সোমবার পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ
আগামীকাল সোমবার পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। তবে বাংলাদেশ থেকে এই চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে না। উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকায় গ্রহণটি পুরোপুরিভাবে দেখা যাবে।
আংশিকভাবে দেখতে পাবে পশ্চিম ইউরোপ ও উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার কিছু স্থানের বাসিন্দারা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, গ্রিনিচ মান সময় অনুযায়ী কাল ৮টা ৩৬ মিনিট ৩০ সেকেন্ডে চন্দ্রগ্রহণ শুরু হবে। আর শেষ হবে বেলা ১টা ৪৮ মিনিটে।
বাংলাদেশের স্থানীয় সময় ১১টা ১২ মিনিট ১৬ সেকেন্ডে কেন্দ্রীয় গ্রহণ ঘটবে। এবারের চন্দ্রগ্রহণের সর্বোচ্চ মাত্রা হবে ১ দশমিক ১৯৫৩ এ।
এসজে/পি
মন্তব্য করুন
মহাকাশে ডিনার করতে গুণতে হবে যত টাকা
মহাকাশে রেস্তোরাঁ খুলতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্পেসভিআইপি’ নামে একটি মহাকাশ পর্যটন সংস্থা। পৃথিবী থেকে রেস্তোরাঁটিতে গিয়ে ডিনার করতে চাইলে গুণতে হবে প্রায় ৫ কোটি ডলার।
স্পেসভিআইপি জানায়, রেস্তোরাঁটি যেই মহাকাশযানে থাকবে, সেটি পৃথিবী থেকে ৯৮ হাজার ফুট উপর দিয়ে ভ্রমণ করবে। আপাতত রেস্তোরাঁটিতে ছয়জন অতিথির বসার টেবিল থাকছে। তারা ৬ ঘণ্টা মহাকাশ ভ্রমণ করবেন। আকাশে ভাসতে ভাসতে তারা রাতের খাবার খেতে পারবেন। এর জন্য মাথাপিছু খরচ হবে প্রায় ৫ কোটি ডলার।
মহাকাশযানটি ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ২০২৫ সালে যাত্রা শুরু করবে। ইতোমধ্যে রেস্তোরাঁর জন্য বিশ্বের অন্যতম খ্যাতনামা এক ড্যানিশ শেফকে নিয়োগ দিয়েছে সংস্থাটি।
সবচেয়ে দারুণ ব্যাপার হলো মহাকাশযানে চড়ে ডিনার করতে যেতে যাত্রীদের বিশেষ কোনো প্রশিক্ষণ নিতে হবে না। এরইমধ্যে মহাকাশে ডিনার করার জন্য ব্যাপক চাহিদা দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে স্পেসভিআইপি।
এর আগে, ২০২৩ সালে ফরাসি সংস্থা জেফাল্টোও স্বল্প মূল্যে এ ধরনের একটি ভ্রমণের ঘোষণা দিয়েছিল। যার খরচ নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লক্ষ ৩২ হাজার ডলার।
এক চার্জে ৯০০ কিলোমিটার চলবে শাওমির গাড়ি
প্রথমবারের মতো নিজেদের তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি বাজারে আনছে চীনের স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান শাওমি।
চীনের বেইজিংয়ে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘স্ট্যান্ডার্ড এসইউ৭’, ‘এসইউ৭ প্রো’ ও ‘এসইউ৭ ম্যাক্স’ সংস্করণের বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রদর্শনের পাশাপাশি প্রিঅর্ডার নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। প্রিঅর্ডার নেওয়া শুরুর মাত্র ২৭ মিনিটের মধ্যেই ৫০ হাজার বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি করেছে শাওমি।
শাওমির তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়িগুলোর বিশেষত্ব হচ্ছে এগুলোতে ই-মোটর হাইপারইঞ্জিন ভিএস ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলে সংস্করণভেদে গাড়িগুলো এক চার্জে ৭০০ থেকে ৯০০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারে। এ ছাড়া মাত্র ২ দশমিক ৭৮ সেকেন্ডে শূন্য থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিও তুলতে পারে।
শাওমির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লেই জুন জানান, ‘স্ট্যান্ডার্ড এসইউ৭’ সংস্করণের বৈদ্যুতিক গাড়ির দাম ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার ৯০০ ইউয়ান। ফলে গাড়িটি টেসলার ‘মডেল ৩’ বৈদ্যুতিক গাড়ির তুলনায় ৩০ হাজার ইউয়ান কমে পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ‘এসইউ৭ প্রো’ ও ‘এসইউ৭ ম্যাক্স’ সংস্করণের গাড়িগুলোর দাম ধরা হয়েছে যথাক্রমে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৯০০ ইউয়ান ও ২ লাখ ৯৯ হাজার ৯০০ ইউয়ান।
আগামী এপ্রিল মাসের শেষ নাগাদ শাওমির ‘স্ট্যান্ডার্ড এসইউ৭’ ও ‘এসইউ৭ ম্যাক্স’ সংস্করণের বৈদ্যুতিক গাড়ি বাজারে পাওয়া যাবে। আর মে মাসের শেষ দিকে মিলবে ‘এসইউ৭ প্রো’ সংস্করণের গাড়ি। সূত্র: রয়টার্স, সিএনএন
বড় পরিবর্তনের হাওয়া, সড়কে টোল কাটবে স্যাটেলাইট
বিভিন্ন সড়ক ও সেতু নির্মাণের পর টোল প্লাজাও স্থাপন করা হয় সেগুলোতে। ওইসব সড়ক ও সেতুতে যানবাহন থেকে টোল আদায় হয় এইসব টোল প্লাজার মাধ্যমেই। উন্নয়নশীল থেকে উন্নত বিশ্বের প্রায় সবখানেই এমন পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত মোটামুটি সবাই। কিন্তু এবার বড় ধরনের পরিবর্তনের হাওয়া লাগছে দীর্ঘদিনের প্রচলিত এ পদ্ধতিতে।
সড়কে টোল আদায় পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে চলেছে ভারত সরকার। স্যাটেলাইট ভিত্তিক টোল কালেকশন সিস্টেম চালু করতে যাচ্ছে দেশটির কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয়। অর্থাৎ, এবার টোল আদায়ের জন্য সড়ক-মহাসড়কে টোল বুথের সামনে লম্বা লাইনের ঝামেলা পোহাতে হবে না যানবাহন চালক ও যাত্রীদের। জিপিএস প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্যাটেলাইটই কেটে রাখবে নির্ধারিত টোল।
পরিকল্পনাটিকে বাস্তব রূপ দিতে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে ভারতের সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয়। কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে টোল সংগ্রহ করা হবে দেশটিতে। কীভাবে কাজ করবে এই সিস্টেম সেই তথ্যও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গডকরি।
তিনি জানিয়েছেন, নতুন টোল সিস্টেমে জিপিএস এবং ক্যামেরার ব্যবহার করা হবে। এর ফলে টোল বুথ ও ব্যারিয়ারগুলোর প্রয়োজন পড়বে না। জিপিএস ও ক্যামেরার মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে গাড়ি। সরাসরি গাড়ি চালকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে যাবে টোল ট্যাক্স। কত কিলোমিটার ভ্রমণ করেছে সেই গাড়ি, তার উপর নির্ভর করবে টোল ট্যাক্সের পরিমাণ।
টোল আদায়ে বর্তমানে সর্বাধুনিক যে ব্যবস্থা দেখতে পাওয়া যায় তা কাজ করে আরএফআইডি (RFID) প্রযুক্তির ভিত্তিতে। এটি হল রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন ট্যাগ। যা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে গাড়িগুলো শনাক্ত করতে এবং ট্র্যাক করতে সাহায্য করে। বাংলাদেশেও এই সিস্টেম চালু আছে।
এ পদ্ধতিতে একটি ক্যামেরা বসানো থাকে টোল প্লাজায়। যা গাড়ির ফাস্ট্যাগ আইডি ট্র্যাক করে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা কেটে নেয়। তবে নতুন জিপিএস ভিত্তিক সিস্টেম বসলে এই আইডির প্রয়োজন কমে যাবে। ভারত সরকারের মতে, নতুন টোল সিস্টেম টোল সংগ্রহ প্রক্রিয়া দ্রুত এবং স্বচ্ছ করে তুলবে।
এই মুহূর্তে প্রত্যেক টোল প্লাজাতে ট্যাক্সের পরিমাণ নির্ধারিত রয়েছে। যত কিলোমিটারই ভ্রমণ করেন না কেন যে টাকা বেঁধে দেওয়া হয়েছে সেটাই জমা দিতে হয়। তবে নতুন ব্যবস্থা যোগ হলে এই টাকার অঙ্কে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে।
২০ মিনিটের চার্জেই ৭২০ কি.মি. পাড়ি দেবে নতুন ই-বাইক
পরিবেশবান্ধব মোটরযান হিসেবে বিশ্বজুড়েই চাহিদা বাড়ছে ইলেকট্রিক বাইকের। একদিকে তেল ভরার ঝক্কি নেই, অন্যদিকে একবারের চার্জে পাড়ি দেওয়া যায় অনেকখানি পথ। মানুষের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাই একের পর এক নতুন উদ্ভাবন নিয়ে হাজির হচ্ছে ই-বাইক কোম্পানিগুলো। দ্রুত গতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে ই-বাইকের কার্যক্ষমতা আর ডিজাইনে।
তবে, এবার ই-বাইকের সব রেকর্ড ভাঙতে চলেছে থাইল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান স্মার্টটেক। সম্প্রতি ৪৫তম ব্যাংকক মোটর শো-তে ‘ফেলো টুজ’ নামে নিজেদের নতুন উদ্ভাবিত একটি ই-বাইক বিশ্ববাসীর সামনে হাজির করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
স্মার্টটেকের দাবি, বাজারের বড় বড় ইলেকট্রিক গাড়িকেও হার মানাতে সক্ষম তাদের নতুন ক্রুজার বাইকটি। একবার চার্জ দিয়েই ৭২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া যাবে বাইকটি নিয়ে। আর ফুল চার্জ হতে ‘ফেলো টুজ’ সময় নেবে মাত্র ২০ মিনিট।
নতুন এই বাইকটির ডিজাইন অনেকটা হোন্ডা গোল্ড উইংয়ের মতো রেখেছে স্মার্টটেক। বাইকটির পেছনে রয়েছে বড় পেনিয়ার বক্স। পাশাপাশি পিলিওন রাইডারদের জন্য আছে হেলান দেওয়ার ব্যবস্থাও। বাইকটিতে রয়েছে বিশাল ফ্লোরবোর্ড। যে পেনিয়ার বক্স দেওয়া হয়েছে তাতে অ্যাডভেঞ্চারের সমস্ত সামগ্রী বহন করা যাবে। বাইকের সর্বোচ্চ গতি ২০১ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।
বাইকটির ব্যাটারি স্পেসিফিকেশন এখনও প্রকাশ করা হয়নি। তবে ফেলো টুজে আরও একটি দারুণ ফিচার সংযোজন করা হয়েছে, যার নাম ভেহিকেল টু লোড। অর্থাৎ এক গাড়ির ব্যাটারি থেকে অন্য এক গাড়ির ব্যাটারি চার্জ করা যাবে। এক্ষেত্রে অবশ্য দুই গাড়িতেই ভেহিকেল টু লোড বা ভি২এল ফিচার থাকতে হবে।
ফেলো টুজে আরও কিছু চমকপ্রদ ফিচার রেখেছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। ১২ ইঞ্চি টিএফটি ডিসপ্লে রয়েছে এতে। এত বড় ডিসপ্লের দেখা মেলে না চার চাকার গাড়িতেও। ব্লুটুথ কানেক্টিভিটি এবং নেভিগেশন ফিচার দুই-ই পাওয়া যাবে এই ডিসপ্লেতে। মিলবে ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরাও।
রাইডার ও পিলিওনের সুরক্ষার জন্য অ্যান্টি লক ব্রেকিং সিস্টেম আছে দুই চাকার বাহনটিতে। বাইকটি যেহেতু ওজনে ভারী এবং আয়তনে বড় তাই নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এতে এবিএস এবং ট্র্যাকশন কন্ট্রোল ফিচার দেওয়া হয়েছে। তবে এটি কিনতে কত খরচ হবে, তা এখনও ঘোষণা করেনি স্মার্টটেক।
বাংলাদেশ থেকে যেভাবে দেখা যাবে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ
বিরল পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বিশ্ব। সোমবার (৮ এপ্রিল) মহাজাগতিক এ দৃশ্য দেখতে পাবেন বিশ্ববাসী। বিশ্বের অন্যান্য দেশের বাসিন্দাদের মতো বাংলাদেশিরাও এই বিরল সূর্যগ্রহণ নিয়ে ব্যাপক আগ্রহী।
জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, এ গ্রহণ বিভিন্ন দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ। ৫০ বছর পর দীর্ঘক্ষণ এ গ্রহণ হতে চলেছে। এখন প্রশ্ন হলো: বাংলাদেশ থেকে কি এই সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে? আর দেখা গেলেও কীভাবে?
সোমবার মহাজাগতিক এই দৃশ্য সরাসরি দেখা যাবে শুধু যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো থেকে। স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৭ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ৭ মিনিট) মেক্সিকোর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে দেখা যাবে প্রথম সূর্যগ্রহণ। এরপর চাঁদের ছায়া আস্তে আস্তে সরে যাওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ২৭ মিনিটে দৃশ্যমান হবে সূর্যগ্রহণ।
তবে সূর্যগ্রহণের সময় বাংলাদেশে রাত হওয়ায় বাংলাদেশ বা এশিয়ার অন্য জায়গা থেকে এটি দেখা যাবে না।
তবে যদি কেউ এই পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখতে চায়, তাহলে তাকে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ওয়েবসাইটে গিয়ে লাইভ (সরাসরি) পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণটি দেখতে পারবেন। বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত সরাসরি সম্প্রচার করবে নাসা।
নাসা জানিয়েছে, সরাসরি সম্প্রচারের সময় বিশেষজ্ঞরা তাদের মতামত শেয়ার করবেন। এ ছাড়া টেক্সাসভিত্তিক ম্যাকডোনাল্ড অবজারভেটরি নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলও এই পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ সরাসরি সম্প্রচার করবে।
পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ / বিরল মহাজাগতিক ঘটনা দেখল কোটি মানুষ
কোটি কোটি মানুষ সোমবার উত্তর আমেরিকার পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সাক্ষী হলেন। মহাজাগতিক এ বিরল ঘটনায় এদিন বিশালকার সূর্যকে ঢেকে ফেলে তুলনামূলক ক্ষুদ্রাকার চন্দ্র। এক পর্যায়ে দিনের আলো নিভে গিয়ে চারদিক ঘন অন্ধকারে ঢেকে যায় আর হাজার হাজার মানুষ উল্লাসে ফেটে পড়ে। বিরল এ দৃশ্য দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করেছে। খবর বিবিসি ও এপির।
সোমবার উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা থেকে দেখা গেছে এই পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ।
দেশ তিনটির ১৫৫ মাইল প্রশস্ত কিন্তু ৪০০০ মাইলেরও বেশি লম্বা ফিতার মতো একটি ভূখণ্ডজুড়ে কয়েক কোটি মানুষ বিরল এই দৃশ্য উপভোগ করেছেন। মেক্সিকোর মাজাতলান শহরের উষ্ণ বালুর সৈকত থেকে শুরু হয়ে নায়াগ্রা জলপ্রপাতের বিপুল জলরাশির ওপরের আকাশ অন্ধকার করে দিয়ে কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের সমুদ্র তীরে গিয়ে শেষ হয় এই বিশেষ প্রাকৃতিক ঘটনা। পেছেনে রেখে যায় বিস্ময়াবিভূত কয়েক কোটি প্রত্যক্ষদর্শীকে।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা আগেই জানিয়েছিল, এই তিন দেশে ৩ কোটি ১৬ লাখ মানুষ এই সূর্যগ্রহণ উপভোগ করতে পারবে।
বিবিসি জানিয়েছে, মেক্সিকোর স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৭ মিনিটে মেক্সিকোর পশ্চিম উপকূলের মাজাতলান শহরের কাছ থেকে প্রথম এই সূর্যগ্রহণ দেখা যেতে শুরু করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রথমে মনে হচ্ছিল চাঁদের কিনারাটি সূর্যকে একটু স্পর্শ করেছে মাত্র, কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সূর্যকে ‘গ্রাস’ করতে শুরু করে পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহটি আর শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি ঢেকে দিলে হঠাৎ করেই অন্ধকার নেমে আসে। এ সময় উল্লাসে ফেটে পড়েন সূযগ্রহণ দেখতে জড়ো হওয়া হাজার হাজার মানুষ।
চাঁদের কিনারা দিয়ে সূর্যের আলোকচ্ছটা (করোনা) বের হওয়ায় এক অপার্থিব দৃশ্য তৈরি হয়। এরপর আসে ‘ডায়মন্ড রিং’ এর বিরল মুহূর্ত।
এ সময় হঠাৎ তাপমাত্রা কিছুটা নেমে যায়, প্রাণীরা চুপ হয়ে যায়, পাখিরা ওড়াউড়ি করে বাসায় ফেরার তোড়জোড় শুরু করে। দিনের আকাশেই তারা দেখা যেতে শুরু করে।
মেক্সিকোর উপকূলীয় শহর থেকে সূর্যগ্রহণের পথ এগিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রের দিকে। টেক্সাস অঙ্গরাজ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে। সূর্যগ্রহণের সময় কয়েকশ মার্কিন জুটি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ৩টা ১৩ মিনিটে দেশটির মধ্যপশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ওহাইও অন্ধকারে ঢেকে যায়। এখানে আতশবাজি ফুটিয়ে উল্লাস করে সূর্যগ্রহণ দেখতে আসা লোকজন।
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলীয় শহর নিউ ইয়র্কে কয়েকশ মানুষ ম্যানহ্যাটনের আকাশচুম্বি ভবন অ্যাজ এর একটি উঁচু বড় বারান্দায় বসে সূর্যগ্রহণ উপভোগ করে। অবশ্য শহরটি থেকে পূর্ণ গ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যায়নি। ঈদের চাঁদের মতো সূর্যের একটি অংশ দৃশ্যমান হয়ে ছিল, এ সময় অপার্থিব এক মৃদু আলোতে ছেয়ে যায় পুরো শহর।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে নায়াগ্রা জলপ্রপাতের দিক দিয়ে সূযগ্রহণ কানাডায় প্রবেশ করে। এখানে সীমান্তের উভয়পাশে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়ে গ্রহণ উপভোগ করে। তবে এখানে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ কিছুটা বিঘ্ন ঘটালেও পূর্ণ গ্রাস সূর্যগ্রহণের সময় মেঘ সরে যায়।
এরপর কানাডার মন্ট্রিয়েল শহর হয়ে সূর্যগ্রহণ এগিয়ে যায় আরও উত্তর দিকে। মন্ট্রিয়েলের ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মাঠে একসঙ্গে ২০ হাজার মানুষ পূর্ণ গ্রাস সূর্যগ্রহণ উপভোগ করে।
এই পূর্ণ গ্রাস সূর্যগ্রহণ শেষ দেখা যায় কানাডার পূর্ব উপকূলের নিউফাউন্ডল্যান্ডের ফোগো দ্বীপ থেকে। ফেলে আসা পথের বিভিন্ন এলাকার তুলনায় এখানে অপেক্ষাকৃত কম মানুষ বিরল এই মহাজাগতিক দৃশ্য দেখতে জড়ো হয়েছিলেন।
‘ঈশ্বর কণা’ আবিষ্কারক নোবেলজয়ী পিটার হিগস মারা গেছেন
বিস্ময়কণা ‘ঈশ্বর কণা’ বা হিগস বোসন’র আবিষ্কারক নোবেলজয়ী ও ব্রিটিশ বিজ্ঞানী পিটার হিগস ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন।
বুধবার (১০ এপ্রিল) এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিজ্ঞানী পিটার হিগস স্থানীয় সময় সোমবার (৮ এপ্রিল) স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবরায় নিজের বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। প্রায় ২৫ বছরের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন তিনি। তিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের প্রতিভাধর বিজ্ঞানী। যার দূরদর্শী চিন্তা ও কল্পনা এই বিশ্ব সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে সমৃদ্ধ করেছে। পিটার হিগস ছিলেন সেই মহান বিজ্ঞানী, যার কল্পনা ও ভাবনা আমাদের পরিপার্শ্ব সম্পর্কে জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করেছে।
প্রসঙ্গত, পিটার হিগস হিগস বোসন কণা আবিষ্কারের জন্য ২০১৩ সালে তাকে নোবেল পুরষ্কার পান। যা বদলে দিয়েছিল বিজ্ঞানের গতিপথ। প্রায় ৫০ বছর পর আরেক যুগান্তকারী গবেষণায় প্রমাণ হয়, ‘হিগস বোসন’ কণা সত্যিই আছে।
তিনি তার তত্ত্বে বলেছিলেন, শনাক্ত হয়নি- এমন এক কণার কল্যাণেই মহাবিশ্বের সবকিছু ‘ভর’ পেয়েছে, আর ওই কণার কারণেই অটুট আছে মহাবিশ্ব।