সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু জাফর আর নেই
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ আর নেই। মঙ্গলবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিনি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। দলীয় ও পারিবারিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে কিডনির রোগে ভুগছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে তিনি এর আগে সিপিবির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। মৌলভীবাজার থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক মনুবার্তা পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। সিলেটের রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কৃতি ব্যক্তিদের মধ্যে সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ অন্যতম। ১৯৫৪ সালের ১১ জুলাই মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা সৈয়দ মনোয়ার আলী ও মা সৈয়দা আমিরুন্নেসা খাতুন।
তিনি ১৯৬৯ সালে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করার পর ঢাকা সিটি ল কলেজে ভর্তি হন। পরে তিনি উচ্চতর পড়াশোনার জন্য ১৯৭৯ সালে জার্মানি যান।
ছাত্রজীবন থেকেই প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। ছাত্র রাজনীতির পাশাপাশি সিলেটের বিভিন্ন পেশাজীবী-সামাজিক-সাংস্কৃতিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন। ১৯৭০ সালে তিনি কলেজ ছাত্র সংসদের সাহিত্য সম্পাদক, মৌলভীবাজার জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং পরবর্তীতে উভয় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
সিলেটে চা শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ১৯৭২ সালে তিনি প্রথম কারাবরণ করেন। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই আবার ১৯৭৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি গ্রেপ্তার হন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় ফের তিনি গ্রেপ্তার হন এবং বিনাবিচারে দীর্ঘ এক বছর জেলজীবন কাটান। এছাড়া এরশাদবিরোধী আন্দোলনেও তিনি ছিলেন সমান সক্রিয়। গণতন্ত্রের ওই উত্তাল আন্দোলন-সংগ্রামে তার সোচ্চার ভূমিকার জন্য তিনি বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তার-নির্যাতনের শিকার হন।
সৈয়দ আবু জাফর আহমেদের মরদেহ আজ (বুধবার) সকাল ১০টায় মুক্তিভবনে সিপিবি কার্যালয়ে নেওয়া হবে। দলীয় কার্যালয়ে নিহতের মরদেহ এক ঘণ্টা রাখা হবে। পরে সেখান থেকে জন্মস্থান মৌলভীবাজারে নিহতের মরদেহ নেওয়া হবে। সেখানেই তাকে দাফন করা হবে বলে পরিবার সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
পি
মন্তব্য করুন