• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ডাকসু নির্বাচন: ভোটের মাঠে নবীনরাও

সিয়াম সারোয়ার জামিল, আরটিভি অনলাইন

  ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২১:১৩

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন উৎসবে পরিণত হয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় দশটি প্যানেল ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রসংগঠনগুলো। স্বতন্ত্র প্যানেলও আছে কয়েকটি। এতসব প্যানেলের হেভিওয়েট প্রার্থীর ভিড়ে ভোটের মাঠে নজর কেড়েছেন নবীন শিক্ষার্থীরাও। হল সংসদগুলোতে তারা নির্বাচনে লড়ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে প্রায় সাত হাজার নবীন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। বেশিরভাগ বিভাগেই ক্লাস শুরু হওয়া একমাসও হয়নি। অনেক বিভাগে ক্লাস এখনও শুরুই হয়নি ঠিকমতো। শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলগুলোতে উঠতেও পারেননি সবাই। তবে নির্বাচন উৎসবে শরিক হয়েছেন তারা। প্রার্থী হতে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন তারা।

মনোনয়ন জমা দেয়া শিক্ষার্থীরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের সংগঠন ছাত্র সংসদ। দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে নেতৃত্ব তৈরির সুযোগ বন্ধ ছিল। ফলে এক ধরনের বন্ধ্যাত্ব তৈরি হয়েছে। আগামীদিনে দেশের নেতৃত্বের জন্য তৈরি হতে চান তারা। ক্লাসের সঙ্গে সঙ্গে নিজের পক্ষে ভোটের প্রচারণাতেও অংশ নিয়েছেন তারা।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আনিকা আনজুম অর্ণি শামসুন্নাহার হলের সমাজসেবা সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি বলেন, নিজেকে একজন সমাজমনস্ক ও কর্তব্যনিষ্ঠ মানুষ মনে করি। তাই শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের সংগ্রাম গতিশীল করতে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। সমাজসেবা সম্পাদক পদে নির্বাচিত হলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আরও বেশি সামাজিক দায়বোধ জাগ্রত করতে চেষ্টা করবো।

অর্পিত দায়িত্বপালন করতে গিয়ে সমাজের অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে মনে করছেন এই নবীন শিক্ষার্থী।

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী লামইয়া তানজিন তানহা প্রার্থী হয়েছেন সুফিয়া কামাল হল সংসদের সদস্য পদে। তিনি জানালেন, তার বাবার সময়ে তিন দশক আগে সবশেষ ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল। এর মাঝে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনগুলো দখলদারিত্ব চালিয়ে গেছে। তা থেকে মুক্তি পেতে ও ক্যাম্পাসে সুস্থ রাজনীতি চর্চা ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য এবারের নির্বাচন তাকে সুযোগ করে দিয়েছে বলে মনে করছেন এই শিক্ষার্থী। তা শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করার এই সুযোগ নষ্ট করতে চাননি তিনি।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী তামীম দিরা খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাষ্ট্রযন্ত্রে তরুণ ও শিক্ষিত নেতৃত্বের যে অনুপস্থিতি তৈরি হয়েছে; পরস্পরের পরিপূরক ছাত্র-কর্তৃপক্ষ সম্পর্কের মাঝে যে ফাটল ও দূরত্ব দেখা দিয়েছে; সর্বোপরি, মেধা-মননের বিকাশে যে বাধার সৃষ্টি হয়েছে- এখনই তার অবসান ঘটানো জরুরি। এজন্য তিনি বামপন্থী ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের প্রার্থী হয়েছেন তিনি।

সার্বিক সংকট নিরসন করে পরিচ্ছন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন কবি জসিম উদ্দিন হলের সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা এই প্রার্থী।

ইংরেজি বিভাগের তাহমিদ রহমান প্রার্থী হয়েছেন সূর্য সেন হলের সাহিত্য সম্পাদক পদে। তিনি বলছেন, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হিসেবে গেস্ট রুম নির্যাতন কী-সেটা তিনি বুঝেছেন। গণরুমে তারা যে পরিবেশে থাকে তাই একজন ছাত্রের মনোবল ভেঙ্গে দিতে যথেষ্ট বলে মনে করেন তিনি। নির্বাচনে জয়ী হলে গেস্টরুম প্রথা তুলে দেবার জন্য কাজ করতে চাওয়ার কথা জানালেন তাহমিদ।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তন্বী তরুনীমা চৈতীর ক্লাস শুরু হয়েছে মাত্র কয়েকদিন। তিনি রোকেয়া হল সংসদে সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন। এরই মধ্যে ভোটের মাঠে নেমেছেন। নবীন এই শিক্ষার্থী জানান, আগামী দিনের নেতৃত্ব শিক্ষাঙ্গনের এই ভোটের লড়াইয়ের মধ্য দিয়েই সম্পন্ন হবে। তিনি মনে করেন, দেশ এগিয়ে নিতে এই নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ছাত্রস্বার্থের অধিকার আদায়ে প্রার্থী হয়েছেন তিনি।

এসজে/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • রাজনীতি এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh