর পর আমেরিকার সোশ্যালিস্ট পার্টি সর্বপ্রথম জাতীয় নারী দিবস ঘোষণা করে। জাতীয় পর্যায় থেকে দিনটিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে পরিণত করার প্রথম উদ্যোগটি নিয়েছিলেন কমিউনিস্ট ও নারী অধিকার কর্মী ক্লারা জেটকিন। ১৯১০ সালে তিনি কোপেনহেগেনে কর্মজীবী নারীদের এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ ধারণার প্রস্তাব দেন। সেই সম্মেলনে উপস্থিত ১৭ দেশের ১০০ জন নারীর সকলেই তার প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গ্রহণ করেন। এরপরের বছর, অর্থাৎ ১৯১১ সালে অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি এবং সুইজারল্যান্ডে প্রথমবারের মতো পালিত হয়েছিল আন্তর্জাতিক নারী দিবস। ২০১১ সালে পালিত হয় দিনটির শতবর্ষ। প্রতি বছর একটু একটু করে এগিয়ে ২০২৩ সালে আজ আমরা পালন করছি ১১২তম আন্তর্জাতিক নারী দিবস। কেন ৮ মার্চ? আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ধারণাটি যখন ক্লারা উত্থাপন করেন, তখন তিনি নির্দিষ্ট কোনো তারিখ উল্লেখ করেননি। ১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লবের আগ পর্যন্ত দিনটি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দিষ্ট করা যায়নি বলেই উল্লেখ রয়েছে বিবিসির প্রতিবেদনে। একই বছর রুশ নারীরা 'রুটি এবং শান্তি'-এর দাবিতে তৎকালীন জারের (রাশিয়ার সম্রাট) বিরুদ্ধে ধর্মঘট শুরু করেন; এর ৪ দিনের মাথায় গদি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল জার এবং জারের গদিতে বসা অস্থায়ী সরকার তখন নারীদের আনুষ্ঠানিক ভোটাধিকার দিয়েছিলেন। সে সময়ে রাশিয়ায় প্রচলিত জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, নারীদের ধর্মঘট শুরু হয়েছিল ২৩ ফেব্রুয়ারি, রোববার। আর গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে এই দিনটি ছিল ৮ মার্চ; পরবর্তীতে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ৮ মার্চকেই আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নারী দিবসের প্রতীক কেন বেগুনি? আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ওয়েবসাইট অনুসারে বেগুনি, সবুজ এবং সাদা হলো আন্তর্জাতিক নারী দিবসের রঙ। "বেগুনি রঙ দিয়ে ন্যায়বিচার এবং মর্যাদাকে বোঝানো হয়। সবুজ আশার প্রতীক; আর সাদা বিশুদ্ধতার। যদিও এই ধারণা নিয়ে বিতর্কিত রয়েছে, ১৯০৮ সালে যুক্তরাজ্যের উইমেন'স সোশ্যাল অ্যান্ড পলিটিক্যাল ইউনিয়ন (ডব্লিউএসপিইউ) এই রঙগুলোকেই নির্দিষ্ট করেছিল," ওয়েবসাইট অনুসারে। নারী দিবসের মতো কি আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবসও আছে? এ প্রশ্ন অনেকেরই। উত্তর হলো, পুরুষ দিবসও আছে; আর সেটি ১৯ নভেম্বর। ১৯৯০ সালে প্রথম পুরুষ দিবস পালিত হয়; তবে এটি জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত নয়। প্রতিবছর যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশে দিনটি উদযাপন করা হয়ে থাকে। কীভাবে পালিত হয় অন্তর্জাতিক নারী দিবস? রাশিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশেই আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ৮ মার্চের আগে-পরের ৩/৪ দিন এসব দেশে ফুলের বিক্রি বেড়ে হয় প্রায় দ্বিগুণ।  চীনের অনেক স্টেটে কাউন্সিলের বিবেচনায় ৮ মার্চ নারীদেরকে অর্ধেক দিনের ছুটি দেওয়া হয়। ইতালিতে দিনটি নারীদের ফুল দেওয়ার মাধ্যমে উদযাপিত হয়। ফুলের শুভেচ্ছা জানানোর এ ঐতিহ্যের উৎপত্তি অস্পষ্ট; তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এটি রোমে শুরু হয়েছিল বলে মনে করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মার্চ মাসকে নারীদের ইতিহাসের মাস বলে মনে করা হয়। প্রতিবছর আমেরিকান নারীদের কৃতিত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ মার্কিন প্রেসিডেন্ট একটি ঘোষণাপত্র জারি করেন এই দিনে। নারী দিবস কেন প্রয়োজন? গেলো বছর আফগানিস্তান, ইরান, ইউক্রেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো অনেক দেশে নারীরা তাদের নিজ নিজ দেশে যুদ্ধ, সহিংসতা এবং সরকারি নীতি পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে নিজেদের অধিকারের জন্য লড়াই করে গেছেন এবং এখনও করছেন। আফগানিস্তানে ফের তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেখানে নারীদের জন্য উচ্চাশিক্ষা ও চাকরি নিষিদ্ধ করা হয়; এমনকি বাড়ির বাইরে যেতে হলেও বৈধ পুরুষ সঙ্গী নিয়ে যাওয়ার নিয়ম জারি করে তালেবান সরকার। ইরানেও নারী অধিকারের বিষয়টি সম্প্রতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গেল বছর সেপ্টেম্বরে ঠিকভাবে হিজাব না পরার অভিযোগে ২২ বছরের তরুণী মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করে তেহরানের নৈতিকতা বিষয়ক পুলিশ। এরপর পুলিশি হেফাজতেই তার মৃত্যু হলে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। সেই বিক্ষোভে নারীরা নিজেদের মাথার স্কার্ক বা হিজাব খুলে, আগুনে পুড়িয়ে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। সেই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন ইরানের পুরুষরাও। শুধু মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেই নয়, পশ্চিমের অনেক দেশেও অধিকারের জন্য এখনও লড়ছেন নারীরা। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বজুড়ে যে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, অপুষ্টি, দারিদ্র্য এবং লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার সৃষ্টি হয়েছে, তার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হলো নারী। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রও ও মেক্সিকোতে সম্প্রতি নারীদের গর্ভপাতের অধিকার নিয়েও চলেছে বেশ হট্টগোল। মূলত, এসব বাধাবিপত্তি পেরিয়ে আগামী দিনগুলোতে নারীর সুন্দর জীবনের নিশ্চয়তার জন্যই আনুষ্ঠানিকভাবে এই নারী দিবসের প্রয়োজন এখনও রয়েছে বলে মনে করেন বিশ্বের নারী ও মানবাধিকার কর্মীরা।   গুরুত্ব:  লিঙ্গবৈষম্য দূর করার জন্য এই দিনটি পালিত হয়। শিল্প-সাহিত্যসহ সব ধরনের ক্ষেত্রে এবং সমাজের সমস্ত কাজে নারীদের অবদানকে স্বীকৃতি দিতেই এই দিনটি পালিত হয়। 
০৭ মার্চ ২০২৪, ১৪:৫৬

নদী রক্ষার বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি : নৌপ্রতিমন্ত্রী
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নদী রক্ষার সঙ্গে জলবায়ু পরিবেশ সবকিছুই যুক্ত। তাই নদী রক্ষার বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। সোমবার (৪ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের ষষ্ঠ কার্য অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয়ের যে প্রকল্পগুলো আছে সেগুলোর পরিচালক থাকে। এর বাইরে জেলা প্রশাসন এবং বিভাগীয় প্রশাসনও যেন সেগুলো দেখভাল করেন সেজন্য প্রধানমন্ত্রী গতকাল (রোববার) একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা আজকের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা প্রকল্প নিয়ে নেই। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক সময় স্থানীয়ভাবে প্রশাসন সেখানে সমস্যার মধ্যে পড়ে। এটার যেন সমন্বয় হয় এমন একটি বিষয় ছিল। প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ডিসিরাও সমস্যায় পড়ে সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে খালিদ মাহমুদ বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন তো ডিসিরা করেন না। বাস্তবায়ন সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা জেলা প্রশাসককে সেটি দেখভাল করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ডিসিরা স্থানীয় পর্যায়ে অনেকগুলো কাজ করেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পগুলোতে বিশেষ নজরদারি রাখবেন তারা। তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রকল্প পরিচালক আছে এবং বাস্তবায়নের জন্য একটা টিম থাকে তারা বাস্তবায়ন করে। সেখানে প্রকল্পটির সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা সেটা জেলা প্রশাসকরা ক্রস চেক করবে। যেমন- প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনও ধরনের দুর্বলতা দেখাচ্ছে কিনা এটা যেন স্থানীয় প্রশাসন দেখভাল করে। বিভিন্ন জায়গায় নদী দখল বড় সমস্যা যা স্থানীয় রাজনীতিবিদ বা প্রভাবশালী যারা আছেন তাদের প্ররোচনায় হয় এবং কখনও কখনও প্রশাসনের কিছু করার থাকে না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা তো অতীত। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশকেই তো দখল করে ফেলা হয়েছিল। বাংলাদেশের গতিপথ পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে বাংলাদেশকে আমরা পেয়েছিলাম ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে সেক্ষেত্রে নদীও রক্ষা পায়নি। কাজেই সে জায়গা থেকে আমরা নতুন একটি সম্ভাবনার জায়গায় এসেছি। নদী দখল করার যে চিন্তা-ভাবনা মানুষের ছিল; সেখান থেকে দূরে সরে গেছে।  তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের শক্ত অবস্থানের কারণে এই আমূল-পরিবর্তন হয়েছে। সেখানে আপনারা গণমাধ্যম আমাদের সঙ্গে ছিলেন। গণমাধ্যমের সহায়তা পেয়েছি এবং আমাদের এই কঠোর অবস্থানটা এখনও চলমান আছে। এই জায়গায় আমরা কোনও ধরনের কম্প্রোমাইজ করব না।
০৪ মার্চ ২০২৪, ২৩:৪৪

জুমার দিনে কোন বিশেষ আমলে গুরুত্ব দিয়েছেন নবীজি (স.)
প্রত্যেক মুমিন বান্দার কাছে একটি কাঙ্ক্ষিত দিন জুমাবার । সৃষ্টিজগতের শুরু থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত দিনটি। সপ্তাহের বিশেষ এ দিনের জন্য বিশেষ কিছু আমল আছে, যেগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা অনেক বেশি পরিমাণ সওয়াব দান করেন তার বান্দাকে। এর মধ্যে দরুদ পাঠের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন নবীজি (স.)।  নবীজির ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা জুমার দিনের বিশেষ আমল। রাসুল (স.) এ সম্পর্কে বলেন, ‘দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিনই সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। এই দিনে শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়া হবে। এই দিনে সমস্ত সৃষ্টিকে বেহুঁশ করা হবে। অতএব তোমরা এই দিনে আমার ওপর অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করো। কেননা তোমাদের দরুদ আমার সম্মুখে পেশ করা হয়ে থাকে।’ (আবু দাউদ: ১০৪৭) আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত অন্য হাদিসে নবী (স.) বলেন, ‘তোমরা জুমার দিনে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো। কারণ জিবরাইল (আ.) এইমাত্র আল্লাহ তা'আলার বাণী নিয়ে হাজির হয়েছেন। আল্লাহ তা'আলা বলেন, ‘পৃথিবীতে যখন কোনও মুসলমান আপনার ওপর একবার দরুদ পাঠ করে, আমি তার ওপর ১০ বার রহমত নাজিল করি এবং আমার সব ফেরেশতা তার জন্য ১০ বার ইস্তেগফার করে।’ (তারগিব: ৩/২৯৯) আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (স.) বলেন, ‘আমার ওপর জুমার দিন বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো। কারণ আমার উম্মতের দরুদ জুমার দিন আমার কাছে পৌঁছানো হয়। যে ব্যক্তি আমার ওপর সবচেয়ে বেশি দরুদ পাঠাবে, সে ব্যক্তি কেয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে নিকটতম হবে।’ (তারগিব: ১৫৭) আলী (রা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নবী করিম (স.)-এর ওপর জুমার দিন ১০০ বার দরুদ পাঠ করে, সে কেয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উঠবে যে, তার চেহারায় নূরের জ্যোতি দেখে লোকরা বলাবলি করতে থাকবে এই ব্যক্তি কী আমল করেছিল!’ (কানজুল উম্মাল: ১৭৪) 
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:৩৬

মাতৃভাষার গুরুত্ব আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরায় অস্ট্রেলিয়ার প্রশংসা
মাতৃভাষার গুরুত্ব আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরায় বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করলেন অস্ট্রেলিয়ান ক্যাপিটাল টেরিটরি (এসিটি) সরকারের মন্ত্রীসহ বহুভাষা ও সংস্কৃতির ব্যক্তিরা। এ উদ্যোগ সকল জাতির ভাষা, আত্মপরিচয় ও নিজস্ব সংস্কৃতির স্বীকৃতি লাভে সহায়ক হবে। অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় বহু ভাষাভাষী ও সংস্কৃতির ব্যক্তিদের অংশগ্রহণে আজ পালিত হয় শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এসময় বাংলাদেশের হাইকমিশনার আল্লামা সিদ্দীকী বলেন, পৃথিবীর সংখ্যালঘু ব্যক্তিদের ভাষা এখন ঝুঁকির সম্মুখীন। গত দুই শতাব্দীতে প্রায় দু’হাজার ভাষা বিলুপ্ত হয়েছে। যেকোনো ভাষার প্রতিটি শব্দ গভীর মর্মার্থ বহন করে। ভাষা হলো প্রতিটি জাতির সংস্কৃতি, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে ধরে রাখার মাধ্যম। যে কোন ভাষা বিলোপ হলে মানুষের অতীত স্মৃতি, সংগ্রামের ইতিহাস এবং আবিষ্কৃত নতুন প্রযুক্তিসহ সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক হারিয়ে যায়। বাংলাদেশের হাইকমিশনার বিশ্বের প্রতিটি ভাষা সংরক্ষণের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ সময় ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত দীর্ঘ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্ভীক নেতৃত্বের কথা স্মরণ করেন তিনি। রাজধানী ক্যানবেরায় প্রভাত ফেরীসহ বাংলাদেশ হাইকমিশনের এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন এসিটি সরকারের পরিবেশ মন্ত্রী রেবেকা ভাসারতি, বহু সংস্কৃতি বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী পিটার কেইন, অস্ট্রেলিয়ায় ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত ড. সিসো প্রামানোসহ কূটনৈতিক, অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধি, বিভিন্ন ভাষা-ভাষীদের প্রতিনিধি, অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী ও অভিবাসীগণ এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ ও তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ। অংশগ্রহণকারীরা অস্থায়ী শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় ভাষা শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এছাড়া এসিটি সরকারের পরিবেশ মন্ত্রী, ছায়ামন্ত্রী এবং অস্ট্রেলিয়ায় ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন। সকাল ৮ টায় হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকী জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। এসময় দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। সন্ধ্যায় দেড় শতাধিক অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ও অভিবাসী বাংলাদেশির অংশগ্রহণে বাংলাদেশ হাইকমিশনে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় হাইকমিশনারসহ অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা শেষে ভাষা শহিদদের স্মরণে ও বাংলাদেশকে উপজীব্য করে স্থানীয় বাংলাদেশি শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া নিজ নিজ ধর্মমত ও প্রথা মোতাবেক ভাষা শহিদদের উদ্দেশ্যে মৌন প্রার্থনা এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:৪৪

ইসলামে মাতৃভাষার গুরুত্ব ও তাৎপর্য
মায়ের ভাষার কথা বলা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। মাতৃভাষা মহান আল্লাহর অপার দান। এ ভাষা দিয়ে মানুষ নিজের মনের ভাষা প্রকাশ করে। তাই ইসলাম মায়ের প্রতি যেমন অকৃত্রিম শ্রদ্ধাবোধের শিক্ষা দিয়েছে, তেমনি মাতৃভাষার প্রতিও অত্যধিক গুরুত্ব দিয়েছে। আল্লাহ তাআলা মানুষকে গোমরাহী থেকে সত্যের পথ দেখানোর জন্য যুগে যুগে অগণিত অসংখ্য নবি রাসুল প্রেরণ করেছেন। যাদের প্রত্যেককেই তিনি স্বজাতির ভাষায় দান করেছেন আসমানি কিতাব। যাতে করে মানুষের মাঝে তাওহিদের প্রচার-প্রসারের কাজ সহজ হয়। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেন, আমি রাসূলগণকে তাদের স্বজাতির ভাষাভাষী করে প্রেরণ করেছি, যাতে তাদের (দ্বীন) স্পষ্টভাবে বুঝতে পারেন। (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৪) মানুষের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়ার এবং মনের ভাব প্রকাশ করার অন্যতম প্রধান মাধ্যম হলো ভাষা। তাইতো ভৌগলিক অঞ্চলভেদে প্রত্যেক জাতিগোষ্ঠীর জন্য রয়েছে আলাদা আলাদ ভাষা। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা সুরা রূমের ২২ নং আয়াতে উল্লেখ করেন, ‘আর মহান আল্লাহর নিদর্শসমূহের হতে (একটি নিদর্শন হলো) আসমান ও জমিন সৃষ্টি এবং মানুষের ভাষা ও বর্ণের ভিন্নতা। এর মধ্যে জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য উপদেশ রয়েছে।’ বাঙালি ও বাংলাদেশীদের মুখের ভাষা, প্রাণের ভাষা, আত্মার বন্ধনের ভাষা তথা রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো বাংলা ভাষা। যে ভাষার জন্য ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানির হানাদার বাহিনীর অস্ত্রের মুখে গর্জে উঠেছিল এদেশের সূর্য সন্তান সালাম, রফিক ও জাব্বারদের মতো একদল দেশপ্রেমী মর্দে মুজাহিদ। যাদের অবদানে আজ বাংলা ভাষায় ইসলাম ও মুসলিম তাহজিদ তমদ্দুনের দাওয়াত, প্রচার-প্রসারে আমরা বাংলা ভাষাভাষীদের নিকট দ্বীনের দাওয়াত ও কুরআনের বাণী পৌঁছাতে সক্ষম হচ্ছি। তাই বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অনুশীলন চর্চায় বিকল্প নেই। ভাষার গুরুত্ব উপলব্দি করেই আল্লাহ তাআলার পয়গাম্বর হজরত মুসা আলাইহিস সালাম তার ভাই হজরত হারুন আলাইহিস সালামকে নিজের সঙ্গি করার জন্য আল্লাহর কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন এই কারণে যে, সুন্দর ও প্রাঞ্জল ভাষায় আল্লাহর একত্ববাদ ও দ্বীনের বক্তব্যকে উত্তম বচন ভঙ্গিতে তৎকালীন সম্রাট ফিরাউন ও তার সঙ্গিদের নিকট তুলে ধরবে। ভাষার গুরুত্ব বুঝাতে হজরত মুসা আলাইহিস সালামের বক্তব্যকে আল্লাহ তাআলা তা কুরআনে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার ভাই হারূন, তিনি আমার থেকে অনেক বেশি প্রাঞ্জল ভাষী। তাই আপনি তাকে আমার সহযোগী করে প্রেরণ করুন; যাতে সে আমাকে (দাওয়াতের ক্ষেত্রে তার প্রাঞ্জল ভাষার দ্বারা) সত্যায়িত করে। কেননা আমি আশঙ্কা করছি (আমার বক্তব্য সত্য হওয়া সত্বেও) তারা আমাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করবে।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ৩৪) ভাষার গুরুত্ব অত্যাধিক হওয়ায় আল্লাহ তাআলা হজরত মুসা আলাইহিস সালামের উপর তাওরাত অবতীর্ণ করেছেন হিব্রু ভাষায়, ইউনানি ভাষায় যাবুর অবতীর্ণ করেছেন পয়গাম্বর হজরত দাউদ আলাইহিস সালামের উপর, আর হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের উপর ইঞ্জিল অবতীর্ণ করেছেন সুরিয়ানি ভাষায়। সর্বোপরি সমগ্র জাতির হেদায়েতের জন্য আলোর দিশারী হিসেবে শেষ নবি ও রাসুল হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর শ্রেষ্ঠ ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কুরআন মাজিদ অবতীর্ণ করেন তার স্বজাতি ভাষা আরবি ভাষায়।  সালাম, রফিক, জাব্বারসহ এদেশের ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল জনতার আত্মত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত ভাষা বাংলা ভাষা। যা আমাদের জন্য মহান রাব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে শ্রেষ্ঠ উপহার ও দান। আর এ বাংলা ভাষায় অনুদিত হয়েছে কুরআনের হাদিসের অগণিত অসংখ্য কপি। রচিত হয়েছে কুরআনে হাদিসের ব্যাখ্যা গ্রন্থসহ অসংখ্য ইসলামি পুস্তকের মহাসম্ভার। যা বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জন্য আল্লাহ অশেষ রহমত। সুতরাং যারা দেশের জন্য বুকের তাঁজা রক্তকে এ জমিন ঢেলে দিয়েছেন, আজকের এই দিনে সেই সকল ভাষা শহীদের রূহের মাগফিরাত কামনা করাও ঈমানের দাবি। আল্লাহ তাআলা সকল ভাষা শহীদদের সর্বোত্তম প্রতিদান দান করুন।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:৫৭

শবেমেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
শবেমেরাজ শব্দটির বাংলা অর্থ ঊর্ধ্ব গমনের রাত। আর ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত সফরকে ‘ইসরা’ এবং মসজিদুল আকসা থেকে সাত আসমান পেরিয়ে আরশে আজিম সফরকে ‘মিরাজ’ বলা হয়। নবুওয়াতের দশম বছর ৬২০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ রজব দিবাগত রাতে আল্লাহর সান্নিধ্যে মিরাজ গমন করেন মহানবি (সা.)। পবিত্র কোরআনের সুরা বনি ইসরাইল ও সুরা নজমের আয়াতে, তাফসিরে এবং সব হাদিস গ্রন্থে মিরাজের ঘটনার বর্ণনা রয়েছে। শবেমেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত শবেমেরাজে ঊর্ধ্বাকাশে ভ্রমণ করে মহানবি হজরত মোহাম্মদ (সা.) আল্লাহ তা’য়ালার সাক্ষাৎ লাভ করেছিলেন। তাই রাতটি মুসলিমদের কাছে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।  তবে এ উপলক্ষে বিশেষ কোনো আমলের কথা ইসলামি শরীয়তে উল্লেখ করা হয়নি। তারপরও এ রাতে ধর্মপ্রাণ মানুষ বিশেষ ইবাদতে লিপ্ত থাকতে পছন্দ করেন। বিশেষত এ রাতকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মসজিদে কিংবা বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে ওয়াজ এবং দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। সারারাত তাসবিহ-তাহলিল পাঠ করেন অনেকে। বিশেষ গুরুত্ব থাকায় আজ রাতে মহান রাব্বুল আলামিনের রহমত কামনায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মসজিদে বা নিজগৃহে সালাত আদায়, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আসকারের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করবেন। অনেকে নফল রোজাও পালন করবেন। রজব মাস আমলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। মহানবি (সা.) এ মাস থেকে রমজানের প্রস্তুতি শুরু করতেন। এ বিষয়ে উম্মে সালমা (রা.) বলেন, নবি করিম (সা.) রমজান মাস ছাড়া সবচেয়ে বেশি রোজা পালন করতেন শাবান মাসে, অতঃপর রজব মাসে।  এ প্রসঙ্গে আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, ‘যখন রজব মাস আসত, তা আমরা নবিজির (স.) আমলের আধিক্য দেখে বুঝতে পারতাম।’  ৬২০ খ্রিস্টাব্দ হজরত মুহাম্মদের (সা.)-এর জন্য দুঃখ ও শোকের বছর ছিল। এ সময় তিনি তার কঠিন সময়ের দুজন প্রিয় ব্যক্তি স্ত্রী খাদিজা (রা.) এবং চাচা আবু তালেবকে হারিয়েছেন। তা ছাড়া ইসলামের দাওয়াত নিয়ে তায়েফ গেলে সেখান থেকেও আশাহত হয়ে ফেরেন। এরপর মহান আল্লাহ ইসরা ও মেরাজের মাধ্যমে প্রিয় রাসুলকে বিশেষভাবে সম্মানিত করেন। এই রাতে প্রিয় নবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দিদার লাভ করেন এবং আল্লাহর কাছ থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান নিয়ে দুনিয়ায় ফিরে আসেন।
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:৫১

এবার পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার
দীর্ঘদিন পরিবেশ অ্যাক্টিভিস্টরা বলছেন, দেশ বাঁচাতে সবার আগে পরিবেশ বাঁচাতে হবে। এনিয়ে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও সমন্বয়হীনতার অভিযোগ করছিলেন তারা। এবারের মন্ত্রিসভা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখায় পরিবেশবাদীদের মধ্যে স্বস্তির ভাব লক্ষ্য করা গেছে। তারা বলছেন, পরিবেশ নিয়ে ভাবলে মানুষ বাঁচবে। এবার মন্ত্রিসভা গঠনের পর থেকেই পরিবেশ নিয়ে কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপের কথা জানা যাচ্ছে গণমাধ্যমে। এরই মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৬ সালের মধ্যে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার ৯০% কমানো হবে। ‘সুস্থ পরিবেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ’ স্লোগান নিয়ে, মন্ত্রণালয় ১০০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করার সময় এই তথ্য জানানো হয়েছে। ২৫ জানুয়ারি সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়কমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। ওই সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ১০০ দিনের কর্মসূচির মধ্যে বায়ুদূষণ, প্লাস্টিক দূষণ, পাহাড় কাটা ও জলাধার ভরাট রোধসহ অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করতে চায় পরিবেশ মন্ত্রণালয়। এর মাধ্যমে বর্তমান সরকারের পাঁচ বছরের কর্মকাণ্ডের একটি শক্তিশালী সূচনাসহ পুরো মেয়াদে কাজ করার একটি কাঠামো তৈরি করা যাবে। প্রতিদিন যেসব প্লাস্টিক ব্যবহার হয় সেগুলোর মধ্যে পরিবেশের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বা সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক। ব্যবহৃত প্লাস্টিক পণ্যের বেশির ভাগই সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক। এসব সাধারণত মাত্র একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া হয়। এই সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক আমাদের প্রতিদিনকার জীবন থেকে শুরু করে দেশের পরিবেশ ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই চ্যালেঞ্জ স্বীকার করে জবাবদিহিতার জায়গা নিশ্চিত করতে ১০০ দিনের এই কর্মসূচির কথা বলেন সাবের হোসেন চৌধুরী। পরে তিনি প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা, জনবল ও প্রশিক্ষণ কাঠামো ঠিক করতে চান। দূষণ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আর বিআরটিএ-র সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যেসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, গবেষক কাজ করছেন তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা হবে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে ইটভাটা ম্যাপিং এবং দূষণ বের করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ড্রোনের মাধ্যমে নদী দূষণ বের করার কথাও বলেছেন মন্ত্রী। সার্বিকভাবে বন, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়ে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, পরিবেশ বিপর্যয়কে মন্ত্রণালয়ের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এখন বায়ু দূষণের প্রথমদিকে থাকে ঢাকা। তার সঙ্গে পানি, প্লাস্টিক ও শব্দ দূষণও মিলিয়ে পরিস্থিতি সত্যিই উদ্বেগজনক।  সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেলিন চৌধুরী বলেন, আমাদের পরিবেশ দূষণের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এখন গঠনমূলক কর্মপরিকল্পনা দরকার। সেদিক থেকে যে উদ্যোগগুলো নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে সেসবের গুরুত্ব আছে। সিঙ্গেল ইউজড প্লাস্টিক প্রাণঘাতি। আমরা দীর্ঘদিন থেকে এটা নিয়ে কথা বলছি। কখনও তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে। এখন যদি শুরু হয় বাস্তবায়ন তাহলে অবশ্যই আগামীতে ভালো কিছু হবে। 
২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:০৮
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়