মধ্যপ্রাচ্যে ভাড়াটে হ্যাকারের প্রভাব বাড়ছে
বাহামূত নামে একটি ভাড়াটে হ্যাকার দল সৌদি কূটনীতিক, বিচ্ছিন্নতাবাদী শিখ জাতি এবং ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ওপর নজর রাখছিল। ক্রমাগত হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে তাদের তথ্য চুরি করে আসছিল বলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে সফটওয়্যার সংস্থা ব্ল্যাকবেরি কর্পোরেশন।
এই হ্যাকার দলটি বাহামূত নামে পরিচিত লাভ করে। বাহামূত হচ্ছে পৌরাণিক আরব কাহিনীর এক সমুদ্র দৈত্যর নাম। সাইবার সিকিউরিটি গবেষকরা কীভাবে তাদের অনলাইনে খুঁজে পেয়েছেন তা তুলে ধরা হলো।
ব্ল্যাকবেরি গবেষণার ভাইস প্রেসিডেন্ট এরিক মিলাম বলেন, বাহামুতের কার্যক্রম এতটাই বৈচিত্র্যময় ছিল যে প্রথমে আমরা ধরে নিয়েছিলাম এরা বিভিন্ন ক্লায়েন্টের জন্য কাজ করছে।
চলতি বছরের জুন মাসে রয়টার্স সংবাদ সংস্থা বেলট্রাক্স নামে ভারতীয় আইটি প্রতিষ্ঠানের ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কীভাবে তারা সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে ১০ হাজারের বেশি গ্রাহকের ইমেইল অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং-এ ব্যবহার করে গুপ্তচরদের সহায়তা করে আসছিল। এগুলোর মধ্যে বিশিষ্ট আমেরিকান বিনিয়োগকারীও ছিল।
ব্ল্যাকবেরি, অ্যাপল এবং গুগল অ্যাপ স্টোরগুলোতে মোবাইল ফোনের অ্যাপ্লিকেশনগুলোর সাথে এই গ্রুপটিকে সংযুক্ত ছিল। এই অ্যাপ্লিকেশনগুলোতে ফিটনেস ট্র্যাকার এবং পাসওয়ার্ড ম্যানেজার অন্তর্ভুক্ত ছিল। যার ফলে ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছানো হ্যাকারদের জন্য সহজ ছিল। ডাটা বা ইনফরমেশন চুরির মধ্যে যে ১৭টি অ্যাপস প্লে স্টোর এবং এপল স্টোর থেকে সরানো হয়েছে এগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল বাহামূত’র তৈরিকৃত অ্যাপস। পরবর্তীতে জরুরীভাবে ব্ল্যাকবেরি দ্বারা চিহ্নিত দুটি অ্যাপ্লিকেশন অ্যাপল অ্যাপ এবং প্লে স্টোর থেকে সরানো হয়।
আরও পড়ুন :
মার্কিন নির্বাচনে বিজ্ঞাপনের রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া
বাহামুতের পেছনে কে থাকতে পারে এটা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি প্রেসিডেন্ট এরিক মিলাম। তবে তিনি বলেছেন, উক্ত প্রতিবেদনটি পরবর্তীতে হ্যাকারদের ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে চিহ্নিত করতে সহায়তা প্রদান করবে। অনুসন্ধানগুলো বিশ্বাসযোগ্য ছিল এবং তারা লিঙ্কগুলো খুঁজেও পেয়েছিল কিন্তু বেশিরভাগ লিংক ডেড ছিল।
ভারত ভিত্তিক নিউইয়র্কের একটি প্রতিষ্ঠান শিখ ফর জাস্টিসও হ্যাকিং-এর শিকার হয়েছিল। এই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ভারতে শিখদের জন্য একটি স্বাধীন জন্মভূমির কাজে প্রচার চালাচ্ছিল। এর প্রতিষ্ঠাতা গুরপাতন্ত সিং পান্নুন বলেন, তার প্রচারিত ওয়েবসাইটগুলো বারবার হ্যাক করা হত এবং ইমেইলগুলো নষ্ট করে দেওয়া হত।
সৌদির কর্মকর্তারাও হ্যাকারদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বিভিন্ন ফিশিং ওয়েবসাইট দিয়ে সাইবার গুপ্তচরগুলো সৌদি সরকারের ইমেইল, ১২ টি সৌদি সরকারি মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালিয়েছিল।
হ্যাকাররা বাহরাইন, কুয়েত এবং কাতারে ব্যবসায়ীদের ওপর নজর রাখছিল। এজন্য আগস্ট ২০১৯ সালে ভারতীয় বড় জ্বালানী সংস্থার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করেছিল। এজন্য ইমেইল বার্তা পাঠায় তারা। কিন্তু রিলায়েন্স এই মেইলের কোনো উওর দেয়নি।
সূত্র- আল জাজিরা
এস/জিএ
মন্তব্য করুন