এরিক এরশাদের ঘোষণা: জাপা চেয়ারম্যান রওশন, কো-চেয়ারম্যান বিদিশা
বেগম রওশন এরশাদকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এবং বিদিশা সিদ্দিকীকে দলের কো-চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছে এরশাদ পুত্র এরিক এরশাদ। বুধবার (১৪ জুলাই) বারিধারা প্রেসিডেন্ট পার্কে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন তিনি।
এ সময় সংসদ সদস্য সাদ এরশাদ উপস্থিত ছিলেন।
এরিক এরশাদ বলেন, আমার বাবা যখন অসুস্থ তখন রাতে আমার বাবাকে জিম্মি করে আমার চাচা জি এম কাদের দলের দায়িত্বে চেয়ারম্যান পদ লিখিয়ে নিয়েছেন। জাতীয় পার্টি আজ ধ্বংসের মুখে। তিনি অবৈধভাবে চেয়ারম্যান পদটি নিয়েছেন, আমরা তাকে মানি না।
অনুষ্ঠানে সাদ এরশাদ বলেন, আমরা জঞ্জালমুক্ত থাকতে চাই। বিশেষ এই দিনে বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।
কেএফ
মন্তব্য করুন
বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের দায় সরকারের : চুন্নু
রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের দায় সরকারের, সরকারের সংস্থা এবং সরকারের অফিসের বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু।
শনিবার (২ মার্চ) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘প্রত্যেকটা এলাকায় রাজউকের কর্মকর্তা থাকেন। সেই কর্মকর্তারা কোথায়? এক একটা ভবন তৈরি করা হয় একটা উদ্দেশ্যে, কিন্তু যায় আরেকটা উদ্দেশ্যে। এই যে মানুষগুলো মারা গেল এর জবাব দেবে কে? এর দায়দায়িত্ব সরকারের, সরকারের সংস্থা এবং সরকারের অফিসের।’
তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণ কর দেয় সরকার পরিচালনার জন্য। সরকারের দায়িত্ব নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া। ভবন নির্মাণের জন্য সরকারের ছয়টি সংস্থার ছাড়পত্র লাগে, ছাড়পত্র দেওয়ার পরে ভবনগুলোর নজরদারি নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এক একটা সময় একটা ঘটনা হয় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় তদন্ত করা হবে, তদন্ত টিম করা হয়। কিন্তু এরপর আর কোনো ফলোআপ নেই। এইভাবে দেশ চলতে পারে না। সরকারের জবাবদিহি করার দরকার। দায়দায়িত্ব নিয়ে সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘ধানমন্ডির সাতমসজিদ এলাকায় একটা ভবনে ১৫টি রেস্টুরেন্ট। সেগুলোর কোনো অনুমতি নেই। ধানমন্ডির ২৭ নম্বর রোডের রাস্তার পাশে ভবনে কয়েকশ’ রেস্টুরেন্ট, কিন্তু সেগুলোর অনুমতি নেই। খিলগাঁওয়ের তালতলায় বহুতল ভবনে একই অবস্থা। আরও এরকম ঘটনা ঘটবে। যদি সরকার এ বিষয়ে সচেতন না হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমি সরকারকে বলব, এ রকম ঘটনার জন্য যারা যারা দায়ী, সেটা রাজউক হোক, ফায়ার ব্রিগেড হোক কিংবা পরিবেশ হোক তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিয়ে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে তার ব্যবস্থা করুন।’
জিনিসপত্রের দাম আরও কমবে : অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, ‘বাজারে জিনিসপত্রের দাম কমে আসছে, এটা আরও কমবে। ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আসছে ভারত থেকে, এগুলো আসলে দাম আরও কমে যাবে।’
রোববার (৩ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নতুন দায়িত্ব পাওয়া ওয়াসিকা আয়শা খান।
অর্থনীতি কি ভালো অবস্থায় আছে, মানুষ কি ভালো আছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের মানুষকে জিজ্ঞেস করেন। আমি তো মনে করি ভালো আছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ে নতুন প্রতিমন্ত্রীর বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন একজন প্রতিমন্ত্রী পেয়ে ভালো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি আরও বাড়বে।
এ সময় নতুন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, ‘করোনার সময় থেকে এবং পরবর্তীতে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে সারা বিশ্বের অর্থনীতিই চাপে রয়েছে। এতে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাও কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে ও নাজুক অবস্থায় আছে। এখান থেকে উত্তরণ ঘটানোই হবে এখন প্রধান কাজ। তবে সেটাকে চ্যালেঞ্জ মনে করছি না। কাজ করে যেতে হবে।’
‘কোথাও কোথাও নির্বাচনি ফল পূর্বনির্ধারিত ছিল’
সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিন ধরনের ভোট হয়েছে। কোথাও কোথাও ইলেকশন যেভাবেই হোক ফল পূর্বনির্ধারিত ছিল, শিট বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোথাও ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। কোথাও আবার টাকা, অস্ত্র ও পেশিশক্তির দাপটের নির্বাচন হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা ব্যাপকভাবে তার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। পরে জিএম কাদের হেসে বলেন, এটা নাও হতে পারে।
দ্রব্যমূল্যের সিমাহীন ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট কিছুসংখ্যক ব্যক্তি আমদানি করছেন। এতে সিন্ডিকেট হওয়াটা স্বাভাবিক। এসব ব্যবসায়ী সরকারের নীতিনির্ধারণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। বিকল্প না থাকার কারণে সরকার তাদের হাতে জিম্মি।
বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের বিষয়ে সরকারের দায়িত্বশীলদের বক্তব্য তদন্তকাজকে বিলম্বিত করতে উৎসাহিত করতে পারে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি বলেন, সংবিধান ও আইন যে কোনো ধরনের নির্বাচনকে বৈধতা দিতে পারে। কিন্তু সবক্ষেত্রে তা সঠিক বা ভালো নির্বাচন বলে গ্রহণযোগ্য হবে, সেটা সব সময় নিশ্চয়তা দিতে পারে না।
জিএম কাদের বলেন, ষষ্ঠ নির্বাচনে ১৫ ফেব্র“য়ারি ২১ শতাংশ ভোট পড়েছিল। সব দল নির্বাচনে না এলে ভোট স্বতঃস্ফূর্ত হয় না। খুব গ্রহণযোগ্য হয়েছে সপ্তম, অষ্টম, নবম সংসদ নির্বাচনে ৭৫-৮২ শতাংশ ভোট পড়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বিএনপির একটি দল না এলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা কঠিন। এতে মানুষ ভোট দিতে আসে না। যে প্রেক্ষাপটে ছিল তাতে ৪২ শতাংশ ভোট দিতে গেলে সব ভোটকেন্দ্রের সামনে ৮ ঘণ্টা লাইন থাকার কথা। কিন্তু তা ছিল না। আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ সব বড় দল নির্বাচনে অংশ নিলে এই মুহূর্তে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ ভোট পড়বে।
জিএম কাদের বলেন, অনেকে বলেছেন ঘণ্টায় তিন চারটার বেশি ভোট হয়নি। আমি আমার কথা বলছি না। ধারণার কথা বলছি।
তিনি আরও বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান মোতাবেক ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী বৈধ হিসাবে গণ্য করা যায়। আইন অনুযায়ী তা বৈধ হয়েছে। কেউ বেআইনি ঘোষণা করেনি। কিন্তু সিংহভাগ মানুষ মনে করে ভালো নির্বাচন হয়নি, সঠিকভাবে জনমতের প্রতিফলন হয়েছে বলে মনে করে না। আমি মনে করি, আইনকানুন ব্যাপকভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। যারা দেখার কথা তারা এড়িয়ে গেছেন, অনেক সময় লঙ্ঘনে সহায়তা করেছেন।
রাষ্ট্রপতির বক্তব্যে দুর্নীতির প্রসঙ্গ আসেনি উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, দুর্নীতিতে দেশ সয়লাব হয়ে গেছে। এটা বেশ কিছুদিন ধরে চলছে। দুর্নীতি ছাড়া কোনো কাজ হয় না। এটি প্রত্যেক সমাজের অভিশাপ। দুর্নীতির কারণে ভোগান্তি বাড়তে থাকে। এটা সমাজ উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত করে। সরকার সাধারণত দুর্নীতি স্বীকার করে না। এ সময় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতি সূচকের কথা তুলে ধরে জিএম কাদের বলেন, ২০০১ সাল থেকে পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। যার প্রথমে ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের সময় ২০০৯ সালে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে ১৩তম স্থানে ছিল বলে উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, বর্তমানে আমরা ১০ম স্থানে আছি। মানে দুর্নীতি অবস্থান এখন নিচের দিকে নেমে গেছে। এটা হলো ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্ট।
পিটার হাসের সঙ্গে জি এম কাদেরের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সঙ্গে হঠাৎ বৈঠক করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের।
বুধবার (৬ মার্চ) বিকেলে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে তারা ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন। বেলা তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত এই বৈঠক চলে।
এ সময় জি এম কাদেরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তার রাজনৈতিক উপদেষ্টা মাশরুর মওলা। বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি।
মাশরুর মওলা বলেন, নির্বাচনের পর সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে। নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সংসদে বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টির অবস্থান নিয়েও কিছু আলোচনা হয়েছে।
জাতীয় পার্টির সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা
আগামী ১২ অক্টোবর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দশম জাতীয় সম্মেলন ডেকেছে জাতীয় পার্টির (জাপা) একাংশের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরপন্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দলটির যুগ্ম-দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার (৬ মার্চ) বনানী চেয়ারম্যান কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্যদের এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। সভাটি পরিচালনা করেন পার্টির মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. মুজিবুল হক চুন্নু। সভায় বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- আগামী ১২ অক্টোবর সকাল ১০টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৩০ আগস্টের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলাগুলোর সম্মেলন সম্পন্ন করতে হবে। আগামী ৩০ এপ্রিল ঢাকায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরে মধ্যে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে নিজ নিজ জেলায় বর্ধিত সভা করা হবে। এ ছাড়া ওই সভায় আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচন (উপজেলাসহ সব পর্যায়ে) দলীয় প্রতীকে অংশগ্রহণ করাও সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এদিকে আগামী ৯ মার্চ জাতীয় সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান রওশন এরশাদপন্থীরা। রওশন এরশাদ নিজেই সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেন।
বহিষ্কৃত নেতাদের নিয়ে রওশনপন্থী জাপার সম্মেলন
জাতীয় পার্টির (জাপা) বহিষ্কৃত নেতাদের নিয়ে সম্মেলন করছেন রওশন এরশাদ।
শনিবার (৯ মার্চ) রাজধানীর রমনা ইনস্টিটিউটের সামনে খোলামাঠে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলনে রওশন এরশাদ ছাড়াও রয়েছেন, জাতীয় পার্টি থেকে অব্যাহতি পাওয়া কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও শফিকুল ইসলাম সেন্টু।
ফলে জাতীয় পার্টি নামে আরও একটি দলের সৃষ্টি হচ্ছে। এর আগে জাতীয় পার্টি ভেঙে একই নামে পাঁচটি দল হয়েছে।
রাজধানী ছাড়া ঢাকার বাইরে থেকেও নেতাকর্মীরা সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। সম্মেলন উপলক্ষে রাজধানী বিভিন্ন জায়গায় লাগানো হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুন।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেবর-ভাবির কোন্দলের মাত্রা চরমে ওঠে। নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীরা সরাসরি পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেন। ফল বিপর্যয়ের জন্য দোষারোপ করেন। তাদের পদত্যাগও চান পরাজিত প্রার্থীদের অনেকেই।
এ ঘটনা কেন্দ্র করে দলে থাকা দীর্ঘদিনের মিত্রদের একে একে বহিষ্কার করেন জিএম কাদের।
এর মধ্যে গত ২৮ জানুয়ারি জিএম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুকে চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে জাপার স্বঘোষিত চেয়ারম্যান হন রওশন এরশাদ।
মূলত রওশন অংশে তিনি ছাড়া বাকি শীর্ষ নেতাদের সবাই দল থেকে বহিষ্কৃত। বহিষ্কৃত নেতাদের নিয়েই নতুন করে দল গঠন করতে যাচ্ছেন সাবেক এই বিরোধী দলের নেতা। তবে দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রওশন এরশাদকে বহিষ্কার করেননি জিএম কাদের।
দলটির একাংশের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাপায় সবচেয়ে বড় ভাঙন হতে যাচ্ছে আজ শনিবার। যদিও ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে না রংপুরসহ ১৭টি জেলা। অন্য জেলার নেতাকর্মীরাও কমবেশি এখন দুই ভাগে বিভক্ত।
বিভক্তি প্রসঙ্গে রওশনের সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যসচিব কাজী ফিরোজ রশীদ গণমাধ্যমকে বলেন, দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে অনেক চেষ্টা করেছি, শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি। জাপা ফের ভাঙছে। এজন্য কে দায়ী, তা হয়তো সময় মূল্যায়ন করবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির যাত্রা শুরু হয়। এরপর নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে অন্তত ছয় ভাগে বিভক্ত হয়েছে দলটি। তারপর থেকে এরশাদ-রওশন ও জিএম কাদের জাপার মূল ধারায় ছিলেন। দলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সেনা প্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর থেকেই নেতৃত্ব নিয়ে রওশন ও জি এম কাদেরের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে।
জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ
জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান হিসেবে আগামী ৩ বছরের জন্য নির্বাচিত হলেন রওশন এরশাদ।
শনিবার (৯ মার্চ) দশম জাতীয় কাউন্সিলে তার নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
কাউন্সিলে আগামী তিন বছরের জন্য জাতীয় পার্টির মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন কাজী ফিরোজ রশীদ। সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা নির্বাচিত। এ ছাড়া পাঁচজন কো-চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে।
কো-চেয়ারম্যানরা হলেন শাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সাদ এরশাদ, গোলাম সারওয়ার মিলন, সুনীল শুভ রায়। সুনীল শুভ রায় জাতীয় পার্টির মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করবেন।
এর আগে, শনিবার (০৯ মার্চ) জাতীয় সংগীত এবং দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দুপুর ১২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউল হক মৃধা।
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে পুরো ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিস্টিউটসহ মৎস্যভবন এবং শাহবাগ এলাকা। নানা রংবেঙের পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে সম্মেলনস্থল। সড়কদ্বীপগুলোতে লাগানো হয়েছে এরশাদ শাসনামলের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ছবি সম্বলিত ফেস্টুন। নির্মাণ করা হয়েছে দ্বিতল বিশিষ্ট মঞ্চ। ১২ হাজার কাউন্সিলর এবং ডেলিগেট উপস্থিতির লক্ষ্য চুড়ান্ত করে সম্পন্ন করা হয়েছে সকল আয়োজন।