যেখানকার যে ৭ যুবক বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবেন (ভিডিও)
আল্লাহ তা’আলা ৭ জন যুবককে ৩০৯ বছর ঘুমন্ত অবস্থায় রেখেছিলেন। যাদের ‘সেভেন স্লিপারস’ - ও বলা হয়। তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহর থেকে ১ হাজার কিলোমিটার দূরে ইজমির শহরে অবস্থিত সেই জায়গা, যেখানে ওই সাত যুবককে আল্লাহ ঘুমন্ত অবস্থায় রেখেছিলেন।
আরও তথ্যসহ বিস্তারিত জানা যাবে ভিডিওতে
এসআর/
মন্তব্য করুন
হজ যাত্রীদের জন্য সুখবর
পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদিতে আগত হজ যাত্রীদের ভিসা দেওয়া শুরু করেছে সৌদি আরব। আর তাদের থাকার জন্য আবাসিক ভবনের অনুমতি দিচ্ছে দেশটির সরকার। তারই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে মক্কায় হজ যাত্রীদর জন্য ১ হাজার ৮৬০ ভবনকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১ মার্চ) সৌদি গভর্নমেন্ট প্যানেলের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে গালফ নিউজ।
পবিত্র নগরী মক্কার ডেপুটি গভর্নর প্রিন্স সৌদ বিন মেশাল বলেন, অনুমোদিত আবাসিক ভবনে ১২ লাখ হজযাত্রী থাকতে পারবেন। শাওয়াল মাস পর্যন্ত আবাসিক ভবনের লাইসেন্স দেওয়া হবে। হিজরি বর্ষ অনুযায়ী শাওয়াল ১০তম মাস।
দেশটির হজ মন্ত্রী তৌফিক আল রাবিয়াহ জানিয়েছে, মক্কায় হজ যাত্রীদের থাকার জন্য লাইসেন্স প্রদানকৃত ভবনের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়াবে। গত বছর বার্ষিক হজ মৌসুমে বিশ্বব্যাপী ২০ লাখ হজ যাত্রী হজ পালন করেন। করোনা মহামারির পর সর্বোচ্চ সংখ্যক মুসল্লি গত বছর হজ পালন করেন। আগামী জুনে অনুষ্ঠিত হজে দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত একটি নিয়ম বাতিল করেছে সৌদি আরব। নতুন নিয়ম অনুযায়ী কোনো দেশের নাগরিকদের জন্য মক্কার আশে পাশে থাকার স্থান নির্ধারণ করা হবে না।
শুক্রবার (১ মার্চ) থেকে এ বছরের হজ যাত্রীদের জন্য ভিসা প্রদান শুরু হয়েছে, যা আগামী ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। আগামী ৯ মে থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হজে যাবেন হজ যাত্রীরা।
রমজানের আগে রাসুলুল্লাহ (সা.) যে দোয়া বেশি বেশি পড়তেন
পবিত্র রমজানের আগমনী বার্তার জানান দেয় রজব ও শাবান মাস। এ কারণেই রমজানের পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিতে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রজব ও শাবান জুড়ে ইবাদত ও রোজা রেখে প্রস্তুতি নিতেন। আর বেশি বেশি একটি দোয়া পড়তেন।
আরবি চান্দ্রবর্ষের সপ্তম মাস হলো রজব। ‘রজব’ অর্থ ‘সম্ভ্রান্ত’, ‘প্রাচুর্যময়’, ‘মহান’। হারাম তথা সম্মানিত ও যুদ্ধবিগ্রহ নিষিদ্ধ মাসগুলোর অন্যতম হলো রজব। চারটি মাসকে হারাম মাস হিসেবে ধরা হয়। এগুলো হলো জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও রজব।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা আসমান-জমিন সৃষ্টি করার দিন থেকেই বছর হয় বারো মাসে। এর মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত; তিনটি একাধারে জিলকদ, জিলহজ ও মহররম এবং চতুর্থটি হলো ‘রজব মুদার’, যা জুমাদাল উখরা ও শাবান মাসের মধ্যবর্তী।’ (মুসলিম)।
হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, ‘যখন রজব মাস আসত, তা আমরা নবীজি (সা.)–এর আমলের আধিক্য দেখে বুঝতে পারতাম।’ কোনো কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায়, নবীজি (সা.) রজব মাসে ১০টি রোজা রাখতেন, শাবান মাসে ২০টি রোজা রাখতেন; রমজান মাসে ৩০টি রোজা রাখতেন। (দারিমি)।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রজব হলো আল্লাহর মাস, শাবান হলো আমার (নবীজির) মাস; রমজান হলো আমার উম্মতের মাস।’ (তিরমিজি)।
‘যে ব্যক্তি রজব মাসে (ইবাদত দ্বারা) খেত চাষ দিলো না এবং শাবান মাসে (ইবাদতের মাধ্যমে) খেত আগাছামুক্ত করল না; সে রমজান মাসে (ইবাদতের) ফসল তুলতে পারবে না।’ (বায়হাকি)।
রজব মাসের বিশেষ আমল হলো বেশি বেশি নফল রোজা রাখা। বিশেষত প্রতি সোমবার, বৃহস্পতিবার, শুক্রবার এবং মাসের ১, ১০; ১৩, ১৪, ১৫; ২০, ২৯, ৩০ তারিখ রোজা রাখা। অধিক হারে নফল নামাজ পড়া।
রাসুলুল্লাহ (সা.) রজব ও শাবান মাসব্যাপী এ দোয়া বেশি পরিমাণে পড়তেন, ‘আল্লাহুম্মা বারাকলানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা রামাদান’। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনি রজব ও শাবান মাসকে আমাদের জন্য বরকতময় করুন এবং আমাদেরকে রমজান মাস পর্যন্ত (হায়াত দিন) পৌঁছে দিন।’ (বুখারি ও মুসলিম)।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রজব ও শাবান মাস জুড়ে এ দোয়াটি বেশি বেশি করে পড়ার এবং আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ লাভের তাওফিক দান করুন।
আল্লাহকে রাজি করাতে মানত, কী বলে ইসলাম?
মানত, খুবই পরিচিত একটি শব্দ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে। কোনও কিছু প্রাপ্তির জন্য, উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য মহান সৃষ্টিকর্তাকে রাজি করানোর উদ্দেশে হরহামেশাই ছোট-বড় বিভিন্ন কিছু মানত করে থাকি আমরা। বিশেষ করে কোনও মূল্যবান কিছু হারিয়ে গেলে তা ফিরে পেতে কিংবা আরাধ্য কোনও কিছু প্রাপ্তির আশায় তার বিনিময়ে দান-সাদকাসহ বিভিন্ন ধরনের মানত করে থাকি আমরা। কিন্তু, কোনও কিছু প্রাপ্তির বিনিময় শর্তে মানত কি জায়েজ? মানতে সত্যিই কি আরাধ্য বস্তু ধরা দেয় জীবনে; পরিবর্তন হয় ভাগ্যের? এ নিয়ে ইসলামই বা কী বলে?
মানত হলো নিজের ওপর কোনও ভালো কাজ আবশ্যক করে নেওয়া। ইসলামপূর্ব আরব সমাজে মানতের প্রচলন ছিল; এখনও এই প্রচলন কমেনি খুব একটা। পৃথিবীর প্রায় সব প্রাচীন ধর্মেই মানতের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। ইসলামিক শরিয়তেও মানতকে নাজায়েজ বা অবৈধ বলা হয়নি। তবে, প্রাপ্তির শর্তে মানত করাকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে; অনেকটা ভিক্ষাবৃত্তির মতো।
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) মানত করতে নিষেধ করেছেন। কেননা তা মানুষের কোনও কল্যাণ করতে পারে না। এর মাধ্যমে কেবল কৃপণ ব্যক্তির কাছ থেকে সম্পদ বের হয়। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৩৮০১)
তিরমিজি শরিফের ১৫৮৩ নং হাদিসেও এসেছে একই কথা। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা মানত করো না। কারণ, মানত ভাগ্য পরিবর্তন করতে অক্ষম। এর দ্বারা কৃপণ লোকের কিছু আর্থিক খরচ হয় মাত্র।’
পূর্ববর্তী আসমানি ধর্মে মানতের প্রচলন ছিল। পবিত্র কোরআনেও মানতের দৃষ্টান্ত আছে। যেমন—ইরশাদ হয়েছে, ‘স্মরণ করো, যখন ইমরানের স্ত্রী বলেছিল, হে আমার প্রতিপালক! আমার গর্ভে যা আছে তা একান্ত আপনার জন্য আমি উৎসর্গ করলাম। সুতরাং আপনি আমার থেকে তা কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৩৫)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের মধ্যে কাউকে যদি তুমি দেখো, তখন বোলো, আমি দয়াময়ের উদ্দেশে মৌনতা অবলম্বনের মানত করেছি। সুতরাং আজ আমি কিছুতেই কোনো মানুষের সঙ্গে বাক্যালাপ করব না। ’ (সুরা : মারিয়াম, আয়াত : ২৬)
শরিয়তের পরিভাষায় মানত বলতে বোঝানো হয়, ‘কোনো মুকাল্লাফ (শরিয়তের বিধান প্রযোজ্য) ব্যক্তির নিজের ওপর এমন কোনও কাজ আবশ্যক করা, যা শরিয়ত প্রণেতা আবশ্যক করেননি। ’ (আল-ফিকহু আলা মাজাহিবিল আরবায়া : ২/৭৭৯)
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, শরিয়ত মোতাবেক মানত করা বৈধ। তবে, তার দ্বারা আদতে ভাগ্যের কোনও পরিবর্তন হয় না। এছাড়া, কোনও ভালো কাজের মানত করে থাকলে তা আবশ্যক হয়ে পড়ে মানতকারীর ওপর। এক্ষেত্রেও আছে কিছু বিধিবিধান।
মানতের শর্ত
কোনো ব্যক্তির ওপর মানত আবশ্যক হওয়ার শর্ত হলো সাবালক হওয়া, জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন হওয়া এবং এখতিয়ার বা ইচ্ছাধিকার থাকা। (আল-ফিকহু আলা মাজাহিবিল আরবায়া : ২/৭৭৯)
মানত শুদ্ধ হওয়ার জন্য ইসলামী আইনজ্ঞরা আরো কিছু শর্তারোপ করেন। যেমন—নেক কাজের মানত করা, বান্দার সাধ্যের ভেতর হওয়া, নিজের মালিকানাধীন হওয়া, তা পাপের কারণ বা উপলক্ষ না হওয়া ইত্যাদি।
মানতের বিধান
মানত করলে তা পূরণ করা আবশ্যক। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর তারা যেন তাদের অপরিচ্ছন্নতা দূর করে, তাদের মানত পূর্ণ করে এবং তাওয়াফ করে প্রাচীন ঘরের। ’ (সুরা : হজ, আয়াত : ২৯)
অন্য আয়াতে মুমিনের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, ‘তারা মানত পূর্ণ করে এবং সেদিনের ভয় করে, যেদিনের বিপত্তি হবে ব্যাপক।’ (সুরা : দাহর, আয়াত : ৭)
মৃত ব্যক্তির মানত
কোনো ব্যক্তি মানত করার পর যদি তা পূরণ করার আগেই মারা যায়, তবে তার আত্মীয়-স্বজনের দায়িত্ব হলো তা পূরণ করা। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবী (সা.)-এর কাছে এক লোক এসে বলল যে, আমার বোন হজের মানত করেছিল, কিন্তু সে মারা গেছে। তখন নবী (সা.) বললেন, তার ওপর কোনো ঋণ থাকলে তবে কি তুমি তা আদায় করতে না? লোকটি বলল, হ্যাঁ। নবীজি (সা.) এরপর বললেন, কাজেই আল্লাহর হককে আদায় করে দাও। কেননা আল্লাহর হক আদায় করা আরও বড় কর্তব্য। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৬৯৯)
তবে, কোনও কোনো ব্যক্তি অন্যায় মানত করলে তা পূরণ করা মানতকারী বা তার উত্তরসূরি কারও জন্যই আবশ্যক নয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্যের মানত করে সে যেন তাঁর আনুগত্য করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর অবাধ্য হওয়ার মানত করে, সে যেন তাঁর অবাধ্য না হয়। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৩২৮৯)
বহুদিন আগের মানত
মানত করার পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলে গেলেও তা পূরণ করা আবশ্যক। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ওমর (রা.) বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি জাহেলি যুগে মসজিদুল হারামের ভেতর এক রাত ইতেকাফ করার মানত করেছিলাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমার মানত পূরণ কোরো। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২০৩২)
শরিয়তের সীমার মধ্যে থাকা
মানত পূরণের জন্য ব্যক্তি কখনও শরিয়তের সীমা অতিক্রম করতে পারবে না। ইমাম নববী (রহ.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যদি সোমবার রোজা রাখার মানত করে এবং সেদিন ঈদ হয়, তবে সে সর্বসম্মতিক্রমে রোজা রাখবে না। ’ (শরহুন নববী : ৮/১৬)
নিজের ওপর কষ্ট চাপিয়ে মানত নয়
মানতের মাধ্যমে ব্যক্তি নিজের ওপর কোনও কষ্ট চাপিয়ে নেবে না। কেননা নিজেকে কষ্ট দেওয়া ইসলাম সমর্থন করে না। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) এক বৃদ্ধ ব্যক্তিকে তার দুই ছেলের ওপর ভর করে হেঁটে যেতে দেখে বললেন, তার কী হয়েছে? তারা বলল, তিনি পায়ে হেঁটে হজ করার মানত করেছেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) তখন বললেন, লোকটি নিজেকে কষ্ট দিক, আল্লাহ তা'আলার এর কোনও দরকার নেই। অতঃপর তিনি তাকে সওয়ার হয়ে চলার জন্য আদেশ করলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৮৬৫)
বিকল্প জিনিস দ্বারা মানত পূরণ
যদি কোনও ব্যক্তি এমন কোনও বিষয়ের ওপর মানত করে, যা সেই ব্যক্তির জন্য কষ্টসাধ্য, তবে বিকল্প জিনিস দ্বারা মানত পূরণ করা বৈধ। বিশেষত বিকল্প যখন মূলের চেয়ে উত্তম হয়। যেমন— জাবির বিন আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, মক্কা বিজয়ের দিন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, নিশ্চয়ই আমি আল্লাহর জন্য মানত করেছি যে, আল্লাহ যদি আপনাকে মক্কায় বিজয়ী করেন, তবে বায়তুল মুকাদ্দাসে দুই রাকাত নামাজ আদায় করব। নবী (সা.) বলেন, তুমি এখানেই নামাজ আদায় করো। লোকটি তার কথার পুনরাবৃত্তি করল। রাসুল (সা.) বললেন, তুমি এখানে নামাজ আদায় করো। লোকটি আবারও তার কথার পুনরাবৃত্তি করল। নবী (সা.) তখন বললেন, এই ব্যাপারে তোমার স্বাধীনতা আছে। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৩৩০৫)
মানতের কাফফারা
মানত পূরণ না করলে ব্যক্তি কাফফারা দেবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, মানতের কাফফারা কসমের কাফফারার মতো। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৩৮৩৪)
কসমের কাফফারা সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর এর কাফফারা ১০ জন দরিদ্রকে মধ্যম ধরনের খাবার দান করা—যা তোমরা তোমাদের পরিবারকে খেতে দাও, অথবা তাদেরকে কাপড় দান করা কিংবা একজন দাসকে মুক্ত করা। যার সামর্থ্য নেই তার জন্য তিন দিন রোজা পালন করা। ’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৮৯)
আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন। আমিন।
মসজিদে ইফতার নিষিদ্ধ করল সৌদি
পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই মসজিদে ইফতারি খাওয়া নিষিদ্ধ করেছে সৌদি আরব।
গত সপ্তাহে দেশটির সরকার এ ঘোষণা দেয়। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ আরব এ খবর জানিয়েছে।
সৌদি আরবের ইসলামবিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি নোটিশ জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, ‘ইফতারি পণ্য নিয়ে মসজিদে যাওয়া যাবে না। মসজিদের পরিচ্ছন্নতার কথা বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
এতে আরও বলা হয়েছে, ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের ইফতারির জন্য মসজিদের উন্মুক্ত স্থানে একটি যথাযথ জায়গা খুঁজে বের করতে হবে। তবে অস্থায়ী কোনো রুম বা তাঁবু স্থাপন করা যাবে না। সেই সঙ্গে ইফতারি ক্রয়ের জন্য ইমাম ও মুয়াজ্জিনরা যেন কোনো অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে না।
নোটিশে বলা হয়েছে, মসজিদের ভেতর কোনো ধরনের ক্যামেরা ব্যবহার বা ছবি না তোলার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে মসজিদের ভেতর ক্যামেরা স্থাপন করে তা সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না।
প্রসঙ্গত, মধ্যপ্রাচ্যে আগামী ১০ মার্চ রাতে পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
যে কারণে জুমার খুতবার মাঝে বসে যান ইমাম
খুতবা আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ বক্তৃতা, প্রস্তাবনা, ভাষণ, ঘোষণা, সম্বোধন ইত্যাদি। খুতবা জুমার নামাজের আগে দিতে হয়। জুমার নামাজের জন্য খুতবা দেওয়া ওয়াজিব। জাবের ইবনে সামুরা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) দুটি খুতবা দিতেন, উভয় খুতবার মাঝখানে বসতেন। খুতবায় তিনি কোরআন পড়তেন এবং জনগণকে উপদেশ দিতেন। (মুসলিম, হাদিস : ১৮৮০)
ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) জুমার দিন দাঁড়িয়ে খুতবা দিতেন, অতঃপর বসতেন, পুনরায় দাঁড়াতেন। যেমন- আজকাল তোমরা করে থাকো। (মুসলিম, হাদিস : ১৮৭৯)
সুতরাং জুমার আগে দুই খুতবা দেওয়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা। তাই এক খুতবা দিয়ে জুমার নামাজ পড়ালে জুমার নামাজ শুদ্ধ হয়ে গেলেও তা মাকরুহ হবে। (আদ্দুররুল মুখতার : ২/১৪৮; হেদায়া : ১/১৪৮; ফাতাওয়ায়ে হাক্কানিয়া : ৩/৩৮৫)
জুমার নামাজে দুই খুতবার মাঝে ইমাম বসে থাকেন। বসার কয়েকটি কারণ আছে বলে উল্লেখ করেছেন আলেমরা। তা হলো-
মহানবি (সা.) জুমার নামাজের জন্য দুটি খুতবা দিতেন। তাই নবিজির সুন্নত আদায়ের জন্য দুটি খুতবা দিতে হয়।
দুটি খুতবা দিলে নির্দিষ্ট বিষয়ের আলোচনা পরিপূর্ণ হয়। পাশাপাশি এতে খতিবের আরাম হয় এবং শ্রোতাদের স্বস্তি হয়।
একদল আলেমের মতে, জুমার দুটি খুতবা দুই রাকাত নামাজের স্থলাভিষিক্ত। প্রতিদিন চার রাকাত জোহরের ফরজ নামাজ পড়তে হয়। এর বিপরীতে জুমার দিন দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়তে হয়। আর দুটি খুতবা বাকি দুই রাকাতের কিছুটা হলেও শূন্যতা পূরণ করে। তাই এই দুই খুতবাকে জুমার নামাজের অংশ বিবেচনা করা হয়। এবং কেউ বিশেষ কারণে জুমার জামাতে শরিক হতে না পারলে তাকে জোহরের চার রাকাত ফরজ পড়তে হয়। এই দিক থেকে জুমা ও জোহরের মধ্যে সাদৃশ্য আছে।
সেই সাংবাদিকের মরদেহ নিয়ে যা জানালেন শায়খ আহমাদুল্লাহ
রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকাণ্ডে নিহত হন সাংবাদিক বৃষ্টি খাতুন ওরফে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। কুষ্টিয়ার মুসলিম ঘরে জন্ম নেওয়া ওই সাংবাদিকের নাম ছিল বৃষ্টি খাতুন কিন্তু ঢাকায় এসে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে সাংবাদিকতা করতেন। নিজেকে হিন্দু পরিচয় দিতেন, মন্দিরে পুজা করতো। ফলে তার পরিচয় নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়।
এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সরাসরি প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন দেশের জনপ্রিয় ইসলামিক বক্তা শায়খ আহমাদুল্লাহ। সেখান থেকে বাছাই করে একটি উত্তর তুলে ধরা হলো।
মাসুম আহমেদ নামে একজন প্রশ্ন করেছেন, নিহত নারী সাংবাদিক বৃষ্টি খাতুন মুসলিম ঘরের সন্তান ছিলেন। তবে তিনি নিজেকে হিন্দু পরিচয় দিতেন, মন্দিরে পুজা করতো। তার মরদেহ দাফন নাকি সৎকার হওয়া উচিত?
উত্তরে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা বলতে চাই, কেউ যদি মন্দিরে যায়, পুজা করে এবং তার নাম পরিবর্তন করে থাকে, নিজেকে হিন্দু পরিচয় দেয়, তাহলে তাকে মুসলিম গণ্য করার কোনো সুযোগ নেই। বাবা-মার খারাপ লাগলেও বাস্তবতা হলো, সন্তান-সন্ততি যখন ছোট বেলা থেকে পর্যাপ্ত দ্বীনি শিক্ষা না পায় এবং পরিবার থেকে দ্বীনের চর্চার ঘাটতি থাকে, তখন নানাভাবে তারা বিপথগামিতার পথে চলে যান। সে দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো মানুষ যদি এমন কোনো কাজ করে, যার ফলে সে ইসলাম থেকে খারিজ (বাহির) হয়ে যায়, যেমন সে শিরকে লিপ্ত হলো প্রকাশ্যে তাহলে সে আর মুসলমান থাকে না।’
তিনি বলেন, ‘আর এ অবস্থায় যদি কেউ মৃত্যুবরণ করেন, তাহলে তাকে মুসলমানদের কবরে দাফন নয় বরং হিন্দুদের নিয়ম অনুযায়ী তাকে সৎকার করবে। তবে মেয়েটির বাবা-মার সঙ্গে মন্দিরের দায়িত্বরত ব্যক্তিবর্গদের যে বিতর্ক হয়েছে, সেখানে মা-বাবার সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে সেটা খুব দুঃখজনক। এখানে অনেক মা-বাবার জন্য অনেক শিক্ষা রয়েছে যে, ছেলে মেয়েদেরকে উচ্চ শিক্ষার নামে তাদেরকে যেখানে সেখানে পাঠাচ্ছেন। দ্বীন ধ্বংস করছেন। সে বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে এভাবে মারা যাবে তাদের মা-বাবা কেউ চিন্তা করেনি। এখানে সমাজের একটি বাস্তবতা ফুটে উঠেছে। আমাদের সন্তানদের দ্বীনদারিতার ক্ষেত্রে যদি আমরা গাফলতি করি, তাহলে আমাদের চরম মূল্য দিতে হতে পারে। আমাদের অজান্তে আমাদের সন্তান নষ্ট হয়ে গেলে, এর জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতা আছে। অতএব, শিক্ষার নামে তাদেরকে দিয়ে দিলাম আর তারা যা খুশি করলো, তা গ্রহণযোগ্য নয়।’
যাদের জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা রহমত কামনা করেন
মহান আল্লাহর অনেক গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি গুণবাচক নামের উল্লেখ থাকা সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের ফজিলত ও গুরুত্ব অপরিসীম। এই তিন আয়াতের মধ্যে মহান আল্লাহ তাঁর সুন্দর সুন্দর নাম তুলে ধরেছেন। যেসব ব্যক্তি সকাল ও সন্ধ্যায় এই তিন আয়াত তেলওয়াত করেন তাদের জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা রহমত কামনা করেন।
হজরত মাকাল ইবনে ইয়াছার (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সকালে তিন বার ‘আউজু বিল্লাহিস সামিইল আলিমি মিনাশ শাইতনির রাজিম’সহ সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত তেলাওয়াত করবে, তার জন্য মহান আল্লাহ ৭০ হাজার রহমতের ফেরেশতা নিয়োগ করবেন। সে ফেরেশতাগণ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার ওপর আল্লাহতায়ালার রহমত প্রেরণ করতে থাকবে। যদি ওই দিন সেই ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন তবে সে শাহাদাতের মর্যাদা লাভ করবে।
আর যে ব্যাক্তি সন্ধ্যার সময় এ আয়াতগুলো তেলাওয়াত করবে তার জন্যও মহান আল্লাহ ৭০ হাজার রহমতের ফেরেশতা নিয়োগ করবেন। যারা তার ওপর সকাল হওয়া পর্যন্ত রহমত প্রেরণ করতে থাকবে। আর যদি ওই রাতে সেই ব্যক্তির মৃত্যু হয় তবে তিনি শাহাদাতের মর্যাদা লাভ করবে। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস ১৯৭৯৫)।