পাংশা আওয়ামী লীগের ৩৬ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের ৩৬ জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগ। নেতাকর্মীদের পরিকল্পিতভাবে গ্রেপ্তার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাংশা উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. এ. এফ. এম শফীউদ্দিন এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গতকাল বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে পাঁচটায় মাইক্রোবাসে করে ঢাকা হাইকোর্টে মামলার হাজিরার উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে কুষ্টিয়া রাজবাড়ী মহাসড়কের কালুখালী সংলগ্ন স্থান হতে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের নামে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মিথ্যা ও বানোয়াট এবং মনগড়া ডাকাতি মামলা ও শারীরিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ করা হয় পুলিশের বিরুদ্ধে।
সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, রাজবাড়ী জেলা পুলিশের কর্তার নির্দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় পাংশার কসবামাজাইল ইউনিয়নের ৩৬ জন নেতাকর্মীকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গ্রেপ্তার করে, তাদেরকে ডাকাতির মামলার আসামি করা হয়েছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। নেতাকর্মীরা আরও বলেন, পাংশার প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা হচ্ছে জর্জ আলী বিশ্বাস (৮০) এই তালিকায় আছেন। তিনি বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে ক্যাডার ও পুলিশ দ্বারা নির্যাতিত এবং চার দলীয় ঐক্যজোট সরকারের দেওয়া ১৮টি মামলার আসামি আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত প্রবীণ নেতা জজ আলী বিশ্বাস। বর্তমান জজ আলী ক্যান্সারে আক্রান্ত। ক্যান্সারের রোগী ডাকাতি করতে যাবে এটা কি গ্রহণযোগ্য? রাজবাড়ী জেলা পুলিশের এহেন কর্মকাণ্ডের ফলে জেলার সাধারণ জনগণ আজ আতঙ্কিত। মনে হচ্ছে রাজবাড়ী জেলায় পুলিশ সন্ত্রাসীদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পাংশা উপজেলা শাখা এই ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
পুলিশের যে সব সদস্যরা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের শাস্তির দাবী করেন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। তারা বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হলে পাংশা, বালিয়াকান্দি, কালুখালীতে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামীলীগ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।
আওয়ামীলীগের নেত্রীবৃন্দ বলেন, গত ১২মার্চ ২০২০ সালে পাংশা উপজেলার সুবর্ণখোলা গ্রামের শিক্ষক আসাদুল বারীকে হত্যা করা হয়। সেই মামলায় আওয়ামীলীগের বেশ কিছু নেতাকর্মীকে আসামী করে মামলা দায়ের করে নিহতের স্বজনেরা। সেই মামলায় ঢাকা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিতে ভোরে তিনটি মাইক্রোবাসে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন আওয়ামীলীগের ৩৬ জন নেতাকর্মী। পুলিশ সেই বিষয়টি জানতে পেরে তাদেরকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া সড়কের সোনাপুর মোড়ে ভোর ৫টায় আটক করে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু তাদের পাংশা থানায় মাইক্রোবাস তিনটি ছেড়ে দেয়। ডাকাতি করতে গেলে তো মাইক্রোবাসের চালকরাও জড়িত থাকার কথা। শুধু গ্রেপ্তারই নয় তাদের বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশ অস্ত্র ও ডাকাতির প্রস্তুতি মামলা দায়ের করেছেন। পরিকল্পিতভাবে আওয়ামীলীগকে ধ্বংস করার জন্য পায়তারা করছে পুলিশ। পুলিশের ভাবমূর্তি রক্ষার সাথেই বিষয়টি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের তদন্ত করা উচিত। সেই সঙ্গে আমরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহল ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি জোড় দাবি জানাচ্ছি, রাজবাড়ী জেলা পুলিশ কর্তার এই অনৈতিক ও ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- পাংশা আ.লীগের সভাপতি খন্দকার সাইফুল ইসলাম, জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল ইসলাম, পাংশা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিদুল ইসলাম মারুফ, হাবাসপুর, বাহাদুরপুর ও কলিমহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এসএ/জিএ
মন্তব্য করুন