• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

‘নিষিদ্ধ’ সংগঠনগুলো কি ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে?

সিয়াম সারোয়ার জামিল, আরটিভি অনলাইন

  ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৯:০৮

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে 'নিষিদ্ধ' দুই ছাত্র সংগঠন। পরিবেশ পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই দুটি সংগঠন ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে না। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দুইরকম বক্তব্য পাওয়া গেছে। তবে তাদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রলীগ-ছাত্র ইউনিয়নসহ ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গেল ২৩ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন। রাজনৈতিক দল ইসলামী আন্দোলনের এই ছাত্র সংগঠনটি ডাকসুতে অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করে ওই বিক্ষোভ মিছিলটি করে। তারা ডাকসু নির্বাচনে একক প্যানেল দেবে বলেও ঘোষণা দিয়েছে।

এদিকে, জাতীয় পার্টির ছাত্রসংগঠন জাতীয় ছাত্রসমাজও ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহের কথা জানিয়েছে। গেল ২৮ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর আবেদন জানিয়েছে তারা। পোস্টার লাগিয়ে নিজেদের জানান দিয়েছে। ক্যাম্পাসে নিজেদের সহাবস্থান দাবি করে বলেছে, ছাত্র সমাজ ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ-এর কোনও দালিলিক প্রমাণ নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলো বলছে, ১৯৯০ সালে পরিবেশ পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে- এমন সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। একইসঙ্গে এরশাদের স্বৈরাচারী ভূমিকার কারণে ছাত্র সমাজও নিষিদ্ধ হয়। এরপর থেকেই ছাত্রশিবিরসহ ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করে- এমন দলসমূহ ও ছাত্র সমাজের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

তবে সম্প্রতি ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্র সমাজের ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশের পর নতুন করে নড়েচড়ে বসেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো। দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন বলছেন, ক্যাম্পাসে কাউকে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করতে দেয়া হবে না। ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন(ইশা) ও ছাত্রসমাজ ক্যাম্পাসে নৈতিকভাবেই নিষিদ্ধ। তারা ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে তাদের প্রতিহত করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ফয়েজ উল্লাহও বললেন একই কথা। তিনি বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তচিন্তার জায়গা। এখানে কেউ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে রাজনীতি করবে বা ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে ফায়দা লুটবে-এমন সুযোগ আমরা দেব না। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী সব ছাত্র সংগঠন যৌথভাবে ছাত্রসমাজকে নিষিদ্ধ করেছিল। ফলে তারাও ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তাদের প্রতিহত করা হবে।

এ বিষয়ে সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ধর্মভিত্তিক সংগঠনের ডাকসু নির্বাচন করা তো দূরের কথা, ক্যাম্পাসে কোনও রাজনৈতিক কার্যক্রম চালানোর এখতিয়ারই নেই তাদের। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময় থেকে ছাত্রসমাজও নিষিদ্ধ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহম্মদ সামাদ আরটিভি অনলাইনকে বলেন, পরিবেশ পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাম্প্রদায়িক সংগঠন ও ছাত্র সমাজ ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ। তাদের নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই।

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী অনেকটা দাঁয় এড়িয়ে গেলেন যেন। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও ছাত্রসংগঠনকে বাতিল বা অন্তর্ভুক্ত করে না৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে যে কেউ ভোট দিতে ও প্রার্থী হতে পারবেন। শিক্ষার্থীর সাংগঠনিক পরিচয় কী- সেটা নিষিদ্ধ কিনা- এর দায় দায়িত্ব আমাদের না। এর দায়- ওই ছাত্রের।

এসজে/এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • রাজনীতি এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
জাবি ছাত্র ইউনিয়ন সংসদের ৩২তম সম্মেলন ২৭-২৮ ফেব্রুয়ারি
X
Fresh