খোকার ট্রাভেল ভিসার ব্যাপারে সহায়তা করবে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ কনস্যুলেট

নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের মেমোরিয়াল স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যান্সার সেন্টারে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার মৃত্যুর খবর গুজব ছাড়া কিছুই নয়। তার শারীরিক অবস্থা গুরুতর সত্য এবং তার অবস্থার দিনে দিনে অবনতি ঘটছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন খোকার বড় ছেলে বিএনপির বৈদেশিক বিষয়ক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন। এছাড়া হাসপাতাল থেকে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে একই ধরনের তথ্য জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ আহমদ। খোকার রোগমুক্তি কামনায় পরিবারের পক্ষ থেকে সব প্রবাসী বাংলাদেশি ও দেশবাসীর দোয়া কামনা করা হয়েছে।

এদিকে খোকার ‘দেশের মাটিতে ফিরে যাওয়ার’ শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে শুক্রবার তার পরিবারের পক্ষ থেকে নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটে তার পাসপোর্ট ফেরতের আবেদন জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসার সাথে খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনের কথা হয়েছে। কনস্যুলেট তাকে জানায়, খোকার পাসপোর্ট ফেরত দেয়ার ব্যাপারে তাদের কিছু করণীয় নেই, এটা বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত। তবে খোকার বাংলাদেশ যেতে ট্রাভেল ভিসার ব্যাপারে কনস্যুলেট সর্বোতভাবে সহযোগিতা করবে বলে জানা গেছে। খবর ইউএনএ’র।

উল্লেখ্য, ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য ২০১৪ সালের ১৪ মে সপরিবারে নিউ ইয়র্ক চলে আসেন খোকা। তারপর থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিউ ইয়র্ক সিটির কুইন্সে একটি বাসায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন এই নেতা। প্রায় তিন সপ্তাহ আগে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টারে ভর্তি করা হয় খোকাকে। গত ২৮ অক্টোবর স্বাস্থ্যের আরও অবনতি ঘটলে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে-ই (কক্ষ নং ৫১১) রয়েছেন। এদিকে তাকে দেখতে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা-কর্মীসহ কমিউনটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ হাসপাতালে ভীড় করছেন। দিনে বা রাতে অনেকই হাসপাতালে গিয়ে তাকে দেখে আসছেন। অনেকে আবার মধ্যরাতেও খোকার শয্যাপাশে গিয়ে তার খোঁজখবর নিচ্ছেন।

অপরদিকে সাদেক হোসেন খোকা চিকিৎসার জন্য নিউ ইয়র্ক আসার পর তার স্ত্রী ইসমত আরার পাসপোর্ট মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার উপক্রম হলে বিগত ২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারী পাসপোর্ট নবায়ন করার জন্য কনস্যুলেটের নির্ধারিত ফি জমা দেয়া হয় (রিসিট নং ৩৯৮৩৫৩৮, বুক নং ০৩৯৮৩৬)। ইসমত আরার বাংলাদেশি পাসপোর্ট নং এসি১২৫০৯৬৯। অনুরূপভাবে সাদেক হোসেন খোকার পাসপোর্টও মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার উপক্রম হলে একই বছরের ১৩ এপ্রিল পাসপোর্ট নবায়ন করার জন্য কনস্যুলেটের নির্ধারিত ফি জমা দেয়া হয় (রিসিট নং ৪২৪৯৩৩০, বুক নং ০৪২৪৯৪)। আর সাদেক হোসেন খোকার বাংলাদেশি পাসপোর্ট নং এসি৬৮৩২৩৯৩। কিন্তু কনস্যুলেট থেকে তাদের পাসপোর্ট আর ফেরত দেয়া হয়নি।

শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসার সঙ্গে সাক্ষাৎ ও আলোচনা শেষে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন বলেন, আব্বার শেষ ইচ্ছা বাংলাদেশে ফিরে যাওয়া এবং দেশের মাটিতেই তার মরদেহ সমাহিত হোক। সেজন্যই আমরা আমার মায়ের পক্ষে আবেদন নিয়ে আব্বার পাসপোর্ট ফেরতের জন্য কনসুলেটে আসি এবং কনসাল জেনারেলের সঙ্গে কথা বলি। তিনি বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে ট্রাভেল ভিসা প্রদানের ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। ইশরাক হোসেন তার পিতার জন্য সবার দোয়া কামনা করে বলেছেন তার মৃত্যুও খবর ভিত্তিহীন এবং গুজব ছাড়া কিছুই নয়। তিনি গুরুতর অসুস্থ সত্য তবে কথা বলতে পারছেন।

---------------------------------------------------------------
আরো পড়ুন: আমিরাতে দুটি বাংলাদেশি স্কুলে জেএসসি পরীক্ষা শুরু
---------------------------------------------------------------

অপরদিকে সাদেক হোসেন খোকার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হলেও দেশে ফেরার বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কোনও সমঝোতা করবেন না বলে জানিয়েছে তার পরিবারের সদস্যরা। পরিবারসহ বিএনপির নেতা-কর্মীদের অভিযোগ খোকা চরমভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার।

যুবদল নেতা আবু সাঈদ আহমদ জানান, সাদেক হোসেন খোকা আল্লাহর মেহেরবানীতে এখনও নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনস্থ স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টার হাসপাতালে জীবন যুদ্ধে লড়ে যাচ্ছেন। অক্সিজেনের মাধ্যমে তার শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। তার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হলেও চিকিৎসকের নিবিড় পরিচর্যায় (আইসিইউ) আছেন ।

এদিকে বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার সুস্থতা কামনায় শুক্রবার নিউ ইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন মসজিদে বাদ জুমআ বিশেষ দোয়া করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ