• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ১২ জুন ২০১৭, ১২:২২

আজ বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে, দ্বন্দ্ব ও বিপর্যয়ের মধ্যে শিশু মজুরি থেকে শিশুদের রক্ষা করুন। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি বাণীতে বলেন, শিশুশ্রম প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংগঠন ও সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। আর কোনো শিশু যাতে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয় এবং কোনোভাবে শিশুশ্রমে যুক্ত না হয়ে পড়ে সে লক্ষে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, সিভিল সোসাইটি ও গণমাধ্যম, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর সংশ্লিষ্টকে এগিয়ে আসতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিষয়ক এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শিশুশ্রম নিরসনে অন্যতম সূচক হিসেবে নির্ধারণ করেছে। যেকোনো সংঘাত, সঙ্কট, দুর্যোগে শিশুদের নিরাপদ রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন নীতি-২০১০ প্রণয়ন করেছে। এসডিজিকে সামনে রেখে ২০২৫ সাল পর্যন্ত জাতীয় কর্মপরিকল্পনা মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিতে ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫ প্রণয়ন করেছি।

১৯৮৯ সালের ২০ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ‘জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ’অনুমোদিত হয়। ১৯৯২ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) শিশুশ্রম বন্ধ করতে কর্মসূচি হাতে নেয় এবং ২০০২ সালের ১২ জুন থেকে আন্তর্জাতিক শিশুশ্রম সংস্থা (আইএলও) বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিবছর দিবসটি ‘বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস’হিসেবে পালন করে আসছে।

বর্তমানে বাংলাদেশসহ ৮০টি দেশ এ দিবসটি পালন করছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও’র সর্বশেষ এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বের প্রতি ছয় শিশুর মধ্যে একজন শ্রমিক এবং প্রতি তিন শিশুশ্রমিকের মধ্যে দুজনই গৃহকর্মের সঙ্গে যুক্ত। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশই গৃহকর্মী শিশুদের সুরক্ষায় তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। আইএলও’র হিসাবে বিশ্বে প্রায় ২৪ কোটি ৬০ লাখ শিশু নানাভাবে শ্রম বিক্রি করছে। তার মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে ১৮ কোটি।

আইএলও’র হিসাবে যে সংখ্যা দেয়া হয়, বাস্তবে তার সংখ্যা আরো বেশি। ২০০৫ সালের পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী আমাদের দেশে ৫ থেকে ৭ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা ৪২.৩৯ মিলিয়ন। তার মধ্যে ৩.১৮ মিলিয়ন শিশুশ্রমিক। বাংলাদেশের শিশুরা কলকারখানা, হোটেল-রেস্তোরাঁ, বাসাবাড়িতে কাজ করা ছাড়াও মাদক উৎপাদন, পাচার, পর্নগ্রাফি, যৌনকর্মী ও দাসত্বের শৃঙ্খলে আজও বন্দি। শিল্পায়নের যুগেও কমছে না ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম। ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত অসংখ্য শিশুশ্রমিকের প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।

‘ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন করি, শিশু শিক্ষা নিশ্চিত করি’সেমিনার আর গোলটেবিল বৈঠকে এমন অনেক স্লোগান উচ্চারিত হয় এই দিবসে। কিন্তু সেগুলো শুধু সেমিনার আর গোলটেবিল বৈঠকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়। বিভিন্ন এনজিও শিশুদের কথা বলে বিদেশ থেকে যে ফান্ড সংগ্রহ হয় সেগুলোর কতটুকু শিশুদের জন্য ব্যয় হয়? আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বিশ্ব শিশুশ্রম বিরোধী দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেছে, বেশির ভাগ শিশুই এমন অবস্থায় কাজ করছে যা ‘ক্রীতদাসের কাছাকাছি’।

এতে বলা হয়েছে, কর্মরত বেশির ভাগ শিশুশ্রমিকের বয়সই ৫ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে এবং এদের ৭১% শতাংশ মেয়েশিশু। এদের অধিকাংশই শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এসব শিশু শারীরিক এবং যৌন সহিংসতার ঝুঁকির মুখে রয়েছে। শিশুশ্রম বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অপ্রকাশিত থাকে উল্লেখ করে আইএলও এ ব্যাপারে নতুন আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান আহ্বান করেছে। শিশুশ্রমিকরা বেশির ভাগই ঘরে কাজ করায় তাদের কাজের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। ‘শিশুরা কাজ করে কিন্তু শ্রমিক হিসেবে তাদেরকে গণ্য করা হয় না এবং পারিবারিক পরিবেশে থাকা সত্ত্বেও তাদের প্রতি পরিবারের সদস্যের মতো আচরণ করা হয় না’ বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।

আর/সি

মন্তব্য করুন

daraz
  • কিডস এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh