• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বাবাকে ছেড়ে জামাইয়ের প্রচারণায় নীলা

আজিজুর রহমান পায়েল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

  ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৫:২৭

স্বামী রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়ার পক্ষেই প্রচারণায় নেমেছেন রওনক জাহান নীলা। তার বাবা অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাও এই আসনের আরেক প্রার্থী। শ্বশুর মৃধা এবং জামাই রেজাউল দু’জনেই নিজেদেরকে মহাজোট প্রার্থী বলে দাবী করছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে জামাই-শ্বশুরের এই বিরোধ ব্যাপক আলোচিত।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি জিয়াউল হক মৃধা ২০০৮ সালে এই আসনে মহাজোট প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ সালে আবারো মহাজোটের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। একাদশ সংসদ নির্বাচনে এই আসনে মহাজোটের মনোনয়ন বাগিয়ে নেন জেলা সদরের বাসিন্দা তার নিজের মেয়ের জামাই রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। রেজাউল সদর আসনের প্রার্থী ছিলেন। সেখানে মনোনয়ন পাওয়া কঠিন হওয়ায় শ্বশুরের আসনের দিকে ঝুঁকেন রেজাউল। রেজাউলের এই কাণ্ডে ফুসে উঠেন শ্বশুরের সমর্থকরা। তারা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে এর প্রতিবাদ জানান। পরে মনোনয়ন পরিবর্তন হলেও দলের প্রতীক ‘লাঙ্গল’ পাননি জিয়াউল হক মৃধা।

রেজাউল জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করায় তাকে দেয়া হয় ‘লাঙ্গল’ প্রতীক। আর শ্বশুর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করায় তাকে সিংহ প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। লাঙ্গল পেতেও মৃধার সমর্থকরা সড়ক অবরোধ করেন।

গেল রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হঠাৎ করে কিছু লোকজন নিয়ে রেজাউলের স্ত্রী রওনক জাহান একটি প্রাইভেটকার থেকে উপজেলা হাসপাতালের সামনে নামেন। এরপর তিনি লাঙ্গলের কিছু লিফলেট হাতে নিয়ে প্রচার শুরু করেন। সেখানে কয়েকটি দোকানপাট ঘুরে লিফলেট বিতরণ করে স্বামীর পক্ষে ভোট চান তিনি।

প্রচারণায় রওনক জাহান নীলা বলেন, লাঙ্গল প্রতীকে মহাজোটের প্রার্থীই আমার স্বামী রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। মহাজোটের নেত্রী শেখ হাসিনা ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মনোনীত প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীকে রেজাউল ইসলাম। অন্য কেউ মহাজোট প্রার্থী নয়।
এরপর তিনি সরাইল বাজারের ভেতর প্রচারণায় যান। যেস্থান থেকে রওনক জাহান প্রচারণা শুরু করেন সেখান থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে তার বাবার বাড়ি। আর তার স্বামীর বাড়ি জেলা শহরে।

অন্যদিকে মৃধা বলেন, প্রতীক যাই হোক আমি মহাজোটের প্রার্থী। আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী। আমি ছাড়া এখন আওয়ামী লীগ বা জাতীয় পার্টির কারও থাকার বৈধতা নেই। কারণ এটি উন্মুক্ত আসন নয়। বিপুল ভোটে জয় পাওয়ার আশাবাদও ব্যক্ত করেন তিনি।

প্রতীক সিংহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি ইচ্ছে করেই এ প্রতীক নিয়েছি। বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন সিংহ পুরুষ। শেখ হাসিনাও একজন সিংহ মহিলা। কারণ একজন সিংহ পুরুষের আদর্শ বাস্তবায়ন করার জন্যে এবং জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আবারো ক্ষমতায় রাখার জন্যে আমি এই প্রতীকটিকেই বেছে নিয়েছি।

তিনি বলেন, চেনা বাউনের পইতা লাগে না। আমার পইতা আছে। শুধু প্রতীকটাকে পরিচয় করাতে হবে। আমি ১০ বছর এ মাঠে ছিলাম। কাজ করেছি। সকলেই আমার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ।

গণসংযোগে তিনি উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান। সরাইলের মান-ইজ্জত রক্ষা করার কথাও বলেন তিনি।

মেয়ের জামাতার কাজকে অন্যায় অবহিত করে তিনি বলেন, জামাতা হোক, অন্যায় যে করে এর প্রতিবাদ করতে হবে। তিনি যেটা করেছে সেটি অন্যায়। আমি চাইবো ভবিষ্যতে কোনও ছেলে তার বাবার সঙ্গে, কোনও জামাতা তার শ্বশুরের সঙ্গে যেন এমন কাজ না করে। তবে তাকে আমি কোনও অভিশাপ দিচ্ছি না।

মৃধা আরও বলেন, জামাইয়ের এই কাণ্ডে পারিবারিক সম্পর্কে কোনও টানাপোড়েন হবে না। কারণ আমার তিনটি নাতী-নাতনি আছে। মেয়ে আছে। আমার জন্যে তারা ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ুক সেটা আমি চাই না। আমি চাই তারা সুখে থাকুক। আমার মেয়েকে বলি না তুমি আমার পক্ষে কথা বলো। কারণ নির্বাচনী এলাকার সাড়ে ৩ লাখ ভোটার আমার পক্ষে রয়েছে। মেয়ে কথা বলে কি করবে।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • নির্বাচনের তাজা খবর এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
প্রতীক পেয়েই প্রচার-প্রচারণায় প্রার্থীরা
শেষ হলো নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা
শেষ সময়ে চলছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা
X
Fresh