এমপি লিটনের মৃত্যুর তিন বছর আজ
গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি লিটন হত্যার তিন বছর আজ। ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গার মাস্টারপাড়ার নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন।
এ ঘটনায় অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করে লিটনের বড় বোন ফাহমিদা কাকুলী বুলবুল।
তদন্ত শেষে সাবেক সাংসদ কর্নেল (অব.) কাদের খান, তার একান্ত সহকারী মো. শামছুজ্জোহা, তার গাড়িচালক আবদুল হান্নান, তার গৃহকর্মী মেহেদি হাসান, তার বাড়ির কেয়ারটেকার শাহীন মিয়া, পোশাক কারখানার সাবেক কর্মী আনোয়ারুল ইসলাম, কসাই সুবল চন্দ্র রায় এবং চন্দন কুমারের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
এরমধ্যে আসামি কসাই সুবল কারাগারে মৃত্যুবরণ করেন। ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সাবেক সাংসদ কর্নেল (অব) কাদের খানকে বগুড়ার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামি চন্দন কুমার ভারতে পলাতক রয়েছেন।
আলোচিত এ মামলায় ২০১৮ সালের সাত ফেব্রুয়ারি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ২০১৮ সালের আট এপ্রিল প্রথম দফায় আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। বাদী নিহতের ছোট বোন ফাহমিদা কাকলী বুলবুল, নিহতের স্ত্রী খুরশিদ জাহান স্মৃতি ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৫৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত। গেল ৩১ অক্টোবর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হয়। পরে পর্যায়ক্রমে কারাগারে থাকা আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন শুনানি হয় আদালতে।
এরপর আসামি চন্দন কুমারের ভারতে পলাতক থাকায় আইনি জটিলতায় মামলা পরিচালনা এক বছর পিছিয়ে যায়।
অবশেষে চলতি বছরের (২০১৯) ১৮ ও ১৯ নভেম্বর দুইদিন রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষ হয়। গত নভেম্বর মাসের ২৮ তারিখ গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলায় জাপার সাবেক সাংসদ কর্নেল (অব.) আবদুল কাদের খানসহ সাতজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ দিলীপ কুমার ভৌমিক এ রায় ঘোষণা করেন।
এদিকে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে নিহত এমপি লিটনের স্ত্রী খুরশিদ জাহান স্মৃতি বলেন, দ্রুত এ রায় কার্যকর হোক সেটা আমি চাই। উচ্চতর আদালতে আসামিরা যেন কোনও সুবিধা করতে না পারে। এ রায় যেন বহাল থাকে সেটা আমি সকলের কাছে আবেদন করছি। পলাতক আসামি চন্দনকে অতি দ্রুত গ্রেপ্তারের মাধ্যমে রায় কার্যকর করার আবেদন জানান তিনি।
লিটনের বড় বোন ও মামলার বাদী ফাহমিদা কাকলী বুলবুল বলেন, এই রায়ে আমরা খুশি। এই রায় দ্রুত কার্যকর করার জন্য সরকারের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি।
রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি, যার ফলে বিজ্ঞ আদালত সকল আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। এ রায় গাইবান্ধাসহ সারা দেশবাসী, সমস্ত সংসদ সদস্য ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সন্তুষ্ট হয়েছেন।
অপরদিকে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আইনজীবী অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, আমরা মহামান্য হাইকোর্টে আপিল করব।
জেবি/পি
মন্তব্য করুন