ইভ্যালির গ্রাহকরা দুই পদক্ষেপ নিতে পারে
ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জের মতো বেশকিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান লোভনীয় অফারে গ্রাহকদের ফাঁদে ফেলে শতশত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গ্রাহকরা নিজের পাওনা টাকা ফেরত না পেলেও অর্থ আত্মসাতের দায়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রাহকরা এখন যেকোনো উপায়ে অর্থ ফেরত চান। এজন্য গ্রাহকদের দুটি উপায়ে এগোতে পারেন। প্রথমটি হচ্ছে ফৌজদারি মামলা দ্বিতীয়টি দেওয়ানি মামলা। তবে এই দুই পদক্ষেপে টাকা ফেরত পাওয়া দীর্ঘসময়ের ব্যাপার বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।
-
আরও পড়ুন... রাসেল দম্পতির বিরুদ্ধে আরেক অভিযোগ
চলতি মাসের ২ সেপ্টেম্বরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এক হিসাব জমা দেয়া হয়েছে। সেখানে দেখানো হয়েছে, গ্রাহকরা প্রায় ২০৬ কোটি টাকা ই-ভ্যালির কাছে পাবে। তবে ইভ্যালির ‘সম্পদের চেয়ে ছয় গুণ বেশি দেনা’ বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনে ইভ্যালির মোট দায় ৪০৭ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম নিয়েছে ২১৪ কোটি টাকা, আর মার্চেন্টদের কাছ থেকে বাকিতে পণ্য নিয়েছে ১৯০ কোটি টাকার। স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিষ্ঠানটির কাছে কমপক্ষে ৪০৪ কোটি টাকার চলতি সম্পদ থাকার কথা। কিন্তু সম্পদ আছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকার।
অন্যদিকে ই-অরেঞ্জের দুটি ব্যাংকে মাত্র ৩ কোটি ১২ লাখ ১৪ হাজার ৩৫৬ টাকা জমা থাকলেও গ্রাহকরা ১,১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে থানায় মামলা করেছে। গ্রাহকরা প্রায় ১ হাজার ৯৭ কোটি টাকা পাবে ই-অরেঞ্জের কাছে।
-
আরও পড়ুন... ইভ্যালির রাসেলের পরিচয়
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি অল্প সময়ে আলোচনায় আসে দেশজুড়ে। তবে সেই আলোচনা বেশিদিন সুনামের সঙ্গে ধরে রাখতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। গ্রাহকদের পুঁজি দিয়েই ‘সাইক্লোন’ (ঘূর্ণিঝড়), আর্থকুয়েক’ (ভূমিকম্প) নামে ১০০ থেকে ১৫০ শতাংশ ক্যাশব্যাকের লোভনীয় অফার দিয়েছিল ইভ্যালি। ব্যবসার এই কৌশলে মানুষের মাঝে উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়। তবে সেই উদ্দীপনা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ইভ্যালির মতো অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ই-অরেঞ্জও অল্প দিনেই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
লোভনীয় দামে পণ্য কেনার ফাঁদে আটকে যাওয়া শতশত গ্রাহকের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য প্রতারক কোম্পানির সম্পত্তি ক্রোকের পর তা বিক্রি করার নতুন বিধান তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তিনি শীর্ষ স্থানীয় একটি গণমাধ্যমে বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে যেসব কোম্পানি মানুষের কাছ থেকে নেওয়া টাকায় অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছে, সেসব সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করে মানুষের টাকা মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিলে সবচেয়ে ভালো হবে। প্রতারক কোম্পানির সম্পত্তি ক্রোক করে তা বিক্রির জন্য আলাদা বিধান করা উচিত। বিদ্যমান আইনে কোনো মামলার আসামি দণ্ডিত হওয়ার পর সম্পত্তি ক্রোকের বিধান রয়েছে। কিন্তু ওই প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
-
আরও পড়ুন... গ্রাহকদের অর্থ হাতিয়ে নিতে রিং আইডির নতুন ফাঁদ!
ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, আমাদের দেশে গ্রাহকের স্বার্থ সংরক্ষণ করা হয় না। এতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জের মতো অতীতে এ রকম গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এর লম্বা তালিকা আছে। গ্রাহকদের টাকা ফেরত পাওয়া এবং তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে অবিলম্বে এই সব প্রতিষ্ঠানে তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করা উচিত এবং প্রতিষ্ঠানগুলো চলমান রাখা প্রয়োজন। গ্রাহকের স্বার্থ সংরক্ষণে এই রকম পদক্ষেপ নেওয়া উচিত রাষ্ট্রের।
এফএ
-
আরও পড়ুন...
-
গ্রাহকদের অর্থ হাতিয়ে নিতে রিং আইডির নতুন ফাঁদ!
-
গ্রাহকদের জন্য ইভ্যালির জরুরি নোটিশ
-
জানা গেল ইভ্যালির সম্পদের পরিমাণ
-
ইভ্যালি থেকে কত বেতন নিতেন রাসেল-শামিমা?
- ইভ্যালিতে অর্ডার বন্ধ
- ইভ্যালির গ্রাহকদের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ
- ইভ্যালির সিইও’কে গ্রেপ্তারের নিয়ে যা বললো র্যাব (ভিডিও)
- দুই হাসপাতাল ঘুরে ইভ্যালির রাসেল এখন থানায়
- এখন কেন ইভ্যালির মালিক গ্রেপ্তার, প্রশ্ন গ্রাহকদের
- ইভ্যালির সিইও রাসেলের বাসার ভেতরে অভিযানের ভিডিওতে যা দেখা গেল
- ইভ্যালির চুক্তি বাতিল নিয়ে যা জানালেন মিথিলা
মন্তব্য করুন