• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
logo
‌‘যে গণতন্ত্রের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, তা আ.লীগ ধূলিসাৎ করেছে’
যে গণতন্ত্রের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, তা আওয়ামী লীগ সরকার ধূলিসাৎ করেছে বলে মন্তব্য করেছে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম। শনিবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ করেছিলাম গণতন্ত্রের জন্য। কিন্তু দেশে গণতন্ত্র নেই। যা দেশ স্বাধীনের ছয় মাস পরেই বুঝে গিয়েছিলাম আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের কারণে। যে গণতন্ত্রের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, সেই গণতন্ত্র তারা ধূলিসাৎ করেছে। আজ মানুষের স্বাধীনতা নেই, ভোটের অধিকার নেই।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য অনেক আন্দোলন করেছে। তবে আমরা এখনও আশা রাখি যে, তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম, নিশ্চয়ই এখনও মুক্তিযুদ্ধের সেই আকাঙ্ক্ষা ফিরিয়ে আনতে নতুন প্রজন্ম এগিয়ে আসবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্ররা আইয়ুববিরোধী আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধে যে সাহস দেখিয়েছে, তা অবাক করার মতো। কিন্তু দেশের সকল কৃতিত্ব একটি রাজনৈতিক দল নিতে চায়। তারা ছাত্রদের কোনো কৃতিত্ব দিতে চায় না। কিন্তু ছাত্রদের জন্যই ভাষা আন্দোলনে অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় এসেছে।’ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ হালিম, কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যান্য সদস্যসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।  
৩০ মার্চ ২০২৪, ১৯:২৫

বিশ্বজুড়েই গণতন্ত্রের অবনতি
বিশ্বজুড়েই অবনতি ঘটেছে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়। এ পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে গণতন্ত্র সূচকে দুই ধাপ অবনমন হয়েছে বাংলাদেশেরও। সম্প্রতি ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) প্রকাশিত গণতন্ত্র সূচক ২০২৩ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন থেকে বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য।   প্রতিবেদনে ১৬৫টি স্বাধীন রাষ্ট্র ও দু’টি অঞ্চলের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বিভিন্ন রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে ‘পূর্ণ গণতন্ত্র’, ‘ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র’, ‘মিশ্র শাসন ব্যবস্থা’, ‘স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা’ ইত্যাদি বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে এই তালিকায়।  প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গণতন্ত্রের মান কমেছে বিশ্বজুড়েই। যেখানে একদম নিচে অবস্থান করছে উত্তর কোরিয়া, মিয়ানমার ও আফগানিস্তান। আর গণতন্ত্র সূচকে শীর্ষে রয়েছে যথাক্রমে নরওয়ে, নিউজিল্যান্ড ও আইসল্যান্ড।   এদিকে গণতন্ত্র সূচকে গতবারের তুলনায় দুই ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বের ১৬৭টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৭৫তম। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে ভারত ও শ্রীলঙ্কা। সূচকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের অবস্থান ৪১তম। আর শ্রীলঙ্কা আছে ৭০তম অবস্থানে। অন্যদিকে বাংলাদেশের পরে অবস্থান করছে ভূটান (৮১তম), নেপাল (৯৮তম) ও পাকিস্তান (১১৮তম)। ভারতকে রাখা হয়েছে ‘ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র’ বিভাগে। যদিও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অর্থনৈতিক বিকাশের সম্ভাবনার’ জন্য ভারতের গণতন্ত্র সূচকের সামান্য উন্নতি হয়েছে। ভারতের প্রাপ্ত নম্বর ৭ দশমিক ১৮। অন্যদিকে, চীনের অর্থনৈতিক বিকাশের কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হলেও গণতন্ত্র সূচকের তালিকায় তারা তলানির দিকেই। তাদের প্রাপ্ত নম্বর ২ দশমিক ১২, তালিকায় তাদের অবস্থান ১৪৮তম। ইআইইউ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ থেকে ২০২৩-এ বিশ্বে ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের’ সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও গণতন্ত্র সূচকের গড়ে পতন হয়েছে। ২০২২-এ গড় বিশ্বের গণতান্ত্রিক স্কোর ছিল ৫ দশমিক ২৯। কিন্তু ২০২৩-এ সেটি হয়েছে ৫ দশমিক ২৩। পশ্চিম ইউরোপ ছাড়া গোটা বিশ্বেই গণতন্ত্র সূচকের পতন হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে প্রতিবেদনে। গণতন্ত্র সূচকে পশ্চিম ইউরোপ উত্তর আমেরিকাকে পিছনে ফেলে দিয়েছে এবার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লাতিন আমেরিকা, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ, উত্তর আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি সব থেকে উদ্বেগজনক। যে দেশগুলোর গণতান্ত্রিক কাঠামোর উন্নতি হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে গ্রিস (আংশিক গণতন্ত্র থেকে পূর্ণ গণতন্ত্র), পাপুয়া নিউ গিনি ও প্যারাগুয়ে (মিশ্র শাসন ব্যবস্থা থেকে ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র) এবং আঙ্গোলা (স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা থেকে মিশ্র শাসন ব্যবস্থা)।
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:২৬

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের গণতন্ত্রের ব্যবধান যোজন-যোজন : কাদের 
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের গণতন্ত্রের ব্যবধান যোজন-যোজন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।  শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।  এসময় আমরাই গণতন্ত্রের 'ট্রু ফর্ম' অনুসরণ করি- দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, পাকিস্তানের গণতন্ত্র আর বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মধ্যে যোজন-যোজন দূরের ব্যবধান। দুনিয়ার কোনো দেশে তত্ত্বাবধায়ক নেই, কিন্তু পাকিস্তান তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক ধরে রেখেছে। দুই দেশের মধ্যে পার্থক্যটা হলো—আমাদের দেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশি শক্তি, বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্ব যেভাবে মাতামাতি করে, ভিসানীতির বিষয়  নিয়ে আসে, পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তা হয় না।  পাকিস্তানে চলমান সহিংসতা, নির্বাচনে কারচুপি ইত্যাদির প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের এরপর বলেন, ‘পাকিস্তানের নির্বাচনে সহিংসতা, ভোট কারচুপি, জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। ৯ জনের প্রাণহানিও হয়েছে। দেশটির বেলুচিস্তানে বোমা বিস্ফোরণ কয়েক ডজন মানুষের মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হয়েছে।’  তিনি আরও বলেন, আমি বলছি না, আমাদের গণতন্ত্র শতভাগ পারফেক্ট। গণতন্ত্রের ছবক দেয় যে পশ্চিমা বিশ্ব, তারাও পারফেক্ট না।   এরপর বিএনপির প্রসঙ্গ টেনে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে না এসে যে ভুল করেছে তার খেসারত তাদের অনেক দিন দিতে হবে।’  রাজনীতির মাঠে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যতটুকু জানি তার অনেকগুলো মামলায় জামিন হয়েছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে তার জন্য। হয়তো একটা সময় জামিন হয়ে যাবে। একজন বিনা বিচারে আটকে থাকবে, এটা সরকারও চায় না। জামিন হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না—এটা ঠিক নয়।’  বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা প্রসঙ্গে বলেন, ‘পারিবারিকভাবে আবেদন করুক। স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় কীভাবে সুপারিশ করে—তারপর বলা যাবে।’  এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে দলের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে স্বীকার করে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এবারের নির্বাচনে কৌশলগত কারণে আওয়ামী লীগের অনেক লোক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করেছে। ফলে নির্বাচন ঘিরে নিজেদের মধ্যে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি, মতবিরোধ, দ্বন্দ্ব-সংঘাতের মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। দলের অভ্যন্তরে এসব হানাহানি ও কোন্দলের অবসান ঘটিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন করাই আওয়ামী লীগের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ।’  সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে বিভেদ ভুলে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘সবকিছু ভুলে গিয়ে উপজেলা নির্বাচন, মেয়র নির্বাচন পর্যায়ক্রমে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে যেন মনোমালিন্য কোনো সংঘাত সৃষ্টি না হয়—সে জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সবার মধ্যে ঐক্যবদ্ধ আবহ তৈরির জন্য এই বিশেষ বর্ধিত সভার আয়োজন।’  
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:০৪

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গণতন্ত্রের জয় হয়েছে : রাষ্ট্রপতি
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের জয় হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. শামসুল হক টুকু। রাষ্ট্রপতি বলেন, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সফলভাবে নির্বাচন পরিচালনার মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক শক্তি আরও সুদৃঢ় হয়েছে। নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবেই, জনগণের রায় মেনে নিয়ে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দেশের গণতন্ত্রের জন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজন অত্যন্ত যুগান্তকারী ঘটনা, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় হয়েছে দেশের জনগণের, জয় হয়েছে গণতন্ত্রের। তিনি বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে একটি মহল সহিংসতা ও সংঘাত সৃষ্টি করে গণতন্ত্রের শান্ত-স্নিগ্ধ যাত্রাপথে বাধা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছিল। তাদের গণতন্ত্রবিরোধী ও সহিংস কর্মকাণ্ড সাময়িকভাবে জনগণকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রাখলেও গণতন্ত্রের শাণিত চেতনা ভোটারদের ভোটদান থেকে বিরত রাখতে পারেনি। সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ও সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্যই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সকল পদক্ষেপ স্বার্থক হয়েছে। নির্বাচন বর্জনকারী দলসমূহ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি আশা করি, ভবিষ্যতে দেশের রাজনৈতিক দলসমূহ সহিংসতা ও নৈরাজ্যের পথ পরিহার করে সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং জনগণ ও গণতন্ত্রের কল্যাণে অহিংস পন্থায় গঠনমূলক কর্মসূচি পালন করবে। সরকারও এক্ষেত্রে সংযত আচরণ করবে- এটাই সকলের প্রত্যাশা। এ সময় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন কমিশন, ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এর আগে, গত ৭ জানুয়ারি দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ২৯৯টি আসনের ফলাফলে ২২৩টিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। আর জাতীয় পার্টি জয় পেয়েছে মাত্র ১১টি আসনে। এ ছাড়া ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও কল্যাণ পার্টি পেয়েছে ১টি করে আসন। ৬২টি আসনে জয় পেয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় নওগাঁ-২ আসনের ভোট স্থগিত করা হয়েছিল। আসনটিতে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণ হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। আর টানা চতুর্থ এবং সবমিলিয়ে পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে তিনি সংসদ নেতাও নির্বাচিত হন।
৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:৫২

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন : শেখ হাসিনা ও গণতন্ত্রের জয়
গণতান্ত্রিক চর্চায় নির্বাচন অন্যতম অনুষঙ্গ। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কথা গণতন্ত্রে প্রতিফলিত হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিুবর রহমান সংবিধানে ‘গণতন্ত্র’ বলতে বুঝিয়েছেন ‘প্রজাতন্ত্র হবে একটি গণতন্ত্র, যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকবে, মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হবে এবং প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে’।  বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলো অন্যতম ভূমিকা পালন করে। বলা চলে, রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয় ভূমিকা গণতন্ত্রের সাফল্য নির্ধারণে নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ উপহার দিয়ে এদেশে গণতন্ত্র প্রবর্তন করে বাংলাদেশের নাম দিয়েছেন ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’।  স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সামরিক অবৈধ হস্তক্ষেপে বাংলাদেশর গণতন্ত্র ব্যাহত হয়েছে। ৯০-এর সামরিক শাসনের অবসানের পর থেকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সাংবিধানিক নিয়মে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় ৭ জানুয়ারি ২০২৪ রবিবার বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সিইসি’র তথ্য অনুসারে ৪১.৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।  অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতা উপেক্ষা করে ৪১.৮ শতাংশ মানুষ  যে ভোট দিয়েছে, গণতান্ত্রিক চর্চার পথ সুমজ্জ্বল ও সমুন্নত রাখতে সেটিই গুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যে ভারত, চীন এবং রাশিয়াসহ পৃথিবীর বহুদেশ শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। নারী, সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এমনকি তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীদেরও ছিল সক্রিয় অংশগ্রহণ যা অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনকে  সমৃদ্ধ করে রাজনৈতিক বৈচিত্র্য ও সৌন্দর্য এনে দিয়েছে। এই নির্বাচনের আরও একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো  বিপুল সংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থীর অংশগ্রহণ।  বিভিন্ন আসনে ৪৩৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিভিন্ন প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। ৬২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ীও হোন। এই ৬২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিজয় প্রমাণ করে ভোট নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে এবং গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।   বলতে দ্বিধা নেই, শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে বিগত ১৫ বছরে এদেশে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সামাজিক উন্নয়ন, শিক্ষাখাত, প্রযুক্তিখাত, নারী শিক্ষা, স্বাক্ষরতার হার, গড়ায়ু বৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নসহ সর্বক্ষেত্রে শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্ব প্রতিফলিত হয়েছে।  এজন্য বিশ্বদরবারে শেখ হাসিনা প্রশংসিত হয়েছেন এবং বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছেন। ফলশ্রুতিতে, তরুণ এবং যুবকদের কাছে তিনি আইকন হয়ে উঠেছেন। শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রেখে, গণতান্ত্রিক চর্চা সমুন্নত রাখতে তরুণ এবং যুবকরা স্মার্ট ও উন্নত বাংলাদেশের পথচলার ভোট বিপ্লবে শামিল হয়ে শেখ হাসিনাকে জোরালো সমর্থন দিয়ে পুনরায় সরকার গঠনের জন্য নির্বাচিত করেছেন।  বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী হয়। এই নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি জনবান্ধব রাজনৈতিক সংগঠন। একটি বিষয় স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়, তা হলো শেখ হাসিনার প্রতি এদেশের জনসাধারণের আস্থা।  তার প্রতি আস্থা রাখার কারণ তিনি এদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন। সর্বস্তরের শান্তিপ্রিয় জনগণ প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে ভোট প্রদান করে গণতন্ত্রকে সমুন্নত করেছে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের শাসনব্যবস্থার প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে।  একটানা চতুর্থবার ও  মোট পঞ্চম বারের মতো প্রধানমন্ত্রী  হবেন শেখ হাসিনা। একটানা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হবার গৌরব নেই ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও ব্রিটেনের লৌহমানবী খ্যাত মার্গারেট থাচারেরও। একদিনে দেড়শ সেতু উদ্বোধন করে যেমন বিশ্বরেকর্ড করেছেন তেমনি বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ শেখ হাসিনাকেও ভোট দিয়ে রেকর্ড বইয়ে স্থান করিয়ে দিয়েছে। শেখ হাসিনার সামনে এখন অনেক চ্যালেঞ্জ। অন্যতম চ্যালেঞ্জ হলো নাশকতা ও অগ্নিসন্ত্রাসকে দমন করা। দুর্নীতি রোধ করা। জঙ্গিবাদ দমন করা। বিনিয়োগ বৃদ্ধি, গার্মেন্টস শিল্পের অস্থিরতা সমাধান করা, দলের অভ্যন্তরে হাইব্রিড ও অযোগ্যদের সিন্ডিকেট দমন করা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ইতোমধ্যে সর্বসাধারণের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটিও নতুন গঠিত শেখ হাসিনা সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে।  দেশে-বিদেশে শেখ হাসিনার শত্রু। সব সময় দেখা যায়, একটি চক্র সিন্ডিকেট করে শেখ হাসিনা সরকারকে কীভাবে বিশ্বদরবারে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়, সেই চক্রান্ত করতে থাকে। সুতরাং নতুন সরকারকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়টি সুনজরে এনে সকল সিন্ডিকেটের কালো থাবা থেকে মুক্ত করতে হবে।  এছাড়া শিক্ষা ও গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি করা, চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়ন, সর্বোপরি সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। আশাকরি, শেখ হাসিনা তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দিয়ে সবধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। মেট্রোরেল, টানেল, পদ্মাসেতু, পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, গভীর সমুদ্রবন্দর, বিভিন্ন শিল্পাঞ্চল নির্মাণ, উন্নত রাস্তাঘাট, এসব এখন শুধু রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি নয় বরং শেখ হাসিনা সরকারের বিগত ১৫ বছরের অভূতপূর্ব উন্নয়ন বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণ ও সার্বিক অগ্রগতিতে অসামান্য সংযোজন ও দৃশ্যমান বাস্তবতা।  বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর জনবিচ্ছিন্ন আন্দোলনের নামে নাশকতা, সহিংসতা ও নৃশংসতা এদেশের মানুষ ও বিশ্ববাসী দেখেছে। চলন্ত ট্রেনের ভিতর আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা কোনো সভ্য রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড হতে পারে না। এদেশের মানুষ এসব অগ্নিসন্ত্রাসীদেরকে ভয় পায়। ভোটের মাধ্যমে তারা এর সমুচিত জবাবও দিয়েছে।   শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন সরকারের কাছে এদেশের মানুষ প্রত্যাশা করে স্মার্ট ও উন্নত বাংলাদেশ। দেশি- বিদেশি সকল প্রকার ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতাকে মোকাবেলা করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাকে স্মার্ট ও উন্নত বাংলাদেশে পরিণত করতে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। লেখক : অধ্যাপক, পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগ, পরিচালক, সেন্টার ফর বুদ্ধিস্ট হেরিটেজ এন্ড কালচার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।  
১০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:৩৭
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়