• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo
উপজেলা নির্বাচন / ঋণ খেলাপি প্রার্থী শনাক্তে তথ্য চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী  প্রার্থীদের তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রার্থীদের মধ্য থেকে ঋণ খেলাপিদের শনাক্ত করতেই সব রিটার্নিং কর্মকতার কাছে এ তথ্য চাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর অতিরিক্ত পরিচালক মো. আনিচুর রহমান। এর আগে, ঋণ খেলাপিদের তথ্য দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছিল নির্বাচন কমিশন। চিঠির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী প্রার্থীদের ঋণ খেলাপ সংক্রান্ত তথ্য প্রদানের লক্ষ্যে সব প্রার্থীর পূর্ণনাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, স্বামীর নাম (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) বাংলা ও ইংরেজিতে, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর, করদাতা শনাক্তকরণ সংখ্যা (টিআইএন), জন্ম তারিখ, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা সম্বলিত তথ্য সংযুক্ত ছক অনুযায়ী যথাযথভাবে পূরণ করে রিটার্নিং অফিসার অথবা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নামসহ সিল, স্বাক্ষর ও ফোন (মোবাইল) নম্বর যুক্ত করে ই-মেইল এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে প্রেরণ করতে হবে। প্রসঙ্গত, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৮ মে। এই ধাপের নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য মনোনয়ন দাখিলের সময় শেষ হয়েছে আজ বিকেল ৪টায়। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ১৫০টি উপজেলায় মনোনয়ন দাখিল করেছেন ১ হাজার ৮৯১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬৯৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭২৪ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৭১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তপসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপের নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বাছাই আগামী ১৭ এপ্রিল। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত, যা নিষ্পত্তি হবে ২১ এপ্রিলে। এছাড়া প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল এবং প্রতীক বরাদ্দ হবে ২৩ এপ্রিল। প্রথম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ইতোমধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করবেন জেলা প্রশাসক।
১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১৫

সরকারের ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে : সিপিডি
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকারের ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটির দাবি, কোভিড বা ইউক্রেন যুদ্ধ নয়, ভিন্ন কারণে সরকারের এই ঋণ নেওয়ার প্রবণতা ত্বরান্বিত হয়েছে। বিশেষ করে ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা বৃদ্ধির বিপরীতে পর্যাপ্ত পরিমাণে রাজস্ব আদায় না হওয়াকে এ প্রবণতার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছে সিপিডি।  বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে ‘বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা’ নিয়ে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। ঢাকার লেকশোর হোটেলে যৌথভাবে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে সিপিডি ও এশিয়া ফাউন্ডেশন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা পাবলিকলি গ্যারান্টিযুক্ত ঋণের দায়বদ্ধতার একটি বড় অংশ পরিশোধের জন্য নতুন করে ঋণ নিচ্ছি। তাই দ্রুত অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈদেশিক ঋণ এবং ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতার হার বেড়েছে। ২০২৩ সালের জুনে বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি বিদেশি ঋণ ছিল ৯৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার, যা একই বছরের সেপ্টেম্বরে ১০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। এসময় তিনি সতর্ক করে বলেন, ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জিডিপি, রাজস্ব আয়, রপ্তানি, রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্গে তুলনা করে বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের দায়বদ্ধতার দ্রুত বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর। এ অর্থনীতিবিদ বলেছেন, ঋণ বহনের সক্ষমতা ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা উদ্বেগ তৈরি করেছে। দিন শেষে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ, যা অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উভয় ঋণ পরিশোধের জন্য বিবেচনা করতে হবে। অভ্যন্তরীণ সম্পদের একটি ক্রমবর্ধমান অংশ দেশি ও বিদেশি ঋণের মূল ও সুদ পরিশোধে ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০২৪ সাল আমাদের জন্য কঠিন হবে উল্লেখ করে সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নীতি নির্ধারকেরা প্রায়ই বলেন- অর্থনীতিবিদেরা ঠিকমত বিশ্লেষণ করতে পারেন না, ভবিষ্যতও বলতে পারেন না। উচ্চ পর্যায়ের নীতি নির্ধারকরা পেশাদার অর্থনীতিবিদদের নিয়ে প্রায়শই শ্লেষাত্মক ও ব্যাঙ্গাত্মক কথা বলেন। আজ থেকে দুই বছর আগে সিপিডিতে বসেই আমি বলেছিলাম, ২০২৪ সাল আমাদের জন্য কঠিন হবে। সেখানে দায়-দেনা পরিশোধে বড় ধরনের ধাক্কা আসতে পারে। ২০২৫ সাল থেকে ঋণ পরিশোধে অস্বস্তি শুরু হবে। ২০২৬ সালে এটা আরও বাড়বে। ঋণের হিসাবে গাফলতি আছে। এ হিসাবে এখনো অনেক কিছু বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ ঋণ প্রসঙ্গে ড. দেবপ্রিয় বলেন, যদি ১০০ শতাংশ ঋণ নেওয়া হয়ে থাকে, তবে তার ৮০ শতাংশ সরকারের আর ২০ শতাংশ ব্যক্তিখাতের।  বিদেশের তুলনায় সরকার দেশের ভেতর থেকে দ্বিগুণ ঋণ নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার তো দেশের ভেতরেও ঋণ নিচ্ছে। সেই ঋণের পরিমাণ কত? যে ঋণ আমরা বিদেশ থেকে নিই, তার দ্বিগুণ আমরা দেশ থেকে নিই। সরকারের এখন যে ঋণের পরিমাণ তার দুই-তৃতীয়াংশ অভ্যন্তরীণ ঋণ, সেটিই বড় বিষয়। সরকারের দায়-দেনা পরিস্থিতি বুঝতে হলে বৈদেশিক ঋণের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ঋণও দেখতে হবে। বৈদেশিক ঋণের কারণে মাথাপিছু দায়-দেনা যদি ৩১০ ডলার হয়, অভ্যন্তরীণ ঋণ যোগ করলে সেটা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৮৫০ ডলার। আমাদের উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে জানিয়ে তিনি এরপর বলেন, ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, রেভিনিউ বাজেট থেকে উন্নয়ন প্রকল্পকে অর্থায়ন করতে একটা পয়সাও দিতে পারে না। আমরা প্রতারণামূলক বাস্তবতা বা ইউলিসিভ রিয়েলিটিতে আছি। শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশও স্বল্প মেয়াদি ঋণের ফাঁদে পড়ছে দাবি করে সিপিডির চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ প্রফেসর রেহমান সোবহান বলেন, দেশের মেগা অবকাঠামো প্রকল্পগুলো বিদেশি ঋণে করা হচ্ছে। এসব প্রকল্পে প্রয়োজনের চেয়ে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি ব্যয় হচ্ছে। শ্রীলংকা স্বল্পকালীন ঋণের ফাঁদে পড়েছিল। রপ্তানি কমে আসায় এসব ঋণ যথাযথভাবে পরিশোধ করতে পারেনি দেশটি। আফ্রিকার কিছু দেশেও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ তেমন অবস্থানে নেই। কিন্তু দেশে স্বল্প মেয়াদি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে।  
০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:৪৯

ঋণ ও আমানতের সুদহার বাড়ল
বর্তমানে যে পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণের সুদহার নির্ধারণ করছে, তা হলো ‘এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট’ তথা– সিক্স মান্থ মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল হিসেবে পরিচিত। এর ফলে ঋণের সুদহার সহনীয় পর্যায় মার্জিনের হার কমিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবুও বেড়েছে ঋণ ও আমানতের সুদহার দুটোই বেড়েছে। প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি এপ্রিল মাসে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে (এনবিএফআই) আমানত রাখলে সুদ মিলবে সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ আর ঋণ নিলে গুনতে হবে ১৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ সুদ। বুধবার (৩ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশে ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ। নতুন নি‌র্দেশনা অনুযায়ী, ‘স্মার্ট’ হারের সঙ্গে আমান‌তে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ এবং ঋ‌ণে ৫ শতাংশ হারে মার্জিন বা সুদ যোগ করে এপ্রিল মাসে ঋণ ও আমান‌তে সুদহার নির্ধারণ কর‌বে। ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্মার্টের সঙ্গে (বর্তমানে স্মার্ট ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ) সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করতে হবে। আগে এই মার্জিন ছিল সাড়ে ৫ শতাংশ। ফ‌লে নতুন হিসেবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের সুদহার এর সর্বোচ্চ সীমা হবে ১৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আমানতের সুদহারের ক্ষেত্রে বর্তমান স্মার্ট ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশের সঙ্গে মার্জিন যোগ হবে ২ শতাংশ। এতে ক‌রে আমানতের সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা দাঁড়াবে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এতে সুদহারের বিষয়টি ছাড়া অন্য কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। সেই হিসেবে এর আগের প্রজ্ঞাপনের অন্যান্য শর্তাবলি অপরিবর্তিত থাকবে। প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবছরের ৬ মাসের গড় সুদহার (স্মার্ট রেট) ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। গত ফেব্রুয়ারিতে তা ছিল ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং সবশেষ মার্চে স্মার্ট রেট প্রায় এক শতাংশ বেড়ে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশে উঠেছে।
০৩ এপ্রিল ২০২৪, ২৩:২৭

৮ মাসেই ২০৩ কোটি ডলার বিদেশি ঋণ পরিশোধ
চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) প্রথম আট মাসে সরকার সুদ ও আসলসহ বিদেশি ঋণ পরিশোধ করেছে ২০৩ কোটি ডলার। এর মধ্যে সুদ ৮০ দশমিক ৫৯ মার্কিন ডলার এবং আসল ১২২ দশমিক ৪০ কোটি ডলার। অথচ গত বছরের একই সময় অর্থাৎ প্রথম আট মাসে বাংলাদেশ বিদেশি ঋণ পরিশাধ করেছিল ১৪২ দশমিক ৪১ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ৮ মাসে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়েছে ৬১ কোটি ডলার। সোমবার (২৫ মার্চ) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে এই চিত্র দেখা গেছে। ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, ঋণ পরিশোধের ব্যয় এতটা বাড়ার পেছনে সুদ পরিশোধই মূলত ভূমিকা রাখছে, আট মাসে সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ৮০ কোটি ৬০ লাখ ডলার (৮০৬ মিলিয়ন)। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৪০ কোটি ৩০ লাখ ডলার সুদ বাবদ পরিশোধ করা হয়, যার তুলনায় এটি দ্বিগুণ হয়েছে। ইআরডি জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ প্রতিশ্রুতি বেড়েছে। উন্নয়ন সহযোগীরা এ সময়ে ৭২০ কোটি ডলারের ঋণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৭৮ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কাছ থেকে ৯৯২ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি আদায়ের লক্ষ্য রয়েছে বলেও জানান তারা। ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে সবচেয়ে বেশি প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে এডিবির কাছ থেকে। এ সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া গেছে ২৬২ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি। এ ছাড়া জাপানের কাছ থেকে ২০২ কোটি ডলার, বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ১৪১ কোটি ডলারের ঋণ প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। ইআরডির তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বৈদেশিক অর্থছাড় হয়েছে ৪৯৯ দশমিক ৭ কোটি ডলার। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে অর্থছাড়ের পরিমাণ ছিল ৪৮৭ কোটি ডলার। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় করেছে এডিবি। এ সংস্থা অর্থছাড় করেছে ১৩০ কোটি ডলার। জাপান ছাড় করেছে ১০৪ কোটি ডলার। এরপরে বিশ্বব্যাংক ছাড় করেছে ৮৭ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। এ ছাড়া রাশিয়া ৮০ কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং চীন ৩৬ কোটি ১৭ লাখ ডলার ছাড় করেছে। গত অর্থবছরে (জুলাই-জুন) বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগীদের পরিশোধ করেছে ২৬৭ কোটি ডলার। এর মধ্যে সুদ হিসেবে পরিশোধ করেছে ৯৩ কোটি ৫৬ লাখ, আর আসল পরিশোধ করেছে ১৭৩ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরে পরিশোধ বেড়ে হবে ৩৫৬ কোটি ডলার। আগামী দুই অর্থবছরে তা আরও বেড়ে হবে যথাক্রমে ৪২১ কোটি এবং ৪৭২ কোটি ডলার।
২৫ মার্চ ২০২৪, ২৩:৫০

ঋণ করে খাবার কিনছেন দেশের ৪ কোটি মানুষ
চলমান অর্থনৈতিক সংকট এবং লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের কারণে দেশের চার কোটি মানুষ খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের মতো মৌলিক চাহিদা মেটাচ্ছে ঋণ করে। সম্প্রতি প্রথমবারের মতো প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খাদ্য নিরাপত্তা জরিপে সংকটের এমন চিত্র উঠে এসেছে। ২০২২ সালের জুনের ১৫ থেকে ২৫ তারিখ পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার খানার ওপর এই জরিপ চালায় সংস্থাটি। বিবিএসের প্রতিবেদন বলছে, দেশের মোট জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগ মানুষ ঋণ করে তাদের মৌলিক চাহিদা মেটাচ্ছেন। এতে গ্রামের ২৮ শতাংশ এবং শহরের ২৪ শতাংশ ও সিটি করপোরেশনের ১৫ শতাংশ মানুষ রয়েছেন। সংস্থাটি বলছে, ২২ শতাংশ পরিবার মাঝারি বা তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত থাকলেও সবচেয়ে বেশি ২৬ দশমিক ১৩ শতাংশ কৃষক পরিবারের সমস্যা খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা। বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন অবস্থার জন্য অর্থনৈতিক সংকট এবং লাগামহীন বাজার ব্যবস্থাকেই দায়ী। এই অবস্থায় তাল সামলানোর বেশি চাপে মধ্যবিত্ত শ্রেণি। বিআইআইসিসির গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবীর বলেন, অর্থনৈতিক চাপ ও মূল্যস্ফীতির কারণে তাদের প্রকৃত আয় কমে গেছে। এ সময়ে কর্মসংস্থান হলেও তা গুণগত নয়। ফলে পর্যাপ্ত আয়-উপার্জন না থাকায় মানুষ ঋণ করছেন। বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক ড. জাহিদ হোসেন বলেন, এই তথ্য থেকে বোঝা যাচ্ছে দেশের অর্থনীতি কতটা ভঙ্গুর। প্রয়োজন মেটাতে ঋণ করে চলছেন অনেকে। যারা দরিদ্রসীমার ওপরে আছেন, তাদেরও যে আয় বেশি সেটা কিন্তু নয়। তারাও আরামদায়ক পরিস্থিতিতে নেই।   এটা বাংলাদেশের জন্য রেড অ্যালার্ম জানিয়ে বিআইআইসিসির গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবীর বলেন, যদি দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থায় থাকেন, তবে খাদ্য নিরাপত্তাহীন মানুষগুলো জনসম্পদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবেন।  
২৪ মার্চ ২০২৪, ১২:৪৯

বিদেশি ঋণ এখন ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি
বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ প্রথমবারের মতো ১০০ বিলিয়ন বা দশ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। গত ডিসেম্বর শেষে বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে নেওয়া ঋণের স্থিতি ছিল ১০০ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন (১০ হাজার ৬৪ কোটি) ডলার। যা দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১১০ টাকা ধরে) এ ঋণের পরিমাণ ১১ লাখ ৭ হাজার ৪০ কোটি টাকা। দেশের মোট বিদেশি ঋণের ৭৯ শতাংশই নিয়েছে সরকার। বাকি ২১ শতাংশ ঋণ নিয়েছে বেসরকারি খাত। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ৯ হাজার ৬৫২ কোটি ডলার। সেই হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি ঋণের স্থিতি বেড়েছে ৪১২ কোটি ডলার। বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের শেষে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ৯ হাজার ৬৫৫ কোটি ডলার। তার মানে পরের তিন মাসে ৪ বিলিয়ন বা ৪০৯ কোটি ডলারের বিদেশি ঋণ বেড়েছে। সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে সরকারের বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ২০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার। ওই সময় বিদেশি উৎস থেকে দেশের বেসরকারি খাতের ঋণ নেয়ার সুযোগ ছিল না। অন্যদিকে সরকারি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণও ছিল খুবই কম। কিন্তু এর পর থেকে সরকারের বিদেশি ঋণ দ্রুতগতিতে বেড়েছে। একই সঙ্গে বিদেশি ঋণ বেড়েছে বেসরকারি খাতেরও। সরকারি-বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণের স্থিতি গত ডিসেম্বর শেষে ১০০ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয় বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে উঠে এসেছে। সে হিসাবে গত ১৩ বছরে বিদেশি ঋণ বেড়েছে ৩৯৫ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবায়ন অনুযায়ী, দেশের সরকারি-বেসরকারি বিদেশি ঋণ স্থিতি মোট জিডিপির প্রায় ২৩ শতাংশ। ঋণের এ অনুপাতকে অর্থনীতির জন্য মোটেই উদ্বেগজনক নয় বলে মনে করে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক।  এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‌বিদেশি ঋণ ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ালেও দেশের জিডিপির আকারের তুলনায় এটি খুব বেশি নয়। এখনও অনেক বিদেশি ঋণ নেওয়ার সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। বিশ্ববাজারে সুদহার বাড়ায় দেশের বেসরকারি খাতের স্বল্পমেয়াদি প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ কমে গেছে। এটি না হলে বিদেশি ঋণের স্থিতি অনেক আগেই ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেত। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০১৫-১৬ অর্থবছর শেষে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ৪ হাজার ১১৭ কোটি ডলার। আর গত ২০২২–২৩ অর্থবছর শেষে তা ৯ হাজার ৮১১ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। অর্থাৎ গত আট বছরে বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। গত ডিসেম্বর শেষে সেটি আরও বেড়েছে। জনশুমারি ও গৃহগণনা শুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ। সেই হিসাবে গত ডিসেম্বরের শেষে মাথাপিছু বিদেশি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৫৯২ ডলার (প্রায় ৬৫ হাজার টাকা)। যদিও গত জুনের হিসাবে মাথাপিছু বিদেশি ঋণ ছিল ৫৭৪ ডলার। আট বছর আগে এটা ছিল ২৫৭ ডলারের কিছু বেশি। মোট বিদেশি ঋণের মধ্যে সরকারি খাতে ৭৯ শতাংশ আর বেসরকারি খাতে ২১ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে সরকারি খাতে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ৭ হাজার ৯৬৯ কোটি ডলার। তার আগের তিন মাসে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ৭ হাজার ৫২৭ কোটি ডলার। অর্থাৎ গত বছরের শেষ তিন মাসে সরকারি খাতে বিদেশি ঋণের স্থিতি বেড়েছে ৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ। অন্যদিকে গত ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি খাতের ঋণের স্থিতি দাঁড়ায় ২ হাজার ৯৫ কোটি ডলার। যা গত সেপ্টেম্বরে ছিল ২ হাজার ১২৮ কোটি ডলার। সরকার বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) মতো সংস্থা এবং জাপান, চীন, রাশিয়া ও ভারতের মতো দেশের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি বিদেশি ঋণ নেয়। এই সব ঋণ নেওয়া হয় মূলত প্রকল্প বাস্তবায়ন ও বাজেট সহায়তা হিসেবে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) গত ডিসেম্বরের হিসাবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ঋণদানে শীর্ষ দেশ ও সংস্থার মধ্যে ছিল বিশ্বব্যাংক, জাপান, এডিবি ও চীন। সাম্প্রতিককালে চীনা ঋণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। সরকারি বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের পাশাপাশি গত এক দশকে বিদ্যুৎ খাতেও বিপুল পরিমাণ বিদেশি ঋণ এসেছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ এসেছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণের জন্য ১১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে রাশিয়া। পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ২ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেয়া হয়েছে চীন থেকে। আর রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার ঋণসহায়তা দিয়েছে ভারত। এ ছাড়া মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ অন্যান্য প্রকল্প ঘিরে জাপান থেকে ৪৩ হাজার ৯২১ কোটি টাকার সমপরিমাণ ঋণসহায়তা নেওয়া হচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ নিচ্ছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিদেশি ঋণের স্থিতি এখন ১১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণ রয়েছে ২ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার।  সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি বছর থেকে অনেক মেগা প্রকল্পের ঋণের কিস্তি পরিশোধ শুরু হচ্ছে। এতে বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়বে। এমনিতেই দেশে ডলারের তীব্র সংকট চলছে। বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ায় আরও বেশি পরিমাণে ডলারের প্রয়োজন হবে। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয়সহ দেশের ডলার সংস্থান বাড়ানো যাচ্ছে না। বিপরীতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ক্ষয় ক্রমাগত বাড়ছে।  
২২ মার্চ ২০২৪, ১৬:৪৮

গ্রামীণ উন্নয়নে এডিবির ৭১ মিলিয়ন ডলার ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ 
গ্রামীণপর্যায়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ ও পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে ৭১ মিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদন পেয়েছে বাংলাদেশ। বুধবার (১৩ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে ঋণ অনুমোদনের এ তথ্য জানিয়েছে এডিবি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলার গ্রামীণপর্যায়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ ও পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে ৭১ মিলিয়ন বা ৭ কোটি ১০ লাখ ডলার ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এডিবি জানায়, বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচকের ভিত্তিতে জলবায়ু ঝুঁকির দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। কার্যকরী অভিযোজন ব্যবস্থা ব্যতীত জলবায়ুর পরিবর্তনশীলতা এবং এর চরম প্রভাবের কারণে দেশটি ২০৫০ সালের মধ্যে কৃষি মোট দেশজ উৎপাদনের প্রায় ৩০ শতাংশ হারাতে পারে। বিশেষ করে যেসব নারীরা জীবিকা নির্বাহের জন্য জলবায়ু ও সংবেদনশীল কৃষি অনুশীলন এবং প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নির্ভর করেন, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। এডিবির সিনিয়র প্রকল্প ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ পুষ্কর শ্রীবাস্তব বলেন, প্রকল্পটি এডিবি অর্থায়নকৃত সাউথওয়েস্ট এরিয়া ইন্টিগ্রেটেড ওয়াটার রিসোর্স প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্টের অন্তর্ভুক্ত। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র্যতা কমানোর পাশাপাশি উত্পাদনশীলতা বাড়াবে। বিশেষ করে নারী ও দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই জীবিকা নিশ্চিতে সহায়তা করবে।   প্রকল্পটির মাধ্যমে ৬ লাখের বেশি মানুষ উপকৃত হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এই প্রকল্পটি সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার উন্নয়ন ও প্রসার ঘটাবে। পানি ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলোর জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং অন্যান্য সামাজিক পরিকাঠামো নির্মাণ করবে।   এ ছাড়া প্রকল্পটি বাংলাদেশের পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে, কার্যক্রম তদারকি করতে এবং এসব সংস্থার ক্রিয়াকলাপে জলবায়ু অভিযোজনকে সংহত করতে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সক্ষমতা বাড়াবে বলে জানিয়েছেন এডিবির এ প্রকল্প ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ।  
১৩ মার্চ ২০২৪, ১৩:০১

ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে বাংলাদেশ ব্যাংক 
ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া হবে এই শ্রেণির খেলাপিদের জন্য। সেইসঙ্গে তাদের ট্রেড লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নিবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এমনকি ঋণ খেলাপিদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বিরুদ্ধেও নেওয়া হবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের সংজ্ঞায়িত করার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বেশ কয়েকটি নির্দেশনা যুক্ত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।    ইচ্ছাকৃত খেলাপি কে? সার্কুলারে  বলা হয়, কোনো ঋণ গ্রহীতা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি নিজের, তার পরিবারের সদস্যের, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির অনুকূলে কোনও ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত ঋণ, অগ্রিম, বিনিয়োগ বা আরোপিত সুদ বা মুনাফা তার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও পরিশোধ করে না করলে তিনি ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবেন। এছাড়া জালিয়াতি, প্রতারণা বা মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে বা যে উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে সে সে উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করলে অথবা অন্য কোন ব্যাংকের জামানতকৃত সম্পদ অনুমতি ছাড়া নতুন ঋণে জামানত হিসেবে দেখালেও তা ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবে।   যেভাবে চিহ্নিত করা হবে ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ সার্কুলারের নির্দেশনা অনুযায়ী, ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের চিহ্নিত করতে  আগামী ৯ এপ্রিলের মধ্যে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর দুই ধাপ নিচের কর্মকর্তার অধীনে প্রধান কার্যালয়ে ‘ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতা শনাক্তকরণ ইউনিট’ নামে একটি পৃথক ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, কারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি তা শনাক্ত করবেন।   তবে জাতীয় শিল্পনীতিতে বর্ণিত সংজ্ঞানুযায়ী ‘বৃহৎ শিল্প’ খাতের ৭৫ কোটি ও তদূর্ধ্ব, ‘মাঝারি শিল্প’ খাতের ৩০ কোটি ও তদূর্ধ্ব এবং অন্যান্য খাতের ১০ কোটি ও তদূর্ধ্ব স্থিতিসম্পন্ন ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির বা পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন গ্রহণ আবশ্যক হবে।   ইচ্ছাকৃত খেলাপির বিরুদ্ধে নেওয়া হবে যেসব ব্যবস্থা ইচ্ছাকৃত খেলাপির বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের (আরকেএসসি) নিকট কোম্পানি নিবন্ধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে তালিকা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে ইচ্ছাকৃত খেলাপির গাড়ি, জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট ইত্যাদির নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছেও তালিকা পাঠানো হবে। যাতে সংশ্লিষ্ট সংস্থা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। পাশাপাশি কোনো ইচ্ছাকৃত খেলাপি রাষ্ট্রীয় পুরস্কার বা সম্মাননা পাওয়ারও যোগ্য হবেন না।   ইচ্ছাকৃত খেলাপি হলে পরিচালক পদ বাতিল নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছাকৃত খেলাপির তালিকায় কারও নাম এলে ঋণ পরিশোধ করে তালিকা থেকে অব্যাহতির ৫ বছরের মধ্যে কোনো ব্যাংকের পরিচালক হতে পারবেন না। আর যদি কোনো পরিচালক ইচ্ছাকৃত খেলাপি হয়ে পড়েন তবে তার পরিচালক পদ বাতিল হবে।   ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতাসংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রতি ত্রৈমাসিকে ব্যাংকের অডিট কমিটির সভায় উপস্থাপন করতে হবে। অডিট কমিটি উক্ত উপস্থাপিত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলি পর্যালোচনা শেষে গুরুত্ব বিবেচনায় এ বিষয়ে তাদের মতামত বা সিদ্ধান্ত পরবর্তী পর্ষদ সভাকে জানাবে। ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত নিয়মিত বা বিশেষ অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপির বিষয়ে পর্যালোচনাসহ একটি আলাদা অনুচ্ছেদ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং তা নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে টিকা আকারে প্রকাশ করতে হবে।   ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণের সুদ মওকুফ করা যাবে না, করা যাবে না পুনঃতফসিলও বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ইচ্ছাকৃত খেলাপির ঋণ হিসাবের বিপরীতে আরোপিত বা অনারোপিত কোনও সুদ মওকুফ করা যাবে না এবং এই ঋণ পুনঃতফসিলও করা যাবে না। ইচ্ছাকৃত খেলাপির ঋণ হিসাবটি অন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক টেকওভার করা যাবে না। ওই ঋণ সম্পূর্ণ আদায় বা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ঋণ গ্রহীতা ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতা হিসেবেই বিবেচিত হবেন।   ইচ্ছাকৃত খেলাপির ঋণ সম্পর্কিত তথ্য নিয়মিত বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে  ব্যাংক কর্তৃক ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতা চিহ্নিত ও  চূড়ান্ত করার পর এ সংক্রান্ত তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে (সিআইবি) রিপোর্ট করতে হবে। ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতাকে সিআইবিতে উইফুল ডিফল্টার হিসেবে প্রদর্শন করতে হবে। ব্যাংক কর্তৃক ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতার তথ্য ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে বিবরণী আকারে প্রতি তিন মাস শেষে পরবর্তী মাসের ১০ (দশ) তারিখের মধ্যে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (ডিভিশন-১) এর নিকট দাখিল করতে হবে এবং এ সম্পর্কিত যাবতীয় দলিলাদিসহ হালনাগাদ বিবরণী বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দলের চাহিদা মোতাবেক উপস্থাপন করতে হবে।   ইচ্ছাকৃত খেলাপি চিহ্নিত ও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে ব্যাংকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা  কোনো ব্যাংক ইচ্ছাকৃত খেলাপি সম্পর্কিত জারিকৃত নির্দেশনা মানছে না মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট বিবেচিত হলে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে উক্ত নির্দেশনা লঙ্ঘনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা জরিমানা করবে।  
১৩ মার্চ ২০২৪, ১১:৪০

যারা ঋণ দিয়ে সুদ নিচ্ছে, তারাই আবার নোবেল পাচ্ছে :  প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
দরিদ্র মানুষকে যারা ঋণ দিয়ে সুদ নিচ্ছে, তারাই আবার নোবেল পাচ্ছে। ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের জন্য শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দিকে ইঙ্গিত করে এ মন্তব্য করেছেন  মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ৩টায় ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামালদিয়ায় প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ক্ষুদ্র খামারিদের মাঝে মিল্কিং মেশিন বিতরণ করার সময় এ মন্তব্য করেন তিনি। বেসরকারি সংস্থার ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের দিকে ইঙ্গিত করে মন্ত্রী এ সময় বলেন, মানুষকে ঋণের নামে টাকা-পয়সা দিয়ে ১৪ গুণ সুদসহ ফেরত নেওয়া হচ্ছে। তারপরও ঋণ শোধ হয় না। এভাবে বহু মানুষ তাদের সর্বস্ব হারাচ্ছে। তিনি বলেন, যারা ঋণ দিয়ে সুদ নিচ্ছে, তারাই আবার নোবেল পুরস্কার পাচ্ছে। আর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এই দেশের মাটি, ঘাস, প্রকৃতির ঘ্রাণ শুঁকে শুঁকে কোন মানুষ একটু কষ্টে আছে, কোন মানুষ বিষণ্নতায় আছে, কোন মানুষের একটা কাজ জোগানো যায়, সেসব খুঁজে খুঁজে বের করেন; সেই শেখ হাসিনার উপরই অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের হস্তক্ষেপ আসে। এরপর মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়ে মো. আব্দুর রহমান বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করে সারা দেশ উন্নয়নে ভরপুর করে দেওয়া হবে। মধুখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের আয়োজনে ও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সঞ্জিব বিশ্বাসের সভাপতিত্বে বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এলডিপিপি প্রকল্পের চিফ টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর ডা. গোলাম রব্বানী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামনূন আহমেদ অনিক, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) মো. মিজানুর রহমান ও উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুদেব কুমার দাস।
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:১৭

অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ে বোনাস পাবেন কর্মকর্তারা
অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ে ৫ শতাংশ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে বোনাস বা প্রণোদনা হিসাবে বিতরণ করার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দুই বছরের অধিক সময়ে বকেয়া মন্দ ঋণ বা অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) সরাসরি তত্ত্বাবধানে প্রধান কার্যালয়ে ‘অবলোপনকৃত ঋণ আদায় ইউনিট’ গঠন করতে হবে। আর শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকসমূহের ক্ষেত্রে ‘অবলোপনকৃত বিনিয়োগ আদায় ইউনিট’ হবে। এই ইউনিটে ঋণ মঞ্জুরি কার্যক্রম, ঋণের ডকুমেন্টেশন ও ঋণ আদায়ে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত হবে। এতে আরও বলা হয়, অবলোপনকৃত ঋণের বিপরীতে আদায়কৃত অর্থের ৫ শতাংশ বা সমপরিমাণ অর্থ প্রণোদনা হিসেবে অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে বিতরণযোগ্য হবে। বিতরণযোগ্য অর্থের সর্বোচ্চ শতাংশ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রাপ্য হবেন। অবশিষ্ট অর্থ অবলোপনকৃত ঋণ আদায় ইউনিটের প্রধানসহ ওই ইউনিটের অন্য কর্মকর্তারা প্রাপ্য হবেন। পাশাপাশি যে শাখা বা বিভাগের অবলোপনকৃত ঋণ আদায় করা হবে ওই শাখা কিংবা বিভাগের সরাসরিভাবে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাও ইউনিটের কর্মকর্তাদের অনুরূপ আনুপাতিক হারে প্রণোদনা পাবেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, যেসব ঋণ হিসাব একাদিক্রমে দুই বছর মন্দ ও ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত রয়েছে সেসব ঋণ হিসাব অবলোপন হবে। এ ছাড়া অবলোপনের জন্য নির্বাচিত ঋণ হিসাবসমূহের ক্ষেত্রে আগে আইনগত ব্যবস্থা সূচিত না হয়ে থাকলে অবলোপনের আগে অবশ্যই অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ অনুযায়ী মামলা দায়ের করতে হবে।
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:০৪
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়