• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

এবার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ এর অভিযাত্রা শুরু

আরটিভি নিউজ

  ১৯ জানুয়ারি ২০২১, ২২:৪৩
This time the journey of Bangabandhu Satellite-2 started
ফাইল ছবি

মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর পর এবার আজ মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণের পথযাত্রা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো। ২০১৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী ২০২৩ সালের মধ্যে এটির কার্যক্রম চালু হওয়ার ঘোষণা রয়েছে।

২০১৮ সালের ১২ মে মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট নির্ভর সম্প্রচার ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ওই বছরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহারে অন্যান্য প্রকৃতি, প্রয়োজন, চাহিদা ও ধরনের স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে স্বনির্ভরতা অর্জনের জন্য বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ মহাকাশে উৎক্ষেপণের ঘোষণা দেয়।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের উপস্থিতিতে আজ ঢাকায় বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিএল) প্রধান কার্যালয়ে উৎক্ষেপণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নতুন এই স্যাটেলাইটটির ধরন ও প্রকৃতি ইত্যাদি নির্ধারণে পরামর্শক হিসেবে ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান প্রাইজ ওয়াটার হাউজ কুপার্সের সঙ্গে অনলাইনে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আজ মঙ্গলবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।

চুক্তি স্বাক্ষর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক অভিযাত্রার আজকের দিনটিকে একটি ঐতিহাসিক দিন হিসেবে উল্লেখ করেন।

মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ডিজিটাল সংযুক্তির সক্ষমতা তৈরির জন্য বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ জাতীয় জীবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরো একটি নতুন যুগে পদার্পণ করেছে। এর ওপর ভর করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম আরো বেগবান ও অর্থবহ হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২-এর প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর ওপর নির্ভর করে আমরা চর ও দ্বীপসহ দুর্গম অঞ্চলের ডিজিটাল কানেকটিভিটি তৈরি করছি। আমরা বেতার ও টিভি চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার অব্যাহত রাখছি। দেশের দুর্গম এলাকায় টেলিমেডিসিন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি।’

বিজয় বাংলা সফটওয়্যারের উদ্ভাবক মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদের দিক নির্দেশনায় নিবিড় পর্যালোচনা করে দেখেছি, একটি স্যাটেলাইট দিয়ে আমাদের যোগাযোগ ছাড়া আর কোনো প্রয়োজন মেটে না। ভবিষ্যতের বাড়তি চাহিদা মেটানোর কথাও ভাবতে হবে। স্যাটেলাইটে এমন ব্যবস্থা রাখতে হবে যাতে যোগাযোগ ব্যবস্থার বাইরে উপগ্রহের মাধ্যমে যাতে আমরা নতুন সেবা দিতে পারি। আমরা ইতোমধ্যে তৃতীয় সাবমেরিন কেবল সংযোগের কার্যক্রম শুরু করেছি। নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী সেটিও আমাদের ওপর অর্পিত একটি বড় কাজ।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘মহাকাশে বঙ্গবন্ধু, জয় বাংলা নিজস্ব স্পেস দেখে আমাদের গর্ব হয়। দেশ স্বাধীন না হলে আমরা মহাকাশ বিজয়ী হতে পারতাম না।’

দ্বিতীয় স্যাটেলাইট বাংলাদেশের সক্ষমতাকে অনেক দূর বাড়িয়ে দেবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর মহাকাশে স্যাটেলাইন উৎক্ষেপণের চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ২০০১ থেকে ২০০৮ সালের সরকারগুলো সেই কর্মসূচিটির কবর রচনা করে।

মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ প্রক্রিয়ার প্রাইজ ওয়াটার হাউজ কুপার্সকে কারিগরি পরামর্শক হিসেবে পাশে পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং দেশের জনগণের প্রয়োজন ও চাহিদার সঙ্গে সমন্বয়ের বিষয়টি প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বিএসসিএল চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন ও বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে বিএসসিএলের পরিচালনা পর্ষদ সদস্য ড. এসএম জাহাঙ্গীর আলম অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

বিএসসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহরীয়ার আহমেদ চৌধুরী ও প্রাইজ ওয়াটার হাউজ কুপার্স অ্যাডভাইজরী এসএস ড. লুইগী স্ক্যারিয়া পার্টনার পিডব্লিউসি স্পেস প্রাকটিস লিডার নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন।

উল্লেখ্য বাঙালির মহাকাশ জয়ের স্বপ্ন পূরণের দিন ১২ মে ২০১৮ সাল। এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় দেশের প্রথম যোগাযোগ উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। ইতিহাস সৃষ্টিকারী এই ঘটনাটি ঘটেছিল বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ১৫ মিনিটে। বিশ্বে স্পেস সোসাইটিতে ৫৭তম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী দেশ হিসেবে লিপিবদ্ধ হয় বাংলাদেশের নাম। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর মিশন লাইফ ১৫ বছর এবং ডিজাইন লাইফ ১৮ বছর।

কেএফ

মন্তব্য করুন

daraz
  • তথ্যপ্রযুক্তি এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ স্থাপনে সহযোগিতার হাত বাড়াতে চায় ফ্রান্স
X
Fresh