• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

একাই মাঠ দখলে রেখেছেন বদির স্ত্রী, নেই বিএনপি

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৪:০৪

কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে এককভাবে প্রচারণায় তুঙ্গে আছেন আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী শাহীনা আক্তার চৌধুরী। গ্রামেগঞ্জে নৌকার প্রচারণার পাশাপাশি পোস্টারে ছেয়ে গেছে অলিগলি। প্রতিটি গ্রামে নৌকার অফিস চোখে পড়ার মতো।

আওয়ামী লীগের এ প্রার্থী বা তার পক্ষে ভোট চেয়ে মাইকিং, পথসভা ও উঠান সভা করা হচ্ছে নিয়মিত। নেচে গেয়ে উল্লাসে মেতে উঠছেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশে বহুল আলোচিত ও সমালোচিত বর্তমান সাংসদ আবদুর রহমান বদিকে মাইনাস করে তার স্ত্রী শাহীনা আক্তার চৌধুরীকে মনোনয়ন দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

এ আসনে নির্বাচনের প্রার্থী নিয়ে কিছুটা অসন্তোষ থাকলেও আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইমেজ ধরে রাখার জন্য প্রস্তুত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহীনা আক্তার চৌধুরী এক প্রতিনিধি সভায় বলেন, দলের সিদ্ধান্তে যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে তিনি প্রস্তুত।

জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী হয়ে বলেন, কক্সবাজারের এই উখিয়া-টেকনাফ আসনটি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিবো।

টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলম বাহাদুরসহ কয়েকজন নেতা জানান, বর্তমান সাংসদ আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে মাদকের বদনাম ও দলীয় নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করার অভিযোগ থাকায় তাকে মনোনয়ন না দিয়ে তারই সহধর্মীনিকে প্রার্থী ঘোষণায় আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা আরও বেড়েছে। জয়ের ব্যাপারে আমরা শতভাগ আশাবাদী।

এসময় সব ভেদাভেদ ভুলে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় এনে উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তারা।

তবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আসনটি পুনরুদ্ধারে দৃঢ় আশাবাদী বিএনপি। উখিয়া-টেকনাফে এবারের বিএনপির প্রার্থী চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী। তিনি কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতিও।
বিএনপি প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর থেকে টেকনাফের বেশ কয়েকটি এলাকা চষে বেড়ালেও প্রচারণার পর থেকে টেকনাফ উপজেলার তেমন দেখা মিলছে না।
শাহজাহান চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, গায়েবি মামলায় ধরপাকড়, হুমকি ও হয়রানি করা হচ্ছে আমাদের নেতাকর্মীদের। ইতোমধ্যে তিন সাবেক মেম্বারসহ টেকনাফ উপজেলার বেশ কয়েকজন বিএনপির শীর্ষ নেতাদের আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর ফলে ভয়ে নেতা কর্মীরা কেউ প্রচারণায় নামছেন না। এলাকা ছাড়া হয়েছে অনেকেই।

বিএনপির কয়েকজন নেতা বলেন, নির্বাচনে ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে ও পুলিশি ধরপাকড় না হলে নিঃসন্দেহে আসনটি তাদের। কেননা উখিয়া-টেকনাফের ৮০% ভোটার তাদের। পাশাপাশি দশ বছরে এলাকায় কোনও উন্নয়ন হয়নি বলে জানান তারা।

ধানের শীষের প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী বলেন, প্রচারণাকালে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাধা, পোস্টার বিলিকালে কর্মীদের মারধর, বিভিন্ন গায়েবী মামলায় নেতাকর্মীদের আটক ও গ্রামেগঞ্জে নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। নির্বাচনী মাঠে লেভেল প্লেয়িং নেই।

তিনি নিজেকে ক্লিন ইমেজের প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে আরও জানান, এমপি থাকাকালীন উখিয়া-টেকনাফে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তাই জনগণ তাকেই ভোট দিয়ে আবারও সংসদে দেখতে চাই।

এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থীও রয়েছে এই সংসদীয় আসনে।

এর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা মুহাম্মদ শোয়াইব হাতপাখা ও জাতীয় পার্টির মাস্টার এম, মঞ্জুর লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।

উখিয়া উপজেলায় ৫টি ইউনিয়ন এবং টেকনাফ উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়ন নিয়েই কক্সবাজার-৪ আসনটি গঠিত। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪০৬ জন। ভোটকেন্দ্র সংখ্যা ১০০টি। উখিয়া উপজেলায় ৪৫টি ভোট কেন্দ্রের বিপরীতে ৬০ হাজার ৪৮৮ জন পুরুষ ও ৫৮ হাজার ২৯৭ জন নারী মিলিয়ে ভোটার রয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৮৫ জন।

টেকনাফ উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়নে ৫৫টি ভোটকেন্দ্রের বিপরীতে ৭২ হাজার ৫২২ জন পুরুষ ও ৭৩ হাজার ৯৯ নারীসহ ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৪৫ হাজার ৬২১ জন।

সাধারণ ভোটাররা মনে করেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই হবে। তবে এবারের ভোটাররা ইয়াবা দূরীকরণ ও রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় যার ভূমিকা বেশী থাকবে তাকে ভোট দেয়ার কথা ভাবছেন।

আরও পড়ুন :

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • রাজনীতি এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh