খালেদা জিয়া চিকিৎসায় সহযোগিতা করছেন না, অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একে মাহবুবুল হক বলেছেন, হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে গত সাত মাসে খালেদা জিয়ার অবস্থার অবনতি হয়নি। খবর বিবিসি'র।
বিএনপি চেয়ারপারসনকে 'যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না', দলটির এমন অভিযোগের প্রেক্ষাপটে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সোমবার যে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে, সেখানে জেনারেল হক এই মন্তব্য করেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত পহেলা এপ্রিল ঢাকার এই হাসপাতালে আনা হয়। এরপর থেকে ওই হাসপাতালের একটি কেবিনে অবস্থান করে চিকিৎসা নিচ্ছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
এর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে সেখানেই তার সাথে দলীয় সংসদ সদস্য ও পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাৎ করেছেন।
তবে তাঁর শারীরিক অবস্থার বিষয়টি মূলত আলোচনায় আসে ২৫শে অক্টোবর পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাতের পর।
তখন তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে মিসেস জিয়ার বড় বোন সেলিমা ইসলাম দাবি করেন যে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের চরম অবনতি ঘটেছে।
বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি দাবি করেন, খালেদা জিয়া এখন উঠে বসতে পর্যন্ত পারছেন না।
তিনি বলেন, "কারও সাহায্য ছাড়া বসতে পারে না। তার হাত বেঁকে গেছে, কথা বলতেও তার কষ্ট হচ্ছে। ওজন কমে গেছে। সব কিছু মিলিয়ে তার পঙ্গু হওয়ার মতো অবস্থা হয়ে গেছে"।
তিনি জানান জামিন পেলে খালেদা জিয়াকে তারা চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে চান। এতে মিসেস জিয়ারও সায় রয়েছে বলে জানান তিনি।
এরপর প্রতিক্রিয়া আসে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের তরফ থেকে। তিনি বলেন, "খালেদা জিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন। তিনি সুস্থ অবস্থায় ফিরে আসবেন কি-না, তা নিয়েই শঙ্কা দেখা দিয়েছে"।
এরপরই বিএসএমএমইউ এর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একে মাহবুবুল হক পাল্টা দাবি করেছেন যে গত সাত মাসে খালেদা জিয়ার অবস্থা হয় উন্নতি হয়েছে বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্থিতিশীল রয়েছে।
তিনি বলেন, "কোনো অবস্থাতেই খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়নি"।
---------------------------------------------------------------
আরো পড়ুন: জেল হত্যায় জড়িত বলেই জিয়াকে সেনাপ্রধান করা হয়েছিল: প্রধানমন্ত্রী
---------------------------------------------------------------
একই সঙ্গে তিনি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার ক্ষেত্রে বরং অসহযোগিতা করছেন।
তিনি বলেন, হাসপাতালের অধ্যাপকগণ স্বাভাবিক সময়ে গিয়ে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা তাঁর সাথে কথা বলার অনুমতি পান না।
"আমাদের হাসপাতালের অফিস সময় দু'টা পর্যন্ত। প্রায় সময়ই তিনি (খালেদা জিয়া) অনুমতি দেন দেড়টার পর। নির্ধারিত সময়ে তাঁর দেখা পাওয়া যায় না। এমনকি অনেকবার চিকিৎসক সাড়ে চারটা পর্যন্ত অপেক্ষা করে এসেছেন"।
আর্থারাইটিসের চিকিৎসার একটি ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য খালেদা জিয়ার সম্মতি না পাওয়ায় আগের নিয়মে চিকিৎসা চালাতে হচ্ছে বলেও দাবি করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একে মাহবুবুল হক।
তিনি বলেন, "প্রতিদিন রক্ত পরীক্ষা করা হয় দু'বার আর একদিন পরপর ইনস্যুলিন দেয়া হয়। মেডিকেল বোর্ড তার চিকিৎসার কার্যক্রম তদারকি করে"।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে তোলা অভিযোগ সম্পর্কেও কথা বলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের পরিচালক।
"একটি কথা উল্লেখ করতে চাই যা আগে বলতে চাইনি। কিন্তু প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতীয়মান হচ্ছে যে বিষয়টি পরিস্কার করা দরকার"।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে তোলা এসব অভিযোগ সম্পর্কে বিএনপি'র পক্ষ থেকে এখনও কোন বক্তব্য দেওয়া হয়নি।
এসজে
মন্তব্য করুন