• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

করোনাকালে জনস্বার্থে কাজ করছে নোবিপ্রবি'র অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগ

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১০ জুলাই ২০২১, ২২:৩৬
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডঃ ফিরোজ আহমেদ

বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণের শুরুর দিকে দেশের যে কয়টি বিশ্ববিদ্যালয় জনস্বার্থ বিবেচনায় নিজেদের সীমিত সম্পদকে কাজে লাগিয়ে দেশের মানুষের সেবাদানের জন্য করোনা পরীক্ষার ল্যাব চালু করেছিল এর মধ্যে অন্যতম নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ দিদারুল আলমের নেতৃত্বে এ কাজে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীগণ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগে স্থাপিত করোনা টেস্টিং ল্যাবে গত বছর করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট ৪০ হাজারেরও অধিক নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে নোয়াখালী ও পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীপুর জেলার দশটি উপজেলার মানুষকে সেবা দিয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে ৫টি গবেষণা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে ল্যাবরেটরির দক্ষতা যাচাই পরীক্ষায় অর্জন করেছে শতভাগ সাফল্য। এই করোনা ল্যাবের ফোকাল পয়েন্টের দায়িত্ব পালন করছেন অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডঃ ফিরোজ আহমেদ। কথা হয়েছে তার সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনা ল্যাব প্রতিষ্ঠা এবং শিক্ষা ও গবেষণার নানা বিষয় নিয়ে।


প্রশ্নঃ মহামারির মত কঠিন পরিস্থিতিতেও কিভাবে যাত্রা শুরু হয়েছিল নোবিপ্রবি করোনা ল্যাবের?

ডঃ ফিরোজ আহমেদঃ বাংলাদেশে প্রথম করোনা মহামারি শুরু হয় গত বছরের অর্থাৎ ২০২০ সালের মার্চ মাসে। সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়া নিয়ে চরম অস্বস্তিতে পড়েছিল। সারাদেশে লকডাউন দিয়ে দেয়া হলো। ঠিক সেই সময়টাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে জেলা সিভিল সার্জনের তত্ত্বাবধানে বৃহত্তর নোয়াখালী জেলার করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি মোকাবেলায় টেস্টিং সুবিধা চালু করার প্রস্তুতি হিসেবে নোয়াখালীস্থ আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে সিভিল সার্জনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের আরটিপিসিআর মেশিন ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। তখন আমাদের মাননীয় উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ মহোদয় এবং অধ্যাপক ডঃ নেওয়াজ মোঃ বাহাদুর আমাকে করোনা টেস্ট করার সক্ষমতা আছে কিনা তা জানতে চান। ইতোমধ্যে আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ আমিনুল ইসলাম কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে আরটিপিসিআর টেস্টিং সহায়তা করতে চলে গেছে। আমি আমার বিভাগের শিক্ষক, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মোঃ শরিফুল ইসলাম ও আমিনুলের সাথে কথা বলে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে করোনা পরীক্ষা সম্পন্ন করা সম্ভব বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেই। পরবর্তীতে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ দিদারুল আলম ও অধ্যাপক ডঃ নেওয়াজ মোঃ বাহাদুরের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় থেকে অনুমতিপত্র বের করা হয়।

উল্লেখ্য, নোয়াখালীতে একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ থাকায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে করোনা টেস্টিং করার অনুমতি প্রদান ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জাতীয় ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনীহা সুস্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়। যে কারণে আমাদের ল্যাবরেটরিতে একটু দেরিতে অর্থাৎ ২০২০ সালের মাঝামাঝি থেকে করোনা পরীক্ষা শুরু হয়।

প্রশ্নঃ বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ল্যাব প্রতিষ্ঠায় কি কি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছিলেন আপনারা?

ডঃ ফিরোজ আহমেদঃ করোনা টেস্টিং ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠায় আমাদের অনেকগুলো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে। আগেই জানিয়েছি যে, সরকারের অনুমতি পেতে বড় ধরনের বাধা সামলাতে হয়েছে। তারপর মাত্র সাতদিনের মধ্যে সকল প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ ও মেশিনের ব্যবস্থা করা ও টেস্টিং উপযোগী নেগেটিভ ও পজিটিভ প্রেসার সুবিধাদিসহ ল্যাবরেটরি প্রস্তুত করা বিশাল চ্যালেঞ্জ ছিল। মাননীয় উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ মহোদয় ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডঃ নেওয়াজ মোঃ বাহাদুরের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে এবং স্থানীয় মাননীয় সংসদ সদস্যদের আর্থিক সহায়তায় করোনা টেস্টিং চালু করা সম্ভব হয়েছে। এতকিছুর পর আমি ঢাকাস্থ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে টেস্টিং কিট ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জামাদি আনার জন্য নিজে গিয়েছিলাম। সেখানে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অফিসে আমাকে জানানো হল যে, মেডিকেল কলেজ ছাড়া অন্যদের টেস্টিং করার ব্যাপারে নানা ধরনের পক্ষ থেকে আপত্তি আছে। আমি তাদেরকে জনস্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে ল্যাবরেটরি প্রস্তুতকরণ, যন্ত্রাংশের ব্যবস্থা করা সহ সামগ্রিক বিষয়টি বুঝিয়ে বলার পর কেবলমাত্র টেস্টিং কিট পেয়েছিলাম। আনুষঙ্গিক অন্যান্য সামগ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে কেনা হলো। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে করোনা টেস্টিং কিট ও আনুষাঙ্গিক সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ল্যাবরেটরি পরিচালনার সকল ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে তিনবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন করোনা টেস্টিং ল্যাবরেটরির বাজেট চেয়ে পত্র প্রদান করেছে এবং আমরা যথাযথ ভাবে তা প্রেরণ করেছি। যতদূর জানি, এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পক্ষ থেকে আর্থিক বরাদ্দ আসেনি। কথাটা এই কারণে বলছি যে, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের করোনা টেস্টিং ল্যাবরেটরি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও দেশমাতৃকাকে রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিনা পারিশ্রমিকে নিজের জীবনকে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রেখে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করার অনন্য নজির স্থাপন করেছে।

প্রশ্নঃ বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগে প্রতিষ্ঠিত এই ল্যাব পরিচালনায় বিভাগের ভূমিকা কতখানি বলে মনে করেন?

ডঃ ফিরোজ আহমেদঃ অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগ পরিবারের শতভাগ সমর্থন ছাড়া করোনা টেস্টিং ল্যাবরেটরি প্রস্তুত করা সম্ভব হতো না। বিভাগের শিক্ষার্থীদের সেমিনার লাইব্রেরীতে করোনা টেস্টিং

এফএ

মন্তব্য করুন

daraz
  • সাক্ষাৎকার এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh