সড়কে যানজট-দুর্ভোগ, সেতুমন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ (ভিডিও)
ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের দুর্ভোগের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রোববার সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী জনপথ মোড়ে ঈদযাত্রায় ভিজিলেন্স টিমের কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, গত দুইদিন বৃষ্টির কারণে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সড়কগুলোতে ধীরগতি থাকলেও এখন তা স্বাভাবিক হয়েছে।
তবে রাজধানী থেকে উত্তরবঙ্গে যাওয়ার ক্ষেত্রে যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে কাদের বলেন, টাঙ্গাইল থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত কখনো কখনো ধীরগতি আবার কখনো যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
টার্মিনালগুলোতে সময়মতো বাস এসে পৌঁছাতে না পারায় যাত্রীদের দুর্ভোগ হচ্ছে। তবে এ সমস্যা দ্রুত কেটে যাবে বলে জানান, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
আরও পড়ুন
পি
মন্তব্য করুন
‘ভারতের পেঁয়াজ দিয়ে পেঁয়াজু খেয়ে বয়কটের ডাক তামাশা’
ভারতের পেঁয়াজ দিয়ে পেঁয়াজু খেয়ে বয়কটের নামে বিএনপি মানুষের সঙ্গে তামাশা করছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (২৫ মার্চ) বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক সামাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতের পেঁয়াজ দিয়ে পেঁয়াজু খায়, ভারতের গরুর মাংস দিয়ে সেহরি খায়, ভারতের শাড়ি পরে স্ত্রীরা সাজে, কিন্তু বয়কটের ডাক দেয়। বিএনপি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকারী জামায়াতের নেতাদের মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে লাল-সবুজ পতাকা দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। শুধু তাই নয়, তারা ’৭৫ পরবর্তী গণহত্যার প্রমাণ মুছে দিয়েছিল। ৩০ লাখ শহীদের ব্যাপারে খালেদা জিয়া সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর গণহত্যার সব আলামত নষ্ট করা হয়েছিল। যিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের প্রতিনিধিদলের প্রধান হয়ে জাতিসংঘে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছিল, সেই শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে যাতে বিশ্বের কোথায় এমন গণহত্যা না হয়, সেজন্য গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রয়োজন। একই সঙ্গে আমরা গাজায় গণহত্যা বন্ধ চাই।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে ভারতীয় কূটনীতিকদের নিয়ে বিএনপি’র ইফতার
ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিলেও ভারতীয় কূটনীতিকদের নিয়ে ইফতার পার্টি করেছে বিএনপি। পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েও ভারত সংশ্লিষ্টতা বয়কট করতে পারেনি তারা। ইফতার পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। উপস্থিত ছিলেন না দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
অনেকদিন ধরে দেশের একটি জনগোষ্ঠী ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। আর তাতে সমর্থন বয়কটের ডাক দেয় বিএনপি। তাদের মতে, দেশকে স্যাটেলাইট রাষ্ট্রে পরিণত করেছে ভারত। সেই আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে ২০ মার্চ ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দেন রুহুল কবির রিজভী।
এর আগে ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লড়াইয়ে’ পাশে থাকতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানান, দলের নীতি নির্ধারক ‘স্থায়ী কমিটি’-র সদস্য আব্দুল মঈন খান। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে ভারতকে পাশে পাওয়া গিয়েছিল, ‘গণতন্ত্রের লড়াই’-য়েও ভারতের সেই ভূমিকা চান মঈন খান।
এদিকে (২৪ মার্চ) রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে কূটনীতিকদের সম্মানে বিএনপি’র ইফতার অনুষ্ঠিত হয়। ইফতারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান তখন জানান, ইফতারে জাতিসংঘ, এনডিআই, আইআরআই এবং ৩৮টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন ল্যাফেইব, অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নার্দির সিম্পসন, জার্মান অ্যাম্বাসেডর আখিম ট্রোসটার, পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ, ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার ড. বিনয় জর্জ প্রমুখ। এছাড়াও ভারতের হাইকমিশনের আরও কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি’র ভারত বয়কট প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কদিন আগে ওদের নেতা ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন, ভারতে চিকিৎসা নিতে যাবেন, আবার আপনারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিবেন-এগুলো হিপোক্রেসি (ভণ্ডামি) ছাড়া অন্য কোনো কিছু নয়। বিএনপির আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে বাজার অস্থিতিশীল করে পণ্যের মূল্য বাড়ানো।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি ভারতের ভারতের গরুর মাংস দিয়ে সেহরি খায়, পেঁয়াজ দিয়ে পেঁয়াজু খায়, ভারতের শাড়ি পরে স্ত্রীরা সাজে, কিন্তু বয়কটের ডাক দেয়। ভারতীয় পণ্য বয়কটের নামে মানুষের সঙ্গে তামাশা করছে তারা। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য চেষ্টা করছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, চিরাচরিত পাকিস্তানি কায়দায় ভারতের বিরোধিতা শুরু করেছে বিএনপি। তারা যখন কোনো রাজনৈতিক ইস্যু না পায়, তখনই এই একটা ইস্যু সামনে নিয়ে আসে। বঙ্গবন্ধুর আমলেও করেছে, এখন শেখ হাসিনার আমলেও তাই করছে।
স্বাধীনতা ঘোষণার পাঠক ঘোষক হতে পারে না : কাদের
স্বাধীনতা ঘোষণার পাঠক ঘোষক হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এতদিন পরেও স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্ক করা হয়। স্বাধীনতা ঘোষণার পাঠক কখনও ঘোষক হতে পারে না। কে ঘোষক এ বিতর্কের অবসান তখনই হবে, যখন আমরা সত্যের অনুসন্ধান করতে যাবো। স্বাধীনতা ঘোষণার ম্যান্ডেট ৭০ এর নির্বাচনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুই পেয়েছিলেন। আবুল কাশেম, এম এ হান্নান, অনেকেই ঘোষণা পাঠ করেছেন। সেখানে জেনারেল জিয়াও বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে এত বছর পর আমাদের ভাবতে হচ্ছে এ দেশেরই মানুষ, এ দেশেরই অগণতান্ত্রিক সাম্প্রদায়িক শক্তিকে নিয়ে। যারা আমাদের বিজয়, আমাদের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অন্তরায় সৃষ্টি করে যাচ্ছে। আজ আমাদের শপথ, বিএনপির নেতৃত্বে যে সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তি বিজয়কে সংহতকরণে বাধা বা অন্তরায় হয়ে আছে, এই অপশক্তিকে আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরাজিত করব, প্রতিহত করব।
বিএনপির ভারতবিরোধিতা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভারত বিরোধিতা আগেও হয়েছে, এখনও হচ্ছে। এটা নতুন কিছু না। এ বিরোধিতা পাকিস্তান আমল থেকেই হয়ে আসছে। যখন কোনো ইস্যু থাকে না, তখনই ভারত বিরোধিতা ইস্যু সামনে আসে।
বিএনপির মন্ত্রীদের বউরা ভারত থেকে শাড়ি এনে বিক্রি করত : প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির মন্ত্রীদের বউদের ভারত থেকে শাড়ি এনে বিক্রি করতে দেখেছি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিএনপি নেতাদের ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির এক নেতা দেখলাম চাদর খুলে পুড়ল। আমি এখন বলব, বিএনপি নেতারা যদি বাসায় গিয়ে বউদের ভারতীয় শাড়ি পোড়ান, সেদিন বিশ্বাস করব আপনারা সত্যি ভারতীয় শাড়ি বর্জন করলেন। ভারতীয় মসলা তারা খেতে পারবে কি না, এ উত্তর তাদের দিতে হবে। আপনারা এ পণ্য সত্যি বর্জন করছেন কি না, এ কথাটাই আমরা জানতে চাই।
তিনি এরপর যোগ করেন, যে নেতারা বলছেন ভারতীয় পণ্য বর্জন করবেন, তাদের বউদের কয়খানা ভারতীয় শাড়ি আছে? ঈদের আগে দেখতাম, বিএনপির মন্ত্রীদের বউরা ভারত থেকে শাড়ি এনে বিক্রি করত।
বিএনপি নেতাদের কখনও আক্কেল হবে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিহাস বিকৃত করে তারা এখন ভাঙ্গা রেকর্ডের মতো ভুলে যাচ্ছে। তাদের কখনও আক্কেল হবে না। এখন তারা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে, তখন তারা কে কোথায় ছিল? যিনি বলে যান যে আওয়ামী লীগ নেতারা ২৫ মার্চ পালিয়ে গিয়েছিল, তার বাবা কে ছিল? স্বাধীনতার পর ৭৪ সালে যে দুর্ভিক্ষ হয়, তখন খাদ্যসচিব ছিল। এই খাদ্যসচিব বেইমানি করে ভ্রান্ত তথ্য দিয়ে দুর্ভিক্ষ ঘটিয়েছিল। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর তখন পুরস্কার পেয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, মঈন খানের বাবার নাম হলো মোমিন খান। সে ছিল খাদ্যসচিব। জাহাজ ফিরিয়ে দিয়ে খাবার আসতে দেয়নি বাংলাদেশে, দুর্ভিক্ষ ঘটানো হয়েছিল। আমি ৮১ সালে দেশে আসি। সারা বাংলাদেশ ঘুরি। তখন প্রতিবছর দুর্ভিক্ষ লেগে থাকত। বাংলাদেশের মানুষের জীবনে পরিবর্তন তারা করতে পারেনি। কারণ, তারা আমাদের বিজয় নস্যাৎ করতে চেয়েছিল। বাংলাদেশকে তারা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। এটাই তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল। যার কারণে জাতির পিতাকে হত্যা করল। এরপর ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়, আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে তাদের ওপর নির্যাতন করা হয়। আজ রাজনৈতিক দল করে অনেক বড় বড় কথা বলে তারা।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের জন্ম হলো কলকাতায়। ভারত-পাকিস্তান যখন বিভক্ত হয়, তখন তারা কিন্তু পূর্ব বাংলায় আসেনি, তারা করাচিতে গিয়েছিল। জিয়াউর রহমান সেখানে পড়াশোনা করে। সেখানেই আর্মিতে যোগ দেয়। সেখান থেকে সামরিক অফিসার হিসাবে পূর্ব বাংলায় এসেছিল দায়িত্ব পালন করতে। এটাই হলো বাস্তবতা। কিন্তু তার মনে তো পাকিস্তানটাই রয়ে গেছে। তার প্রমাণও আছে। স্বাধীনতার পর জিয়াউর রহমান মেজর থেকে মেজর জেনারেল হলো, এই প্রমোশনগুলা একে একে কে দিয়েছে? এটাও তো আওয়ামী লীগ সরকার দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দিয়েছে। এই অকৃতজ্ঞরা সেটাও ভুলে যায়।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বিএনপির নেতারা বড় বড় কথা বলে, ২৫ মার্চ আওয়ামী লীগের সবাই পালিয়ে গেছে। অথচ আওয়ামী লীগই সরকার গঠন করে যুদ্ধ পরিচালনা করে। শুধু যুদ্ধ পরিচালনা নয়, সশস্ত্র বাহিনীর গড়ে তোলা হয়। বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশকে ভাগ করা হয়। এক একটা সেক্টরের দায়িত্ব একেকজনকে দেওয়া হয়। জিয়াউর রহমান একটা বেতনভুক্ত কর্মচারী হিসেবে কাজ করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বেতনভুক্ত কর্মচারী ছিল জিয়াউর রহমান। এই কথা নিশ্চয়ই তাদের ভুলে গেলে চলবে না।
প্রধানমন্ত্রী এরপর বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন ঢাকায় গণহত্যা শুরু করে, তারা কিন্তু চট্টগ্রামেও হত্যাকাণ্ড শুরু করেছিল। যারা জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ব্যারিকেড দিচ্ছিল, তাদের ওপর গুলি চালিয়েছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। চট্টগ্রামের সেনাবাহিনীর দায়িত্বে ছিল জিয়াউর রহমান। সেই সময় যারা বেরিক্যাড দিয়েছে, জিয়াউর রহমানও তাদের ওপর গুলি চালিয়েছে। শুধু তাই নয়, স্যুয়াজ জাহাজ এসেছে পাকিস্তান থেকে অস্ত্র নিয়ে, সেই অস্ত্র খালাস করতে গিয়েছিল জিয়াউর রহমান। ২৫ মার্চ এ পাকিস্তান হানাদার বাহিনী যে আক্রমণ চালায় সেই আক্রমণকারীর একজন কিন্তু জিয়াউর রহমান।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে কিছু আঁতেল আছে। বুদ্ধিজীবী। বুদ্ধি বেচে জীবিকা নির্বাহ করেন। বাংলাদেশে একটা কাণ্ড আমরা দেখি, অতি বাম, অতি ডান। স্বাভাবিকভাবে গণতান্ত্রিক ধারাটা তারা পছন্দ করেন না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমরা স্বাধীনতার ৫৩ বছর পার করেছি। ৫৩ বছরের মধ্যে ২৯টা বছর ছিল এই জাতির দুর্ভাগ্যের বছর। দেশটা ছিল পরাধীন। এ দেশের মানুষ ছিল শোষিত-বঞ্চিত। সেই জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্ভুদ্ধ করে, মুক্তিযুদ্ধ করে, স্বাধীনতার বিজয় এনে দেওয়া একমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো বলিষ্ঠ নেতৃত্বদানকারীর জন্য সম্ভব। ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করার পর এ দেশে ইতিহাস বিকৃতির পালা দেখেছি।আজ যারা প্রশ্ন করেন আওয়ামী লীগ কোথায় ছিল, আমি জিজ্ঞেস করি আপনারা কোথায় ছিলেন? সেটাও একটু বলেন! জবাব দিন!
ঈদের আগে মামুনুল হককে মুক্তি না দিলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
মাওলানা মামুনুল হককে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর খলিল আহমাদ কাসেমী।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর গুলশানে ‘পবিত্র মাহে রমজানের তাৎপর্য ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনাসভা ও ইফতার মাহফিলে তিনি এ দাবি জানান।
খলিল আহমাদ কাসেমী বলেন, মামুনুল হককে ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এখনো তিনি কারাবন্দি। আমরা ঈদের আগেই তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, জামিন পাওয়া দেশের প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। মাওলানা মামুনুল হক দেশের একজন বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন। তাকে জামিন না দিয়ে বছরের পর বছর জেলে আটকে রাখা দেশে বিচারহীনতার প্রমাণ বহন করে। বিচারহীনতার এ ধারাবাহিকতা আর চলতে দেওয়া যায় না। মামুনুল হককে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। আমরা সরকার পতন আন্দোলন করি না। কিন্তু আমাদের বাধ্য করলে কোনো উপায় থাকবে না।
এ সময় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নামে করা সব মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি জানান সংগঠনটির সিনিয়র নায়েবে আমীর খলিল আহমাদ কাসেমী।
ইফতার মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন আবদুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, মাওলানা আবদুল আউয়াল, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা ড. আহমদ আব্দুল কাদের প্রমুখ।
এমপি-মন্ত্রীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা ওবায়দুল কাদেরের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের হঠাৎ করে এমপি-মন্ত্রীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়েছেন।
শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
তিনি বলেন, আগে ইউনিয়ন পর্যায়েও আমরা নৌকা দিয়েছি। কিন্তু এবার আমাদের নেত্রী এটা (দলীয় প্রার্থী দেয়া) উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। আমরা দেখতে চাই- এর মধ্যদিয়ে নির্বাচনটা কতটা প্রতিযোগিতামূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়। কতটা ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার কম্পিটিশন হয়। এ নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রী কারও হস্তক্ষেপ সহ্য করা হবে না। এটা কোনো অবস্থায় অ্যালাউ করা যাবে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যে উদ্দেশ্যে এই নির্বাচনকে উন্মুক্ত করা হয়েছে, সেই উদ্দেশ্যকে কোনোভাবেই ব্যাহত করা যাবে না। প্রতিযোগিতা যারা করতে চায়, করবে। নির্বাচন সম্পূর্ণভাবে ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার হবে। আমরা একটা আনবায়াসড্ ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন করতে চাই উপজেলায়।
নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ফ্রি স্টাইলে দল চলে না, যার যখন খুশি দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য রাখবেন- তার দায় দল বহন করবে না। এমন কিছু হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি।
ইফতার রাজনীতিতে ফের একসঙ্গে বিএনপি-জামায়াত
ইফতার পার্টির রাজনীতি দিয়ে জামায়াতের সঙ্গে আবারও প্রকাশ্যে আসছে বিএনপি। সর্বশেষ পাঁচ বছর আগে বিএনপি জামায়াত নেতারা মুখোমুখি বসেছিলেন। দ্বাদশ নির্বাচনের আগে বিএনপি যখন আন্দোলনের নামে মাঠে নেমেছিলো ঠিক তখনও সঙ্গে জামায়াত আছে কি নেই, তার স্পষ্ট কোনো উল্লেখ করেনি দলটি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যুগপৎ আন্দোলনের শরিকরা জামায়াত অন্তর্ভূক্তি না চাওয়ার কারণে এতদিন প্রকাশ্য সম্পর্ক নিয়ে খোলাসা করে কিছু বলেনি বিএনপি। আবারও নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে ইফতারি আয়োজনের মধ্য দিয়ে পুরনো শরিকের সঙ্গে সম্পর্ক ঝালাই করে নেওয়ার কৌশল হিসেবে দেখছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) তাদের একসঙ্গে আবারো ইফতারের টেবিলে বসাকে তাদের পুরনো সম্পর্কে নতুন পথচলা বলে মনে করেন অনেকে। অন্যদিকে রাজধানীতে বড় পরিসরে ইফতারের আয়োজন করেছে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ।
শনিবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে প্রায় নয় বছর পর এত বড় পরিসরে রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্টজনদের নিয়ে ইফতার করে দলটি।
রাজধানীর লেডিস ক্লাবে গত বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক নেতাদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপি। বিএনপির এই ইফতার মাহফিলে জামায়াতে ইসলামীর আমিরসহ দলটির চারজন নেতা অংশ নিয়েছেন। তবে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের দুই শরিক দল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের কেউ অংশ নেননি।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া মো. গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের প্রমুখ।
ইফতার মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা একটা কঠিন সময় অতিক্রম করছি। একটা দুঃসময় অতিক্রম করছি। এসময়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বক্তব্য শেষে ইফতারের আগে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক টেবিলে পাশাপাশি চেয়ারে বসেন এবং দুজনের মধ্যে তখন একান্ত আলাপচারিতা হতে দেখা যায়। এছাড়া অন্যান্য নেতারা সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
এদিকে, জামায়াতের আয়োজনকে অ্যালার্মিং উল্লেখ করে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবির বলেন, তাদের এই রাজনীতি বরাবরই যৌথ ছিলো। এখানে কোন বিচ্ছেদ কখনো ঘটেনি। নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য তারা দৃশ্যমান সম্পর্কে হয়তো আসেনি। সেটা জনগনের সঙ্গে প্রতারণার সামিল। আমি বারবারই বলেছি, বিএনপি ও জামায়াত সহোদর। তাদের জন্ম একই জায়গা থেকে হয়েছে। ফলে তাদের রাজনীতির ধরণ ও পথ একটাই।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৫ সালের ২৫ জুন হোটেল সোনারগাঁওয়ে রাজনীতিবিদ, পেশাজীবী, সাহিত্যিক, সাংবাদিকসহ বিশিষ্টজনদের নিয়ে ইফতার করেছিল জামায়াতে ইসলামী। তখন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ইফতারে অংশ নিয়েছিলেন।