বিএনপির উসকানিতে স্বাস্থ্যবিধিতে অনেকের উদাসীনতা: কাদের

বিএনপির অপরিণামদর্শী বক্তব্য ও উসকানিতে অনেকে স্বাস্থ্যবিধির প্রতি উদাসীনতা প্রদর্শনের সুযোগ পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি। বিএনপি করোনার টিকা নিয়ে অপরাজনীতি করেছে, তারা এখন লকডাউন নিয়েও নানান অপপ্রচার ও উসকানি দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আজ শনিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে তার সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।

করোনা নিয়ে রাজনীতি না করে বিএনপিকে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারের অন্ধ সমালোচনা না করে গঠনমূলক পরামর্শ দিন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি প্রতিদিন মিথ্যাচারের ভাঙা রেকর্ড বাজাবে, গুজব ছড়াবে, উসকানি দেবে। আর এসবের জবাব দিলে বিএনপি নেতাদের গাত্রদাহ হয়। আসলে সবকিছু নিয়ে রাজনীতি করা এবং রাজনৈতিক বাতাবরণ দিয়ে বিতর্কিত করাই এখন বিএনপির রাজনীতি। সমালোচনার তীর ছোড়া আর মিথ্যাচারের বিষবাষ্প ছড়ানো ছাড়া বিএনপি করোনাকালে জনকল্যাণে কী করেছে? কোন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে?

• আরও পড়ুন... সামনে অশনি সংকেত: কাদের

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আপনারা (বিএনপি) তো সকালে ঘুম থেকে জেগেই বলেন সরকারের সমন্বয় নেই। মহামারি নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোও যেখানে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে। কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে গড়ে তোলা হয়েছে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। বিএনপি অপকৌশল করে সম্মুখসারির যোদ্ধাদের মনোবলে চিড় ধরাতে চায়, কিন্তু তারা সফল হবে না।

মানুষের জীবনের পাশাপাশি জীবিকার সুরক্ষায় সরকার সচেষ্ট জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ অবস্থায় জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে মিথ্যাচার করা প্রকারান্তরে সংক্রমণ রোধে বাধাগ্রস্ত করা।

বিএনপি এখন সর্বদলীয় মতামত গ্রহণের কথা বলছে, এর আগেও তারা সর্বদলীয় কমিটির কথা বলেছিল। করোনা কোনো রাজনৈতিক সমস্যা নয়, দেশে করোনাবিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটি রয়েছে। অতএব সরকার বিশেষজ্ঞ ও পরামর্শক কমিটির মতামত এবং সুপারিশের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে। এখানে সর্বদলীয় বিষয়ের চেয়ে জনস্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞদের মতামতই বেশি জরুরি। বিশ্বের কোনো দেশে সংক্রমণ রোধ কিংবা চিকিৎসায় সর্বদলীয় কমিটির নজির নেই। টিকা ব্যবস্থাপনায় কোথাও কোথাও এ ধরনের কমিটি হলেও করোনার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এমন দৃষ্টান্ত নেই।

ব্রিফিং শেষে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা সংযোগ সড়কসহ কর্ণফুলী টানেল সংযোগ সড়কের ৪ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের নির্মাণকাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দেন।

এ সময় মন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে দেশের জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে দ্রুত, নিরবচ্ছিন্ন ও নিরাপদ মহাসড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় কোরিয়ান ইপিজেড, চাইনিজ ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (কর্ণফুলী) টানেল। টানেল সংযোগ সড়কটি আনোয়ারার ওপর দিয়ে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সঙ্গে পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে সংযুক্ত করবে।

• আরও পড়ুন... রমজানের নতুন অফিস সময় জানালো সরকার

পটিয়া-আনোয়ারা-বাঁশখালী সড়কের পাশে কর্ণফুলী টানেলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নও জরুরি উল্লেখ করে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, এ বাস্তবতায় শিকলবাহা থেকে কালাবিবির দিঘি পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার এবং আনোয়ারা সদর উপজেলা থেকে কালাবিবির দিঘি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটারসহ মোট সাড়ে ১১ কিলোমিটার মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণে এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৪০৭ কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় প্রায় সাড়ে ১১ কিলোমিটার মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ ছাড়াও শিকলবাহা, কর্ণফুলী টানেল সংযোগস্থল এবং কালাবিবির দিঘিতে ৩টি ইন্টারসেকশন নির্মাণ করা হবে বলেও জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

কেএফ/পি