• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo
গাজায় দুর্ভিক্ষ, ক্ষুধার্ত মানুষের হাহাকার
দুর্ভিক্ষের চরম সীমায় পৌঁছে গেছে ফিলিস্তিনের গাজা। তীব্র খাদ্য সংকটে গাজার সর্বত্র ক্ষুধার্ত মানুষের হাহাকার। বৃহস্পতিবার অ্যাকশনএইডের এক বিবৃতিতে গাজার চলমান দুর্ভিক্ষের এ করুণ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এমন খবর জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ায়ান, আনাদুলু এজেন্সি ও আলজাজিরা। প্রতিবেদনে জানা গেছে, ইসরাইলিদের চলমান বোমা হমালা ও বিধ্বংসী আক্রমণে চরম দুর্দশায় পড়েছে গাজাবাসী। কিছুদিন আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে হেশট্যাগ ‘গাজা স্টারর্ভিং’ ট্রেন্ডে তা উঠে। প্রকাশ করা সেই ভিডিওগুলোতে দেখা যায় হৃদয়বিদারক দৃশ্য। তীব্র খাদ্য সংকটে ভয়াবহ অবস্থা অবরুদ্ধ অঞ্চলটির। চারদিকে শুধু ধ্বংসস্তুপ আর ধ্বংসস্তুপ। গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অধিকাংশ স্থাপনা। জমি-জমা নেই, মজুত রাখা খাবার শেষ, বেকারিগুলোও বিধ্বস্ত। ক্ষুধার জ্বালায় কাদঁছে শিশুরা। অসুস্থ মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। খাবার নেই, পানি নেই। জ্বালানি নেই। আবার খাবার পেলেও জ্বালানি সংকটে নেই রান্নার ব্যবস্থা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও মেলে না ত্রাণের খাবার। যদিও ভাগ্যক্রমে পাওয়া যায়, তা নিতান্তই সামান্য। পেট ভরে না। ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে বাধ্য হয়ে এবার পশু-পাখির খাবার খাচ্ছেন অবরুদ্ধ অঞ্চলটির অসহায় নিরীহ বাসিন্দারা। বেঁচে থাকার জন্য ময়দার বিকল্প হিসাবে পশুখাদ্যকে পিষে খাচ্ছেন অনেকে। এ এক করুন দৃশ্য। অ্যাকশনএইড প্যালেস্টাইনের অ্যাডভোকেসি রিহাম জাফারি বলেছেন, আমরা এমন পরিবারের কথা শুনেছি যারা সারা দিনের জন্য এক টুকরো রুটি ভাগ করে খেয়েছে। অনেকেই পশুখাদ্য পিষে খাচ্ছে। নোংরা-দূষিত পানি পান করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ফলে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।’ দাতব্য সংস্থাগুলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, গাজার ৯৭টি বেকারির মধ্যে মাত্র ১৫টি এখন কার্যকরী। এদের মধ্যে সবগুলোই দক্ষিণে, উত্তরে কোনো বেকারি চালু নেই। খোলা থাকা বেকারিগুলোতে খাবারের দামও বেশি, যা অনেকের সাধ্যের বাইরে। উত্তর গাজার বাড়ি থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া জননী বিসান (২৯) বলেন, ছেলেকে বুকের দুধ খাওয়াতে অসুবিধা হয়। একটি টিনের দুধের দাম ৭০ বা ৮০ শেকেল। আমি তাকে এক টিন দুধ দিতে পারছি না। সাত সন্তানের জনক আবির (৪৭) অ্যাকশনএইডকে বলেন, খাওয়ার জন্য শুধু মসুর ডাল আছে। প্রতিদিন সকালের নাশতা, দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবারের জন্য মসুর ডাল। যা আপনি খেতে পারবেন না। শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগতে শুরু করেছে, কারণ তারা প্রতিদিন একই জিনিস খাচ্ছে। গাজায় চরম মাত্রায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউএনওসিএইচএ অনুসারে, ৭ অক্টোবরের পর আগের চেয়ে পানির স্তর এক-দশমাংশের নিচে নেমে গেছে। সুহায়লা নামে আরও একজন বাসিন্দা জানান, বিশুদ্ধ পানীয় জল পাওয়া কঠিন। পানি পেতে অনেক দূরের পথ পাড়ি দিতে হয় যা ক্লান্তিকর। কখনো কখনো আমার বাচ্চারা পানি ছাড়াই ঘুমিয়ে পড়ে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, ইসরাইলি আক্রমণে গাজায় অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতদের ৮৫ শতাংশ মানুষ খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের সংকটে রয়েছে। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম অনুসারে, গাজার ৩ লাখ ৩৫ হাজার শিশুর মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সি কোনো শিশিুই পুষ্টি পাচ্ছে না।        
২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:০৪
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়