• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

জামানত হারাচ্ছেন বিএনপির দেড় শতাধিক প্রার্থী

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ০২ জানুয়ারি ২০১৯, ১৩:২১

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ২৫৬টি আসনে বিএনপি প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও জামানত হারাচ্ছেন ১৫২ জন প্রার্থী। অপরদিকে একই প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা জামায়াতের ২২ প্রার্থীর মধ্যে ১১ জন জামানত হারিয়েছেন। তবে নৌকার কোনও প্রার্থী জামানত হারাননি। ২৫৯টি আসন পেয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে দেশের ২৯৮টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ১ হাজার ৮৫৫ জন প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারিয়েছেন ১ হাজার ৪২২ জন। সবচেয়ে বেশি ২৯৭ প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের। তারপরই বিএনপির অবস্থান। সারাদেশে ২৯৮টি আসনে জামানত রক্ষা করতে পেরেছেন মোট ৪৩৩ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে নৌকা প্রতীকে জামানত রক্ষা করতে পেরেছেন ২৭১ জন প্রার্থী।

নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, ধানের শীষ প্রতীকে ২৫৬টি আসনে বিএনপি প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জামানত হারাবেন ১৫২ জন। ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা জামায়াতের ২২ প্রার্থীর মধ্যে ১১ জনই জামানত হারাবেন। তবে নৌকা প্রতীকের কোনও প্রার্থীই জামানত হারাননি।

নির্বাচন কমিশনের কমিশনার রফিকুল ইসলাম আরটিভি অনলাইনকে বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ অনুয়ায়ী যদি কোনও প্রার্থী আট ভাগের এক ভাগ কম ভোট পায়, তবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় প্রার্থীকে আইন অনুযায়ী যে ২৫ হাজার টাকা জমা দিতে হয়, সেটি বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়। আর আট ভাগের এক ভাগের বেশি ভোট পেলে সেই প্রার্থীর জামানত ফেরত দেওয়া হয়। তবে এই কাজটি রিটার্নিং কর্মকর্তারা করে থাকেন। এরই মধ্যে দুই একটি জায়গায় রিটার্নিং কর্মকর্তারা জামানত বাজেয়াপ্তের ঘোষণাও দিয়েছেন। এখনও নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি। রিটার্নিং কর্মকর্তারা যাচাই-বাছাই করে প্রার্থীর নাম ঘোষণা দেন। শুধু জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার পর রিটার্নিং কর্মকর্তা একটি চিঠি দেন।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ এর চ্যাপ্টার তিন অনুচ্ছেদের ৪১ ধারায় (১) বলা আছে, নির্বাচনে সংবিধানের ১৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রার্থী আট ভাগের এক ভাগ কম ভোট পেলে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফলের পর সংবিধানের ১৯ অথবা ৩৯ অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। এর বেশি হলে জামানত ফেরত দেওয়া হবে।

বিভিন্ন জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জামানত বাজেয়াপ্তদের তালিকায় সবচেয়ে এগিয়ে আছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। তাদের প্রতীক হাত পাখায় নির্বাচন করেছেন ২৯৭ জন। যার মধ্যে জামানত হারিয়েছে ২৯৬ জন। অর্থাৎ জামানত রক্ষা করতে পেরেছেন মাত্র একজন প্রার্থী।

তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি। ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ২৮১টি আসনে নির্বাচন করেছে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা। এককভাবে ২৫৬টি আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দেয় বিএনপি। এদের মধ্যে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে ১৫২ জনের। বাকিদের মধ্যে জয়লাভ করেছেন ৫ জন। অন্যরা পরাজিত হলেও জামানত রক্ষা করতে পেরেছেন।

তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে জাতীয় পার্টি। তাদের ১৫৪ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৩৩ জন জামানত হারিয়েছেন। বাকি ২১ জন জামানত রক্ষা করতে পেরেছেন। জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করেছেন ২০ জন।

তবে এরই মধ্যে নীলফামারীর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফজলুল করিম চারটি আসনের ২০ প্রার্থীর মধ্যে ১৩ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন।

নীলফামারী-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন আটজন। এদের মধ্যে বিজয়ী আওয়ামী লীগের প্রার্থী আফতাব উদ্দিন সরকার (নৌকা) ও তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী রফিকুল ইসলাম (ধানের শীষ) ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ছয়জন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।

নীলফামারী-২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন পাঁচজন। এদের মধ্যে বিজয়ী প্রার্থী আওয়ামী লীগের আসাদুজ্জামান নূর (নৌকা) ও তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ধানের শীষের মনিরুজ্জামান মন্টু ছাড়া বাকি তিনজনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এরা হলেন- ন্যাশনাল পিপলস পার্টির রাবেয়া বেগম (আম), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী জহুরুল ইসলাম (হাতপাখা) ও স্বতন্ত্র এজানুর রহমান (ট্রাক)।

নীলফামারী-৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন তিনজন। এদের মধ্যে মহাজোটের লাঙল প্রতীকের মেজর (অব.) রানা মো. সোহেল ও তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষের আজিজুল ইসলাম ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আমজাদ হোসেন সরকারের (হাতপাখা) জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।

নীলফামারী-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন চারজন। এদের মধ্যে বিজয়ী প্রার্থী মহাজোটের লাঙল প্রার্থী আহসান আদেলুর রহমান আদেল ছাড়া তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীসহ তিনজনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। এরা হলেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী শহিদুল ইসলাম (হাতপাখা), স্বতন্ত্র প্রার্থী সিংহ প্রতীকের মিনহাজুল ইসলাম মিনহাজ ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আম প্রতীকের আব্দুল হাই সরকার।

কুড়িগ্রাম-৪ আসন (রৌমারী, রাজীবপুর ও চিলমারী উপজেলা) নির্বাচনে অংশ নেওয়া গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম রাকিব। তিনি তার আসনের তিন উপজেলায় মোট ২ হাজার ৭৭৫ ভোট পেয়েছেন যা ওই আসনে কাস্টিং ভোটের এক অষ্টমাংশের কম। ফলে এ নির্বাচনে জামানত হারাচ্ছেন ইমরান এইচ সরকার।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কুড়িগ্রাম-৪ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৮৯ হাজার ১২০ জন। মোট ১৩০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এ আসনে মোট বৈধ ভোট সংখ্যা ২ লাখ ৩৬ হাজার ৩৯৯। এ আসনে জামানত ফেরতের জন্য অন্তত ২৯ হাজার ৫০০ ভোট পাওয়া প্রয়োজন।


আরো পড়ুন :

আরসি/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিএনপি এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত বিএনপির
ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে যা বললেন রিজভী
পিটার হাসকে নিয়ে বিএনপির বোধোদয় 
মাজা ভাঙা দল বিএনপি : হানিফ 
X
Fresh