যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের পরিক্ষিত বন্ধু: জি এম কাদের
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) বেলা পৌনে ১১টায় জাপা চেয়ারম্যান ব্রিটিশ হাইকমিশনারের বারিধারার বাসভবনে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান সারাহ কুক।
বৈঠকে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন সারাহ কুকু ও জি এম কাদের। বৈঠকে অংশ নেওয়ায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানান ব্রিটিশ হাই কমিশনার।
এ সময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আশা প্রকাশ করে বলেন, আগের মতো যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের পাশে থাকবে। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের পরিক্ষিত বন্ধু।
বৈঠকে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের সঙ্গে পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসরুর মওলা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
ব্যর্থতা স্বীকার করলেন মাশরাফী, জানালেন কোথায় আছেন
দেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় নাম জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তার নীরব ভূমিকা এই জনপ্রিয়তায় ধস নামিয়েছে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে থাকতে না পারায় বুধবার (১৪ আগস্ট) আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক।
একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘যদি সরাসরি বলি, তাহলে অবশ্যই আমি পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছি অনেক মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে। কোটা সংস্কারের আন্দোলন অবশ্যই যৌক্তিক ছিল। আমার নিজের কাছেও মনে হচ্ছিল, এটা হয়ে যাবে। তবে সবাই যখন চাচ্ছিল যে, আমি কিছু একটা বলি বা স্ট্যাটাস দিই, ততক্ষণে আসলে সবকিছু এত দ্রুত হচ্ছিল, ভাবছিলাম যে আমি যদি কিছু লিখি বা মন্তব্য করি, সেটার সম্ভাব্য পরিণতি কী হতে পারে। অনেক কিছু ভাবছিলাম আর কী, সবমিলিয়ে কিছু লেখা হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কিছু করার চেষ্টা করিনি, তা নয়। আমি শুধু কিছু লেখার ভাবনায় থাকতে চাইনি। চেয়েছিলাম ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলতে, আলোচনার মাধ্যমে কিছু করা যায় কি না। সেই শুরুর দিকেই চেষ্টা করেছি। কারণ, তাদের দাবি আমার কাছে যৌক্তিক মনে হয়েছে। কিন্তু সেটাও করতে পারিনি। সবমিলিয়ে অবশ্যই ব্যর্থ হয়েছি।’
নিজের শারীরিক অবস্থা ও অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে উত্তরে মাশরাফী বলেন, ‘শারীরিকভাবে ঠিক আছি। মানসিকভাবে অবশ্যই ভালো অবস্থায় নেই। ঢাকাতেই আছি, পরিবারের সঙ্গে।’
তিনি বলেন, ‘আমার সম্পদ যা কিছু আছে, সব খেলোয়াড়ি জীবনেই গড়া। যেকোনোভাবেই খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। পূর্বাচলে একটি জমি আছে, ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর সরকার থেকে সবাই পেয়েছিলাম ৫ কাঠা করে। মিরপুরে একটা বাড়ি আছে, ২০০৮ সালে আইপিএল খেলে আসার পর করা। মিরপুরে আরেকটি বাড়ি করছি, যেখানে পরিবার নিয়ে উঠব, এটাও ২০১৫ সালে কাজ শুরু করেছি। এখনও উঠতে পারিনি, কাজ চলছে। ২০১৮ সালের পরের আয় দিয়ে তেমন কোনো সম্পদ গড়তে পারিনি। ২০১৮ সালের নির্বাচনের হলফনামা ও ২০২৪ সালের হলফনামা দেখলেই বুঝতে পারবেন। আমি দাবি করলে তো লাভ নেই। যে কেউ খতিয়ে দেখলেই জানতে পারবেন।’
মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা বলেন, রাজনীতিতে আসার আগ পর্যন্ত আমার এন্ডোর্সমেন্ট ছিল অনেক। ২০টির ওপরে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলাম। খেলাধুলা করে ও স্পন্সরশিপের আয় থেকেই এসব করেছি। নড়াইলের বাড়িটা করেছিলাম মায়ের জন্য, এখন শেষ। অনেকেই বলেছেন মামলা করতে, ব্যবস্থা নিতে। ছবি-ভিডিও সবই আছে অনেকের কাছে। তবে আমি বলেছি, এসব করব না। আমার বাবাকেও বলে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ‘এখনকার সরকার বা ভবিষ্যতে নির্বাচন করেও যে সরকার আসুক, কারও কাছেই বিচার চাইব না। কোনো অভিযোগ নেই। খুলনা-যশোর থেকে বা ঢাকা থেকে গিয়ে কেউ এই বাড়ি ভাঙেনি। নড়াইলের কোনো না কোনো জায়গা থেকে উঠে আসা মানুষই পুড়িয়েছে। নড়াইলের মানুষের বিরুদ্ধে বিচার আমি চাইব না। নিজের ভাগ্য মেনে নিয়েছি। হয়তো কোনো ভুল করেছি, সেটার ফল পেয়েছি। কষ্ট আছে অবশ্যই, তবে রাগ-ক্ষোভ নেই কারও প্রতি। আমার প্রতি এখনও কারও ক্ষোভ থাকলে, আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’
মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা বলেন, ‘আমি জানতাম, ক্রিকেটার হিসেবে হয়তো সবার আছে আমার গ্রহণযোগ্যতা আছে। রাজনীতিতে নামলে সেটা থাকবে না। কিন্তু ওই চ্যালেঞ্জ আমি নিতে চেয়েছি। মানুষের জন্য বড় পরিসরে কিছু করতে চেয়েছি। এই জায়গায় নিজের কাছে পরিষ্কার ছিলাম। এখন যে সরকার এসেছে, আমরা যদি আমার জায়গা থেকে, আপনার জায়গা থেকে সমালোচনা করে নিচে নামাই, তাহলে তো এভাবেই যুগ যুগ ধরে চলতে থাকবে। তো, আমি যে জায়গায় ছিলাম, হয়তো রাজনীতিতে না এলেও পারতাম। ভালো ছিলাম। কিন্তু চ্যালেঞ্জটা নিয়েছি।’
উপদেষ্টা আসিফের পিএস আবুল হাসান, এপিএস মোয়াজ্জেম
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার একান্ত সচিব (পিএস) হিসেবে সেতু বিভাগের উপসচিব মো. আবুল হাসান ও সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) হিসেবে মাগুরার মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৪ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পৃথক প্রজ্ঞাপনে এই নিয়োগ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে দুটি প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি অনুবিভাগ অভ্যন্তরীণ নিয়োগ শাখার উপসচিব কানিজ ফাতেমা।
আবুল হাসানের নিয়োগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া যতদিন এ পদ অলংকৃত করবেন অথবা মো. আবুল হাসানকে তার একান্ত সচিব পদে বহাল রাখার অভিপ্রায় পোষণ করবেন ততদিন এ নিয়োগ আদেশ কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
মোয়াজ্জেম হোসেনের নিয়োগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার অভিপ্রায় অনুযায়ী মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ অনুযায়ী তার সহকারী একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হলো।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া যতদিন এ পদ অলংকৃত করবেন অথবা মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে সহকারী একান্ত সচিব পদে বহাল রাখার অভিপ্রায় পোষণ করবেন ততদিন এ নিয়োগ আদেশ কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
আদিলুর, নুরজাহান ও নাহিদের পিএস নিয়োগ
শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের একান্ত সচিব হিসেবে উপসচিব পদমর্যাদার তিন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) পরিচালক (উপসচিব) ড. সৈয়দ মোহাম্মদ আমিনুর রহমান।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মুফিদুল আলম।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উপসচিব র হ ম আলাওল কবির।
বুধবার (১৪ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পৃথক তিনটি প্রজ্ঞাপনে এই নিয়োগ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তিনটি প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি অনুবিভাগ অভ্যন্তরীণ নিয়োগ শাখার উপসচিব কানিজ ফাতেমা।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, উপদেষ্টারা যতদিন তাদের পদ অলংকৃত করবেন অথবা একান্ত সচিবদের বহাল রাখার অভিপ্রায় পোষণ করবেন ততদিন এ নিয়োগ আদেশ কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদের একান্ত সচিব (পিএস) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের উপসচিব মো. মাহমুদ হাসান। সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকার ওয়ারীর বাসিন্দা নাজমুস সাদাত পারভেজ।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের অভিপ্রায় অনুযায়ী চট্টগ্রামের বাঁশখালীর মো. আবিদ চৌধুরীকে তার এপিএস হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ৫ আগস্ট দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠন করা হয় অন্তর্বর্তী সরকার। সেদিন রাতে বঙ্গভবনে ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তী সরকারের ১৪ জন শপথ নেন। পরে শপথ নেন আরও তিন উপদেষ্টা।
‘দেশবাসী আ.লীগকে নিষিদ্ধ করতে চাইলে একাত্মতা পোষণ করবে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম জানিয়েছেন, গণহত্যার দায়ে দেশের মানুষ যদি আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে চায়, তবে সে দাবিতে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা একাত্মতা প্রকাশ করবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সপ্তাহব্যাপী ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর শাহবাগে কেন্দ্রীয় জমায়েত কর্মসূচি পালনকালে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
সারজিস আলম বলেন, ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ স্বৈরাচারের যারা দোসর ছিল সেসব দুষ্কৃতকারীরা নতুন একটি গণঅভ্যুত্থান করে বিশৃঙ্খলা তৈরির পাঁয়তারা করছে। এটি কখনো হতে দেওয়া হবে না। ছাত্র সমাজ মাঠে আছে, থাকবে।
এ সময় পাল্টা গণঅভ্যুত্থান করলে তাদের আর কোনো অস্তিত্ব থাকবে না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
চার দফা দাবিতে সপ্তাহব্যাপী ঘোষিত ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে চার দফা দাবি জানিয়েছি। এসব দাবি বাস্তবায়নে কালবিলম্ব করলে গদি থেকে নামানোর মতো কৌশল শিক্ষার্থীদের জানা আছে বলেও হুঁশিয়ারি দেন সার্জিস আলম।
প্রথম দাবি: ফ্যাসিবাদী কাঠামো ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দল ও সরকার যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, সেগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।
দ্বিতীয় দাবি: সংখ্যালঘুদের ওপর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী মহাজোটের শরিক দলগুলোর পরিকল্পিত হত্যা, ডাকাতি ও লুণ্ঠনের মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করার চেষ্টায় অংশগ্রহণকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং সংখ্যালঘুদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে।
তিন নম্বর দাবি: প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হামলা, মামলা ও হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দিয়েছেন এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বারবার কায়েমের চেষ্টা করছেন, তাদের দ্রুততম সময়ে অপসারণ ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
চার নম্বর দাবি: প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা এতদিন বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, তাদের সবার জন্য ন্যায্যতার ভিত্তিতে সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।’
এর আগে, মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) চার দফা দাবিতে ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ কর্মসূচির ডাক দিয়ে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর অংশ হিসেবে ওইদিন ঢাকাসহ সারাদেশে রোডমার্চ কর্মসূচি ছাড়াও আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। সবশেষ আজ পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ১০টায় শাহবাগে কেন্দ্রীয় জমায়েতে অংশ নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বিএনপি নেতা দুলুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ
গণমাধ্যম নিয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দেওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে দলটি।
শনিবার (১৭ আগস্ট) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত নোটিশে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত শুক্রবার ‘শেখ হাসিনার ছবি প্রচার করলে টিভি-পত্রিকা জ্বালিয়ে দেওয়া হবে’ মর্মে আপনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তা প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ইত্তেফাক, বাংলাদেশ প্রতিদিন, বিডি নিউজ, ঢাকা পোস্ট, জাগো নিউজ, বাংলা ট্রিবিউনসহ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। আপনার এই বক্তব্য বিএনপির নীতি ও আদর্শের চরম পরিপন্থি।
‘বিএনপি দেশের একটি উদার ও বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। দলটি কখনই দখল ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রশ্রয় দেয় না। গত ১৫-১৬ বছর ধরে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে গিয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বৈরাচারী সরকারের ভয়াবহ নিপীড়ন ভোগ করেছে। সম্প্রতি কোমলমতি শিক্ষার্থী ও জনতা নিজেদের জীবন দিয়ে রক্তঝরা আন্দোলনে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন ঘটিয়ে বর্তমানে দেশে গণতন্ত্রের যে জাগরণ সৃষ্টি করেছে, আপনার বক্তব্য সেটিকেও কালিমালিপ্ত করেছে।’
নোটিশে আরও বলা হয়, আপনার (দুলু) বক্তব্যটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অনভিপ্রেত এবং বিএনপির গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতি কুঠারাঘাত। বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে আপনার এই বক্তব্য গত দেড় দশক ধরে রক্তস্নাত পথে বিএনপির নিরবচ্ছিন্ন গণতান্ত্রিক সংগ্রামের মহিমামণ্ডিত অবদানকে হেয়প্রতিপন্ন করার শামিল।
এ অবস্থায় আপনার উল্লিখিত বক্তব্যের কারণে কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার কারণ দর্শিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দলের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে একটি লিখিত জবাব জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
জানা গেল শেখ পরিবারের কে কোথায়
জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দেশ। শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে এই প্রথা বাতিলের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে আসে। কিন্তু তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তাদের দাবি না মেনে বল প্রয়োগ করতে থাকে। এক পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করে। এতে শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এরপর তৎকালীন সরকার তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলেও শিক্ষার্থীরা নয় দফা দাবি জানায়। এরপর সরকারের বল প্রয়োগ অব্যাহত থাকলে শিক্ষার্থীদের দাবি আস্তে আস্তে সরকার পতনের এক দফায় রূপান্তরিত হয়। অবশেষে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার রোষানলে পদত্যাগ করে দেশ থেকে ভারতে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। এর পর দলের মন্ত্রী-এমপি ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা কেউ দেশ ছেড়েছেন কেউ আছেন আত্মগোপনে।
এমন অবস্থায় আওয়ামী লীগের দলীয় মন্ত্রী-এমপি এবং শেখ পরিবারের সদস্যরা কে কোথায় আছেন এই জিজ্ঞাসা অনেকের।
জানা গেছে, রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শেখ পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যই এখন আর দেশে নেই। ৫ আগস্টের আগে-পরে তারা দেশ ছেড়ে গেছেন। গত ৫ আগস্ট সামরিক বিমানে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা। ওই দিন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ছাড়া পরিবারের আর কোনো সদস্য দেশে ছিলেন না। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দিল্লিতে কর্মরত। সরকারের পতনের সময় তিনি দিল্লিতেই ছিলেন। দিল্লিতে যাওয়ার পর তার মা এবং খালার সঙ্গে সায়মার সাক্ষাৎ হয়। শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক বৃটিশ মন্ত্রী, তিনি লন্ডনে বসবাস করা। শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান সিদ্দিক সরকার পতনের সময় দেশে ছিলেন না।
গত ৩ আগস্ট ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দেশ ছাড়েন বঙ্গবন্ধু পরিবারের আরেক সদস্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস। শেখ ফজলে নূর তাপসের বড়ভাই শেখ ফজলে শামস পরশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান। তিনি দেশে আছেন নাকি বিদেশে এ নিয়ে সংগঠনের কারও কাছে তথ্য নেই। যুবলীগের একজন নেতা জানিয়েছেন, ফজলে শামস পরশ আন্দোলন চলাকালে কোনো এক সময় তিনি বিদেশে গেছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম দেশ ছাড়তে পারেনি বলে জানা গেছে। বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য হিসেবে বরিশালে প্রভাবশালী নেতা আবদুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ছোট ছেলেকে নিয়ে ভারতে চলে গেছেন। তার আরেক ছেলে বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ এবং আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর ছোট ভাই সিটির বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ দেশেই আত্মগোপনে আছেন।
বাগেরহাট-১ আসনের সাবেক এমপি শেখ হেলাল সরকার পতনের আগেই দেশ ছেড়ে গেছেন। তবে তার ছেলে বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক এমপি শেখ সারহান নাসের তন্ময় দেশ ছাড়তে পারেননি। তিনি দেশেই আত্মগোপনে আছেন। শেখ হেলালের ভাই খুলনা-২ আসনের সাবেক এমপি শেখ সালাউদ্দীন জুয়েলকে সরকার পতনের পর টুঙ্গিপাড়ায় আছেন বলে জানা গেছে।
সুন্দরী স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিতে ব্যবসায়ীকে জেলে পাঠান সালমান এফ রহমান
স্বামীকে জেলে পাঠিয়ে সুন্দরী টিভি উপস্থাপক জাকিয়া তাজিনকে ভাগিয়ে নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
বুধবার (২১ আগস্ট) ভুক্তভোগী ইনডেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল্লা আল মুনির দেশের শেয়ারবাজার কারসাজির মূলহোতা সালমান এফ রহমানকে নিয়ে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করেন।
শফিউল্লা আল মুনির বলেন, ‘আমার স্ত্রী শেয়ারবাজার নিয়ে টিভিতে অনুষ্ঠান করতেন। সেই সূত্রে সালমান এফ রহমানের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। একটা পর্যায়ে তাদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। তারপর সালমান এফ রহমান আমাকে ডেকে নিয়ে তাজিনকে তালাক দিতে হুমকি দেয়। আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক আটটি শর্তে তিনশ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন সালমান এফ রহমান।’
তিনি বলেন, ‘শর্তগুলোর মধ্যে ছিল, আমি কখনোই আমার কোম্পানির মালিকানা দাবি করতে পারব না; আমার স্ত্রীকে ডিভোর্সের বিষয়ে কাউকেই কিছু বলতে পারবো না; এমনকি আমার ছেলের কাস্টডিও চাইতে পারব না। তবে আমি যখন রাজি হলাম না, তখন এ বিষয়টি অনেকেই জানতে পারে। এক পর্যায়ে আমি এক মাস গুম হওয়ার মতো ছিলাম। হামলা-মামলার ভয়ে তটস্ত থাকতাম সবসময়। পরে ২০২০ সালের দিকে আমার স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে যায়।’
প্রসঙ্গত, জনরোষে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর আওয়ামী লীগের সব নেতা ও মন্ত্রী-এমপিদের মতো সালমান এফ রহমানও আত্মগোপন করেন । এরপর গত ১৩ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালানোর সময় তাকে ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ। ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হকার নিহত হওয়ার ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় করা হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তাকে ১০ দিনের রিমান্ড দেন আদালত।