• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

করোনা আতঙ্কে কুয়েতে আজান পরিবর্তন কতটা যুক্তিযুক্ত?

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ১৮ মার্চ ২০২০, ২৩:৩৯

করোনাভাইরাসের প্রভাব থেকে বাঁচতে এরইমধ্যে সৌদি আরবের পবিত্র কাবা ও মসজিদে নববী ছাড়া সব মসজিদে নামাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিশ্বের অনেকে দেশে মসজিদে নামাজ আদায় বন্ধ রয়েছে। গত এক মাস আগে থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে জুমার নামাজ বন্ধ করা হয়।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় বিশ্বজুড়েও নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। কোথাও শহর বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে, আবার কোথাও মার্কেট বন্ধ রাখা হচ্ছে।

কুয়েত সরকার দুই সপ্তাহ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। কুয়েতের ধর্ম মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে, মসজিদে শুধু আজান হবে নামাজ পড়তে হবে বাসায়। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এমন ঘোষণার পর ব্যতিক্রমী এক চিত্র দেখা গেছে কুয়েতের বিভিন্ন মসজিদে।

সেখানে আজানের মাধ্যমে মুয়াজ্জিন ‘হাইয়া আলাস সালাহ’ (নামাজে আসো) যে লাইনটির জায়গায় বলছেন ‘আল-সালাতু ফি বুয়ুতিকুম।’ অর্থ্যাৎ ঘরে বসে নামাজ আদায় করো। আজানে মুয়াজ্জিন অপরিচিত এই বাক্য শুনে অনেকেই অবাক হচ্ছেন। আলোচনা চলছে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।

আজানে এই শব্দ ব্যবহার করা যায় কিনা সেসম্পর্কে জামিয়া আম্বরশাহ আল ইসলামিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি তায়্যিব আহমদ বলেন, বুখারি ও মুসলিম শরিফে দুটি হাদিস আছে এসম্পর্কে।

একবার হজরত ওমর (রা.) প্রচন্ড শীতের রাতে জজনান নামক জায়গায় আজান দেন। তিনি আজানের পর সাল্লু ফি বুয়ুতিকুম বলেন। মানে হচ্ছে তোমরা তাবুতে নামাজ আদায় কর। এরপর হজরত ওমর (রা.) বলেন, নবি কারিম (সা.) প্রচন্ড শীতের রাতে তিনি মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে বলতেন এবং আজানের পর পর তিনি বলতেন আলা সাল্লু ফি রিহাল। মানে তোমরা তোমাদের তাবুতে নামাজ আদায় করো।

এই হাদিস দ্বারা বুঝা যায় প্রচন্ড শীত বা বৃষ্টির রাতে মানুষকে আজানের পর নির্দিষ্ট শব্দ দিয়ে বলা হয়েছে তারা যেনো তাদের ঘরে নামাজ আদায় করে।

আরেকটি হাদিসে আছে, হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) প্রচন্ড বৃষ্টির রাতে তিনি মুয়াজ্জিনকে বলেন, তিনি যেনো হাইয়া আলাস সালাহ’র পরিবর্তে ‘আল-সালাতু ফি বুয়ুতিকুম’ বলেন।

পরবর্তীতে মুসল্লিরা এসম্পর্কে আলোচনা শুরু করলে তিনি বলেন, আমার চেয়েও উত্তম যিনি মুহাম্মদ (সা.), তিনি প্রচন্ড শীত বা বৃষ্টির রাতে মুয়াজ্জিনকে সাল্লু ফি বুয়ুতিকুম বা সাল্লু ফি রিহালিকুম বলতে বলেছেন।

এই দুটি হাদিসে দেখা যায় যে, একটি হাদিসে বলা হচ্ছে আজানের পর এই শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। আরেকটি হাদিসে আজানের ভেতর এই শব্দ ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।

মুফতি তায়্যিব আহমদ বলেন, এই হাদিস দ্বারা বুঝা যায় যে, আল-সালাতু ফি বুয়ুতিকুম বা সাল্লু ফি রিহালিকুম এই শব্দগুলো বলা যায়, যদি প্রচন্ড বৃষ্টি, শীত ও মহামারি দেখা দেয় সেসময়।

ওলামায়ে কেরাম মনে করেন, আজানে ‘হাইয়া আলাস সালাহ’ (নামাজে আসো) বলে আহ্বান করার পর যদি ‘আল-সালাতু ফি বুয়ুতিকুম’ বলা হয় তাহলে বিষয়টি সাংঘর্ষিক দেখা যায়। তাই হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) এর বর্ণিত হাদিসটিই অনুসরণ করা যায়।

এদিকে কুয়েতের মসজিদের এই ভিন্ন শব্দের আজান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এরইমধ্যে কুয়েতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৭২ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে সেখানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।

এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • ধর্ম এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh