• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo
সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে বুয়েট শিক্ষক সমিতির উদ্বেগ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাম্প্রতিক ঘটনাবলি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বুয়েট শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ। সোমবার (৮ মার্চ) বুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ কে এম মনজুর মোরশেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৮ মার্চ থেকে উদ্ভূত ঘটনাবলিতে (রাত্রি দ্বিপ্রহরে একটি ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের বুয়েট ক্যাম্পাসে অনাহুত আগমন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ দাবি, সংশ্লিষ্ট কয়েকজন বুয়েটছাত্রের বহিষ্কার দাবি, উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে যথাযথ আচরণ না করা, টার্ম-ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন, ১ এপ্রিল হাইকোর্ট কর্তৃক বুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধে জারিকৃত আদেশ স্থগিতকরণ, শিক্ষার্থীদের অব্যাহত আন্দোলন এবং একাডেমিক কার্যক্রমে স্থবিরতা) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (প্রবিশিস) উদ্বেগ প্রকাশ করছে। একইসঙ্গে কিছু পর্যবেক্ষণ সন্নিবেশ করছে- প্রথমত, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব রেজিস্ট্রারের। সবার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানানো যাচ্ছে। নিষিদ্ধ-ঘোষিত সংগঠনের ইমেইল প্রেরণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এ ব্যাপারে জাতীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণের আহ্বান জানাচ্ছি। দ্বিতীয়ত, সাংগঠনিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে দেওয়া জরুরি বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করার যে রায় গত ১ এপ্রিল হাইকোর্টে দিয়েছেন তার বিপরীতে আপিল করার বিষয়টিতে প্রশাসন জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগী হবেন এবং এ ব্যাপারে শিক্ষক সমিতি সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে। তৃতীয়ত, ২০১৯ পরবর্তী বছরগুলোতে বুয়েটে শিক্ষা কার্যক্রম অবাধে চলেছে এবং সুষ্ঠু একাডেমিক পরিবেশ বজায় ছিল। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখা, নিরাপদ রাখা, বিদ্যাচর্চা অক্ষুণ্ণ রাখা ইত্যাদি আমাদের সবার দায়িত্ব। শিক্ষক সমিতি এমন পরিবেশই প্রত্যাশা করে। এমন অবস্থায় বর্তমান অচলাবস্থা নিরসন এবং স্বাভাবিক একাডেমিক কার্যক্রম চালুর দাবি জানাচ্ছে শিক্ষক সমিতি। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, একটি শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং নিষ্কলুষ ক্যাম্পাস আমাদের সবার কাম্য। সব অংশীজনের সহযোগিতা ও দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে অচিরেই সে অবস্থা ফিরে আসবে বলে শিক্ষক সমিতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।
০৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:৫১

সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদ বিবরণী নিয়ে টিআইবির উদ্বেগ
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর দাবি সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা সংশোধন করে সম্পদের বিবরণী জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলে দেশের প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারী জবাবদিহি থেকে দায়মুক্তির পাশাপাশি দুর্নীতি সুরক্ষিত ও উৎসাহিত হবে। এতে সংস্থাটি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো সংস্থাটির এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার বিধি বাতিলে অসাধু সরকারি কর্মকর্তাদের আরও বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হবে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকারি চাকরিজীবী (আচরণ) বিধিমালার প্রস্তাবিত সংশোধনী সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার ও শীর্ষ পর্যায়ের দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা ঘোষণার ঠিক উল্টো। প্রথমে প্রতি বছর সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার বিধান থাকলেও সরকারি কর্মচারীদের অনীহার মুখে পরে তা শিথিল করে তা পাঁচ বছর পর পর দেওয়ার বিধান করা হয়। সেই বিধানও সঠিকভাবে পালনে অনাগ্রহ ছিল তাদের। চাকরির শুরুতে সম্পদের বিবরণী দিলেও পাঁচ বছর পর পর হিসাব হালনাগাদের বাধ্যবাধকতার গুরুত্বই দেন না সরকারি কর্মচারীরা। এখন এই বাধ্যবাধকতা সরিয়ে দেওয়ার অর্থ প্রকারান্তরে সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে উঠতে উৎসাহ দেওয়া বলে মনে করেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি মনে করেন, সম্পদের বিবরণী জমা দেওয়ার মতো কোনও বিধান না থাকলে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে নির্ভয়ে দুর্নীতি ও এর মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের সুযোগ বাড়বে। একইসঙ্গে প্রাপ্য সেবা পেতে সরকারি অফিসে ভোগান্তি বাড়বে জনগণের। অবৈধ অর্থ লেনদেন বহুগুণে বাড়বে এবং সুশাসিত সরকার ব্যবস্থা নিশ্চিতের স্বপ্ন ব্যর্থ হবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পদের হিসাব সরাসরি নিয়মিত জমা ও হালনাগাদের পরিবর্তে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে দেওয়া বার্ষিক আয়কর রিটার্ন থেকে নেওয়ার যে যুক্তি, বাস্তবে তা অর্থহীন দাবি করে বলেন, ‘আয়কর আইন, ২০২৩’ অনুযায়ী তা সম্ভব নয়। আইনের ৩০৯(২) ও ৩০৯(৩) ধারা অনুযায়ী কোনও কর্তৃপক্ষ কোনও সরকারি কর্মচারীকে এই আইনের অধীনে কোনও ট্যাক্স রিটার্ন, অ্যাকাউন্ট বা নথি উপস্থাপন, সাক্ষ্য বা প্রমাণ হিসাবে উপস্থাপনের আদেশ দিতে পারে না। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুর্নীতি বা বৈধ আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পদ আহরণের অভিযোগে কোনও ব্যক্তির আয়কর বিবরণী আদালতের নির্দেশ ছাড়া দেখতে পারবে না। ফলে জবাবদিহির মুখোমুখি হওয়ার বদলে এই সংশোধনীর মাধ্যমে দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মচারীরা নতুন সুরক্ষা পাবে। ড. ইফতেখারুজ্জামান বিবৃতিতে বলেন, সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার বিধান রহিত করে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের খসড়া সংশোধনী যাচাইয়ের পর এটি এখন প্রশাসনিক উন্নয়নবিষয়ক কমিটিতে পাঠানো হবে।
২০ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

জাহাজ জিম্মির ঘটনায় এফবিসিসিআইয়ের উদ্বেগ
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে ২৩ নাবিক- ঘটনায় এরই মধ্যে কয়েক দিন পার হয়ে গেছে। এ ঘটনার কোনো কুল কিনারা হয়নি। এতে একদিকে যেমন নাবিকদের পরিবারের উদ্বেগ বাড়ছে ঠিক তেমনি এর প্রভাব শিপিং বাণিজ্যে পড়ছে। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম। এ ধরনের ঘটনা খুবই অপ্রত্যাশিত ও দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সোমবার (১৮ মার্চ) এক বিবৃতিতে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, আন্তর্জাতিক নৌ রুটে জাহাজ জিম্মির মতো ঘটনা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অন্তরায়। এসময় ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা চান তিনি। জাহাজটি উদ্ধারে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করায় সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে জিম্মি ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি উদ্ধারে সরকার সচেষ্ট হবে। এ ঘটনায় সহমর্মিতা জানাতে এফবিসিসিআই সভাপতি ফোন করেন কবির গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহানকে। তাদেরকে তিনি সান্তনা দেন। নাবিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অক্ষত অবস্থায় উদ্ধারে মালিকপক্ষের তৎপরতার ভূয়সী প্রশংসা করেন। শিগগিরই প্রতিষ্ঠানটি তাদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।  
১৮ মার্চ ২০২৪, ১৫:১২

জাতিসংঘের এই উদ্বেগ কতটা নৈতিক?
বাংলাদেশ নিয়ে আবারও উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ। এবারের ইস্যু ড. ইউনূস। জাতিসংঘের অফিসে মহাসচিব আন্থোনিও গুতেরেসের হয়ে তার মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক তাদের নিয়মিত প্রেসব্রিফিংএ জনিয়েছেন এই উদ্বেগ। তিনি বলেন, ইউনূস জাতিসংঘের অত্যন্ত মর্যাদাসম্পন্ন এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তাঁর বিরুদ্ধে বাংলাদেশে যা ঘটছে, তা চরম উদ্বেগের। এর একদিন আগে ঢাকায় ইউনূস গ্রামীণ টেলিকমসহ আটটি প্রতিষ্ঠান দখল হওয়ার দাবি করে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি বলেন, আমাদের আটটি প্রতিষ্ঠান জবরদখল হয়ে গেছে। গ্রামীণ ব্যাংক এখন নিজেদের মতো করে এসব প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছে। ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্রামীণ ব্যাংক ভবনে তালা মেরে রেখেছে। নিজের বাড়িতে অন্য কেউ যদি তালা মারে, তখন কেমন লাগবে? দেশে আইন–আদালত আছে কিসের জন্য? ঢাকার এই সংবাদে সম্মেলনে সূত্র ধরে জাতিসংঘের নিয়মিত প্রস ব্রিফিংএ প্রশ্ন করেন, সরকারের বিপক্ষে বিদেশিদের উস্কানোর সেই পরিচিত মুখ মুশফিক ফজল আনসারি। তিনি বলেন, সরকার সব গ্রামীণ কার্যালয় দখল করে নিয়েছে। ইউনূসের বিরুদ্ধে নতুন করে আরেকটি মামলা দায়ের করেছে ক্ষমতাসীন সরকার। তার এই আশঙ্কাজনক পরিস্থিতির নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব কী অবগত রয়েছেন? জবাবে গুতেরেসের মুখপাত্র ডুজারিক বলেন, তারা সব জানেন। জাতিসংঘের কাছে খুব মর্যাদাবান ব্যক্তি ইউনূস। তিনি জাতিসংঘের অনেক কাজ করে দেন। তাঁকে নিয়ে বাংলাদেশে যেসব ঘটনা ঘটছে তাতে তারা চরমভাবে উদ্বিগ্ন।  এখন আমরা দেখে নিতে পারি, ঠিক কোন বিষয়ের ওপর কেন জাতিসংঘ উদ্বিগ্ন। এর জন্যে আমাদের ভিভিন্ন সময়ের গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য উপাত্ত দেখতে হবে। যে অভিযোগ ইউনূস সাহেব করছেন এর গোড়ায় কী ছিল? ১৯৮৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংক গঠন করা হয়েছিল। এসময় গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যদের পরিশোধিত মূলধন শূন্য ছিল । অর্থাৎ এর মূলধন ছিল পুরোটাই সরকারের। সেসময় আইনে গ্রামীণ ব্যাংককে কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান করার কোনো এখতিয়ার দেওয়া হয়নি। তাই আজ যে প্রতিষ্ঠানগুলো দখলের কথা বলা হচ্ছে সেগুলো তৈরির সময়ই আইন ভাঙা হয়েছিল।   প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ শক্তি, গ্রামীণ সামগ্রী, গ্রামীণ ফান্ড, গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশন; গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশন এবং গ্রামীণ উদ্যোগ। গ্রামীণ ব্যাংক অনুসন্ধান কমিটির ২০১২ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মোট ৪০ টি প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হয়। তবে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অর্থায়নে মোট ৫৪ টি প্রতিষ্ঠান এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে বলছে দেশের গণমাধ্যমগুলো। প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকই পরিচালনা করছিল। গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালকরাই প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালক ছিলেন। তবে সম্প্রতি ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি না থাকায় এবং ব্যাংকে ইউনূসপন্থী পরিচালকদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় নতুন ম্যানেজমেন্ট তার আওতাভুক্ত অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর ম্যানেজমেন্টেও পরিবর্তন এনেছে।  ১৯৮৩ সালের আইন মেনে নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠানে যে পরিবর্তন এনেছে এটিকেই দখল বলছেন ইউনূস সাহেব। তার দাবি এই প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রামীণ ব্যাংকের টাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়নি। অথচ বিদেশি কোম্পানি টেলিনরের সঙ্গে গ্রামীণ টেলিকমের শেয়ার বিতর্কের সময় তিনি নিজেই বলেছিলেন, গ্রামীণ টেলিকম গ্রামীণ ব্যাংকের টাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গণমাধ্যমে বহুবার এসব বক্তব্য ছাপা হয়েছে। সম্প্রতি গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের বেতন ভাতা নিয়ে চলমান মামলায় আদালতে উত্থাপিত নথি থেকেও প্রমাণ পাওয়া যায়, প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে। সংগঠনগুলোর ওয়েবসাইটেও একই তথ্য দেখা যায়। ২০০৬ সালে অ্যাশডেন পুরস্কার বিজয়ের সময় গ্রামীণ শক্তি অ্যাশডেনকে নিজেদের যে পরিচিতি দেয়, তাতে বলা হয়েছে, এ্ই প্রতিষ্ঠানটি সহজে গ্রামের মানুষের কাছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি পৌঁছে দেয়ার জন্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এটি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। আর এখনকার সুর ভিন্ন। ইউনূসের আরও নানা কৌশল এরই মধ্যে গণমাধ্যমগুলো প্রকাশ করেছে। একেক কৌশল একেক কারণে করেছেন তিনি। এর কোনটি ব্যবহার করেছেন কর ফাঁকি দিতে। কোনটা করেছেন কর্মচারিদের ন্যায্য পাওনা না দেয়ার জন্যে, আবার কোন টা বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক বাাড়াতে। এমনকী তাঁর মিথ্যাচার আদালতের বাইরে মিটমাট করার তথ্য প্রামাণিত হয়েছে। এরইমধ্যে পুরো বিষয়গুলোই প্রকাশ্য ।  এত সব জানা তথ্য সাবার সামনে। অথচ জাতিসংঘেষের সংবাদ সম্মেলনে ডুজারিককে কেউ জিজ্ঞাসা করলো না, ইউনূস সম্পর্কে আনসারি যেটা বললো, এর বাইরে কোন সত্য আছে কী না? জাতিসংঘের জন্যে কেউ কোন কাজ করলে, তার জন্যে যেকোন অপরধ করা বৈধ কী না? কোন ঘটনার আদ্যপান্ত না জেনে একটি স্বাধীন দেশ সম্পর্কে মন্তব্য করা কূটনৈতিক সভ্যতার মধ্যে পড়ে কী না? এমন কী জাতীসংঘ কী এনিয়ে কোন তদন্ত করেছে কী না? ইউনূসের ঢাকার সংবাদ সম্মেলন আর জাতিসংঘের সংবাদ সম্মেলন এক সূত্রে গাঁথা কী না?  এরইমধ্যে গ্রামীণ ব্যাংক এবং সরকার আলাদাভাবে এই দুই সংবাদ সম্মেলনের জবাব দিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রী পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছে, ইউনূসের নামে যে মামলা হয়েছে, এতে তাদের কোন হাত নেই। বিষয়ের পুরোটা এনবিআর, দুদক এবং গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মচারীদের এখতিয়ার। গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকেও সাংবাদিকদের তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করা হয়েছে। অর্থাৎ জাতিসংঘ কথা বলেছে বিচারধীন একটি বিষয় নিয়ে। যেখানে পরিস্কার পক্ষ-বিপক্ষ আছে। আমার প্রশ্ন, জাতিসংঘের মত একটি আন্তর্জাতিক সার্বজনিন সংগঠনের এরকম পক্ষপাতদুষ্ট উদ্বেগ কতটা নৈতিক?       ইউনূস সাহেবের বর্তমান তৎপরতা নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। তিনি দীর্ঘদিন নিজেই একটি পক্ষ। তার সাম্প্রতিক সংবাদ সম্মেলনেও তার সঙ্গে ছিলেন সরকারবিরোধী সুশীল আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। যিনি সরকারের বিরুদ্ধে গুজব ছড়িয়ে জেলে গিয়েছিলেন। ২০০৯ সালে যাকে কুড়িগ্রামের রৌমারি সীমান্ত থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল বিনা অনুমতিতে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া উপেক্ষা করার। আরও যারা ছিলেন সবাই আগে থেকে সরকার বিরোধী হিসাবে চিহ্নিত। তারা সরকারের বিরোধিতা করবেন এটাই স্বাভাবিক। এমনকী আনসারি সাহেবের উস্কানীও আমার অস্বাভাবিক মনে হয় না। আমার অস্বাভাবিক লাগে জাতিসংঘের এরকম একপাক্ষিক আচরণ। অসহায় লাগে যখন দেখি লবিস্ট ফার্মগুলো জাতিসংঘের মহাসচিবকেও টলিয়ে দিচ্ছে। লেখক: গণমাধ্যম কর্মী  
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৩০

মিয়ানমার সংঘাতে সৃষ্ট উদ্বেগ জাতিসংঘকে জানাবে বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের সৃষ্ট সমস্যা বাংলাদেশ সীমান্তে আরও শক্তিশালী হওয়ায় উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জাতিসংঘকে লিখিতভাবে জানাবে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।  ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের সীমান্তে শঙ্কা জিইয়ে রাখতে পারি না। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। চিঠি দিবে জাতিসংঘকে। মিয়ানমার সীমান্তের রেশ ভারতেও গেছে। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। এরই মধ্যে ভারতের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে মিয়ানমার সীমান্ত ইস্যুটাও আছে। তিনি বলেন, মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী ও সেনাবাহিনীর যেসব সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে তাদের ফিরিয়ে নেবে দেশটি। ফিরিয়ে নিতেই হবে। ফিরিয়ে না নেওয়ার বিকল্প নেই। 
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৩:৫৪

জাবিতে ধর্ষণের ঘটনায় ১৮ নাগরিকের উদ্বেগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গত ৩ ফেব্রুয়ারি ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভ এবং প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের ১৮ নাগরিক। তারা বলেন, ‘আমরা এ ঘটনায় হতবাক ও ক্ষুব্ধ।’ মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ ক্ষোভ এবং প্রতিবাদ জানান। বিবৃতিতে বলা হয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতোপূর্বে এমন আরও ঘটনা ঘটেছে। কোনো ধর্ষণের ঘটনায়  তদন্ত বা সুরাহা কর্তৃপক্ষ করেনি। বিশাল এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা আনার কোনো কার্যকর ব্যবস্থা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নেয়নি। এই সুযোগে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ছাত্র এই ধরনের অমানবিক ঘটনা ঘটাতে সক্ষম হচ্ছে। এই ধর্ষক ছাত্রদের যে কথিত রাজনৈতিক পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা আমাদের শঙ্কিত করে তুলেছে। আজকের যে ছাত্র সে আগামী দিনের রাষ্ট্র ও সমাজ পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হবে। সেই ছাত্রদের যদি এই নৈতিক অধঃপতন হয়, তাহলে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা চরম উদ্বিগ্ন। আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই যে, বাংলাদেশে এ হীনকর্ম জনগণের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। আমরা সরকারের কাছে এই জঘন্য অপরাধের দ্রুত তদন্ত ও বিচার চাই। সেইসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পূর্ণ নিরাপত্তা বিধান করে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য কঠোর ব্যবস্থা ও শক্ত অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা আশা করি, বাংলাদেশের কোথাও আর কোনো নারীকে ধর্ষণ করা হবে না। বিবৃতিতে হাসান ইমাম, অনুপম সেন, সারওয়ার আলী, রামেন্দু মজুমদার, আবেদ খান, ফেরদৌসী মজুমদার, মামুনুর রশীদ, মফিদুল হক, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, মুনতাসীর মামুন, শাহরিয়ার কবীর, কেরামত মওলা, মিলনকান্তি দে, লাকী ইনাম, সারা যাকের, শিমূল ইউসুফ, গোলাম কুদ্দুছ এবং আহকামউল্লাহ প্রমুখ সই করেছেন।
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:৪৫

বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তারে উদ্বেগ জানালেও অগ্নিসন্ত্রাসের বিষয়টি এড়িয়ে যান মিলার
বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে উদ্বেগ জানালেও তাদের আগুন সন্ত্রাসের বিষয়টি এড়িয়ে যান মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি দলটির গ্রেপ্তার করা নেতাদের স্বচ্ছ বিচারিক প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ভোট ঠেকানোর ডাক দিয় বিএনপি। এরপর পরপর কয়েকটি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারণা, এসব ঘটনায়  বিএনপি নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।   এরপর গত ১৮ ডিসেম্বর নাশকতার শিকার হয় ‘মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস’। বিমানবন্দর পার হয়ে তেজগাঁও স্টেশনে ঢোকার আগেই হঠাৎ আগুনে দিগবিদিক ছুটোছুটি শুরু করেন যাত্রীরা। তিনটি বগিতে লাগা আগুনে এক বগিতেই মারা যান মা ও শিশুসহ ৪ জন।   এছাড়া ভোটের ২ দিন আগে গত ৫ জানুয়ারি গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন দেয় নাশকতাকারীরা। এ ঘটনায় প্রাণ হারান আরও চারজন। এসব ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে রাজনীতিতে যুক্ত একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী।   পুলিশ জানিয়েছে, এসব ঘটনায় জড়িত বিএনপির শীর্ষ নেতারা। পরিকল্পিতভাবে তারা যানবাহনে আগুন দিয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, আগুন দেয়ার ঘটনার ভিডিও করে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কাছে পাঠানো হতো।   মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের সময় কয়েক হাজার বিরোধী নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের স্বচ্ছ বিচারিক প্রক্রিয়া নিশ্চিতে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যদিকে গণতন্ত্র সুসংহত করার পাশাপাশি শান্তি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কাজ করে যাবে বলেও জানান মিলার। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, আমরা আশা করি বাংলাদেশ সরকার স্বচ্ছ জবাবদিহিতার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠা করবে। দেশের উন্নতির লক্ষ্যে তারা দলমত নির্বিশেষে একত্রে কাজ করবে। সংসদের বিরোধী দলীয় সদস্যদের পাশাপাশি নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ম্যাথিউ মিলার।
৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:০০

উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ত্রিমাত্রিক দূষণ, মৃত্যুহার ২৮ শতাংশ
বিশ্বে পরিবেশগত দূষণে বিপর্যস্ত দেশগুলোর মধ্যে একেবারে প্রথম সারিতে অবস্থান বাংলাদেশের। বাতাসের পাশাপাশি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে মাটি ও পানির দূষণ। বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ দেশে প্রতি বছর যতো মানুষের মৃত্যু হয় তার ২৮ শতাংশই মারা যায় পরিবেশদূষণ জনিত অসুখবিসুখের কারণে। কিন্তু সারা বিশ্বে দূষণজনিত গড় মৃত্যুহার মাত্র ১৬ শতাংশ। অবশ্য বিশ্বের ৯৯ শতাংশ মানুষই বাস করছেন দূষণের মধ্যে। এমন পরিস্থিতিতে দূর্বল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কারণেই বাংলাদেশে দূষণের ভয়াবহতা বেশি বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।  দেশে সবচেয়ে নাজুক অবস্থা বাতাসের। কল-কারখানার ধোঁয়া, গাড়ির দূষণ, খনি, আগুনসহ বিভিন্ন কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে বায়ুমণ্ডল। বাতাসে ধূলিকণার পাশাপাশি যোগ হচ্ছে জ্বালানি তেলের বর্জ্য, সীসা, তামাকের ধোঁয়াসহ অন্যান্য দূষিত উপকরণ। সাধারণত, যানবাহনের ইঞ্জিন ও জেনারেটরের জ্বালানি পোড়া ধোঁয়া, কলকারখানা ও কৃষিজাত ধোঁয়া, রান্নায় ব্যবহৃত জ্বালানি পোড়া ধোঁয়া, রাসায়নিক কারখানার ধোঁয়া ও যেকোনো অগ্নিকাণ্ডের ধোঁয়া থেকে পার্টিকুলেট ম্যাটার ২.৫ বাতাসে আসে, যা সহজেই নিশ্বাসের সঙ্গে ঢুকে মিশে যায় রক্তে। শরীরে বাসা বাঁধে ক্যান্সার, ব্রঙ্কাইটিসসহ বিভিন্ন রোগ।   দ্য ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসার বায়ু দূষণকে প্রথম সারির কারসিনোজেন হিসেবে দেখিয়েছে, যা ক্যানসার তৈরি করে। ল্যানসেট কমিশন দাবি করেছে, সারা বিশ্বে ৪৩ শতাংশ ফুসফুস ক্যানসার-জনিত মৃত্যুর জন্য দায়ী দূষণ। এই অতিসূক্ষ্ম কণার সঙ্গে এপিডারমাল গ্রোথ ফ্যাক্টর রিসেপটর জিন মিউটেশনের মধ্যে একটা সম্পর্ক আছে। অধূমপায়ী ক্যানসার রোগীদের মধ্যে এটা দেখা যায়। সব থেকে সমস্যার বিষয় হল, বিশ্বের প্রায় ৯৯ শতাংশ মানুষই দূষণে বাস করেন। এতো গেলো বাতাসের কথা। দিন দিন শিল্পে রাসায়নিকের বাড়তি ব্যবহার, শিল্পকারখানা, খনি, কৃষিকাজের দুর্বল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা মাটিকে বিষিয়ে তুলছে। দূষণের কারণে খাদ্য ও পানি অনিরাপদ হওয়ার পাশাপাশি ফসল উৎপাদনের ক্ষমতা হারাচ্ছে মাটি। পরিস্থিতি এখনি নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে রাসায়নিকের ব্যবহার দ্বিগুণ বেড়ে তা ভয়াবহ বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, অপরিশোধিত পোলট্রি বর্জ্য সরাসরি জমিতে ও জলাধারে ব্যবহার করায় শাকসবজিতে ঢুকে পড়ছে রোগজীবাণু। শুধু চাষেই নয়, অন্যভাবে খাদ্য উৎপাদন করতে গিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের দূষণ। প্রতিদিন দেশে কমছে কৃষিজমি এবং প্রাকৃতিক পানির উৎসস্থল। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক মাটি দূষণের সাথে দূষিত হচ্ছে পুরো পরিবেশ। জমিতে ব্যবহৃত কীটনাশক বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে জলাশয়ে যাচ্ছে। দূষণ ছড়াচ্ছে পানিতেও। ফলে মাটি-পানি থেকে উৎপাদিত খাদ্য মানুষের শরীরে গিয়ে তাদের অজান্তেই মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে ফেলছে। সেইসঙ্গে ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের দেহে ক্যান্সারসহ মারাত্মক ব্যাধির প্রধান কারণ বিষাক্ত খাদ্য। পরিস্থিতি এখনি নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে রাসায়নিকের ব্যবহার দ্বিগুণ বেড়ে তা ভয়াবহ বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এদিকে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিএলওএস ওয়ান জার্নালের এক গবেষণা বলছে, দেশের ৪৯ শতাংশ পানিতে বিপজ্জনক মাত্রায় ক্যান্সারের জীবাণু পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞানীরা গবেষণার জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পান করার উপযোগী নমুনা পানি সংগ্রহ করেন। আর্সেনিক নিঃসরণের মাত্রা বুঝতে পানিতে অক্সিজেনের ঘনত্ব, পিএইচ এবং তাপমাত্রা পরীক্ষার পর ৪৯ শতাংশ পানিতে ক্যানসার সৃষ্টিকারী আর্সেনিকের উপস্থিতি দেখতে পান তারা। এ মাত্রার পানি পান করার ফলে মানুষের শরীরে আরসেনিকসিস হয়। যে কারণে ফুসফুস, মূত্রাশয়, কিডনি এবং ত্বকের ক্যানসার হতে পারে। নিয়মিত প্রবল বন্যা ও ঝুঁকিপূর্ণ জলবায়ু সংকট পানির এমন মারাত্বক দূর্ষণের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী বলে উল্লেখ করেছেন গবেষকরা।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) নির্ধারিত পানীয় জলের নিরাপদ সীমা প্রতি লিটারে সর্বোচ্চ ১০ মাইক্রোগ্রাম। বাংলাদেশের ভূগর্ভস্থ পানির প্রায় ৪৯ শতাংশে আর্সেনিকের ঘনত্ব ওই সীমার বেশি। কিছু নমুনায় আর্সেনিকের ঘনত্ব রেকর্ড করা হয়েছে প্রতি লিটারে প্রায় ৪৫০ মাইক্রোগ্রাম। যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্ধারিত মাত্রার ৪৫ গুণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন বলেন, বায়ু, মাটি ও পানির এই ত্রিমাত্রিক দূষণ এখনি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে একসময় তাতে একসঙ্গে শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটবে। পরিবেশবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুর রব বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত নগরীর মধ্যে ১০ থেকে ২০ নম্বরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান। এতে করে পরিবেশ দূষণ, শব্দ দূষণ, পয়ঃনিষ্কাশন থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রে ঢাকা একটা বিস্ফোরণোন্মুখ পরিস্থিতিতে পড়েছে। এতে করে ঢাকা ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। রাসায়নিক মিশ্রণ আছে, এমন দূষিত বায়ুর সংস্পর্শে থাকলে চোখ, নাক বা গলার সংক্রমণ বা ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে জানিয়েছে মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান লরেন্স বের্কলি ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি। সেই সঙ্গে ফুসফুসের বিভিন্ন জটিলতা, যেমন ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়া, মাথাব্যথা, অ্যাজমা এবং বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। বায়ু দূষণের সঙ্গে ডায়াবেটিসের সম্পর্কও দেখতে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন বায়ু দূষণের মধ্যে থাকলে বা এরকম পরিবেশে কাজ করলে ফুসফুসের ক্যান্সার এবং হৃদরোগের দেখা দিতে পারে। এমনকি সেটা মস্তিষ্ক, লিভার বা কিডনির দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি করতে পারে।  পানি দূষণে সাময়িক প্রভাবের তুলনায় দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব অনেক বেশি। বিশেষ করে শিল্প কারখানার বর্জ্য মানব দেহের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। এসব পানি ব্যবহার চর্মরোগ, টাইফয়েড, জন্ডিস বা হেপাটাইটিসের মতো রোগ হতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, দূষিত পানি বা নদীর ভেতর যেমন মাছ বা প্রাণী থাকে, যেসব ভেষজ উৎপন্ন হয়, দূষণ সেসব প্রাণীর ভেতরেও ছড়িয়ে পড়ে। খাদ্যচক্রের মাধ্যমে এসব ক্ষতিকর পদার্থ আবার মানব দেহের শরীরে চলে আসে। ফলে সরাসরি দূষিত পানির কাছাকাছি না থাকলেও, সেসব দূষিত পদার্থ এসব মাছের মাধ্যমে মানব দেহে আসে, যার ফলে ত্রুটি পূর্ণ জন্ম বা ক্যান্সার হতে পারে। এমনকি খাদ্য চক্রের মাধ্যমে মানব শরীরে ঢুকছে সীসা, প্লাস্টিকসহ নানা ক্ষতিকর পদার্থ। শুধু খাদ্যচক্র নয়, পথের শব্দের কারণে উচ্চ রক্তচাপ, আলসার, হৃদ্‌রোগ, মাথাব্যথা, স্নায়ুর সমস্যা হতে পারে। এমনকি অতিরিক্ত শব্দের পরিবেশে থাকলে শিশুর জন্মগত ত্রুটির তৈরি হতে পারে। অনিয়ন্ত্রিত সার ও কীটনাশকের কারণে দূষিত হচ্ছে মাটি। সেই দূষণ যাচ্ছে উৎপাদিত ফসলে। বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকিও। খাদ্য দূষণের কারণে অন্ত্রের বিভিন্ন রোগ রোগ বাড়ার পাশাপাশি মানুষের লিভার, কিডনি ও পাকস্থলী কার্যকারিতা হারাচ্ছে। শিশুরা ছোটবেলা থেকে এ ধরনের দূষিত খাবার খাওয়ায় তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে এবং বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে।  
২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:৩৬

ট্রেনে আগুনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে রিজভীর বিবৃতি
বেনাপোল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে হতাহতের হৃদয়বিদারক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।  শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাতে এই বিবৃতি দেওয়া হয়।  বিবৃতিতে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগিয়ে হতাহতের ঘটনা নিঃসন্দেহে নাশকতামূলক কাজ এবং মানবতার পরিপন্থি এক হিংস্র নিষ্ঠুরতা। আমি এই ঘটনায় ধিক্কার ও তীব্র নিন্দা জানাই।  তিনি বলেন, গত ২০১৪ ও ২০১৫ সালে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন সেই মুহূর্তে অগ্নিসন্ত্রাসের নারকীয় তাণ্ডব চালিয়ে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর মদদপুষ্ট দুষ্কৃতিকারীরা জনদৃষ্টিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল।  তিনি আরও বলেন, আজকের ঘটনাসহ সম্প্রতি সেই মনুষ্যত্বহীন প্রাণবিনাশী অগ্নিসন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি করা হচ্ছে। আজকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হতাহতের ঘটনার দ্বারা সেই পুরনো কৌশলকেই ব্যবহার করা হয়েছে।  বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রের জন্য বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনে নেতাকর্মীদের আত্মবিশ্বাসী উচ্চারণ জনসমর্থিত হওয়ায় এর প্রতিক্রিয়ায় ক্ষমতাসীন মহল দিশেহারা হয়ে গভীর চক্রান্ত ও নাশকতার ওপর ভর করেছে। এই অমানবিক ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত ও দুরভিসন্ধিমূলক। তিনি বলেন, পৃথিবীর সব স্বৈরাচারই ভিন্নমতকে দমন করার জন্য সন্ত্রাস ও নাশকতার পন্থা অবলম্বন করে থাকে। দেশে-দেশে স্বৈরশাহী মানবতাবোধশুণ্য ও অনুভূতিহীন হয়ে থাকে। আজকে দুষ্কৃতিকারীদের দ্বারা বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগিয়ে যে ধ্বংস ও বিপদের পথ উন্মোচন করা হলো তাতে দেশ ও জাতিকে এক গভীর খাদের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা এই ঘটনায় জাতিসংঘের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করছি। তিনি আরও বলেন, আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির পক্ষ থেকে অবিলম্বে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগিয়ে জীবনহানি ও অগ্নিদগ্ধ হয়ে অনেককে মারাত্মক জখম করার কাপুরুষোচিত ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর আহবান জানাচ্ছি। নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করছি।
০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০১:৪০
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়