আওয়ামী লীগের শোক মিছিল স্থগিত
কারফিউয়ের কারণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সোমবারের ‘শোক মিছিল’ কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
রোববার (৪ আগস্ট) রাতে দলটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
একই সঙ্গে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের জন্মবার্ষিকীর কর্মসূচির আনুষ্ঠানিকতা স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে শনিবারের (৩ আগস্ট) শোকমিছিল স্থগিত করে আওয়ামী লীগ। এদিন বিকেল ৩টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ থেকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত এই শোকমিছিল হওয়ার কথা ছিল।
মন্তব্য করুন
টানা ৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করল বিএনপি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ১৪ আগস্ট থেকে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত টানা তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কর্মসূচিগুলোর মধ্যে রয়েছে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান এবং সাম্প্রতিক আন্দোলনে হতাহতদের জন্য দোয়া ও মিলাদ মাহফিল।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট আয়োজিত সম্প্রীতি সমাবেশে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। হিন্দু সম্প্রদায়কে ব্যবহার করে ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আগামী ১৪ ও ১৫ আগস্ট বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পক্ষ থেকে সারাদেশে দলীয় কার্যালয় সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। ঢাকায় নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এই অবস্থান কর্মসূচি হবে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা কর্তৃক ছাত্র জনতার ওপর যে গণহত্যা চালানো হয়েছে, সেই খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের দাবিতে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
এ ছাড়া, আগামী ১৬ আগস্ট দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে তার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনায় এবং যারা এই সাম্প্রতিক আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন ও আহত হয়েছেন তাদের সুস্থতা কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ অন্যান্য ধর্মের মানুষরা তাদের উপাসনালয়ে প্রার্থনা করবেন।
কোথায় গেলেন কাদের, বাসায় তো এলেন না: ফখরুল
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এখন ঠাকুরগাঁওয়ে আছি, আমি আপনাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে, বিভিন্ন সময় বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম মন্তব্য করেছিলেন ‘আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ না করলে পালানোর পথ পাবে না।’ এর জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘আমরা পালাব না। এই দেশে জন্ম নিয়েছি, এই দেশেই মরব। পালাব না। কোথায় পালাব? প্রয়োজনে ফখরুল সাহেবের বাসায় গিয়ে উঠব। কি, জায়গা দেবেন? না হলে ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়ি আছে না, ওই বাড়িতে গিয়ে উঠব।’
সমাবেশে ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের না পালিয়ে আমার ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়িতে আসতে চেয়েছিলেন। এখন তিনি কোথায় পালিয়ে আছেন। ফখরুল আরও বলেন, এখন ঠাকুরগাঁওয়ে আছি, আমি আপনাকে (ওবায়দুল কাদের) আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’
এদিকে, মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. মইনুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত ১৬ জুলাই ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে দুজন নিহতের ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় হওয়া দুটি মামলা হয়েছে। এসব হত্যার ঘটনায় ইন্ধনদাতা হিসেবে এই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট জনরোষে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য থেকে শুরু করে বেশিরভাগ আওয়ামী লীগ নেতা আত্মগোপনে চলে যান।
বার্তাসংস্থা এএফপিকে / শেখ হাসিনার ‘আয়নাঘর’ নিয়ে যা জানালেন ব্যারিস্টার আরমান
শেখ হাসিনার পতনের পর ‘আয়নাঘর’ আবার আলোচনায় উঠে এসেছে। সেখান থেকে ইতোপূর্বে তিনজন বন্দি মুক্তি পেয়েছেন। ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত সেই কুঠুরিতে বছরের পর বছর মানুষকে আটকে রেখে ভয়ংকর নিষ্ঠুর নির্যাতন করার অভিযোগ রয়েছে।
ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দীর্ঘ আট বছর পর গোপন কারাগার থেকে বের করে নিয়ে আসা হয় জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাশেম আলীর ছেলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আরমানকে। ঢাকার উপকণ্ঠের একটি কর্দমাক্ত জায়গায় গাড়ি থেকে জীবিত অবস্থায় ফেলে দেওয়া হয় তাকে।
চোখ বাঁধা, হাতে হ্যান্ডকাফ- কী হয় এ নিয়ে বেশ আতঙ্কে ছিলেন তিনি। তখনও ব্যারিস্টার আরমান জানতেন না শিক্ষার্থীদের গণবিপ্লবের কারণে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আর যেই গণবিপ্লবের পরই তিনি আট বছরের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
বার্তাসংস্থা এএফপিকে ব্যারিস্টার আরমান বলেছেন, আট বছরের মধ্যে সেবারই আমি প্রথম মুক্ত বাতাস পাই। আমি ভেবেছিলাম তারা আমাকে মেরে ফেলবে।
ব্যারিস্টার আরমানকে দীর্ঘ আট বছর বন্দি করে রেখেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু তিনি গণবিপ্লবের মুখে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। ওই গণবিপ্লবের মুখে তার দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের আকস্মিক সমাপ্তি ঘটে। যার মধ্যে ছিল গণগ্রেপ্তার এবং তার বিরোধীদের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড।
ব্যারিস্টার আরমানকে আটকে রাখা হয়েছিল একটি গোপন কারাগারে। এই কারাগারে যারা থাকেন সেখানে তারা নিজেকে ছাড়া আর কাউকে দেখতে পান না। মীর কাশেমের ছেলে ব্যারিস্টার আরমানকে আটকে রাখা হয়েছিল জানালাবিহীন একটি ঘরে।
তিনি জানিয়েছেন, গোপন এ কারাগারের রক্ষীরা সারাক্ষণ উচ্চ শব্দে গান ছেড়ে রাখত। এজন্য আজান শুনতেন না এবং বুঝতে পারতেন না কখন কোন নামাজের সময় হয়েছে। এ ছাড়া কত সময় আটকে আছেন সেটিও বোঝার উপায় ছিল না।
কিন্তু যখন গানের শব্দ বন্ধ হত তখন বুঝতে পারতেন এ কারাগারে তিনি একা নন, আরও অনেকে আছেন। কারণ, তিনি অন্যদের চিৎকার ও কান্নাকাটির শব্দ শুনতে পেতেন।
গত বছর হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছিল ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর নিরাপত্তা বাহিনী ৬০০টিরও বেশি গুমের ঘটনা ঘটিয়েছে।
গোপন কারাগারের কথা প্রথমে প্রকাশ্যে আসে ২০২২ সালে। ওই বছর এক হুইসেলব্লোয়ার এ ব্যাপারে তথ্য দেন। কিন্তু হাসিনার সরকার এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে। এমনকি যেসব ব্যক্তিকে গুম করার অভিযোগ উঠেছিল তাদের অনেকে সমুদ্র পাড়ি দিতে গিয়ে মারা গেছে বলেও মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছিল তারা।
ব্যারিস্টার আরমান আরও জানিয়েছেন, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ফাঁসি হওয়া তার বাবাকে ফাঁসি দেওয়ার কয়েক দিন আগে তাকে গুম করা হয়। ওই সময় তিনি তার বাবার পক্ষে আইনি লড়াই করছিলেন। মিডিয়ায় প্রকাশ্যে বিভিন্ন কথা বলছিলেন। তার বাবার বিচার নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ করছিলেন। কিন্তু তিনি জানতেন না এসব করার জন্য তাকে টার্গেট করা হতে পারে।
‘একদিন রাতে তারা আমার বাড়িতে হানা দেয়। আমি কোনোদিন ভাবতেও পারিনি আমার বাবার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কয়েক দিন আগে আমাকে গুম করা হতে পারে। আমি তাদের বলতে থাকি, আপনারা জানেন আমি কে? আমাকে আমার মামলা চালিয়ে যেতে হবে। পরিবারের পাশে থাকতে হবে।’
তাকে গুম করার চার সপ্তাহ পর মীর কাশেম আলীর ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হয়। কিন্তু তিনি তা জানতে পারেন তিন বছর পর। কারাগারের এক রক্ষী ভুলক্রমে তাকে জানিয়ে দেন তার বাবার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
নিজের মুক্ত জীবনের জন্য শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ব্যারিস্টার আরমান। তিনি বলেছেন, পুরো বিষয়টি সম্ভব হয়েছে কিছু তরুণের মাধ্যমে। যখন আমি এসব শিশু, বাচ্চাদের দেখি। আমি সত্যিই আশা দেখি এটি একটি সুযোগ হবে যেখানে বাংলাদেশ নতুন দিক খুঁজে পাবে।
হাসিনা সরকার ব্যারিস্টার আরমানকে শুধু গুম করেনি। তার পরিবার যেন গুমের ব্যাপারে কোনো কথা না বলে সে ব্যাপারে প্রতি বছর সতর্ক করে দেওয়া হতো।
ব্যর্থতা স্বীকার করলেন মাশরাফী, জানালেন কোথায় আছেন
দেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় নাম জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তার নীরব ভূমিকা এই জনপ্রিয়তায় ধস নামিয়েছে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে থাকতে না পারায় বুধবার (১৪ আগস্ট) আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক।
একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘যদি সরাসরি বলি, তাহলে অবশ্যই আমি পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছি অনেক মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে। কোটা সংস্কারের আন্দোলন অবশ্যই যৌক্তিক ছিল। আমার নিজের কাছেও মনে হচ্ছিল, এটা হয়ে যাবে। তবে সবাই যখন চাচ্ছিল যে, আমি কিছু একটা বলি বা স্ট্যাটাস দিই, ততক্ষণে আসলে সবকিছু এত দ্রুত হচ্ছিল, ভাবছিলাম যে আমি যদি কিছু লিখি বা মন্তব্য করি, সেটার সম্ভাব্য পরিণতি কী হতে পারে। অনেক কিছু ভাবছিলাম আর কী, সবমিলিয়ে কিছু লেখা হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কিছু করার চেষ্টা করিনি, তা নয়। আমি শুধু কিছু লেখার ভাবনায় থাকতে চাইনি। চেয়েছিলাম ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলতে, আলোচনার মাধ্যমে কিছু করা যায় কি না। সেই শুরুর দিকেই চেষ্টা করেছি। কারণ, তাদের দাবি আমার কাছে যৌক্তিক মনে হয়েছে। কিন্তু সেটাও করতে পারিনি। সবমিলিয়ে অবশ্যই ব্যর্থ হয়েছি।’
নিজের শারীরিক অবস্থা ও অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে উত্তরে মাশরাফী বলেন, ‘শারীরিকভাবে ঠিক আছি। মানসিকভাবে অবশ্যই ভালো অবস্থায় নেই। ঢাকাতেই আছি, পরিবারের সঙ্গে।’
তিনি বলেন, ‘আমার সম্পদ যা কিছু আছে, সব খেলোয়াড়ি জীবনেই গড়া। যেকোনোভাবেই খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। পূর্বাচলে একটি জমি আছে, ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর সরকার থেকে সবাই পেয়েছিলাম ৫ কাঠা করে। মিরপুরে একটা বাড়ি আছে, ২০০৮ সালে আইপিএল খেলে আসার পর করা। মিরপুরে আরেকটি বাড়ি করছি, যেখানে পরিবার নিয়ে উঠব, এটাও ২০১৫ সালে কাজ শুরু করেছি। এখনও উঠতে পারিনি, কাজ চলছে। ২০১৮ সালের পরের আয় দিয়ে তেমন কোনো সম্পদ গড়তে পারিনি। ২০১৮ সালের নির্বাচনের হলফনামা ও ২০২৪ সালের হলফনামা দেখলেই বুঝতে পারবেন। আমি দাবি করলে তো লাভ নেই। যে কেউ খতিয়ে দেখলেই জানতে পারবেন।’
মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা বলেন, রাজনীতিতে আসার আগ পর্যন্ত আমার এন্ডোর্সমেন্ট ছিল অনেক। ২০টির ওপরে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলাম। খেলাধুলা করে ও স্পন্সরশিপের আয় থেকেই এসব করেছি। নড়াইলের বাড়িটা করেছিলাম মায়ের জন্য, এখন শেষ। অনেকেই বলেছেন মামলা করতে, ব্যবস্থা নিতে। ছবি-ভিডিও সবই আছে অনেকের কাছে। তবে আমি বলেছি, এসব করব না। আমার বাবাকেও বলে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ‘এখনকার সরকার বা ভবিষ্যতে নির্বাচন করেও যে সরকার আসুক, কারও কাছেই বিচার চাইব না। কোনো অভিযোগ নেই। খুলনা-যশোর থেকে বা ঢাকা থেকে গিয়ে কেউ এই বাড়ি ভাঙেনি। নড়াইলের কোনো না কোনো জায়গা থেকে উঠে আসা মানুষই পুড়িয়েছে। নড়াইলের মানুষের বিরুদ্ধে বিচার আমি চাইব না। নিজের ভাগ্য মেনে নিয়েছি। হয়তো কোনো ভুল করেছি, সেটার ফল পেয়েছি। কষ্ট আছে অবশ্যই, তবে রাগ-ক্ষোভ নেই কারও প্রতি। আমার প্রতি এখনও কারও ক্ষোভ থাকলে, আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’
মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা বলেন, ‘আমি জানতাম, ক্রিকেটার হিসেবে হয়তো সবার আছে আমার গ্রহণযোগ্যতা আছে। রাজনীতিতে নামলে সেটা থাকবে না। কিন্তু ওই চ্যালেঞ্জ আমি নিতে চেয়েছি। মানুষের জন্য বড় পরিসরে কিছু করতে চেয়েছি। এই জায়গায় নিজের কাছে পরিষ্কার ছিলাম। এখন যে সরকার এসেছে, আমরা যদি আমার জায়গা থেকে, আপনার জায়গা থেকে সমালোচনা করে নিচে নামাই, তাহলে তো এভাবেই যুগ যুগ ধরে চলতে থাকবে। তো, আমি যে জায়গায় ছিলাম, হয়তো রাজনীতিতে না এলেও পারতাম। ভালো ছিলাম। কিন্তু চ্যালেঞ্জটা নিয়েছি।’
উপদেষ্টা আসিফের পিএস আবুল হাসান, এপিএস মোয়াজ্জেম
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার একান্ত সচিব (পিএস) হিসেবে সেতু বিভাগের উপসচিব মো. আবুল হাসান ও সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) হিসেবে মাগুরার মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৪ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পৃথক প্রজ্ঞাপনে এই নিয়োগ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে দুটি প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি অনুবিভাগ অভ্যন্তরীণ নিয়োগ শাখার উপসচিব কানিজ ফাতেমা।
আবুল হাসানের নিয়োগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া যতদিন এ পদ অলংকৃত করবেন অথবা মো. আবুল হাসানকে তার একান্ত সচিব পদে বহাল রাখার অভিপ্রায় পোষণ করবেন ততদিন এ নিয়োগ আদেশ কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
মোয়াজ্জেম হোসেনের নিয়োগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার অভিপ্রায় অনুযায়ী মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ অনুযায়ী তার সহকারী একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হলো।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া যতদিন এ পদ অলংকৃত করবেন অথবা মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে সহকারী একান্ত সচিব পদে বহাল রাখার অভিপ্রায় পোষণ করবেন ততদিন এ নিয়োগ আদেশ কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
আদিলুর, নুরজাহান ও নাহিদের পিএস নিয়োগ
শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের একান্ত সচিব হিসেবে উপসচিব পদমর্যাদার তিন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) পরিচালক (উপসচিব) ড. সৈয়দ মোহাম্মদ আমিনুর রহমান।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মুফিদুল আলম।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উপসচিব র হ ম আলাওল কবির।
বুধবার (১৪ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পৃথক তিনটি প্রজ্ঞাপনে এই নিয়োগ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তিনটি প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি অনুবিভাগ অভ্যন্তরীণ নিয়োগ শাখার উপসচিব কানিজ ফাতেমা।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, উপদেষ্টারা যতদিন তাদের পদ অলংকৃত করবেন অথবা একান্ত সচিবদের বহাল রাখার অভিপ্রায় পোষণ করবেন ততদিন এ নিয়োগ আদেশ কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদের একান্ত সচিব (পিএস) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের উপসচিব মো. মাহমুদ হাসান। সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকার ওয়ারীর বাসিন্দা নাজমুস সাদাত পারভেজ।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের অভিপ্রায় অনুযায়ী চট্টগ্রামের বাঁশখালীর মো. আবিদ চৌধুরীকে তার এপিএস হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ৫ আগস্ট দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠন করা হয় অন্তর্বর্তী সরকার। সেদিন রাতে বঙ্গভবনে ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তী সরকারের ১৪ জন শপথ নেন। পরে শপথ নেন আরও তিন উপদেষ্টা।
‘দেশবাসী আ.লীগকে নিষিদ্ধ করতে চাইলে একাত্মতা পোষণ করবে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম জানিয়েছেন, গণহত্যার দায়ে দেশের মানুষ যদি আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে চায়, তবে সে দাবিতে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা একাত্মতা প্রকাশ করবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সপ্তাহব্যাপী ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর শাহবাগে কেন্দ্রীয় জমায়েত কর্মসূচি পালনকালে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
সারজিস আলম বলেন, ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ স্বৈরাচারের যারা দোসর ছিল সেসব দুষ্কৃতকারীরা নতুন একটি গণঅভ্যুত্থান করে বিশৃঙ্খলা তৈরির পাঁয়তারা করছে। এটি কখনো হতে দেওয়া হবে না। ছাত্র সমাজ মাঠে আছে, থাকবে।
এ সময় পাল্টা গণঅভ্যুত্থান করলে তাদের আর কোনো অস্তিত্ব থাকবে না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
চার দফা দাবিতে সপ্তাহব্যাপী ঘোষিত ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে চার দফা দাবি জানিয়েছি। এসব দাবি বাস্তবায়নে কালবিলম্ব করলে গদি থেকে নামানোর মতো কৌশল শিক্ষার্থীদের জানা আছে বলেও হুঁশিয়ারি দেন সার্জিস আলম।
প্রথম দাবি: ফ্যাসিবাদী কাঠামো ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দল ও সরকার যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, সেগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।
দ্বিতীয় দাবি: সংখ্যালঘুদের ওপর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী মহাজোটের শরিক দলগুলোর পরিকল্পিত হত্যা, ডাকাতি ও লুণ্ঠনের মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করার চেষ্টায় অংশগ্রহণকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং সংখ্যালঘুদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে।
তিন নম্বর দাবি: প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হামলা, মামলা ও হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দিয়েছেন এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বারবার কায়েমের চেষ্টা করছেন, তাদের দ্রুততম সময়ে অপসারণ ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
চার নম্বর দাবি: প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা এতদিন বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, তাদের সবার জন্য ন্যায্যতার ভিত্তিতে সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।’
এর আগে, মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) চার দফা দাবিতে ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ কর্মসূচির ডাক দিয়ে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর অংশ হিসেবে ওইদিন ঢাকাসহ সারাদেশে রোডমার্চ কর্মসূচি ছাড়াও আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। সবশেষ আজ পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ১০টায় শাহবাগে কেন্দ্রীয় জমায়েতে অংশ নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।