সুদ নিয়ে বাড়িভাড়া দিয়ে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ, এত উন্নয়ন গেল কোথায়: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, কোটি কোটি মানুষ বেকার। সুদে টাকা নিয়ে বাড়িভাড়া পরিশোধ করে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। আর সরকারের মুখে উন্নয়নের জোয়ার বইছে।
আজ বুধবার (৮ জুলাই) দুপুরে নয়াপল্টনে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, যাদের জন্ম ঢাকায় তারাও এখন গ্রামে চলে যাচ্ছে। নিম্ন আয়ের মানুষদের উপার্জন বন্ধ থাকায় বৌ-বাচ্চাদের গ্রামে পাঠিয়ে দিচ্ছে। আর মন্ত্রীরা বলছেন- বাংলাদেশ এখন সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে গেছে, এই উন্নয়ন গেলো কোথায় ?’
তিনি বলেন, মানুষের ঘরে খাবার খাদ্য নেই, চিকিৎসার সামর্থ্য নেই। ফলে সুদে টাকা নিয়ে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। ইতোমধ্যে ৩০-৪০ শতাংশ মানুষ ঢাকা ছেড়ে দিয়েছে। এর ফলে বিপাকে পড়েছে বাড়িওয়ালারাও।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, দুর্নীতির কেলেঙ্কারি আড়াল করতেই সরকার ভিন্নমত ও মুক্তচিন্তার নাগরিকদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করছে। দুর্নীতির বহুদৈত্যকার কেলেঙ্কারির কথা যেন মানুষ জানতে না পারে এজন্যই মুক্তচিন্তার মানুষদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করা হচ্ছে। শাসকের বিরোধিতা করার অর্থ রাষ্ট্রের বিরোধিতা করা নয়। আর এজন্য নিরাপরাধ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো ড্রাকোনিয়ান আইনের প্রয়োগ করা গুরুতর অন্যায় ও পাপ বলে আমরা মনে করি।
---------------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: করোনা পরীক্ষার নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণাকারীদের বিরুদ্ধে সরকার : কাদের
---------------------------------------------------------------
বর্তমানে এই আইনের প্রয়োগে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে দাবি করে রিজভী বলেন, কোভিড-১৯ নিয়ে সরকারের ব্যর্থতা সমালোচনা করায় গত তিন মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, স্কুলের শিক্ষার্থী, নারীসহ প্রায় ২০০ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ভালুকার একজন দশম শ্রেণির কিশোর শিক্ষার্থীও রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আজ দেশবাসীর কোনও স্বাধীনতা নেই, তাদের নাগরিক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে রাষ্ট্রশক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে। মেঘনার মাঝি যেমন ঝড়-বাদলের নিত্যসহচর ঠিক তেমনি জনগণের নিত্যসহচর হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমান সরকারের প্রণীত কালো আইনগুলো। ক্ষুব্ধ সরকার যে জনগণের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে। তাদের প্রণীত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতোই সকল কালাকানুন, বিদ্বেষ ও সংকীর্ণতার বহিঃপ্রকাশ।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের নিজস্ব একটা পরিমার্গ আছে, সেটি হলো বহুদলীয় গণতন্ত্রকে সহ্য না করা। তাদের ঐতিহ্য হচ্ছে ছলেবলে কৌশলে ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রের আলোকে কেড়ে নিয়ে নিজেদের দলীয় শাসনকে রাষ্ট্রশক্তি দিয়ে প্রতিষ্ঠা করা। এখানে ভিন্ন দল ও মতের অস্তিত্বকে তারা কোনও মতেই মনে নিতে পারে না। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সমালোচনা করলেই তারা মনে করে দেশের বিরুদ্ধে সমালোচনা করা। দেশটাকে পৈত্রিক সম্পত্তি বলে তারা মনে করে। তারা দম্ভে ও গর্বে আত্মস্ফীত। সেজন্য বাকশালের বেওয়ারিশ লাশকেই কাঁধে দিয়ে ঘুরের বেড়ায় তারা।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে সরকার মানুষে কাছে নানা ‘ষড়যন্ত্রেরতত্ত্ব’ উপস্থাপন করে বলেও মন্তব্য করেন রিজভী।
এসএস
মন্তব্য করুন