বেড়েছে করোনায় সংক্রমণের হার, মারা গেলেন আরও ২৩ জন
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫ হাজার ৮৬১ জনে। এছাড়া করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে আরও ১ হাজার ৪৯৩ জনের দেহে। এ নিয়ে মোট শনাক্ত হলো ৪ লাখ ৩ হাজার ৭৯ জন করোনা রোগী।
বুধবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংস্থার অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এদিন সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬১০ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ১৯ হাজার ৭৩৩ জন।
এর আগে মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) দেশে আরও ১ হাজার ৩৩৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে মারা যান আরও ২০ জন।
এসজে
মন্তব্য করুন
বছরে দেশের ২ লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ হৃদরোগে মারা যায়
বাংলাদেশে প্রতি বছর ২ লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। আর এর অন্যতম প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ।
শনিবার (২ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত ‘ইশ্রুভিং কার্ডিওভাসকুলার হেলথ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এই তথ্য তুলে ধরা হয়। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ, প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান), গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) এবং রিজলভ টু সেভ লাইভস (আরটিএসএল) যৌথভাবে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।
এসময় হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ও কিডনি রোগের জন্য দায়ী এই উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধযোগ্য উল্লেখ করে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে শক্তিশালীকরণ এবং স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে রিজলভ টু সেভ লাইভসের প্রেসিডেন্ট ও যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) প্রাক্তন পরিচালক ডা. টম ফ্রিইডেন বলেন, বাংলাদেশে প্রতি ৪ জনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। সংক্রামক রোগজনিত মৃত্যু প্রতিরোধে বাংলাদেশ দ্রুত অগ্রগতি সাধন করেছে। একইভাবে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক প্রতিরোধেও বিশ্বে অনুকরণীয় হতে পারে দেশটি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা গ্রহণকারীর সংখ্যা ২০ গুণ এবং চিকিৎসা সেবার মান দ্বিগুণ করতে সক্ষম হয়েছে। উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা প্রদানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা শক্তিশালী করা হলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে এবং বাঁচানো যাবে অসংখ্য জীবন।
উচ্চ রক্তচাপের কারণ উল্লেখ করে ডা. টম ফ্রিইডেন আরও বলেন, বয়স্ক জনসংখ্যা বৃদ্ধি, দ্রুত নগরায়ন, কায়িক পরিশ্রমের অভাব, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য গ্রহণ এবং অন্যান্য আর্থ- সামাজিক ও জীবনযাত্রা সম্পর্কিত বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপ এবং উচ্চ রক্তচাপজনিত অন্যান্য অসংক্রামক রোগের প্রকোপ দ্রুত বাড়ছে। উচ্চ রক্তচাপজনিত অসংক্রামক রোগের বোঝা কমাতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং এজন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করা জরুরি।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি গ্রহণের ফলে বিগত কয়েক বছরে এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এই কর্মসূচি এখন দেশের ১৭১টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু রয়েছে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের হার বেড়ে ২৬ শতাংশ থেকে ৫২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
জিএইচএআই'র বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, স্বাস্থ্য কর্মসূচি হতে হবে সমন্বিত। আমরা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ওষুধ প্রাপ্তি বৃদ্ধি এবং লবণ ব্যবহার হ্রাসে বাংলাদেশের চলমান অগ্রগতিতে অব্যাহতভাবে সহায়তা প্রদানে আগ্রহী। জিএইচএআই এবং তার সহযোগী সংস্থাসমূহ বাংলাদেশে হৃদরোগ পরিস্থিতির উন্নয়নে কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য বিষয়ক অলাভজনক সংস্থা রিজলভ টু সেভ লাইভস’র সহযোগিতায় ২০১৮ সাল থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ যৌথভাবে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যার উদ্দেশ্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে উচ্চ রক্তচাপ শনাক্ত করা, চিকিৎসা প্রদান এবং ফলোআপ কার্যক্রম শক্তিশালী করা।
মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।
বিএসএমএমইউয়ের নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক। তিনি ১২তম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে তিনি নিজেই বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী বড় স্বপ্ন নিয়েই আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি এ প্রতিষ্ঠানকে শুধু বাংলাদেশেই না সারাবিশ্বে যাতে বেস্ট একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তর করতে পারি সেই আশা নিয়েই আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এ কাজে আমি সচেষ্ট থাকবো।
ডা. দীন মোহাম্মদ বলেন, আমি চাইবো যাতে করে প্রতিষ্ঠানটি মানবসেবায় দেশের শ্রেষ্ঠতম অবদান রাখতে পারে। বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠানটি মাথাউঁচু করে দাঁড়াতে পারে। সবাই যেন গর্বের সঙ্গে বলতে পারি দেশের এ রকম একটা প্রতিষ্ঠান আছে।
প্রসঙ্গত, অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশব্যাপী চক্ষুরোগী ও চক্ষুবিশেষজ্ঞদের কাছে খুবই প্রিয় ও সুপরিচিত নাম অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক। চক্ষু চিকিৎসক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সর্বোচ্চ সম্মাননা ডা. আলীম মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড লাভ করেছেন তিনি।
তার জন্মস্থান কিশোরগঞ্জ এলাকার লোকজনের কাছে তিনি ‘ননী ডাক্তার’ নামেই বেশি পরিচিত। নিজ এলাকায় তাকে ননী ডাক্তার হিসেবেই চেনেন।
চিকিৎসায় বিদেশ গমন ঠেকাতে উদ্যোগ নেওয়ার প্রস্তাব
চিকিৎসার জন্য নাগরিকদের বিদেশ গমন ঠেকাতে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য প্রস্তাব করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য রোগী চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাচ্ছে। এতে করে দেশের প্রচুর অর্থ চলে যাচ্ছে বিদেশে।
এ অবস্থায় রোগীদের ঠেকাতে দূতাবাসকে পৃথক একটি সেল গঠনের মাধ্যমে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
সোমবার (৪ মার্চ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে সারাহ ইসলাম ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট সেল আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এই প্রস্তাব করেন তিনি।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে ট্রান্সপ্লান্টের রোগীরা সেবা নিতে যাচ্ছে। এতে দেশের প্রচুর অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে। যদি পার্শ্ববর্তী দেশে যেতে হয় সেজন্য দূতাবাসে একটি সেল গঠন করে বোর্ডের সুপারিশের মাধ্যমে যেতে হবে। এজন্য দূতাবাসগুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে।
শারফুদ্দিন আহমেদ এরপর বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার মানুষের কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের প্রয়োজন হয়। কিন্তু সে অনুযায়ী আমাদের লোকবল নেই। এজন্য আমরা ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট টিম তৈরি করছি। ট্রান্সপ্লান্ট করার জন্য দক্ষ জনবল তৈরি করছি।
তিনি বলেন, আমরা সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে প্রতি সপ্তাহে তিনটি করে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করতে পারি। কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের জন্য শিশু হাসপাতাল আমাদের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে। হার্ট প্রতিস্থাপনের জন্যেও আমরা বিশেষজ্ঞ দল তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন ইসলামি দেশ যেমন ইরান, সৌদি আরব, কুয়েত ইত্যাদি দেশেও ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট করা হচ্ছে। এতে কোনো ধর্মীয় বাধা নেই। ইসলাম ধর্মসহ হিন্দু ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম, খ্রিস্টান ধর্মসহ সব ধর্মেই মানবকল্যাণের কথা বলা হয়েছে। মানুষের জীবন বাঁচানোর কথা বলা হয়েছে। তাই এই ধরনের মহৎকাজে অঙ্গদান করলে তাতে কোনো ধর্মীয় বিধি নিষেধ নেই। যাদের মাথায় চুল নেই, আগামীতে আমরণ তাদের জন্য হেয়ার ইমপ্ল্যান্টের ব্যবস্থাও করব।
স্বাস্থ্যখাত নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশা পূরণ হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যখাত নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশা পূরণ হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
সোমবার (৪ মার্চ) মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সদ্য যোগদান করা ডা. রোকেয়া সুলতানার সঙ্গে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ও স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মেসেজ একদম পরিষ্কার। তিনি দেশের স্বাস্থ্যখাতে দৃশ্যমান উন্নতি করতে চান। এক্ষেত্রে আমি এবং প্রতিমন্ত্রী দুজনেই প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশাটা বুঝি ও জানি। আমরা সেভাবেই কাজ এগিয়ে নিতে চাই যাতে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যাশা পূরণ হয়।
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যতটা কনসার্ন ততোটা কনসার্ন আর কেউ সম্ভবত নেই। প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি করতে অনেক কিছুই চিন্তা কারণে। প্রধানমন্ত্রী আমাকে একজন ডাক্তার থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বানিয়েছেন। প্রতিমন্ত্রী হিসেবেও একজন পেশাদার ডাক্তারকেই দিলেন তিনি।
সদ্য যোগ দেওয়া স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, আমি ছাত্র রাজনীতি থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে রাজনীতি করেছি কোনো পদ-পদবি পাওয়ার আশায় নয়। প্রধানমন্ত্রী আমাকে এত বড় সম্মান দিয়েছেন দেশের মানুষের সেবা করার জন্য। ৩৩ বছর আমি চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেছি। স্বাস্থ্যখাতের মাঠ পর্যায় থেকে ওপর পর্যন্ত আমার জানা আছে। চাকরি জীবনে বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ১৯৮০ সাল থেকে একসঙ্গে কাজ করেছি। আশা করছি, আমরা একসঙ্গে মিলে এবার স্বাস্থ্যখাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যাশা পূরণে কাজ করতে পারব।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাচিপ সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট, ডিজিডিএসহ স্বাস্থ্যখাতের সকল অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিবরা বক্তব্য রাখেন।
ঢামেকে রোগীদের শরীরে ঢুকে যাচ্ছে মাদকাসক্তদের রক্ত : র্যাব
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেকে) হাসপাতালে রোগীদের রক্তের প্রয়োজন হলে টাকার বিনিময়ে জোগাড় করে দেয় সক্রিয় দালাল চক্র। তবে বেশির ভাগ রক্ত তারা জোগাড় করে হাসপাতালের আশপাশে থাকা ভবঘুরে ও মাদকাসক্তদের থেকে। ফলে জীবন বাঁচাতে গিয়ে রোগীদের সরিরে মিশে যাচ্ছে মাদকাসক্তদের রক্ত।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার (৪ মার্চ) ঢামেক হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ৫৮ জন দালালকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাজহারুল ইসলাম।
অভিযান শেষে ঢামেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে ঢাকা মেডিকেলে রোগীদের জিম্মি করে যে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। সেই দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছি।
এ অভিযান অব্যাহত থাকবে জানিয়ে র্যাব অধিনায়ক জানান, সোমবার ৬৫ জন দালাল আটক করেছেন তারা। এদের মধ্যে ৫৮ জনকে ১৫ থেকে এক মাস করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। এই দালালরা বিভিন্ন ওয়ার্ডে, জরুরি বিভাগে, বহির্বিভাগে, ব্লাড ব্যাংকে রোগীদের জিম্মি করে। আবার মেডিকেলের ভেতরে অসহায় রোগীদের জিম্মি করে ছিট পাইয়ে দেওয়ার জন্য লেনদেন করে।
কর্নেল আরিফ আরও বলেন, ‘আমরা বেশ কিছুদিন ধরে গোয়েন্দা নজরদারি চালিয়েছিলাম। গোয়েন্দা নজরদারির ভিত্তিতেই উপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে এসব দালাল চিহ্নিত করেছি। আজকে আমরা অল্পসংখ্যক দালাল ধরেছি। এ সংখ্যাটা আরও বেশি হবে। এদের বড় একটি চক্র আছে। শুধু ঢাকা মেডিকেলেই ১৫০ থেকে ২০০ দালাল আছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এখন একটাই স্বপ্ন
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, চিকিৎসা ব্যবস্থাকে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়াই এখন আমার স্বপ্ন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসাসেবা উন্নত করতে পারলে দেশের চিকিৎসাসেবা অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকালে রাজধানীর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব কনভেনশন হলে এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় তরুণ চিকিৎসকদের গ্রামে ও ঢাকার বাইরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যারা ঢাকার বাইরে কাজ করেন তাদের পদন্নোতি, বিদেশ যাওয়ার সুযোগসহ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। সেজন্য নীতিমালা তৈরি করা হবে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। মানুষের দোড়গোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়াই প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য। এটি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল, প্রধানমন্ত্রীরও স্বপ্ন। আমাদের সবার স্বপ্ন।
ডা. সামন্ত লাল বলেন, চিকিৎসকদের তাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে রোগীদের সেবা দিতে হবে। চিকিৎসকরা মানুষকে সেবা দিতে কাজ করবে, আমরাও তাদের সবকিছু দেব।
এ সময় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক ও নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. বদরুল আলমসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
সরকারি হাসপাতালে চালু হচ্ছে ই-অ্যাপয়েন্টমেন্ট
সরকারি হাসপাতালে রোগীদের ভোগান্তি কমাতে স্মার্ট হেলথ আইডির উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মাধ্যমে রোগীরা ঘরে বসেই অনলাইনে ই-অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে পারবে। এর ফলে রোগীকে সকালে হাসপাতালে গিয়ে একবার টিকিটের জন্য, আরেকবার ডাক্তার দেখানোর জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে ১০টি হাসপাতালে এই কার্যক্রম চালু করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর), ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতাল, কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। পর্যায়ক্রমে সারাদেশের সব সরকারি হাসপাতালকে এর আওতায় আনা হবে।
নাগরিকরা ঘরে বসে মোবাইল ফোন কিংবা কম্পিউটারের মাধ্যমে অনলাইনে স্মার্ট হেলথ আইডি নিবন্ধন করতে পারবেন। নিবন্ধন সম্পন্ন হলে তিনি হেলথ কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। এরপর তারা এই ব্যবস্থার আওতাভুক্ত হাসপাতালগুলোতে ই-অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে পারবেন। টিকিটের ফি মোবাইল ব্যাংকিং অথবা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিশোধ করা যাবে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমআইএস) অধ্যাপক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আপাতত ১০টি হাসপাতালে এই কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আগামী অর্থবছরে এটা একটি অপারেশনাল প্ল্যানে সংযুক্ত করে সারাদেশে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, এটি সম্পন্ন হলে রোগীকে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে হবে না। তিনি তার নির্ধারিত সময়ে হাসপাতালে আসবেন, এতে সময় সাশ্রয় হবে। এ ছাড়া হাসপাতালেও রোগীর চাপ কমবে।