সীমান্তে মিয়ানমার সেনা সমাবেশ করায় বিএনপির উদ্বেগ
সীমান্তে মিয়ানমারের সেনা সমাবেশের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সরকারকে ‘আন্তঃআঞ্চলিক কূটনৈতিক’ উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘সরকারের দুর্বল পররাষ্ট্র নীতি আজ মিয়ানমারের কাছে স্পষ্ট। এর পরিপূর্ণ সুযোগ গ্রহণ করেই মূলত মিয়ানমার সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ অযাচিত ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাংলাদেশ-মিয়ানমার আন্তর্জাতিক সীমান্তে সেনা সমাবেশ করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পক্ষ থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এহেন সেনা সমাবেশের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই ধরনের অপতৎপরতা রুখতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণপূর্বক আন্তঃআঞ্চলিক কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণের পদক্ষেপ করতে বর্তমান নতজানু সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
ফখরুল বলেন, ‘কেনো আজকে এ্রখানে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আমরা কথা বলছি। এই দেখেন না- সৈন্য সমাবেশ করছে। আজকে ভারত-চীন সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ হয়-এটা নিয়ে তোলপাড় হয়ে যায়। আমাদের সরকারের কোনো কথা নেই। তারা একবারে চুপচাপ থেকে নিরাপত্তা পরিষদে একটি চিঠি দিয়েছে। এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ এই সরকার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে নিতে পারেনি।’
২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বিতাড়িত হয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে বাংলাদেশে সরকারের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা ও জাতিগত নিপীড়ন-নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার তিন বছর পূর্তির প্রাক্কালে সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সমাবেশের তৎপরতা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ধারাবাহিক ফলাফল মাত্র। প্রায় ১২ লক্ষাধিক (গণমাধ্যমে প্রকাশিত) শরণার্থী সমস্যার সমাধানে যে ধরনের সমন্বিত বহুমুখী তৎপরতা নেয়া অত্যাবশ্যক ছিল, যা এই গণবিচ্ছিন্ন সরকার নিতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে।’
ফখরুল বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠী। বিশ্বের মানচিত্রে এই জনগোষ্ঠীকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনায় বেসামরিক তদারকিতে মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চলকে একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করে যথাযথ নাগরিক অধিকার ও মর্যাদায় রোহিঙ্গাদের নিজ দেশের আবাসভূমিতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার কোনো বিকল্প নাই।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকারের প্রতি আবারও আহ্বান জানাই, রোহিঙ্গা সমস্যা দূর করতে হলে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিন। গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করুন। বহির্বিশ্বে দেশের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা পুনরুদ্ধার করুন।’
পি
মন্তব্য করুন