করোনা মোকাবিলায় রাশিয়ার সাফল্য ঈর্ষণীয়
চীনের সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে রাশিয়ার। তবুও দেশটি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। কিন্তু কি করে তা সম্ভব হলো!
প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি জনসংখ্যার দেশ রাশিয়ায় কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন এখন পর্যন্ত ২৫৩ জন এবং মৃতের সংখ্যা মাত্র একজন। যেখানে ছয় লাখ ২৮ হাজার জনসংখ্যার ধনী দেশ লুক্সেমবার্গে আক্রান্ত হয়েছে ৬৭০ জন এবং মারা গেছেন আট জন। ইতালিতে সাড়ে ছয় কোটি মানুষের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ৫৩ হাজার ৫৭৮ এবং মারা গেছেন চার হাজার ৮২৫ জন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, আগেই কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কারণে তার দেশ করোনাভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছেন এবং দেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
করোনাভাইরাস নিয়ে রাশিয়া অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করছে। দেশটিতে সব ধরনের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। যাতে বেশি মানুষ একসঙ্গে সমবেত হতে না পারে।
জানুয়ারিতে প্রথম করোনাভাইরাসের রোগী পাওয়া যাওয়ার পরই রাশিয়া ৩০ জানুয়ারি চীনের সঙ্গে থাকা তার দুই হাজার ৬০০ মাইল সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। সেই সঙ্গে তৈরি করে কোয়ারেন্টিন জোন। বিশেষজ্ঞদের মতে শুরুতেই এমন ব্যবস্থা নেয়ার কারণে দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়নি।
শুরু থেকেই রাশিয়া করোনাভাইরাস পরীক্ষার ওপর জোর দেয়। সামান্যতম লক্ষণ দেখা দিলেই তার পরীক্ষা করা হয়েছে।
রাশিয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. মেলিতা ভজনোভিচ বলেছেন, ‘পরীক্ষা ও সনাক্ত করা, সংক্রমিত রোগী কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে তাদের পরীক্ষা করা, আইসোলেশনের মতো ব্যবস্থা যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রস্তাব করেছে সেগুলো রাশিয়ায় শুরু থেকেই ছিল। সেই সঙ্গে ছিল সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, যা সত্যি তুলনামূলকভাবে খুবই দ্রুত শুরু হয়েছিল।
রাশিয়ার এলায়েন্স অব ডক্টরস ইউনিয়নের নেতা আনাস্তাসিয়া ভাসিলিভা দাবি করেছেন রাশিয়ার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ করোনাভাইরাসে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা কম দেখাচ্ছে। কোনও রোগী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেও নিউমোনিয়া কিংবা একিউট রেসপাইরেটরি ইনফেকশনে মারা গেছেন বলে জানানো হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এত কম হওয়া নিয়ে পুতিন বলেছেন, সরকারের কাছে হয়ত প্রকৃত পরিসংখ্যান নেই, কিন্তু কোনও কিছু লুকানো হচ্ছে না।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষের কাছে হয়তো সম্পূর্ণ পরিসংখ্যানটি নেই। কারণ অনেক সময় রোগীরা তাদের সমস্যা জানায় না এবং অনেক সময় তারা জানেই না যে তারা অসুস্থ। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে যে তথ্য আছে তাই সবাইকে জানানো হচ্ছে।
এমকে
মন্তব্য করুন