সিঙ্গাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ছেলে, এখনও জানে না মা
সিঙ্গাপুরের প্যান-আইল্যান্ড এক্সপ্রেসওয়েতে (পিআই) সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি শ্রমিক তোফাজ্জল হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। ৩৩ বছর বয়সী তোফাজ্জল তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। বাড়িতে তার দুই বছরের ছেলে, বিধবা স্ত্রী এবং মাসহ আরও কয়েকজন সদস্য রয়েছে। তোফাজ্জলের আয়ে সংসার চলতো এই পরিবারের।
তোফাজ্জলের ভাই আব্দুল হাজিজ বলেন, আমার ভাই মায়ের খুব আদরের ছিল। ২৭ বছর বয়সী হাজিজ বলেন, মাকে এখনও ভাইয়ের মৃত্যুর খবর জানাইনি। কারণ ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনলে মা হয়তো বাঁচবে না। তোফাজ্জলের ৫৭ বয়সী মায়ের কিছুদিন আগে হার্টের সার্জারি হয়েছিল।
হাজাজ বলেন, মাকে আমরা শুধু বলেছি যে, ভাইয়ের অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে সিঙ্গাপুরে কাজ করছিলেন তোফাজ্জল। গত মঙ্গলবার সকালে তোফাজ্জলসহ আরও ১৭ জনকে বহনকারী একটি লরি একটি স্টেশনারি টিপার ট্রাককে ধাক্কা দেয়। এ ঘটনায় তোফাজ্জলের মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা দুর্ঘটনার খরব পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। নির্বিচার ড্রাইভিংয়ের কারণ প্রাণহানি ঘটায় ৩৬ বছর বয়সী লরি ড্রাইভারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মাইগ্রান্ট ওয়ার্কার্স সেন্টার (এমডব্লিউসি) এক ফেসবুক পোস্টে জানায়, আহত হওয়া ৯ জন কর্মী হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে। আর সাতজন হাসপাতালে রয়েছে। তাদের মধ্যে দুইজন আইসিইউতে রয়েছে।
তোফাজ্জলের ৬৩ বছর বয়সী বাবা ছেলের মৃত্যুর খবর জানেন। তিনি বলেন, আমার ছেলে খুব ভালো ছিল। ওর মন অনেক ভালো ছিল। তিনি বলেন, সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমাদের অবস্থা খুব খারাপ। হাজাজ জানান, তার বাবার ডায়বেটিস রয়েছে। সম্প্রতি তিনি করোনা থেকে সেরে উঠেছেন। এক মাস আগে তার দাদা করোনায় মারা গেছে বলেও জানান হাজাজ।
হাজাজ জানান, সবশেষ ২০১৮ সালে দেশে এসেছিল তার ভাই। ওই বছরই সে বিয়ে করে। তিনি জানান, মৃত্যুর দুই আগেও তার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তবে তার ছেলের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি তোফাজ্জল। রমজানের জন্য পরিবারকে ৩৫ হাজার টাকা দিয়েছিল তোফাজ্জল। এছাড়া মায়ের অপারেশনের জন্য ২ লাখ টাকাও পাঠিয়েছিলেন তিনি।
এ
মন্তব্য করুন