করোনার চিকিৎসায় কী আশার আলো দেখাচ্ছে ‘একটেমরা’?
চলতি এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ। দেশে করোনার সংক্রমণ ধীরে ধীরে ঊর্ধ্বগতির দিকে। রাজধানী ঢাকার এক বাসিন্দা তার করোনা আক্রান্ত বাবাকে নিয়ে তখন একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। চিকিৎসকরা রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে রোগীর শরীরে একটি ঔষধ প্রয়োগ করার জন্য সিদ্ধান্ত নেন। নাম ‘একটেমরা’। কিন্তু এই ‘একটেমরা’ মূলত কী?
‘একটেমরা’ হচ্ছে টসিলিজুমাব গ্রুপের একটি ইনজেকশন। রোগীর ছেলে টানা তিনদিন ইনজেকশনটি জোগাড়ের জন্য শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। অনেক কষ্টের পর ঔষধের আমদানি-কারক এবং পরিবেশন প্রতিষ্ঠান রেডিয়েন্ট থেকে ক্রয় করেন।
রোগীর ছেলে জানায়, ইনজেকশনটি তার বাবার শরীরে প্রবেশের পর ইতিবাচক সাড়া মিলে। ফলে চিকিৎসকরা দ্বিতীয় ডোজের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়। ইনজেকশনটি ক্রয় করার সময় তিনি অনেক মানুষকে এটি কেনার জন্য অপেক্ষা করতে দেখেন। যে কারণে দ্বিতীয় ডোজের ঔষধ আর সংগ্রহ করতে পারেননি। চিকিৎসকরা তাকে বলেছিলেন দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার পর তার বাবার বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকত। কিন্তু ছেলে সময়মত ঔষধটি সংগ্রহ করতে পারেনি।
কেন এত চাহিদা এই ঔষধের : টসিলিজুমাব এই ঔষধটি মূলত আর্থ্রাইটিস (বাত) রোগের। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে গবেষণার ফল বলছে ঔষধটি নোভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে জীবন রক্ষায় কাজ করছে। দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর চলতি এপ্রিল মাসের শুরু থেকে প্রচুর চাহিদা তৈর হয় টসিলিজুমাব ঔষধের।
ঔষধটির উৎপাদক সুইজারল্যান্ড-ভিত্তিক বিশ্ব বিখ্যাত রোশ কোম্পানি। আর এটি বাংলাদেশে আমদানি করছে রেডিয়েন্ট বিজনেস কনসোর্টিয়াম।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে প্রতি তিন থেকে চারদিন পরপর ঔষধটি সুইজারল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে আসে। প্রতিবার ২০০-২৫০ ভায়েল আসে। আর এই সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশে ঔষধটির তিনগুণ চাহিদা তৈরি হয়েছে বলে জানাচ্ছে চিকিৎসক ও হাসপাতাল সূত্রগুলো।
এসআর/
মন্তব্য করুন