• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

ভারতে ঘরে ফিরেও মার খেতে হচ্ছে ভিনরাজ্যে যাওয়া শ্রমিকদের

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ২৮ মার্চ ২০২০, ০৭:৪৯
ভারতে ঘরে ফিরেও মার খেতে হচ্ছে ভিনরাজ্যে যাওয়া শ্রমিকদের
ছবি: সংগৃহীত

অভুক্ত অবস্থায় মাইলের পর মাইল হেঁটে, পুলিশের মার খেয়ে কোনওক্রমে গ্রামে পৌঁছানোর পরেও বিপদ কাটছে না ভিন রাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিকদের। গ্রামবাসীদের রোষের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।

কেউ ৮০ কিলোমিটার হেঁটে বাড়ি ফিরেছেন। কেউ হাঁটছেন ২০০ কিলোমিটার। এমনকি, পাঁচশো কিলোমিটার হেঁটে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেছেন কেউ কেউ। তারা সবাই শ্রমিক। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন। নিজের রাজ্য ছেড়ে, গ্রামের বাড়ি ছেড়ে ভিন রাজ্যে থাকেন। কেউ সপরিবার, কেউ বা একা। করোনার ফলে লকডাউন হয়ে যাওয়া ভারতে তাদের দুর্গতির শেষ নেই। একে তো খাবার নেই, থাকার জায়গা নেই, হেঁটে অভুক্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। মাঝে মধ্যেই পুলিশের লাঠির বাড়ি খেতে হচ্ছে। বাড়ি ফিরেও নিস্তার নেই। গ্রামের লোক তাদের ঘরে যেতে দিচ্ছেন না। মারধর পর্যন্ত করছেন। হৃদয়হীন শহর তাদের পাশে দাঁড়ায়নি। নিজের গ্রামও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে তাদের ঠাঁই দিচ্ছে না। অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন তারা।

করোনার ভয় বা আতঙ্কে লোক দিশেহারা। তাই প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে ঘরে ফেরা শ্রমিকদের সঙ্গে। ঝাড়খণ্ডে গ্রামে ফেরার পর এরকমই এক শ্রমিককে ধরে মারা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমে একজন গ্রামবাসী ফেরার পর তাকে ঢুকতে না দিয়ে মেরেধরে গ্রাম থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। বর্ধমান জেলার কাটোয়ার অভিজ্ঞতা তো আরও খারাপ। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় জানিয়েছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের অনেক কাগজেই খবর বেরিয়েছে, কাটোয়া পুরসভা উদ্যোগ নিয়ে বিহার থেকে আসা শ্রমিকদের তাদের রাজ্যে ফেরাতে যায়। তাদের বাসে করে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বিহার পুলিশ ও প্রশাসন তাদের ঢুকতেই দেয়নি। তারা আবার কাটোয়ায় ফিরে এসেছেন। পুরসভা এখন তাদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। বিভিন্ন রাজ্যে হাজার হাজার শ্রমিক আটকে পড়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকার বিদেশে আটকে থাকা ভারতীয়দের চার্টার্ড বিমানে করে নিয়ে আসতে পারেন, অথচ, এই শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করতে পারেন না। আর দুই দিন ট্রেন চালালে কী ক্ষতি হত? অভিজ্ঞতা বলছে, বড়লোকরাই বিদেশ থেকে এই সংক্রমণ নিয়ে ফিরছেন। গরিবরাপরে তাদের সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত হচ্ছেন।’

ঠিকই, লকডাউনের সময় সম্ভবত ভিন রাজ্যের শ্রমিকদের কথা মাথায় রাখা হয়নি বা রাখা যায়নি। সংক্রমণ যাতে না ছড়ায়, তাই তড়িঘড়ি কেন্দ্রকে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। ফলে এই শ্রমিকরা অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে পড়েছেন।