• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

আরও উন্নত করা হয়েছে ইভিএম, ভোট দেয়া যাবে সহজেই

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৮:১৬
ছবি নির্বাচন কমিশন থেকে সংগৃহীত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন(ইভিএম)ব্যবহার করা হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং নানা মহলের তর্ক বিতর্কের পরেও নির্বাচন কমিশন গত ২৬ নভেম্বর ছয়টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করার বিষয়টি চূড়ান্ত করেছে। তবে নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে ইভিএম ব্যবহারের জন্য যোগ্য বলে শহরাঞ্চলের ৪৮টি আসন বাছাই করেছিল। এর মধ্যে থেকে দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে ছয়টি আসন বেছে নেয়া হয়েছে। মনে করা হচ্ছে ইভিএম ব্যবহারের মধ্য দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তির দিকে অগ্রসর হচ্ছে দেশ। সব মানুষের কথা বিবেচনা করে উন্নত করা হয়েছে ইভিএম। সংসদ নির্বাচনের জন্য তৈরি ইভিএম সিটি নির্বাচন ব্যবহৃত ইভিএম থেকে উন্নত। এতে সহজেই ভোট দেয়া যাবে।

প্রশ্ন রয়েছে, এই ছয়টি আসনে কতোগুলো ইভিএম লাগবে। এগুলোর দাম কতো। ভোটকেন্দ্রগুলোতে কিভাবে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে যে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছিল জাতীয় নির্বাচনে সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে কি? এইসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের স্কোয়াড্রন লিডার এবং অপারেশন প্লেনিং ও যোগাযোগ ইনচার্জ এস এম মোহাম্মদ আরাফাত।

এস এম মোহাম্মদ আরাফাত জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য পুরো ইভিএম প্রজেক্ট বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালনা করছে। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ইভিএম সরবরাহ করবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান তৈরির কারখানা বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ)।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে ইভিএম ব্যবহার করা হবে, সেই ইভিএমগুলো সিটি করপোরেশনে ব্যবহৃত ইভিএমের থেকে অনেক বেশি উন্নত প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। তবে অবশ্যই সকল শ্রেণি পেশার মানুষ যেন ভোট দিতে পারে সে কথা বিবেচনা করে মেশিন ডেভেলপ করা হয়েছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমিশন লটারির মাধ্যমে যে ছয়টি আসন ইভিএম ব্যবহারের জন্য বেছে নিয়েছে, তাতে সম্ভাব্য ২১ লাখ ২৪ হাজার ৪১১ জন ভোটার প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দেয়ার সুযোগ পাবেন। প্রাথমিকভাবে নির্বাচন কমিশন ধারণা করছে একটি আসনে গড়ে ১৫০টি কেন্দ্র হতে পারে। সেই হিসাবে ছয়টি আসনে আনুমানিক ৯০০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হতে পারে।

ইভিএম মেশিনে অর্পযাপ্ত ভোট দেয়া যায়। তবে ইভিএম মেশিনের ভেতরে যে চিফ দেয়া আছে, সেটা ৬০ জিবি যার ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী কমপক্ষে ৪০০ থেকে ৫০০ ভোটারের তথ্য দেয়া যাবে। তাই ইভিএম মেশিনের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী যে পরিমাণ ভোটারের তথ্য দেয়া থাকবে। সে পরিমাণ ভোট দেয়া যাবে।

যেহেতু এখন পর্যন্ত ৩শ’ আসনে কতগুলো ভোটকেন্দ্র হবে সেটি এখনও ঠিক হয়নি। তাই আমরা ছয়টি আসনে কতগুলো ইভিএম লাগবে সে হিসাব করতে পারেনি। তবে আসন্ন নির্বাচনে যে পরিমাণই ইভিএম লাগবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের সে ইভিএম দিতে প্রস্তুত। তাছাড়া প্রতিদিনিই বিএমটিএফ থেকে ইভিএম আসছে যেগুলো নির্বাচন কমিশনে রাখা হচ্ছে।

নির্বাচন কমিশন থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ইভিএম কেন্দ্রগুলোতে সেনাবাহিনী মোতায়ন করা হবে। আপাতত সিদ্ধান্ত হয়েছে একটি কেন্দ্রে তিনজন করে সেনাবাহিনী মোতায়ন করা হবে। এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে আইটি এক্সপার্ট লোক থাকবে।

ছয়টি আসনে ইভিএম এর পাশাপাশি ব্যালট খাকবে। এছাড়া ইভিএম মেশিনের ব্যাটারি ৪৮ ঘণ্টা ব্যাকআপ দেবে।

জাতীয় নির্বাচনে ব্যবহৃত ইভিএমের দাম কেমন হবে এটা এখনও নির্ধারণ হয়নি। তবে ইভিএম পুরো প্রকল্প চার হাজার কোটি টাকার। যেহেতু বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে। এখানে দামটা খুব বেশি ঝামেলার বিষয় না। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং নির্বাচন কমিশনের মধ্যে একটা সমঝোতার মাধ্যমে ইভিএমের দামগুলো দেয়া হবে।

তবে বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া তথ্য মতে ভারতের চেয়ে ১১ গুণ বেশি দামে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কিনছে বাংলাদেশ। নির্বাচন কমিশন (ইসি) একটি ইভিএম কিনতে খরচ করবে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৩৭৩ টাকা।

স্কোয়াড্রন লিডার আরাফাত এই বিষয়ে বলেন এই কথার কোনও ভিত্তি নেই। কারণ জাতীয় নির্বাচনের জন্য ব্যবহৃত ইভিএমগুলো কোনও দামই দেয়া হয়নি। তবে সিটি করপোরেশনের ব্যবহৃত ইভিএমের থেকে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএমের দাম কিছুটা বেশি হবে। এটি আরও উন্নত।

জাতীয় নির্বাচনে ব্যবহৃত ইভিএমের পার্থক্য হলো, ভোটার ভোট দেয়ার পর সেটা একটা ভয়েস থেকে নিশ্চিত করা হবে, ‘যে আপনার ভোট দেয়া সম্পন্ন হয়েছে’। এছাড়া ব্যালটের থেকে কি বোর্ডের কালারের দিক থেকে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। স্মার্ট কার্ড না থাকলেও ভোটার কার্ডের নাম্বার দিয়ে ভোট দেয়া যাবে। এছাড়া হাতের আঙ্গুলের ছাপ তো রয়েছেই।

ইভিএম মেশিনের ইউনিটগুলো হলো- ব্যালট ইউনিট : এর মাধ্যমে ভোটার তার ভোট দেন। কন্ট্রোল ইউনিট : এটি থাকে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারের সামনে। ডিসপ্লে ইউনিট: ইভিএমের সঙ্গে একটি বড় ডিসপ্লে ইউনিট আছে। এটি বুথের ভেতর ভোট-সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টিগোচরে রাখা থাকে।

আরও পড়ুন :

আরসি/জেএইচ

মন্তব্য করুন

daraz
  • রাজনীতি এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ইভিএমে আঙুলের ছাপ মিলছে না, ভোট দিতে পারছেন না বয়স্করা
ইভিএমে ভোগান্তির অভিযোগ মেয়র প্রার্থীর
কুমিল্লা সিটিতে ভোটার উপস্থিতি কম
X
Fresh