• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo
গাজার শিশুদের কাছে এবারের ঈদ এসেছে ভিন্নভাবে
রমজান মাসের শেষে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর পালনের জন্য যখন মুসলিমরা প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন গাজার শিশুরা বলছে তাদের কাছ থেকে ঈদের আনন্দ ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, গাজা ভূখণ্ডে যত মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, তাদের মধ্যে এক শতাংশ শিশু অনাথ হয়েছে অথবা তাদের দেখাশোনা করার জন্য প্রাপ্তবয়স্ক কেউ নেই। এমন কোন ক্যাম্প নেই যেখানকার শিশুরা একজন বা বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছে। যেমন লায়ান ও তার ১৮ মাস বয়সী বোন সিয়ার। তাদের পরিবারে একমাত্র তারাই এখন বেঁচে রয়েছে। পরিবারের বাকি সদস্যরা গাজায় অক্টোবরের বোমা হামলা থেকে বাঁচতে শহরের আল আহলি হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিলো। সে সময় তারা নিহত হয়। লায়ান সেই রাতে তার পরিবারের ৩৫ সদস্যকে হারায়। তাদের মধ্যে বাবা–মা ও নিজের পাঁচ ভাই বোন ও ছিলো। লায়ান বলেন, “ আমাদের পরিবার হাসপাতালে পৌঁছানোর মাত্র আধ ঘণ্টার মধ্যে দুইটা ক্ষেপণাস্ত্র আমাদের উপর আঘাত করে। আমি জেগে উঠে দেখলাম, আমার পরিবারের সব সদস্যরা টুকরো টুকরো হয়ে গেছে”। গাজা শহরের জনাকীর্ণ হাসপাতালে এই হামলায় শত শত লোক নিহত হয়। এ হামলার জন্য ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ এবং ইসরায়েল একে অপরকে দায়ী করেছে। লায়ান আরও বলেন, সে তার আন্টি এবং বড় কাজিন আলীর সঙ্গে স্বচ্ছন্দে আছে, যাদের সঙ্গে সে ও তার বোন দক্ষিণ গাজার রাফাহতে একটি তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছে। যুদ্ধে সবকিছু নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার আগে, লায়ান ঈদের আগে বাবা-মার সাথে নতুন জামা কিনতে যেতো। তারা ঈদে বিস্কুট বানাতো যা স্থানীয়ভাবে এটি ‘মামোল’ নামে পরিচিত। তারা পরিবারের সঙ্গে আনন্দ করতো। কিন্তু এই বছর আর কোন পারিবারিক জমায়েত হবে না। “এই ঈদে কেউ আমাদের দেখতে আসবে না। যুদ্ধের কারণে কয়েক হাজার লোক তাদের চাকরি হারিয়েছে। অর্থ স্বল্পতায় থাকলেও ২৪ বছর বয়সী আলী এই মুহূর্তে লায়ান ও তার বোনের দেখাশোনা করছে। সে নিজের সামর্থ্যের মধ্যে তাদের ও অন্যান্য কাজিনদের পোশাক ও খেলনা কিনে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুদ্ধের আগে গাজা শহরের নিকটবর্তী জৈতুনে লায়ানের কাজিনরা তাদের পরিবারের অন্যান্য ৪৩ সদস্যের সঙ্গে একটি ভবনে থাকতেন। এখন যারা বেঁচে আছেন তারা দক্ষিণ গাজার একটি তাঁবুতে থাকেন।  লায়ানের মতো তার আরেক কাজিন ১৪ বছর বয়সী মাহমুদও যুদ্ধে অনাথ হয়েছে। মাহমুদ তার বাবা-মা ও বেশিরভাগ ভাই-বোনকেই আল আহলি হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার একই ঘটনায় হারিয়েছে। যখন ওই হামলা হয় তখন সে বাইরে তার পরিবারের জন্য পানি আনতে গিয়েছিলো। মাহমুদ বলেন, যখন আমি ফিরে এসেছিলাম, আমি সবাইকে মৃত দেখতে পেলাম। যা দেখলাম তাতে আমি হতবাক হয়ে গেলাম। যুদ্ধের আগে, মাহমুদ বডি বিল্ডিং চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখতো এবং মিশরে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। এখন তার একমাত্র স্বপ্ন উত্তর গাজা ভূখণ্ডে নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়া এবং বাবা-মার স্মৃতিচারণ করা। এই ঈদে কোন আনন্দ নেই। আমরা আগে ঈদের সময় রাস্তায় বাতি জ্বালাতাম কিন্তু এখন আমরা সাজসজ্জা হিসেবে শুধুমাত্র তাঁবুতে একটা দড়ি ঝুলাতে পারি। ফিলিস্তিনের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ৪৩ হাজারের বেশি শিশু বাস করে যাদের একজন বা বাবা-মা উভয়ই নেই। সঠিক পরিসংখ্যান বের করা কঠিন, কিন্তু ইউনিসেফ ধারণা করেছে যে, গাজা ভূখণ্ডে অন্তত ১৭ হাজার শিশু সঙ্গীহীন অবস্থায় রয়েছে অথবা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বাবা -মায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একা হয়ে পড়েছে। সাধারণত ঈদ বলতে পরিবারের সদস্যদের জমায়েত এবং এই উৎসব পালন করতে বিশেষ ধরনের খাবার তৈরি করাকে বুঝায়। কিন্তু এ দুইটিরই অনুপস্থিতি ও চলমান যুদ্ধের কারণে শিশুদের শুধুমাত্র তাদের আগের স্মৃতি ধারণ করেই থাকতে হবে। গাজাবাসীদের টেবিলে ঈদে যেসব খাবার থাকে তার অন্যতম হচ্ছে সুমাকিয়া (মাংসের ঝোল) এবং ফাসিখ (লবণাক্ত মাছ)। কিন্তু উৎসবের প্রধান আকর্ষণ থাকে ঈদ বিস্কুট। বাস্তুচ্যুত লোকেদের জন্য রাফাহ শহরের দক্ষিণে একটি ক্যাম্পে অন্তত ১০ জন মহিলা ঈদের বিস্কুট তৈরি করতে ফিলিস্তিনি মাজদ নাসার ও তার পরিবারের তাঁবুতে জড়ো হয়েছেন। গাজার উত্তর থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া ২০ বছর বয়সী মাজদ একটা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। যাতে “ ক্যাম্পে থাকা শিশু ও তাদের পরিবারকে ঈদের স্বাদ ফিরিয়ে দেয়া যায় ”। তিনি নিকটস্থ তাঁবুর সব প্রতিবেশীদের একসঙ্গে বিস্কুট বানাতে আমন্ত্রণ জানান। “ মামোল তৈরির উপকরণগুলোর দাম আগের বছরের চাইতে তিন থেকে চার গুণ বেশি হয়ে গেছে” বলেন মাজদ। এই যুবক ক্যাম্পে থাকা ৬০টি পরিবারের মধ্যে গোল কেক বিতরণ করেছে, যেগুলোর কেন্দ্র ফাঁপা বা গর্ত করা। পুরো গাজা ভূখণ্ড জুড়ে সতের লাখ বাস্তুচ্যুত লোক কঠোর পরিস্থিতিতে বাস করছে এবং খাদ্য ও পানির তীব্র সংকটে তারা ত্রাণ সহায়তার উপর নির্ভর করে। এই পরিস্থিতি সত্ত্বেও, আহমেদ মুসতাহা এবং তার দল ঈদের সময় উত্তর গাজায় বাস্তুচ্যুত লোকেদের একটি ক্যাম্পে ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছেন। এর কারণ সার্কাসের মাধ্যমে যত বেশি সংখ্যক অনাথ শিশুদের আনন্দ দেওয়া যায়। আনুমানিক তিন লাখ লোক এই এলাকায় দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হয়েছে। আমরা শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে চাই যাতে তারা ঈদের উৎসব পালন করতে পারে ” সার্কাসের প্রতিষ্ঠাতা মুসতাহা এসব কথা বলেন। এই সার্কাসটি ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। যুদ্ধে বোমা হামলার আগে যে ভবন থেকে এটি পরিচালিত হতো সেখানে শিশুদের সার্কাস আর্ট শেখানো হতো। যুদ্ধের আগে, মুসতাহা এবং তার দলের দশজন সদস্য পার্কে শিশু ও অনাথদের অভিনয় করে দেখাতেন। এখানে ক্যাম্প ও ধ্বংস হয়ে যাওয়া এলাকা তাদের অভিনয়ের পটভূমি তৈরি করে। যেখান থেকে একজন সার্কাসের ভাঁড় অ্যাক্রোবেটিক ও ভেলকি দেখানো থেকে শুরু করে মজার স্কেচও করে। এটা বাচ্চাদের হাসতে বাধ্য করে। সূত্র : বিবিসি বাংলা
১১ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩১

পণ্যের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে এসেছে : প্রধানমন্ত্রী
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমানে পণ্যের দাম স্বাভাবিক ও সহনীয় পর্যায়ে নেমে এসেছে। সোমবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ভাষণ শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। ভাষণের শুরুতেই সরকারপ্রধান দেশে ও দেশের বাইরে বসবাসকারী বাংলাদেশের সব নাগরিককে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও রমজানের মোবারকবাদ জানান।  এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, পবিত্র রমজান মাসের শুরুতে খেজুর, আমদানি করা ফল, লেবু, তরমুজ, পেঁয়াজসহ কয়েকটি পণ্যের দাম কিছুটা চড়া ছিল। তবে এসব পণ্যের দাম কয়েক দিনের মধ্যেই স্বাভাবিক ও সহনীয় পর্যায়ে নেমে এসেছে। তিনি বলেন, জিনিসপত্রের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষের, বিশেষ করে সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট হয়। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি মানুষের কষ্ট লাঘবের। তিনি আরও বলেন, টিসিবি প্রথম পর্যায়ে সারাদেশের এক কোটি কার্ডধারী পরিবারের জন্য সুলভমূল্যে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও ছোলা— এই ৫টি পণ্য বিতরণ করছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ঢাকা ও আশপাশের এলাকার কার্ডধারী পরিবারের জন্য  চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি, ছোলা ও খেজুর— এই ৬টি পণ্য বিতরণ করছে। আর ঈদ উপলক্ষে সারাদেশের ১ কোটি ৬২ হাজার ৮০০ পরিবারের জন্য সরকার এক লাখ ৬২৮ মেট্রিক টন চালের বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছে। প্রতি পরিবার বিনামূল্যে ১০ কেজি করে চাল পাবেন। সরকারপ্রধান বলেন, এবারের রমজান মাসকে সামনে রেখে আমরা বেশ আগে থেকেই চিনি, ছোলা, ডাল, ভোজ্য তেলসহ কয়েকটি পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত গড়ে তুলি। একচেটিয়া বাজার তৈরি করে অধিক মুনাফা যেন কেউ করতে না পারে সেজন্য ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ এবং প্রায় সমপরিমাণ আলু আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি রমজান মাসের শুরু হতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য রাজধানী ঢাকার অন্তত ২৫টি স্থানে ট্রাকে করে মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ সুলভমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে ২০২৪ সালে স্বাধীনতার ৫৩তম বার্ষিকীতে আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, আমরা দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেকাংশেই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। এটা কোনো অসার বাগাড়ম্বর দাবি নয়। বাংলাদেশ আজ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল বিশ্বে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমরা প্রমাণ করেছি রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে সীমিত সম্পদ দিয়েও একটি দেশকে এগিয়ে নেওয়া যায়। 
২৫ মার্চ ২০২৪, ২১:১৭

বাঙালির সব অর্জন আ.লীগের হাত ধরে এসেছে : প্রধানমন্ত্রী
বাঙালির সব অর্জন আওয়ামী লীগের হাত ধরে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি। আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের দেশের কিছু আঁতেল এক সময় বলেছে, শেখ মুজিব ভালো প্রশাসক ছিলেন না। অথচ, যে সেক্টরে হাত দিয়েছি, দেখেছি মূল কাজটা বঙ্গবন্ধু করে দিয়ে গেছেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরে একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার কাজ করেছেন। স্বল্পোন্নত দেশ করে দিয়ে গেছেন। তার দেখানো পথেই আমরা এগিয়েছি। শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের বুকে আমরা যে পরিচয়টা পেয়েছি, সেটা দিয়ে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমরা যে মাতৃভাষায় কথা বলতে পারছি, আমরা যে স্বাধীন জাতি হিসেবে মর্যাদা পেয়েছি সেটা তার হাত ধরেই এসেছে। সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের ওপর একটি বিজাতিও ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার যে প্রচেষ্টা তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। মুজিব একটি জাতির রুপকার, এই সিনেমা দেখলেও কিন্তু ইতিহাসের অনেক কিছু জানার সুযোগ রয়েছে। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা হয়েছে। অনেক জ্ঞানীগুণী বুদ্ধিজীবীর বক্তব্য ছিল তিনি (বঙ্গবন্ধু) আবার ভাষা আন্দোলেন কী ভূমিকা রেখেছিলেন। দেশের মানুষের কথা বলতে গিয়ে বারবার জেলে গেছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ইতিহাস বিকৃত করা ও বাংলাদেশের মানুষকে হেয় করা এক শ্রেণির মানুষের মজ্জাগত সমস্যা। তাদের কিছুই ভালো লাগে না। কোনো ভালো কাজই তাদের পছন্দ হয় না। জাতির পিতার অবদানকে খাঁটো করার চেষ্টা হলেও কোনো লাভ হয়নি। কারণ, ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না।
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:৩৩

ডলারের বিকল্প চিন্তার সময় এসেছে : মোমেন
ডলারের ওপর নির্ভরতা কমাতে বিকল্প মুদ্রায় বৈদেশিক লেনদেনের চিন্তা করার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মওলানা আকরম খাঁ হলে ‘ইউয়ান-টাকায় ট্রেড ও বাংলাদেশে ডলার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি। এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি) এ সভার আয়োজন করে। বক্তব্যে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ডলারের ওপর নির্ভরতা কমাতে বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে অন্য মুদ্রা ব্যবহারের ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। এর নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দিতে হবে। কিন্তু এটা খুব সহজ নয়। কারণ, এটি নতুন কিছু। আমাদের এই বিষয়ে আলোচনা করতে হবে। এরপর তিনি বলেন, আজ যে অবস্থায় আছি, কাল সেই অবস্থা থাকবে কি না কেউ জানে না। মনে করেন, আমরা অনেক ডলার রিজার্ভ রাখলাম, অন্যান্য দেশও রাখলো। এর মধ্যে যদি যুদ্ধ হয়, ডলার তো একেবারে কাগজ হয়ে যাবে। যেভাবে পৃথিবী চলছে তাতে আমাদের আগে থেকেই সতর্ক হতে হবে। আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা যদি অন্য মুদ্রা ব্যবহারের অনুশীলনটা আগে থেকে করতে পারি, তাহলে হঠাৎ করে কোনো ঝামেলা এলে নিজেদের ব্যবস্থা করতে পারবো। তাই আমাদের এই অনুশীলনটা এখন থেকে শুরু করা উচিত। আমরা প্রাথমিকভাবে ইউয়ান-টাকা, রুপি-টাকা দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে লেনদেন করতে পারি। বিগত ১৫ বছরে অর্জিত উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরে আমাদের যে অর্জন, সেই অর্জনে ধাক্কা খেতে চাই না। আমাদের অর্জনটুকু সমানে এগিয়ে নিতে চাই। ২০৪১ সালে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ-স্থিতিশীল-অসাম্প্রদায়িক অর্থনীতির দেশ হবো। কিন্তু সেটা করতে গেলে আমাদের উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। সেখানে হঠাৎ করে ধাক্কা খেতে চাই না। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমাস, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খাঁন প্রমুখ।    
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৩৯

মিয়ানমারের সেনাদের ফিরিয়ে নিতে জাহাজ চলে এসেছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মিয়ানমার থেকে আসা সেনাসদস্যদের ফিরিয়ে নিতে তাদের জাহাজ চলে এসেছে, তবে সমন্বয়হীনতার জন্য জাহাজটি ভিড়তে পারছে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার দ্রুতই তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। এটা খুব সহসা হবে। কখন কোন জাহাজ ভিড়বে সেটি টেকনিক্যাল পার্ট। সে বিষয়ে আমার বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। আমরা আপাতত তাদের ফেরত পাঠানো নিয়েই কাজ করছি। কারণ, আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার তাদের নাগরিকদের ফেরত পাঠানো। তারাও তাদের লোকদের নিয়ে যেতে চায়। তিনি বলেন, মিয়ানমারে যা ঘটছে তা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাদের নিরাপত্তা চৌকি কে পাহারা দিচ্ছে সেটিও তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে আমাদের বক্তব্য জানানো হয়েছে। তাদের অভ্যন্তরীণ গণ্ডগোলের কারণে এখানে (বাংলাদেশে) নিরাপত্তা বিঘ্নিত হোক তা আমরা কখনও চাই না। তবে আমাদের এখানে নিরাপত্তা কিছুটা বিঘ্নিত হয়নি, সেটি তো সঠিক নয়। তাদের শেল এসেছে পড়েছে, দুজন নিহত হয়েছে। এ নিয়ে কিন্তু আমরা কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছি। তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার থেকে যেসব বিজিপি ও সেনা এবং তাদের পরিবারের সদস্য পালিয়ে এসেছেন তাদের সহসা ফেরত পাঠাব। এ বিষয়ে আমরা দেশটির সঙ্গে একমত হয়েছি। মিয়ানমার তাদের ফেরত নিয়ে যাবে। আমি দিনক্ষণ বলতে চাই না, কারণ এটি গোপনীয়। এখানে নিরাপত্তার বিষয় রয়েছে। তবে সহসাই তাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমার সম্মত হয়েছে। আমরা আশা করছি, শিগগিরই তাদের ফেরত পাঠাতে পারব। এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের দেশে ১ দশমিক ২ মিলিয়ন রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। তাদের কারণে আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। পরিবেশগত, নিরাপত্তা ও মাদকজনিত সমস্যাসহ অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের পক্ষে কি আরও রোহিঙ্গা আশ্রয় দেওয়া সম্ভব? মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিয়েই সংঘাত চলছে তা নয়। তাদের মধ্যে নানা জাতিগোষ্ঠী আছে। তাদের মধ্যে নানা সমস্যা চলছে। তাদের সংঘাতের উত্তাপের কারণে আমরা আমাদের দেশে নানান সমস্যায় পড়ব, তা কি সঙ্গত?  
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:০৮

সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে এসেছে ৬৩০ টন আলু
ভারত থেকে আলু আমদানির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাজারে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাজারগুলোতে আলুর দাম কমেছে কেজি প্রতি ৮-১০ টাকা।  চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত ৬৩০ টন আলু এসেছে ভারত থেকে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সোনামসজিদ স্থলবন্দর পরিচালনার দায়িত্বে থাকা পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের ম্যানেজার অপারেশন কামাল হোসেন। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার আবারও ভারত থেকে আলু আমদানি শুরু হয়েছে। প্রথম দিন একটি ট্রাকে ২৮ টন আলু এসেছিল। এরপর শনিবার ১৫ ট্রাকে ৩৭০ টন আলু এসেছে। রোববার বিকেলে ৯ ট্রাকে ২৩২ টন আলু এসেছে বন্দরে। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ৬৩০ টন আলু এসেছে।
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:৪৪

২০২৩ সাল / দৈনিক গড়ে ১২ প্রবাসী শ্রমিকের মরদেহ দেশে এসেছে
দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম উৎস হলো প্রবাসী আয়। দেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি হিসেবে প্রবাসী আয়কে বিবেচনা করা হয়। এ খাত থেকে প্রতি বছর দেশে আসে বছরে প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলার; যা দেশের মোট জিডিপির ১২ শতাংশ। তবে শঙ্কার বিষয়টি হচ্ছে, উল্লেখযোগ্য হারে প্রবাসে শ্রমিকের মৃত্যু। ২০২৩ সালে দেশে এসেছে ৪ হাজার ৫৫২ জন প্রবাসী শ্রমিকের মরদেহ। সে হিসেবে প্রতিদিন গড়ে ১২ রেমিট্যান্স যোদ্ধার মরদেহ দেশে এসেছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। বোর্ডের হিসাবে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরে গত ৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪ হাজার ৫৫২ জন প্রবাসী শ্রমিকের মৃতদেহ দেশে এসেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪ হাজার ১০৭, ২০২১-২২-এ ৩ হাজার ৭৬২, ২০২০-২১-এ ৩ হাজার ৭৫৭ এবং ২০১৯-২০-এ ৩ হাজার ১২৬ জনের মরদেহ দেশে এসেছে। এসব শ্রমিকদের সিংহভাগের বয়স ২৫ থেকে ৩৫ বছর। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ও হৃদরোগে মৃত্যুর সংখ্যায় বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ ও মজুরি না, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস, দিনে ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা পরিশ্রম, দীর্ঘদিন স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা এবং ঋণ নিয়ে বিদেশ যাওয়ায় টাকা উপার্জনে মানসিক চাপ শ্রমিকদের মৃত্যুর জন্য অনেকাংশে দায়ী।  দেশের বেসরকারি গবেষণা সংস্থা রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু) বলছে, মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের ছয়টি দেশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে বছরে ১০ হাজার প্রবাসী মারা যান। তাদের প্রতি দুজনের মধ্যে একজনের বেশি প্রবাসীর মৃত্যুর কোনো অন্তর্নিহিত কারণ কার্যকরভাবে ব্যাখ্যা করা হয় না। কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হিসেবে মৃত্যুসনদ দেওয়া হয়। বিপজ্জনক ঝুঁকি সত্ত্বেও কর্মীদের ওপর তাপের প্রভাব সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই। তাপ-সংক্রান্ত কারণে মৃত্যুর কথা সরকারি হিসেবে জানা যায় না। দিনের বেলায় প্রচণ্ড তাপের মধ্যে তাদের কাজ করতে হয়। এতে তাপজনিত নানান রোগে শুধু কিডনি নয়, মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে শরীরের সব অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাসার, অনেকেই মনে করেন বিদেশে গেলেই রাতারাতি বড়লোক হয়ে যাবেন। কথাটি একদমই ভুল। প্রবাসী শ্রমিকদের অধিকাংশই নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত। ঋণ এবং অনেকে সুদে টাকা নিয়ে প্রবাসে কাজ করতে যান। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ ও মজুরি না পাওয়ায় দুশ্চিন্তা গ্রাস করে তাদের। এ কারণেই বেশি মৃত্যু হয়। ব্র্যাকের মাইগ্রেশন বিভাগের প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, প্রতিবছর যে হারে প্রবাসী শ্রমিক মারা যাচ্ছে তা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। যেসব শ্রমিকের মরদেহ দেশে আসছে তাদের থেকে স্যাম্পলিং করে মন্ত্রণালয়কে গবেষণা করে বের করতে হবে যে, কী কারণে আমাদের প্রবাসীরা মারা যাচ্ছে।  মৃত্যুহার কমাতে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মৃত্যুর কারণগুলো নিয়ে যদি রাষ্ট্রীয়ভাবে কাজ করে সঠিক কারণ জানা এবং সে অনুযায়ী বিদেশ যাওয়ার আগেই প্রবাসীদের সচেতন করলে মৃত্যু কিছুটা হলেও কমিয়ে আনা যাবে। সেই সঙ্গে ভালো কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা, বিদেশযাত্রার খরচ কমানো, দক্ষকর্মী পাঠানো হলে মৃত্যু কমানো সম্ভব। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী জানিয়েছেন, কম খরচে শ্রমিকদের বিদেশে পাঠানো নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। সরকারি এবং কম খরচে যেন শ্রমিকরা বিদেশে যেতে পারেন এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা কাজ করছি।
৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:০৪
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়