• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
হাবিপ্রবি উদ্ভাবিত রাসায়নিক মুক্ত টমেটো চাষে আগ্রহী কৃষকরা
বিগত কয়েক বছর ধরেই রাসায়নিক কীটনাশক মুক্ত ফসল চাষে গবেষণা করে যাচ্ছেন দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) কৃষি অনুষদের বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল হক। গবেষক ড. আজিজুল হক ও তার দল কোনো রকম রাসায়নিক বিষ ও হরমোন ব্যবহার ছাড়াই খুবই স্বল্প মাত্রায় ইউরিয়া, ফসফরাস ও ব্যাক্টেরিয়ার ব্যবহার করে টমেটো চাষে সাফল্য পেয়েছেন। সম্প্রতি তার এই গবেষণা মাঠ দিনাজপুর অঞ্চলের টমেটো চাষি কৃষকের একটি দল পরিদর্শন করেছেন। বিনা রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার ছাড়া এত সুন্দর টমেটোর ফলন দেখে অভিভূত হয়েছেন পরিদর্শনকারী কৃষকেরা। এ সময় মাঠের পাকা টমেটো খেয়ে দেখেছেন তারা। কৃষকরা জানান, আমরা টমেটো চাষে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনেকবার বিভিন্ন রাসায়নিক বালাইনাশক ও কীটনাশক ব্যবহার করি এছাড়াও অনেক পরিমাণের সার ইউরিয়া, ফসফেটসহ গোবর সার ও ব্যাবহার করি। এতে আমাদের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু টমেটোর ফলন দেখে বিশ্বাসই হচ্ছে না যে এখানে কোনো কীটনাশক ব্যবহার করা হয় নি। রাসায়নিক কীটনাশক ও সার ব্যবহার ছাড়ায় টমেটোর এত ফলন ও এত সুন্দর কালার, খেতেও অনেক স্বাদ। স্যারের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি আমরা ব্যবহার করতে পারলে আমাদের উৎপাদন খরচ অনেক কমে যাবে সেই সাথে টমেটোর কালার এবং সাইজের জন্য অতিরিক্ত লাভ হবে বলে আশা করছি। আমরা চাইবো স্যার যেন আমাদের অল্প পরিসরে হলেও এই প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ দেন। দিনাজপুরের প্রান্তিক অঞ্চলের আরও একজন কৃষক জানান, স্যারের বিনা রাসায়নিক সার ব্যবহারে টমেটোর উৎপাদন দেখে ভালো লাগছে। আমরা সাধারণ কৃষকরা টমেটো চাষে স্যারের তুলনায় অনেক বেশি কীটনাশক ও সার ব্যবহার করি। আবার স্যারের এই ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে টমেটো চাষে আমাদের স্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি হবে না আমরা নিজেরাও নিশ্চিন্তে খেতে পারব এবং গ্রাহককেও সর্বোত্তম টমেটো সরবরাহ করতে পারব। আমরা টমেটো চাষে সারের এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে আগ্রহী।  কৃষক প্রদর্শনী শেষে ড. আজিজুল হক কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং সারের ব্যবহার কমিয়ে ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করার উপকারিতা, পদ্ধতি নিয়ে কৃষকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।   ড. আজিজুল হক বলেন, আমি দীর্ঘদিন থেকে ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে বিষ, হরমোন-মুক্ত ও স্বল্পমাত্রার ফার্টিলাইজার প্রয়োগে সুস্বাদু টমেটো উৎপাদন নিয়ে গবেষণা করছি। ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে টমেটোর ফলন ও গাছের শাখা উপশাখা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি। আমার লক্ষ্য হলো টেকসই উন্নয়নের জন্য আমার এই গবেষণালব্ধ প্রযুক্তি কৃষকের হাতে তুলে দিতে চাই। এর ফলে টমেটো চাষে রাসায়নিকের ব্যবহার কমবে কৃষক লাভবান হবে বেশি এবং ভোক্তা সাধারণ মানুষ ভালো স্বাস্থ্যকর ফসল খেতে পারবে। আমরা এই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। গবেষক ড. আজিজুল হক বর্তমানে দ্যা সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন এজেন্সি ও ইউনেস্কোর দ্যা ওয়ার্ল্ড একাডেমী অব সাইন্সেস এর যৌথ অর্থায়নে রাসায়নিক কৃষি সামগ্রীর পরিবর্তে এন্ডোফাইটিক ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে টমেটো চাষে গবেষণা করছেন। ইতোমধ্যেই তার এই গবেষণা প্রযুক্তি ব্যবহার করে দিনাজপুরের ভিন্ন ভিন্ন তিন জায়গায় কৃষকের জমিতে পরীক্ষামূলক টমেটো চাষ করা হচ্ছে। 
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:৩০

মরিচ চাষে ব্যস্ত উপকূলের কৃষকরা
চলতি মৌসুমে ব্যাপক হারে মরিচ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন পটুয়াখালীর  কলাপাড়া উপজেলার কৃষকরা। জমি তৈরি এবং চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছে চাষিরা। ভালো ফলন ও ন্যায্য দাম পাওয়ায় মরিচ চাষে আগ্রহ বাড়ছে তাদের। মরিচ চাষ বেশ লাভজনক হওয়ায় ধান চাষের পাশাপাশি মরিচ চাষেও আগ্রহী হচ্ছেন। মরিচের বীজ বপণের ৩০-৪০ দিনের মধ্যে গাছে ফুল আসে এবং ৬০-৭০ দিনের মধ্যে কৃষক গাছ থেকে মরিচ উত্তোলন শুরু হয়। এটি একটি অর্থকরী মসলা জাতীয় ফসল। জমিতে বিঘা প্রতি ১৫/২০ মণ মরিচ উৎপন্ন হয়। প্রতিমণ কাচা মরিচ হাটবাজারে ২৫শ’ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রয় করতে পারে কৃষক। সরজমিনে কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার মরিচ চাষে ভালো লাভ হবে। বর্তমান বাজারে কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অজ্ঞাত রোগে মরিচ গাছের পাতা শুকিয়ে অনেক ক্ষতি হচ্ছে। লতাচাপলী ইউনিয়নের কৃষক মাসুম জানান, গত বছর ১ একর জায়গায় মরিচ দিয়েছিলেন। খরচ শেষে তার এক লাখ টাকা লাভ হয়েছে। তাই এবারও তিনি ১.৫ একর জায়গায় মরিচ দিয়েছেন। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে এ বছরও ভালো ফলন পাবার আশা তার। কুয়াকাটার কৃষক জাহাঙ্গীর জানান, এবার তিনি ২ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। প্রতি বছরের চেয়ে এবার বেশি পরিমাণ জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। মরিচ চাষে লাভ ভালো হয়। এবার তিনি বেশি ফলনের আশা করছেন। কলাপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার কে আর এম সাইফুল্লাহ জানান, এ বছর ৬৮০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। ফল বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি-সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রোগবালাই ও সার ব্যবস্থাপনা মাঠপর্যায়ে প্রত্যক্ষ করছে। আরও সহনশীল জাত উদ্ভাবনের লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। উপজেলার প্রতিটি গ্রামে গিয়ে মরিচ চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশা করি, কৃষক এবার মরিচের ভালো দাম পাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে মরিচ চাষে কৃষকরা লাভবান হবেন।
৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:১৪
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়