• ঢাকা সোমবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১
logo

ভয়ের কিছু নেই, দেশে দুই যুগ ধরেই আছে এইচএমপিভি ভাইরাস

আরটিভি নিউজ

  ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:০৭
ফাইল ছবি

চীন-জাপানে দ্য হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাসের (এইচএমপিভি) প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। এ ছাড়া মালয়েশিয়া, ভারতেও এইচএমপিভি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বা এইচএমপিভি নতুন কোনো ভাইরাস নয় বলে জানিয়েছেন আইইডিসিআরের সাবেক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন।

২০০১ সালে আবিষ্কৃত ইনফ্লুয়েঞ্জা ঘরানার এই ভাইরাস বহু আগেই বাংলাদেশে শনাক্ত হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, আতঙ্কিত না হয়ে ছড়িয়ে পড়া রোধে মাস্ক ব্যবহার, হাত ধোয়াসহ বিভিন্ন সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে সাবধান থাকতে হবে শিশু, বয়স্ক ও গর্ভবতীদের।

তবে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য স্বাস্থ্য বিভাগকে প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাস অনেক আগে থেকেই আছে। এটি নিয়ে বিশেষ কোনো উদ্বেগের কারণ নেই। এটা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতোই একটা রোগ। তবে এই রোগটাকে প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করা উচিত। কারণ, যে ভাইরাস দ্রুত মানুষ থেকে মানুষে রোগ ছড়ায়, সেটা মানুষকে অসুস্থ করার ক্ষমতা বেড়ে যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, শিশু, বয়স্ক, গর্ভবতী এবং যারা দীর্ঘদিন ধরে অন্যান্য রোগে ভুগছেন, তাদের জন্য অন্যন্য ভাইরাসের মতো এই ভাইরাসেও জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাদের ক্ষেত্রে জ্বর, সর্দি, হাঁচি, কাশি হলে অবশ্যই আইসোলেশনে নিয়ে চিকিৎসা দিতে হবে।

এ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসটির মূল লক্ষণ শ্বাসতন্ত্রের জটিলতা। রোগটি আগেও এ দেশে ছিল, এখনও আছে। এতে মৃত্যুর ঘটনা নেই বললেই চলে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. তাহমিনা শিরীন বলেন, শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়—এমন অন্যান্য ভাইরাসের মতোই এটি। অনেকটা ইনফ্লুয়েঞ্জা ধরনের ভাইরাস। যার উপসর্গ হলো জ্বর-সর্দি-কাশি-ঠান্ডা।
কভিড-১৯ একেবারে ভিন্ন ও নতুন আবহের ভাইরাস হওয়ায় এর প্রাদুর্ভাব বা মহামারির রেশ এতটা বিস্তৃত হয়েছিল। তবে এইচএমপিভি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, এশিয়ার চীন, ভারতসহ বেশ কিছু দেশে এইচএমপিভি বা হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস ভাইরাসের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দেওয়ার অবস্থা তৈরি হতে পারে। অনেকে কভিড ১৯-এর কথা মনে করছে।

তিনি আরও বলেন, এইচএমপিভি সংক্রমণে ঠাণ্ডা জ্বর বা ফ্লুর মতো অসুস্থতা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জ্বর, সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা ইত্যাদি হয়। তবে তীব্র কাশি, শ্বাসের অসুবিধা, শ্বাসটান বৃদ্ধি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি হতে পারে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু এবং ৬৫ বছরের বেশি ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে অসুস্থতা তীব্র হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে এইচএমপিভি একটি সাধারণ রোগ। উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে মৃত্যুর সংখ্যা নগণ্য।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান ডা. আরিফা আকরাম বলেন, গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনায় প্রায় দুই দশক আগেই রেসপিরেটরি প্যানেলে এই ভাইরাসের উপস্থিতি আমরা নিয়মিতভাবে পেয়েছি। আমাদের দেশে মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বেসিক সায়েন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. সাইফ উল্লাহ মুন্সী বলেন, এই ভাইরাস মানুষ ছাড়াও অন্য প্রাণীতেও রয়েছে। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনা নেই। সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে এই ভাইরাসের ঝুঁকি তেমন নেই বললেই চলে। তবে বয়স্ক ও শিশুরা ঝুঁকিতে রয়েছে।

তিনি বলেন, ২০০৭ সালের পর ২০২০ সালে এইচএমপি ভাইরাসের উপস্থিতি বাংলাদেশে ছিল। ধারণা করা হয়, এখনও আছে। যেহেতু এর প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কার হয়নি। সুতরাং করোনা মোকাবিলায় যেসব সতর্কতা নেওয়া হয়েছিল, একই পদক্ষেপে এই ভাইরাস থেকে নিরাপদে থাকা সম্ভব।

২০০১ সালে নেদারল্যান্ডসের ২৮ শিশুর শরীরে ছড়িয়ে পড়লে আবিষ্কার হয় ইনফ্লুয়েঞ্জা ঘরানার এই ভাইরাস।

আরটিভি/এমএ/এস

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • স্বাস্থ্য এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বিশ্বে চোখ রাঙাচ্ছে এইচএমপিভি ভাইরাস, যে বার্তা দিলো যুক্তরাষ্ট্র
এইচএমপিভি ভাইরাস নিয়ে শাহজালাল বিমানবন্দরে সতর্কতামূলক নির্দেশনা
এইচএমপিভি ভাইরাস ঠেকাতে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে সতর্কতা
এইচএমপিভি ভাইরাস যেভাবে ছড়ায়, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ