খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ‘বিশেষ আবেদন’ করবে পরিবার
বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য মুক্তি চেয়ে সরকারের কাছে বিশেষ আবেদন করার কথা ভাবছে তার পরিবার ও স্বজনরা। শুক্রবার বিকেলে পরিবারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বেগম জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম।
এইদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসনকে হাসপাতালের কেবিনে দেখতে যান পরিবারের ৫ সদস্য। ঘণ্টাখানেক অবস্থান করেন তারা।
পরে বেগম জিয়ার মেজো বোন সেলিমা ইসলাম জানান, তার ছোট বোনের শারীরিক অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। বারবার বমি করছেন, খালি পেটে তার ডায়াবেটিসের মাত্রা ১৫ এর উপরে। এই হাসপাতালে যেভাবে চিকিৎসা চলছে সেখান থেকে বেগম জিয়াকে হয়তো জীবিত ফেরানে যাবে না বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।
পি
মন্তব্য করুন
বিএনপি এখন হতাশায় ডুবে আছে : কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি এখন হতাশায় ডুবে আছে। নির্বাচন বয়কট করা তাদের সবচেয়ে বড় ভুল। এটা তারা উপলব্ধি করবে।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে একটা নির্বাচন হয়ে গেল, তারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি। আন্দোলনের নামে আগুন সন্ত্রাস করেছে। ২৮ অক্টোবরের স্মৃতি ভুলে যাওয়ার কথা না। বিএনপির আন্দোলনের কত ভয়ংকর হতে পারে তা বার বার দেখিয়েছে। তাদের আন্দোলনের অর্থ বুঝি। জনগণের সম্পৃক্ততার ছিল না বলে অতীতে তারা ব্যর্থ।
তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচন নিয়েও তাদের সঙ্গে দ্বিধাদ্বন্দ্ব চলছে। দলীয়ভাবে যাই বলুক না কেন, তাদের যারা গ্রাসফুটে আছে তারা স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবে। অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে তাদের নেতারা উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে অর্থনৈতিক সংকট রয়েছে। তার জন্য আমরা দায়ী না। বিশ্ব অর্থনীতির কারণে জিনিসপত্রের দামের ওপর একটা প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। কিন্তু দ্রব্যমূল্য যাতে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্য থাকে, তার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতে আমাদের যথেষ্ট ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এই ভর্তুকী আমরা সমন্বয় করতে চাই। বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করতে হলে সমন্বয় করতে হবে। বিএনপি ক্ষমতা থাকতে দিনে ১৮ ঘণ্টা লোড শেডিং দিতো। তারা পাঁচ বছরে ৯ বার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, উপদপ্তর সায়েম খান প্রমুখ।
‘অচিরেই মানুষ বুঝতে পারবে কেন এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছি’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, নির্বাচনে আমাদের অংশগ্রহণ নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলছেন, নানাভাবে মূল্যায়ন করছেন। কিন্তু মূল্যায়নের জন্য এখনও সঠিক সময় আসেনি। অচিরেই মানুষ বুঝতে পারবে কেন এই নির্বাচনে আমাদের অংশগ্রহণ।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
জি এম কাদের বলেন, রাজনীতি কতটা নোংরা হতে পারে তা এবারের নির্বাচনে দেখেছি। বৈষম্যকে দূর করতেই হয়েছিল ভাষা আন্দোলন, সব জায়গায় শহীদ মিনার হচ্ছে কিন্তু বৈষম্য দিনকে দিন বেড়েই চলছে। এখনও বৈষম্যের অন্যায় হচ্ছে। এ সরকার আরও বেশি বৈষম্য তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, একুশের চেতনা নিয়ে বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা মুক্তিযুদ্ধে নয় স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়লাভ করেছি।
জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, যখনই আমরা স্বাধীনভাবে রাজনীতি করতে যাই তখন আমাদের মধ্যে ভাঙন তৈরি হয়। সরকারই এমন করে। এর জন্যে দায়ী আমাদের লোভ-লালসা।
তিনি বলেন, দলের সমস্ত নেতাদের সরকারি দলের নয়, জাতীয় পার্টির রাজনীতি করতে হবে। যারা জাতীয় পার্টিতে থেকে অন্য দলের রাজনীতি করে তাদের বের করে দিতে হবে।
এসময় জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আমরা পরজীবী হতে চাই, গৃহপালিত রাজনৈতিক দল নয়। পরজীবী হয়ে আমরা অনেক কিছু করেছি। আমাদের একটা বড় দেন-দরবার করার শক্তি ছিল। ২০১৪ সালের পর থেকে আমরা সেই শক্তি হারিয়েছি। আমরা এখন হয়ে গেছি গৃহপালিত রাজনৈতিক দল।
মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন খসরু
ঢাকায় সফররত মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি নেতারা।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে ঘণ্টাব্যপী এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে দ্রুত গাড়িতে উঠে চলে যান মির্জা ফখরুল। এরপর বের হন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও শামা ওবায়েদ।
সাংবাদিকরা বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, কিছু বলার নেই। তারা আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, আমরা এসেছি। কি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা সময় মত জানানো হবে।
বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধি দলে ছিলেন ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এনএসসি) দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সিনিয়র ডিরেক্টর আইলিন লাউবেচার, ইউএসএআইডির এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর মাইকেল শিফার এবং ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তার।
এ ছাড়া বিএনপির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ।
এর আগে, শনিবার সকাল ১১টায় ঢাকায় আসে মার্কিন প্রতিনিধি দলটি। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাদের ঢাকায় থাকার কথা রয়েছে।
সফরকালে প্রতিনিধি দলটি ইন্দোপ্যাসিফিক অঞ্চলে পারস্পরিক স্বার্থের অগ্রগতির জন্য কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
এ ছাড়া তারা তরুণ অ্যাক্টিভিস্ট, সুশীল সমাজ, শ্রম সংগঠক এবং মুক্ত গণমাধ্যমের বিকাশে নিযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন।
বিএনপিকে কঠোর হস্তে দমনের হুঁশিয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
আন্দোলনের নামে বিএনপি আবারও নাশকতার চেষ্টা করলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মধুবাগে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনের জন্য দল গুছিয়ে বিএনপির কোনো লাভ নেই। মানুষ আর তাদের সঙ্গে নেই। বাংলাদেশের মানুষ আগুনসন্ত্রাস-জঙ্গিবাদকে পছন্দ করে না।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা জামিন আমাদের হাতে নেই। সেটি আদালতের বিষয়। তারা যদি আবারও অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর চালায় তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।
নিত্যপণ্য মজুতের বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, রমজান উপলক্ষে অবৈধভাবে নিত্যপণ্য মজুত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, অবৈধভাবে নিত্যপণ্য মজুতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীও নির্দেশনা দিয়েছেন। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সেই অনুযায়ী কাজ করছে।
এ সময় আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যা যা করার দরকার তাই করা হবে বলেও সতর্ক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
অবশেষে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কারণ জানালেন রওশন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার বিষয়টি অবশেষে পরিষ্কার করেছেন জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে নিজ বাসভবনে আয়োজিত বর্ধিত সভায় তিনি বলেন, অনেকে প্রশ্ন করেন, আমি কেন নির্বাচনে অংশ নিলাম না। মূলত, ভোটে জয়ী হওয়ার মতো জাপার অনেক নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তাদের বাদ দিয়ে তো আমি নির্বাচন করতে পারি না। তাছাড়া আমার ছেলের আসনও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাকে ফেলে রেখে আমি নির্বাচনে যেতে পারি না।
রওশান আরও বলেন, এতকিছুর পরেও সব কিছু মেনে নিতে পারতাম, যদি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ভরাডুবি না হতো। পার্টিকে ধ্বংসের শেষ সীমানায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এটা আমি কীভাবে মেনে নেব?
তিনি বলেন, জাপার নেতাকর্মীদের দাবির মুখে আমি পার্টির চেয়াম্যানের দায়িত্ব নিতে বাধ্য হয়েছি। আপনারাই জাপার সব ক্ষমতার উৎস। আপনাদের চাওয়া মতেই পার্টি পরিচালিত হবে। জাতীয় পার্টিতে পূর্ণাঙ্গ গণতান্ত্রিক চর্চা হবে।
জাপার একাংশের চেয়ারম্যান বলেন, আগামী ৯ মার্চ জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ সম্মেলনের বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হতে পারে। এসব নিয়ে কেউ কান দেবেন না। ৯ মার্চ ওইদিন আপনারাই জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব নির্বাচিত করবেন।
রওশন এরশাদ অভিযোগ করেন, জি এম কাদেরপন্থিরা জাপা থেকে এরশাদের স্মৃতি মুছে ফেলার চেষ্টা করছেন। জাপা প্রতিষ্ঠার পর এবারের নির্বাচনে পার্টির প্রার্থীদের পোস্টারে পল্লিবন্ধুর ছবি রাখতে দেওয়া হয়নি। যার কারণে অনেক নেতাকর্মী ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।
এ সময় দেশের অর্থনীতির বিষয়ে সরকারকে সতর্ক করে তিনি বলেন, নতুন সরকারের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আমরা অশনিসংকেত দেখতে পাচ্ছি। সরকার যদি তা মোকাবিলা করতে না পারে, তাহলে বড় বিপর্যয় নেমে আসবে।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করলেন আমীর খসরু
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টায় বেগম জিয়ার গুলশানের বাসভবনে যান তিনি। রাত ৯টার দিকে সেখান থেকে বের হন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকায় সফররত মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি নেতারা।
বৈঠকে বিএনপির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ।
এ ছাড়া বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধি দলে ছিলেন ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এনএসসি) দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সিনিয়র ডিরেক্টর আইলিন লাউবেচার, ইউএসএআইডির এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর মাইকেল শিফার এবং ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তার।
বৈঠক শেষে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, কিছু বলার নেই। তারা আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, আমরা এসেছি। কি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা সময় মত জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গ্রেপ্তার হওয়ার সাড়ে তিন মাস পর গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্তি পান আমীর খসরু।
মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর হতাশ কেন বিএনপি?
বাংলাদেশ সফররত যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর হতাশ বিএনপি। বৈঠকে কী বিষয়ে কথা হয়েছে, সে সম্পর্কে কিছুই বলছে না বিএনপি। যদিও যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এক্স হ্যান্ডলে বৈঠক পরবর্তী ছবি প্রকাশ করলেও আলোচনার বিষয়ে কিছু জানায়নি দূতাবাস। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি মনে করেছিল তাদের যারা একটু বাতাস দিয়েছিল, তারা ক্ষমতার বসিয়ে দেবে। এখন তাদের মোহভঙ্গ হয়েছে তাই বিএনপি নেতাদের মুখে কুলুপ।
ঢাকায় সফররত যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বৈঠক করে বিএনপি। রাজধানীর গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়। বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তারের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন পররাষ্ট্র দপ্তর এবং এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর মাইকেল শিফার, ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এনএসসি) দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সিনিয়র ডিরেক্টর এইলিন লাউবেখার ও ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। বৈঠকে বিএনপির পক্ষে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। একই সঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও পূর্বাপর রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলির বিস্তারিত তথ্যসংবলিত একটি ফাইলও প্রতিনিধি দলের কাছে হস্তান্তর করেন তারা। এতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন, ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার, নানা অনিয়ম ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীর ওপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। যদিও বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে চাননি বিএনপির নেতারা।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির আন্তর্জাতিক উইংয়ের আহ্বায়ক আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘তারা আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, আমরা এসেছি, কথাবার্তা বলেছি। আর কিছু বলার নেই।’ নির্বাচনের বিষয়ে কোনো কথা হয়েছি কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, ‘কথা হয়েছে। কিন্তু আমরা কিছু বলতে চাই না। আপনারা যত প্রশ্ন করবেন, আমার উত্তর হচ্ছে– কিছু বলার নেই।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক তৎপরতা ও দেশের এত মানুষের সমর্থন নিয়ে বিএনপি যে জনপ্রিয় দল তা প্রমাণে নির্বাচন ছাড়া অন্য তো কোনো পথ খোলা ছিল না। তাহলে বর্জন করে আন্দোলন করলে লাভ কী? ভোটে অংশগ্রহণ না করলে কেউ তো কোনো দলকে ক্ষমতায় বসাতে পারে না। এখন তা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছে বিএনপ।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায় বলেন, ‘সহিংসতা করে, আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করা কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি হতে পারে না। বিএনপি মনে করেছিল আগুন সন্ত্রাস করে এবং তাদের যারা একটু বাতাস দিয়েছিল, তারা ক্ষমতার বসিয়ে দেবে। বিএনপি বুঝতে পারেনি সময়ের পরিবর্তন হয়েছে, অনন্তকাল কেউ কারও জন্য বসে থাকবে না। ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে, ভুল রাজনীতির ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এখন তাদের মোহভঙ্গ হয়েছে। তাই বিএনপির মুখে কুলুপ।’