• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

রিমান্ড শেষে দেশে ফেরার প্রক্রিয়ায় আছেন রায়হান

মালয়েশিয়া প্রতিনিধি

  ১৯ আগস্ট ২০২০, ১৭:৫১
rayhan kobir
রায়হান কবির

আল জাজিরায় স্বাক্ষাতকার দিয়ে মালয়েশিয়া সরকারের রোষানলে পড়া রায়হান কবিরের (২৬) বিরুদ্ধে নতুন করে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি। ১৩ দিনের রিমান্ড শেষে তাই দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়ার মধ্যেই রয়েছে নারায়নগঞ্জের এই তরুণ।

আজ বুধবার (১৯ আগস্ট) স্থানীয় সময় দুপুরে রায়হানের আইনজীবী সুমিতা শান্তিনি কিষনা ও সেলভারাজ চিন্নিয়াহ এ তথ্য জানান।

করোনা মহামারি চলাকালে অভিবাসীদের প্রতি মালয়েশিয়া সরকারের আচরণ নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলায় ২৪ জুলাই রায়হান কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৪ দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর ৬ আগস্ট পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করে। পুলিশ ১৪ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ১৩ দিন মঞ্জুর করেন। আজ ১৯ আগস্ট বুধবার রায়হানের রিমান্ড শেষ হয়েছে।

সুমিতা শান্তিনি কিষনা বলেন, রায়হানের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ায় আর কোনো অভিযোগ গঠন করা হয়নি। ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন তার করোনা পরীক্ষা করা হবে। এরপর বিমান টিকিট প্রাপ্তি স্বাপেক্ষে তাকে দেশে পাঠানো হবে। আমরা আশা করছি দ্রুতই সে দেশে যেতে পারবে। হয়তো চলতি সপ্তাতেই।

এর আগে ৫ আগস্ট মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক খায়রুল দিজাইমি দাউদ সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশের পরবর্তী ফ্লাইট যাবে ৩১ আগস্ট। সেই ফ্লাইটে রায়হানকে পাঠানো হবে।

গত ৩ জুলাই আল-জাজিরার ইংরেজি অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ‘লকডআপ ইন মালয়েশিয়ান লকডাউন-১০১ ইস্ট’ শীর্ষক এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাতে মালয়েশিয়ায় থাকা প্রবাসী শ্রমিকদের প্রতি লকডাউন চলাকালে দেশটির সরকারের নিপীড়নমূলক আচরণের বিষয়টি উঠে আসে। সেখানে দেখানো হয়েছে, কর্মহীন ও খাবারের সংকটে থাকা অভিবাসী শ্রমিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তাদের ঘর থেকে টেনে-হিঁচড়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

আল-জাজিরার ওই প্রামাণ্য প্রতিবেদনে মহামারি চলাকালে অভিবাসীদের আটক ও জেলে পাঠানোর মাধ্যমে মালয়েশিয়া সরকার বৈষম্যমূলক আচরণ করছে বলে বক্তব্য দেন রায়হান কবির। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে মালয়েশিয়ার পুলিশ তার বিরুদ্ধে সমন জারি করে। ২৪ জুলাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিবাসন নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশের ২১টি সংগঠনসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই গ্রেপ্তারের নিন্দা জানায় এবং অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করে।

রায়হান কবিরকে গ্রেপ্তার ও হয়রানির নিন্দা জানিয়ে মালয়েশিয়ার আইনজীবীদের সংগঠন ল’ ইয়ারস ফর লিবার্টি (এলএফএল) বলেছে, রায়হানের বিপক্ষে যেভাবে অভিযোগ আনা হয়েছে তা নিপীড়নমূলক। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে রায়হানের বক্তব্যটি তারা দেখেছেন। সেখানে খুব সূক্ষ্মভাবে বিচার করলেও মালয়েশিয়ার আইনের কোনো রকম লঙ্ঘন ঘটেনি। এখানে কেবল অভিবাসীদের ওপর দুর্ব্যবহারের ব্যাপারে তার হতাশার কথা ব্যক্ত করেছিলেন রায়হান।

গ্রেপ্তারের আগে রায়হান এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমার অপরাধটা কী? আমি তো কোনো মিথ্যা বলিনি। প্রবাসীদের ওপর যে বৈষম্য ও নিপীড়ন চলেছে, আমি শুধু সেই কথাগুলো বলেছি। আমি চাই প্রবাসে থাকা কোটি বাংলাদেশি ভালো থাকুক। আমি চাই পুরো বাংলাদেশ আমার পাশে থাকুক।

পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রায়হান বারবার বলেন, কোভিড-১৯ চলাকালে প্রবাসীদের প্রতি যে আচরণ তিনি দেখেছেন সেটাই তিনি বলেছেন এবং এগুলো তার একান্তই নিজস্ব অনুভূতি। তবে মালয়েশিয়ার কাউকে তিনি আহত করতে চাননি।

এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • প্রবাস এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
আল জাজিরা নিষিদ্ধে ইসরায়েলে আইন পাস
‘বাংলাদেশে বৈশ্বিক গণমাধ্যম তৈরিতে সহযোগিতা করবে কাতার’
মালিতে স্বর্ণের খনির টানেল ধস, নিহত ৭৩
তিনদিন বন্ধ থাকবে আখাউড়া স্থলবন্দর
X
Fresh