দলের স্বার্থে ফখরুলের সংসদে যাওয়া উচিত ছিল: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির এমপিরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের সংসদে যোগ দেয়া শুভবুদ্ধির উদয়। দলের স্বার্থে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সংসদে যাওয়া উচিত ছিল।
আজ সোমবার সকালে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নতুন জীবন পেয়ে মানুষের কল্যাণে, দুর্ভোগ লাগবে নতুন উদ্যমে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মন্ত্রণালয়ের কাজ থেমে থাকেনি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাজ এগিয়ে গেছে। কাজের গতি বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার পুনর্বিন্যাস করেছেন। এটি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার।
বিএনপির প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, বিরোধী দল শক্ত অবস্থানে থেকে সরকারের সমালোচনা করলে সরকারের কাজ করতে সুবিধা হয়।
পি
মন্তব্য করুন
বেশি কথা বললে হাটে হাঁড়ি ভেঙে দেবো, বিএনপিকে কাদের
বিএনপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বেশি কথা বললে হাটে হাঁড়ি ভেঙে দেবো।
সোমবার (২৫ মার্চ) বিকেলে গণহত্যা দিবস স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
এসময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর মতো মাথা গরম না করার পরামর্শ দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, বেশি কথা বললে খুঁজে খুঁজে বের করব, বিএনপির কে কে ভারতীয় পণ্য ব্যবহার করে।
ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাড. কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, জাতীয় সংসদের হুইপ সানজিদা খানম, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি প্রমুখ।
‘ভারতের পেঁয়াজ দিয়ে পেঁয়াজু খেয়ে বয়কটের ডাক তামাশা’
ভারতের পেঁয়াজ দিয়ে পেঁয়াজু খেয়ে বয়কটের নামে বিএনপি মানুষের সঙ্গে তামাশা করছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (২৫ মার্চ) বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক সামাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতের পেঁয়াজ দিয়ে পেঁয়াজু খায়, ভারতের গরুর মাংস দিয়ে সেহরি খায়, ভারতের শাড়ি পরে স্ত্রীরা সাজে, কিন্তু বয়কটের ডাক দেয়। বিএনপি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকারী জামায়াতের নেতাদের মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে লাল-সবুজ পতাকা দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। শুধু তাই নয়, তারা ’৭৫ পরবর্তী গণহত্যার প্রমাণ মুছে দিয়েছিল। ৩০ লাখ শহীদের ব্যাপারে খালেদা জিয়া সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর গণহত্যার সব আলামত নষ্ট করা হয়েছিল। যিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের প্রতিনিধিদলের প্রধান হয়ে জাতিসংঘে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছিল, সেই শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে যাতে বিশ্বের কোথায় এমন গণহত্যা না হয়, সেজন্য গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রয়োজন। একই সঙ্গে আমরা গাজায় গণহত্যা বন্ধ চাই।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
স্বাধীনতা ঘোষণার পাঠক ঘোষক হতে পারে না : কাদের
স্বাধীনতা ঘোষণার পাঠক ঘোষক হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এতদিন পরেও স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্ক করা হয়। স্বাধীনতা ঘোষণার পাঠক কখনও ঘোষক হতে পারে না। কে ঘোষক এ বিতর্কের অবসান তখনই হবে, যখন আমরা সত্যের অনুসন্ধান করতে যাবো। স্বাধীনতা ঘোষণার ম্যান্ডেট ৭০ এর নির্বাচনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুই পেয়েছিলেন। আবুল কাশেম, এম এ হান্নান, অনেকেই ঘোষণা পাঠ করেছেন। সেখানে জেনারেল জিয়াও বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে এত বছর পর আমাদের ভাবতে হচ্ছে এ দেশেরই মানুষ, এ দেশেরই অগণতান্ত্রিক সাম্প্রদায়িক শক্তিকে নিয়ে। যারা আমাদের বিজয়, আমাদের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অন্তরায় সৃষ্টি করে যাচ্ছে। আজ আমাদের শপথ, বিএনপির নেতৃত্বে যে সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তি বিজয়কে সংহতকরণে বাধা বা অন্তরায় হয়ে আছে, এই অপশক্তিকে আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরাজিত করব, প্রতিহত করব।
বিএনপির ভারতবিরোধিতা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভারত বিরোধিতা আগেও হয়েছে, এখনও হচ্ছে। এটা নতুন কিছু না। এ বিরোধিতা পাকিস্তান আমল থেকেই হয়ে আসছে। যখন কোনো ইস্যু থাকে না, তখনই ভারত বিরোধিতা ইস্যু সামনে আসে।
বিএনপির মন্ত্রীদের বউরা ভারত থেকে শাড়ি এনে বিক্রি করত : প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির মন্ত্রীদের বউদের ভারত থেকে শাড়ি এনে বিক্রি করতে দেখেছি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিএনপি নেতাদের ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির এক নেতা দেখলাম চাদর খুলে পুড়ল। আমি এখন বলব, বিএনপি নেতারা যদি বাসায় গিয়ে বউদের ভারতীয় শাড়ি পোড়ান, সেদিন বিশ্বাস করব আপনারা সত্যি ভারতীয় শাড়ি বর্জন করলেন। ভারতীয় মসলা তারা খেতে পারবে কি না, এ উত্তর তাদের দিতে হবে। আপনারা এ পণ্য সত্যি বর্জন করছেন কি না, এ কথাটাই আমরা জানতে চাই।
তিনি এরপর যোগ করেন, যে নেতারা বলছেন ভারতীয় পণ্য বর্জন করবেন, তাদের বউদের কয়খানা ভারতীয় শাড়ি আছে? ঈদের আগে দেখতাম, বিএনপির মন্ত্রীদের বউরা ভারত থেকে শাড়ি এনে বিক্রি করত।
বিএনপি নেতাদের কখনও আক্কেল হবে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিহাস বিকৃত করে তারা এখন ভাঙ্গা রেকর্ডের মতো ভুলে যাচ্ছে। তাদের কখনও আক্কেল হবে না। এখন তারা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে, তখন তারা কে কোথায় ছিল? যিনি বলে যান যে আওয়ামী লীগ নেতারা ২৫ মার্চ পালিয়ে গিয়েছিল, তার বাবা কে ছিল? স্বাধীনতার পর ৭৪ সালে যে দুর্ভিক্ষ হয়, তখন খাদ্যসচিব ছিল। এই খাদ্যসচিব বেইমানি করে ভ্রান্ত তথ্য দিয়ে দুর্ভিক্ষ ঘটিয়েছিল। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর তখন পুরস্কার পেয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, মঈন খানের বাবার নাম হলো মোমিন খান। সে ছিল খাদ্যসচিব। জাহাজ ফিরিয়ে দিয়ে খাবার আসতে দেয়নি বাংলাদেশে, দুর্ভিক্ষ ঘটানো হয়েছিল। আমি ৮১ সালে দেশে আসি। সারা বাংলাদেশ ঘুরি। তখন প্রতিবছর দুর্ভিক্ষ লেগে থাকত। বাংলাদেশের মানুষের জীবনে পরিবর্তন তারা করতে পারেনি। কারণ, তারা আমাদের বিজয় নস্যাৎ করতে চেয়েছিল। বাংলাদেশকে তারা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। এটাই তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল। যার কারণে জাতির পিতাকে হত্যা করল। এরপর ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়, আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে তাদের ওপর নির্যাতন করা হয়। আজ রাজনৈতিক দল করে অনেক বড় বড় কথা বলে তারা।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের জন্ম হলো কলকাতায়। ভারত-পাকিস্তান যখন বিভক্ত হয়, তখন তারা কিন্তু পূর্ব বাংলায় আসেনি, তারা করাচিতে গিয়েছিল। জিয়াউর রহমান সেখানে পড়াশোনা করে। সেখানেই আর্মিতে যোগ দেয়। সেখান থেকে সামরিক অফিসার হিসাবে পূর্ব বাংলায় এসেছিল দায়িত্ব পালন করতে। এটাই হলো বাস্তবতা। কিন্তু তার মনে তো পাকিস্তানটাই রয়ে গেছে। তার প্রমাণও আছে। স্বাধীনতার পর জিয়াউর রহমান মেজর থেকে মেজর জেনারেল হলো, এই প্রমোশনগুলা একে একে কে দিয়েছে? এটাও তো আওয়ামী লীগ সরকার দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দিয়েছে। এই অকৃতজ্ঞরা সেটাও ভুলে যায়।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বিএনপির নেতারা বড় বড় কথা বলে, ২৫ মার্চ আওয়ামী লীগের সবাই পালিয়ে গেছে। অথচ আওয়ামী লীগই সরকার গঠন করে যুদ্ধ পরিচালনা করে। শুধু যুদ্ধ পরিচালনা নয়, সশস্ত্র বাহিনীর গড়ে তোলা হয়। বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশকে ভাগ করা হয়। এক একটা সেক্টরের দায়িত্ব একেকজনকে দেওয়া হয়। জিয়াউর রহমান একটা বেতনভুক্ত কর্মচারী হিসেবে কাজ করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বেতনভুক্ত কর্মচারী ছিল জিয়াউর রহমান। এই কথা নিশ্চয়ই তাদের ভুলে গেলে চলবে না।
প্রধানমন্ত্রী এরপর বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন ঢাকায় গণহত্যা শুরু করে, তারা কিন্তু চট্টগ্রামেও হত্যাকাণ্ড শুরু করেছিল। যারা জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ব্যারিকেড দিচ্ছিল, তাদের ওপর গুলি চালিয়েছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। চট্টগ্রামের সেনাবাহিনীর দায়িত্বে ছিল জিয়াউর রহমান। সেই সময় যারা বেরিক্যাড দিয়েছে, জিয়াউর রহমানও তাদের ওপর গুলি চালিয়েছে। শুধু তাই নয়, স্যুয়াজ জাহাজ এসেছে পাকিস্তান থেকে অস্ত্র নিয়ে, সেই অস্ত্র খালাস করতে গিয়েছিল জিয়াউর রহমান। ২৫ মার্চ এ পাকিস্তান হানাদার বাহিনী যে আক্রমণ চালায় সেই আক্রমণকারীর একজন কিন্তু জিয়াউর রহমান।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে কিছু আঁতেল আছে। বুদ্ধিজীবী। বুদ্ধি বেচে জীবিকা নির্বাহ করেন। বাংলাদেশে একটা কাণ্ড আমরা দেখি, অতি বাম, অতি ডান। স্বাভাবিকভাবে গণতান্ত্রিক ধারাটা তারা পছন্দ করেন না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমরা স্বাধীনতার ৫৩ বছর পার করেছি। ৫৩ বছরের মধ্যে ২৯টা বছর ছিল এই জাতির দুর্ভাগ্যের বছর। দেশটা ছিল পরাধীন। এ দেশের মানুষ ছিল শোষিত-বঞ্চিত। সেই জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্ভুদ্ধ করে, মুক্তিযুদ্ধ করে, স্বাধীনতার বিজয় এনে দেওয়া একমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো বলিষ্ঠ নেতৃত্বদানকারীর জন্য সম্ভব। ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করার পর এ দেশে ইতিহাস বিকৃতির পালা দেখেছি।আজ যারা প্রশ্ন করেন আওয়ামী লীগ কোথায় ছিল, আমি জিজ্ঞেস করি আপনারা কোথায় ছিলেন? সেটাও একটু বলেন! জবাব দিন!
জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া উচিত বিএনপির : কাদের
অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের জন্য বিএনপি নেতাদের জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।
গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য দুরভিসন্ধিমূলক দাবি করে মন্ত্রী এ সময় বলেন, বিএনপি নেতাদের উচিত তাদের অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের জন্য জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করা। অথচ তারা সেটা না করে বরাবরের মতো দুরভিসন্ধিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্রের হত্যাকারীরা আজ যখন গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলে তখন বুঝতে হবে, তাদের ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য তাদের মায়াকান্না ছাড়া আর কিছু নয়।
গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণতন্ত্রের জন্য তাদের এই আহাজারি মূলত একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড, হাওয়া ভবন-খোয়াব ভবনের অধিপতি, দুর্নীতি-সন্ত্রাস ও দুর্বৃত্তায়নের বরপুত্র তারেক রহমানের দুঃশাসনের যুগে দেশকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য। কিন্তু, এ দেশের গণতন্ত্রকামী দেশপ্রেমিক নাগরিক সমাজ এই অন্ধকারের অপশক্তির বিরুদ্ধে আজ ঐক্যবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, পঁচাত্তরের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের পর খুনি জিয়ার হাতে জন্ম নেওয়া বিএনপি যখন গণতন্ত্রের কথা বলে, মানবাধিকারের কথা বলে, ইতিহাস তখন বিদ্রূপের হাসি হাসে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ইতিহাসের নিষ্ঠুর সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে অসাংবিধানিক পন্থায় বন্দুকের নলের মুখে জাতিকে জিম্মি করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল। বিচারপতি সায়েমকে জোরপূর্বক অস্ত্রের মুখে সরিয়ে দিয়ে রাষ্ট্রপতির পদ দখল করেছিল সে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই বাংলাদেশ স্বপ্নের পথে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালো রাতে মানবসভ্যতার ইতিহাসে নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করা হয়েছিল। পাশাপাশি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করা হয়েছিল। একইভাবে হস্তবকের দল ৩ নভেম্বর জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছিল। সেদিন ঘাতকচক্র অসহায় নারী, শিশুকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল। সেদিন কোথায় ছিল গণতন্ত্র? কোথায় ছিল মানবাধিকার?
তিনি বলেন, ১৯৭৭ সালে হ্যাঁ-না ভোটের প্রহসনের নির্বাচনের নামে দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছিল স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান। জিয়ার তথাকথিত গণতন্ত্র ছিল কারফিউ মার্কা গণতন্ত্র। লাগাতার সামরিক শাসন বলবৎ রেখে জনগণের ওপর দুঃশাসনের স্টিমরোলার চালানো হয়েছিল। ১৯৭৮ সালের ৩ জুন সেনাপ্রধানের দায়িত্বে থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আয়োজন করে গণতন্ত্রকামী জনগণের সঙ্গে নির্মম তামাশা করেছিল স্বৈরাচার জিয়া। অবৈধভাবে একইসঙ্গে সেনাপ্রধান, প্রধান সামরিক আইন কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রপতির পদ দখল করে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করেছিল সে। পরিকল্পিতভাবে গলা টিপে হত্যা করেছিল গণতন্ত্রকে, নির্বাসিত করেছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে।
সেই স্বৈরাচার জিয়ার হাতে প্রতিষ্ঠিত বিএনপি এখনও সুপরিকল্পিতভাবে এদেশের গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন করেছিল বেগম খালেদা জিয়া। জাতিকে উপহার দিয়েছিল মিরপুর ও মাগুরা মার্কা উপ-নির্বাচন। নির্বাচনে কারচুপি করে ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারায় আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন গঠন এবং ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার সৃষ্টি করেছিল বিএনপি। অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে তখন বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের ভয়াবহ নজির স্থাপন করা হয়েছিল। ২০০১ পরবর্তী সময়কালে বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনামলে ২১ হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। স্বৈরাচারের গর্ভে জন্ম নেওয়া বিএনপি সুপরিকল্পিতভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও মূল্যবোধ এবং গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে এখনও অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপিই এ দেশে গণতান্ত্রিক আদর্শ বাস্তবায়নের প্রধান প্রতিবন্ধক।
বিএনপির ভারত বর্জন কর্মসূচির কারণ জানালেন নাছিম
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যাতে আরও বেড়ে যায়, সেজন্যই ভারতীয় পণ্য বর্জনের কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলের ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিএনপি কখনোই দেশের মানুষের ভালো চায় না। মানুষ শান্তিতে থাকুক তারা এটা চায় না। তারা শেখ হাসিনার সরকারের বিরোধিতার নামে দেশের মানুষের কষ্ট বাড়িয়ে তুলছে। তারই নতুন সংস্কার ভারত বিরোধিতা। নিত্যপণ্যের দাম যাতে আরও বৃদ্ধি পায়, সেজন্যই তারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের কর্মসূচি শুরু করেছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, জন্মলগ্ন থেকেই তারা দেশের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড করছে, মানুষের স্বার্থে আঘাত লাগে এমন কাজ করছে আর ভারত বিরোধিতা তাদের তেমনই কর্মসূচি।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ম. আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর সঞ্চলনায় আলোচনা সভায় অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্মল চ্যাটার্জী।
ভারতীয় পণ্য বয়কট নিয়ে কথা বললেন আব্দুল মোমেন
বিএনপির ভারতীয় পণ্য বয়কট নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, এই ভারতীয় পণ্য বয়কট কেবলই একটি পলিটিক্যাল স্টান্ট। এই স্টান্টের অংশ হিসেবে ইদানীং সময়ে ভারতীয় পণ্য বয়কটের প্রবণতা দেখা দিয়েছে, তাতে বিএনপিও সায় দিচ্ছে।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির প্রথম বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। বৈঠকে সোমালিয়ার উপকূলে জিম্মি নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। শিগগিরই একটি ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাবে জানান আব্দুল মোমেন।
সাবেক মন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, যেসব দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস নেই, সেসব দেশে অনারারি কাউন্সিল খোলার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ব্যবস্থা গ্রহণ, বিদেশি পার্লামেন্টারি ডেলিগেশনের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকের আয়োজন, আন্দামান দ্বীপপুঞ্জসহ বিদেশের কোন কোন জেলে কত বাংলাদেশি বন্দি এবং মুক্তির বিষয়ে মিশনগুলো কি করেছে, সেসবের বিবরণ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
বিশেষ করে প্রত্যেক মাসে প্রবাসীদের অভিযোগ কতগুলো এবং কি অভিযোগ আসে, তার বিবরণ পাঠাতে হবে দূতাবাসগুলোকে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন উইং আছে, আমরা সুপারিশ করেছি এর পাশাপাশি যেন মানবাধিকার উইং খোলা হয়। তাছাড়া বিভিন্ন দেশে দূতরা যখন ট্রান্সফার হন, তখন তিনি দূতাবাসের নম্বরটি সঙ্গে করে নিয়ে যান। ফলে সেবাগ্রহীতারা তৎক্ষণাৎ সেবা পায় না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করার জন্য একটি ইউনিক ফোন নম্বর তৈরির বিষয়টিও আলোচনা হয় বৈঠকে।