• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

হাতপাতা মানে জাহান্নামের আগুন ভক্ষণ করা

মাওলানা মো. নাসির উদ্দিন

  ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৯:১৮

ইসলাম ধর্মে নিম্নস্তরের জায়েজ কাজ দুইটি। এক ‘ভিক্ষা’ করা, দুই ‘তালাক’ দেওয়া। কিছু লোক চরম অলসতার কারণে নির্লজ্জভাবে বেছে নেয় ভিক্ষা পেশা। আবার দেখা যায় কিছু লোক আছে যাদের সম্পদ থাকা স্বত্ত্বেও সম্পদ বাড়ানোর জন্য অন্যের কাছে হাত পাতে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, যখন নামাজ শেষ হয়, তখন তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও সুরা: আল-জুমুআহ, আয়াত:১০।

উল্লেখিত আয়াতে আছে, তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড়। অর্থাৎ যে কৃষক সে কৃষি কাজে চলে যাবে। যে চাকরি করে সে চাকরিতে চলে যাবে। যে ব্যবসায়ী সে তার ব্যবসাতে চলে যাবে। মোটকথা হলো নামাজ শেষে যার যার কর্মস্থলে চলে যাবে। আল্লাহ তায়ালা কাউকে ভিক্ষা করতে বলে নাই।

নবী কারিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি অভাব ব্যাতীত ভিক্ষা করল, সে যেন জাহান্নামের আগুন ভক্ষণ করল’ (মুসনাদে আহমাদ)।

চলার পথে প্রায়ই দান সংগ্রহকারীর মুখোমুখি হতে হয় অনেককেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয় ইসলামের লেবাস বা অনুভূতি। কখনো দেখা যায়, সাহায্যপ্রার্থী লোকটি নিজেকে ‘নওমুসলিম’ দাবি করে তাকে সাহায্যের আবেদন করেন। কখনো মসজিদ বা মাদরাসার উন্নয়নের জন্যও যেখানে সেখানে মানুষের কাছে হাতপাতা হয়। এর বাইরে রয়েছে একটি ব্যবসায়ী ভিক্ষুকশ্রেণি।

বিকলাঙ্গ শিশু, প্রতিবন্ধী বা অসুস্থ কোনো ব্যক্তিকে মাধ্যম বানিয়ে চালিয়ে যান ভিক্ষাবাণিজ্য। ধোঁকাবাজির মাধ্যমে সিন্ডিকেট করে একশ্রেণির লোক একে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। যেখানে ভিক্ষা করাও একটা চাকরি।

একজন ভিক্ষুক সারাদিন ভিক্ষা করে যা উপার্জন করে সেটা দিয়ে দিতে হয় মালিককে। ইসলামের লেবাস কিংবা অনুভূতিকে পুঁজি করে বিচিত্র কৌশলে সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত করে দান সংগ্রহ করে তারা।

অথচ ইসলামে ভিক্ষা কিংবা কারও কাছে হাতপাতা একটি ঘৃণ্য কাজ। যত ধর্ম রয়েছে তার মধ্যে শুধু ইসলাম ধর্মেই ভিক্ষা করা কিংবা কারও কাছে হাতপাতার বিষয়ে সবচেয়ে কঠোর অবস্থানের কথা বলছে।

নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘ভিক্ষাবৃত্তি হলো ক্ষতস্বরূপ, এর দ্বারা মানুষ মুখমণ্ডলকে ক্ষতবিক্ষত করে’ (নাসায়ী শরীফ)।

হজরত আউফ ইবনে মালিক (রা.) বলেন, ‘আমরা নবী করিম (সা.) এর দরবারে নয়জন, আটজন কিংবা সাতজন ছিলাম। তিনি আমাদের বললেন, তোমরা কি আল্লাহর রাসুলের হাতে বায়াত গ্রহণ করবে না? অথচ আমরা মাত্রই আকাবায় বায়াত গ্রহণ করেছি। আমরা বললাম ইয়া রাসুল্লাহ, আমরা তো আপনার হাতে বায়াত গ্রহণ করেছি। তিনি আবার বললেন, তোমরা কি আল্লাহর রাসুলের হাতে বায়াত গ্রহণ করবে না?

আমরা তখন হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললাম, ইয়া রাসুল্লাহ আমরা তো বায়াত গ্রহণ করেছি। এখন আবার কিসের বায়াত? তিনি বললেন, এই মর্মে শপথ নাও, কেবল আল্লাহর ইবাদত করবে, তার সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে, আমিরের কথা মেনে চলবে। তারপর তিনি নিচু স্বরে একটি গোপন কথা বললেন, আর মানুষের কাছে কোনো কিছু চাইবে না (মুসলিম শরীফ)।’

আমরা যদি কাউকে ভিক্ষা বা দান করি তাহলে একটু ভেবে-চিন্তে করি। এমনও লোক আছে যারা কর্ম করেও খেতে পারে না, এবং কারও কাছে চাইতেও পারে না। এ রকম ব্যক্তি হতে পারে যে আমাদের আশেপাশেই আছে। তাদেরকে দানের চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের দানকে কবুল করুন (আমিন)।

এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • ধর্ম এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
হিলিতে প্রাণিসম্পদ মেলা অনুষ্ঠিত
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, নেবে ৬৩৮ জন
কাল শুরু হচ্ছে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী
যত টাকার মালিক নাগার্জুনা আক্কিনেনি
X
Fresh