মানহীন অনুষ্ঠান সম্প্রচারে কেউ পীড়াপীড়ি করবেন না: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিটিভির অনুষ্ঠান সম্প্রচারে মানের সঙ্গে কোনও আপোষ করা হবে না। পেশাদার ও যোগ্য ব্যক্তিরাই বিটিভিতে অনুষ্ঠান নির্মাণে অগ্রাধিকার পাবেন। শুধু সম্প্রচার সময় বাড়ালে হবে না, অনুষ্ঠানের মানও বাড়াতে হবে। মানসম্মত নয় এমন অনুষ্ঠান সম্প্রচারের জন্য কেউ পীড়াপীড়ি করবেন না।
বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) চট্টগ্রাম কেন্দ্রের অনুষ্ঠান সম্প্রচার ৬ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ৯ ঘণ্টা করার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শনিবার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রকে শুধুমাত্র চট্টগ্রাম ভিত্তিক টেলিভিশন কেন্দ্রে সীমাবদ্ধ রাখা হবে না। এটা দেশের দ্বিতীয় জাতীয় স্বাধীন টেলিভিশন কেন্দ্র হিসেবে ক্রমান্বয়ে উন্নীত করা হবে। সেই ধারাবাহিকতায় আগামী ডিসেম্বর নাগাদ এটির সম্প্রচার ১২ ঘণ্টায় উন্নীত করা হবে। বর্তমানে এটি শুধু ক্যাবল টেলিভিশন হিসেবে সারা দেশে দেখা যায়। পরবর্তীতে এটিকে টেরিস্টেরিয়াল চ্যানেল হিসেবেও উন্নীত করা হবে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের বাকি ৬টি বিভাগীয় শহরে বিটিভির কেন্দ্র স্থাপন করার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। একনেক ইতোমধ্যে এ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। সব মিলিয়ে বিটিভির নেটওয়ার্ককে আমরা এমন জায়গায় উন্নীত করতে চাই, আগে যেভাবে মানুষ ঘরে ঘরে বিটিভি দেখতো, আবার যেনও সেভাবে দেখে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার পর ১৯৯৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) চট্টগ্রাম কেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল। প্রথমে শুধু ১ ঘণ্টার অনুষ্ঠান সম্প্রচার হতো। এরপর এই কেন্দ্রের অনুষ্ঠান ৩ ঘণ্টায় উন্নীত করা হয়। সে সময় চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে সম্প্রচার করা অনুষ্ঠান ঢাকা কেন্দ্রে দেখা যেতো না। তারপর চট্টগ্রাম কেন্দ্রকে পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রে রূপান্তর করার জন্য ৪৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে সম্প্রচার ৬ ঘণ্টায় উন্নীত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে ক্যাবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ক্যাবল টেলিভিশন চ্যানেল হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করে। এখন সারা দেশে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের অনুষ্ঠান দেখা যায়। আমি নিজেও ঢাকায় বসে এই কেন্দ্রের অনুষ্ঠান দেখি।
হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণমাধ্যমবান্ধব। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর একুশে টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রথম প্রাইভেট টেলিভিশনের যাত্রা শুরু হয়। সেই অভিযাত্রায় বাংলাদেশে এখন ৪৪টি টেলিভিশনের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ৩২টি সম্প্রচারে আছে। আরও কয়েকটি সম্প্রচারে আসবে। কোলকাতায়ও এত টেলিভিশন চ্যানেল নাই। এক্ষেত্রে আমরা কোলকাতা-পশ্চিমবঙ্গ থেকে এগিয়ে। গত ১০ বছরে পত্রিকা প্রকাশের সংখ্যা ৪০ শতাংশ বেড়েছে। অনলাইন গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করেন তখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৪০ লাখ। বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৯ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। প্রায় ৫ কোটি মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করেন।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, বিটিভির মহাপরিচালক এসএম হারুন-অর-রশীদ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম প্রমুখ। এছাড়াও রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাসহ বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের কলাকুশলীরা উপস্থিত ছিলেন।
পি
মন্তব্য করুন