• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ভোট বর্জন করলেন যারা

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৩:০১

সারাদেশে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর বেশ কয়েকজন প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। আরটিভি অনলাইনের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

ঢাকা-১: ঢাকা-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান এমপি অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম ভোট জালিয়াতির অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেছেন। রোববার দুপুর ১২টায় নবাবগঞ্জ উপজেলার কামারখোলায় নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি সংসদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
এসময় সালমা ইসলাম তার কর্মীদের ওপর হামলা, পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, জাল ভোট প্রদানসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরেন।

ঢাকা-১৭: ভোট বর্জন করেছেন ঢাকা-১৭ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী আন্দালিভ রহমান পার্থ। পোলিং এজেন্টদের মারধর, ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, কোনো কোনো কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেছেন তিনি। রোববার দুপুরে গণমাধ্যমকে ভোট বর্জনের কথা জানান তিনি। পার্থ বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভোট বর্জন করছি। ৬০-৭০ কেন্দ্র ঘুরেছেন দাবি করে বলেন, সব কেন্দ্রেই আমার এজেন্ট ও সমর্থক ও ভোটারদের বাধা দেয়া হচ্ছে। এটাই প্রমাণ করে দলীয় সরকারে অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। তবে তিনি সকালে ভোট দিয়েছেন বলে জানান। এই আসনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক)।

চট্টগ্রাম-১৫: চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া) সংসদীয় আসনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রণ্টের মনোনীত ধানের শীষের কারাবন্দি প্রার্থী আ.ন.ম শামসুল ইসলামের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট জাফর সাদেক। দুপুর একটার কিছুটা আগে তিনি ভোট বর্জন করে নেতাকর্মীদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিশাল আয়োজন করে আজ ভোট ডাকাতি করা হয়েছে। রাতেই মহাজোটের প্রার্থী ড. আবু রেজা নদভীর ক্যাডার বাহিনী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সত্তর শতাংশ ভোট নিয়ে নিয়েছে। সকাল থেকে সাধারণ ভোটারদেরকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকি সকালে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ধানের শীষের পক্ষে নির্বাচনী এজেন্টরা কেন্দ্রে গেলেও তাদেরকে মারধর করে বের করে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া সকালে কেন্দ্রেগুলোতে লোক দেখানো কিছু ভোটারকে লাইনে দাঁড় করিয়ে পরে বের করে দেয়া হয়। বেলা ১০টার মধ্যে এ আসনের সবগুলো কেন্দ্রে শতভাগ ভোট হয়ে গেছে বলে প্রিজাইডিং অফিসাররা জানান।
এ উপজেলায় সাধারণ কোনো ভোটার কেন্দ্রে গিয়ে তার নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেননি। ভোট হলে শেষ পর্যন্ত থাকতাম। কিন্তু ভোটতো হয়নি, মহা আয়োজন করে ভোট ডাকাতির মহোৎসব হয়েছে। এখন মাঠে থাকার আর প্রয়োজন মনে করছি না।

খুলনা ১, ৫, ৬: খুলনা-৫ (ফুলতলা-ডুমুরিয়া) আসনে ভোট বর্জন করেছেন ধানের শীষের প্রার্থী ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি কেন্দ্রীয় জামায়াতের নায়েবে আমির।

রোববার সকাল ১০টায় তিনি ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভোটগ্রহণ শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যে তার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়। এমনকি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পুলিশও ভোটারদের মুখ চিনে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন।এ অবস্থায় নির্বাচন করা অসম্ভব।

প্রসঙ্গত, খুলনা-৫ আসনে গোলাম পরওয়ার ছাড়াও আওয়ামী লীগের নারায়ণ চন্দ্র চন্দ (নৌকা), ইসলামী আন্দোলনের শেখ মুজিবুর রহমান (হাতপাখা), সিপিবির চিত্তরঞ্জন গোলদার (কাস্তে) ও জাতীয় পার্টির শহীদ আলম (লাঙল) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ আসনের ১৩৩টি ভোট কেন্দ্রের ৬৯৯টি ভোট কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

খুলনা-১ আসনে ভোট বর্জন করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী সুনীল শুভ রায়। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় বলেন, এরকম কলঙ্কিত ভোট আমি কোনও দিন দেখিনি। সকাল থেকেই আমার এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। কাউকে গাছের সঙ্গে বেঁধেও রাখা হয়েছে। যারা ভোট দিতে যাচ্ছেন তাদের ব্যালট পেপার টেবিলের ওপর রেখে নৌকায় সিল দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এখানে কোনও সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে না। আমি সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছি।

এদিকে খুলনা-৬ (কয়রা-পাইতগাছা) আসনের ধানের শীষ প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

আবুল কালাম আজাদের নির্বাচনী এজেন্ট অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী বলেন, ‘আমাদের লোকদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। নেতাকর্মীদের মারধর করা হয়েছে। রিটার্নিং অফিসার ও পুলিশকে জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। তাই ভোট বর্জন করলাম।

বাগেরহাট ৩ ও ৪: বাগেরহাট ৩ ও ৪ আসনের ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত দুই প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। বেলা ১২টার দিকে এ ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তারা। প্রার্থীরা হলেন— বাগেরহাট-৩ আসনের অ্যাডভোকেট আব্দুর ওয়াদুদ ও বাগেরহাট-৪ আসনের অধ্যক্ষ আব্দুল আলিম তাহের।
সংবাদ সম্মেলনে দুই প্রার্থী দাবি করেন, নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশের অভাব ও জালিয়াতির কারণে তারা ভোট বর্জন করেছেন।

কুমিল্লা-১১: কুমিল্লা-১১ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ভোট বর্জন করেছেন। তার নির্বাচন পরিচালক আব্দুস সাত্তার এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা রাতের বেলা ভোট দিয়ে দেওয়ায় সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ভোট বর্জন করেছেন|

ফরিদপুর-২: ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা–শালথা) আসনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির প্রার্থী শামা ওবায়েদ ইসলাম। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি। এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।
শামা ওবায়েদ ইসলাম অভিযোগ করেন, এই আসনের ১২৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১০০টি কেন্দ্রে গতকাল রাতেই ভোট দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ সকালে যেসব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে সেসব কেন্দ্রে বিএনপির কোনো পোলিং এজেন্টকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এর প্রতিবাদে নিজেও ভোট দেননি শামা ওবায়েদ ইসলাম।

কক্সবাজার-২ (মহেশখালী): কক্সবাজার-২ (মহেশখালী)কেন্দ্র দখল, এজেন্ট ঢুকতে না দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কক্সবাজার-২ (মহেশখালী) আসনের ২০ দলীয় জোটের ধানের শীষের প্রার্থী হামিদুর রহমান আজাদের পক্ষে তার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট জাবের হোসেন ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। জামায়াতের এ প্রার্থী বর্তমানে কারাগারে আছেন।

পাবনা-৫: পাবনা-৫ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াত নেতা ইকবাল হোসেন ভোট বর্জন করেছেন। প্রার্থী নিজেই সাংবাদিকদের ফোন করে এই তথ্য জানান।
ভোট জালিয়াতি, তার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে তিনি ভোট বর্জন করেছেন বলে জানান।

বাগেরহাট-৩: বাগেরহাট-৩ ( মংলা ও রামপাল) আসনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী এবং জামায়াত জেলা নায়েবে আমির মাওলানা শেখ আব্দুল ওয়াদুদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

রবিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় বাংলা ট্রিবিউন প্রতিনিধিকে ফোন করে তিনি এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, ‘আমি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা করলাম। দুপুর দেড়টায় আমি সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাবো।’ এসময় তিনি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন।

সাতক্ষীরা-৪: সাতক্ষীরা-৪ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াতে ইসলামের গাজী নজরুল ইসলাম ভোট বর্জন করেছেন। তিনি কারাবন্দি থাকায় তার পক্ষে এ ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী অধ্যাপক আবদুল জলিল। তিনি বলেন, রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভোটে অনিয়ম, ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো, জালভোট, ভোটারদের হুমকি-ধমকি, ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধাদানসহ নানা কারণে ভোট বর্জন করেছেন। এ বিষয়ে জানতে শ্যামনগর উপজেলা সহকারী রিটার্নিং অফিসার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান জানান, গাজী নজরুলের পক্ষে এমন কোনো ঘোষণা সম্পর্কে তিনি অবহিত নন। এ খবর মুখে শুনেছি, তবে কেউ এখন পর্যন্ত লিখিতভাবে জানাননি।

সিরাজগঞ্জ-১, ২: সিরাজগঞ্জ ১ ও ২ আসনের বিএপি প্রার্থী রোমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা ও ২ আসনের জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপি প্রার্থী রোমানা মাহমুদ ভোট প্রত্যাখান করেছেন। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা বর্জনের এ ঘোষণা দেন।

তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ বিএনপি মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়ক হারুন অর রশিদ খান হাসান।

সদর আসনের বিএনপি প্রার্থী রোমানার বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ, নেতা-কর্মীদের মারপিট ও এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগে এ দুই প্রার্থী ভোট প্রত্যাখান করেছেন।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • রাজনীতি এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বিএনপি এখন পথহারা পথিক : ওবায়দুল কাদের
কারাগার এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা : রিজভী
বিএনপি-জামায়াতের ৩০ নেতাকর্মী কারাগারে
সন্ত্রাসীদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে : কাদের
X
Fresh