• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

অসহায়ের সহায় ‘সঙ্গে আছি’

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ২৩ মে ২০২০, ১৯:৪২
Helping the helpless
অসহায়ের সহায় ‘সঙ্গে আছি’র সচিত্র কাযক্রম, ছবি: সংগৃহীত

সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে মহামারি করোনাভাইরাস। এর ভয়াবহতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। খেটে খাওয়া মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে। ঠিক এই মুহূর্তে আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে এসেছেন একদল তরুণ।

করোনাকালে শুধু সরকারি ত্রাণের অপেক্ষায় বসে না থেকে নিজেরা উদ্যোগী হয়ে নিঃস্বার্থভাবে অসহায় মানুষ ও পশুপাখিদের কাছে খাবার পৌছে দিচ্ছেন পেশায় ‘সাংবাদিক’এসব তরুণদের সংগঠন ‘সঙ্গে আছি’। তাদের লক্ষ্য একটাই- কোনো মানুষ ও পশুপাখিই যেনো অভুক্ত না থাকে।
লকডাউনে বেদে সম্প্রদায়ের আয়-রোজগার নেই। তাই তুরাগে এই সম্প্রদায়ের ৬৫ পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী উপহার দিয়েছে ‘সঙ্গে আছি’। এছাড়া হিজরা ও ডোম সম্প্রদায়ের ৩০০ জনকেও খাদ্যসামগ্রী উপহার দিয়েছে সংগঠনটি।

অন্যদিকে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে রাজধানীর খাবারের হোটেল বন্ধ। তাই খাবারের উচ্ছিষ্ট জুটছে না কুকুরের ভাগ্যে। ফলে অভুক্ত থাকছে কুকুর। খাবার না পেয়ে অবলা প্রাণ কষ্ট পাচ্ছে। তাই অভুক্ত এসব কুকুরদেরও খাবার দিচ্ছে ‘সঙ্গে আছি’সংগঠনটি। গভীর রাতে ঢাকার রাস্তায় ঘুরে ঘুরে প্রায় চার হাজার কুকুরকে খাবার দিয়েছে এই সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা।

করোনায় লকডাউনে মানুষ যেমন বিপদে আছে, তেমনি খাবারের অভাবে বিপাকে পড়েছে পুরান ঢাকার বানরও। ঢাকা শহরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সরাসরি মিশে আছে এসব বানর। পুরান ঢাকার অলিগলি ঘুরে বানরকে ফল খাইয়েছে তারা। প্রায় ১৫০টি বানরের মুখে খাবার তুলে দেয় সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবীরা।

পুরান ঢাকার ঐতিহ্যের ধারক টমটমে এক জোড়া ঘোড়া ব্যবহার হয়ে থাকে। রাজধানীর বঙ্গবাজারে উড়াল সড়কের নিচেই রয়েছে ৪৫টি টমটমের ঘোড়া। গাড়ি চলে না, তাই আয় বন্ধ। ঘোড়ার খাবার দিতে হিমশিম খাচ্ছে মালিক। খবর পেয়ে, এসব ঘোড়ার একদিনের খাবার দিয়েছে সংগঠনটি।
এই লকডাউনে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছে মধ্যবিত্তরা। তাদের কথা মাথায় রেখে সঙ্গেআছির ফেসবুকপেইজের মাধ্যমে ঠিকানা সংগ্রহ করে মধ্যবিত্তদের বাসায় গিয়ে খাদ্যসামগ্রী (চাল, ডাল, তেল, আলু, পিয়াজ, আদা ও রসুন) পৌছে দিচ্ছেন তারা। রাতে রাজধানীর রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ছিন্নমূল মানুষকে রান্না করা খাবারও খাওয়ানো হচ্ছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে।

রাজধানীতে প্রায় প্রতিদিন বিকেলে পথচারী, রিকশাচালক, ভিক্ষুক ও ছিন্নমূল মানুষদের মাঝে ইফতার বিতরণ করছে সেচ্ছাসেবী সংগঠনটি। ইফতারের আগ মুহূর্তে খাবার পেয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন রোজাদারেরা। দুই হাজার মানুষকে এই উদ্যোগের মাধ্যমে উপহার দেন তারা।

সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে রমজানের বাকি দিনগুলোতে এই ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ‘সঙ্গে আছি’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

তারা জানান, করোনাভাইরাসের কারণে অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ঠিকমতো তিনবেলা খাবার পাচ্ছেন না। নিম্নআয়ের মানুষের অবস্থা আরও করুণ। অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার লজ্জায় কারও কাছে খাবার চাইতে পারছেন না, না খেয়ে দিন পার করছেন। এসব বিষয় মাথায় রেখে লকডাউনের শুরু থেকে 'সঙ্গে আছি, সঙ্গে থাকুন' স্লোগানে ওই সংগঠন যাত্রা শুরু করে।

সংগঠনটির উদ্যোগে প্রতিদিন নগরের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে পাঁচশতাধিক মানুষকে খাবার বিতরণ করা হয়। ইতোমধ্যে সাত হাজার মধ্যবিত্ত পরিবারের মাঝে খাদ্যপণ্য বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিদিন পশুপাখিকেও খাবার বিতরণ করা হয়।

সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি জানান, আসন্ন ইদকে সামনে রেখে ইদ উপহার বিতরণ করা শুরু হয়েছে। অসহায় মানুষদের সহায়তা করতে পারাই এই সংগঠনের সফলতা। সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সকল সামর্থ্যবান পেশাজীবী মানুষের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • করোনাভাইরাস এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সন্দ্বীপে শতাধিক অসহায় পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ 
মালয়েশিয়ার কাছে অসহায় বাংলাদেশ!
‘আ.লীগ সবসময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়’
অসহায়-এতিম বাচ্চাদের জন্য জয়ার অনুরোধ
X
Fresh